পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ৮০৪৮ পদে নিয়োগ, নিয়োগ পরীক্ষার ফল জালিয়াতি by শিশির মোড়ল
পরিবার
পরিকল্পনা অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশে
জালিয়াতি হয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত ফলাফল আর অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন জেলায়
সিলগালা করে পাঠানো ফলাফলের মধ্যে অসংগতি ধরা পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, অর্থের
বিনিময়ে লোক নিয়োগ দিতেই এই জালিয়াতি করা হয়েছে। এ অবস্থায় নিয়োগ কমিটির
সভাপতি নির্বাচন এবং পরীক্ষার উত্তরপত্র দেখার প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের
ক্ষেত্রেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা জেলায় পরিবার পরিকল্পনা
পরিদর্শক পদে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৭৪ জন। তাঁদের সবার রোল নম্বর
পত্রিকায় ছাপাও হয়। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার জন্য উপপরিচালকের কাছে
সিলগালা করা যে তালিকা পাঠানো হয়, তাতে ৭৬ জনের রোল নম্বর ছিল। এই জেলায়
আয়া পদেও অতিরিক্ত তিনজনের রোল নম্বর পাঠানো হয়েছে জেলায়। একই ধরনের
জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে, মাদারীপুর, নীলফামারী ও সুনামগঞ্জ জেলার
ক্ষেত্রেও। মাদারীপুর জেলায় অতিরিক্ত ২১ জনের নাম যুক্ত করা হয়।
এ
ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী আ ফ ম
রুহুল হক প্রথম আলোকে বলেন, তিনি নিজেও অনিয়মের কথা শুনেছেন। কিন্তু
সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ তাঁর কাছে কেউ দেয়নি। তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট
অভিযোগ পেলে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’
অধিদপ্তরের অধীনে পরিবার পরিকল্পনা সহকারী, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, পরিবার কল্যাণ সহকারী ও আয়ার আট হাজার ৪৮টি পদে নিয়োগ-প্রক্রিয়া চলছে। গত ২০ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন জেলার স্থানীয় সংবাদপত্রেও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। প্রায় সাড়ে তিন লাখ প্রার্থী বিভিন্ন পদে আবেদন করেন। ১০ জুন থেকে লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের পদভিত্তিক রোল নম্বর ২৯ আগস্ট প্রকাশ করা হয় এবং ৩০ আগস্ট দুটি সংবাদপত্রে তা প্রকাশিত হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত ৮ অক্টোবর।
অতিরিক্ত রোল নম্বর কোথা থেকে এল: ঢাকা জেলার উপপরিচালক (পরিবার পরিকল্পনা) তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে গত ২২ সেপ্টেম্বর তারিখে লেখা চিঠিতে জানান, পত্রিকায় প্রকাশিত এবং অধিদপ্তরের সিলগালা করা ফলাফলের মধ্যে অসংগতি আছে।
পত্রিকায় প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, ঢাকা জেলায় পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পদে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় ৭৪ জন। কিন্তু পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সিলগালা করা তালিকায় ৭৬টি রোল নম্বর পাঠানো হয়। নতুন রোল দুটি হলো: ৮২৫৪৩১ ও ৮২৫৪৭৯।
চিঠিতে বলা হয়, আয়া পদে পত্রিকায় প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, ১১৪ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। আর সিলগালা করে পাঠানো ফলাফলে ১১৭ জনকে উত্তীর্ণ দেখানো হয়েছে। অতিরিক্ত তিনটি রোল নম্বর হচ্ছে: ৮২৬১১৮, ৮২৬২০৮ এবং ৮২৬৩৮৯ (যা পত্রিকায় প্রকাশিত ছিল না)।
অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, একটি পদের জন্য মৌখিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ তিনজনকে ডাকার সিদ্ধান্ত হয়। মাদারীপুর জেলায় আয়ার পদ শূন্য আছে চারটি। লিখিত পরীক্ষার পর চারটি পদের জন্য ১২ জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য বাছাই করে সংবাদপত্রে প্রকাশ করা হয়। কিন্তু পরে অধিদপ্তর থেকে ৩৩ জনের একটি তালিকা পাঠানো হয় জেলায়।
একই ঘটনা সুনামগঞ্জ, নীলফামারীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় ঘটেছে বলে অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
এসব বাড়তি রোল নম্বর সম্পর্কে জানতে চাইলে নিয়োগ কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, কম্পিউটারে যান্ত্রিক জটিলতার কারণে এই ভুল হয়েছে।
কিন্তু উত্তরপত্র যাচাইকারী কম্পিউটার প্রতিষ্ঠানটি যান্ত্রিক জটিলতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
নিয়োগ কমিটির সভাপতি নিয়ে প্রশ্ন: পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ ও বাছাই কমিটির সভাপতি এ কে এম মাহবুবুর রহমান। তিনি একজন মেডিকেল কর্মকর্তা। এ বছর ৩১ জানুয়ারি তাঁকে পরিচালকের (প্রশাসন) চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. আজিজুর রহমান তাঁর মন্ত্রণালয়ের সচিবকে লিখেছেন, মাহবুবুর রহমান অধিদপ্তরের নিয়মিত পদোন্নতি পাওয়া পরিচালক নন। তাঁকে পরিচালক প্রশাসনের দায়িত্ব দেওয়া বিধিসম্মত হয়নি।
নিয়োগ কমিটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি থাকার বিধান আছে। মন্ত্রণালয় আজিজুর রহমানকে প্রতিনিধি করে পাঠায়। কিন্তু নিয়োগ কমিটি গঠন ও কমিটির কিছু কাজ বিধিসম্মত হচ্ছে না—এমন অভিযোগ করে তিনি কমিটির কাজে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকেন।
১৬ আগস্ট সচিবকে লেখা চিঠিতে আজিজুর রহমান বলেছেন, ‘প্রাপ্ত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ কে এম মাহবুবুর রহমান মূলত প্রেষণে নিয়োজিত একজন মেডিকেল অফিসার, যাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় সহকারী পরিচালক (সিসি) পদে পদায়ন করেছে। তিনি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের নিয়মিত পদোন্নতি পাওয়া পরিচালক নন। মহাপরিচালক পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর কর্তৃক তাঁকে উপপরিচালক (সিসি) পদে পদায়ন করে পরিচালক প্রশাসনের অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা বিধিসম্মত নয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এম এম নিয়াজউদ্দিন বলেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই মাহবুবুর রহমানকে পলিচালক (প্রশাসন) ও নিয়োগ কমিটির সভাপতি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব লিখিতভাবে নিয়োগ কমিটির সভাপতি নির্বাচন ও ওএমআরডিএম সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ উত্থাপন করেছিলেন। সরকারের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার ওই অভিযোগ আমলে নেওয়া উচিত ছিল।’
খাতা দেখেছে কে: কম্পিউটারে লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করেছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওএমআরডিএম।
আজিজুর রহমানের চিঠি থেকে জানা যায়, ১৩ মার্চ নিয়োগ কমিটির সভায় তিনি বুয়েটের মাধ্যমে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, বুয়েট কারিগরি ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন নিয়োগ ও কারিগরি কাজ অত্যন্ত দক্ষতা, নিরাপত্তা, বিশ্বস্ততা ও নির্ভুলতার সঙ্গে করে। তা ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমোদিত অ্যাকশন প্ল্যানে বুয়েটের মাধ্যমে উত্তরপত্র মূল্যায়নের কথা বলা আছে।
বুয়েটকে না দিয়ে ওএমআরডিএমকে উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ কেন দেওয়া হলো—জানতে চাইলে মাহবুবুর রহমান বলেন, বুয়েটের চেয়ে ওএমআরডিএমতে খরচ কম। টেন্ডারের সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ওএমআরডিএম কাজ পেয়েছে।
ঠিকানা ধরে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি ভবনের তৃতীয় তলায় ছোট পাঁচটি কক্ষে ওএমআরডিএমের কার্যালয়। ভবন বা কার্যালয়ের সামনে কোনো সাইনবোর্ড নেই। ভেতরে ঢুকে দেখা গেল, কার্যালয়ের প্রতিটি কক্ষে প্রচুর কাগজপত্র।
প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী মো. জাহাদুর রহমান বলেন, তাঁরা ব্যবসা করেন। দরপত্রের মাধ্যমে কাজ পেয়েছেন।
যান্ত্রিক জটিলতার কারণে জেলায় পাঠানো তালিকায় অতিরিক্ত রোল নম্বর যুক্ত হয়েছে বলে নিয়োগ কমিটির প্রধান যে দাবি করেছেন, সে বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাদুর রহমান বলেন, তাঁরা কোনো ভুল করেননি। পত্রিকায় প্রকাশিত এবং সিলগালা করা ফলাফলে পার্থক্য থাকলে এর দায়দায়িত্ব পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের।
অধিদপ্তরের অধীনে পরিবার পরিকল্পনা সহকারী, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, পরিবার কল্যাণ সহকারী ও আয়ার আট হাজার ৪৮টি পদে নিয়োগ-প্রক্রিয়া চলছে। গত ২০ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন জেলার স্থানীয় সংবাদপত্রেও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। প্রায় সাড়ে তিন লাখ প্রার্থী বিভিন্ন পদে আবেদন করেন। ১০ জুন থেকে লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের পদভিত্তিক রোল নম্বর ২৯ আগস্ট প্রকাশ করা হয় এবং ৩০ আগস্ট দুটি সংবাদপত্রে তা প্রকাশিত হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত ৮ অক্টোবর।
অতিরিক্ত রোল নম্বর কোথা থেকে এল: ঢাকা জেলার উপপরিচালক (পরিবার পরিকল্পনা) তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে গত ২২ সেপ্টেম্বর তারিখে লেখা চিঠিতে জানান, পত্রিকায় প্রকাশিত এবং অধিদপ্তরের সিলগালা করা ফলাফলের মধ্যে অসংগতি আছে।
পত্রিকায় প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, ঢাকা জেলায় পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পদে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় ৭৪ জন। কিন্তু পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সিলগালা করা তালিকায় ৭৬টি রোল নম্বর পাঠানো হয়। নতুন রোল দুটি হলো: ৮২৫৪৩১ ও ৮২৫৪৭৯।
চিঠিতে বলা হয়, আয়া পদে পত্রিকায় প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, ১১৪ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। আর সিলগালা করে পাঠানো ফলাফলে ১১৭ জনকে উত্তীর্ণ দেখানো হয়েছে। অতিরিক্ত তিনটি রোল নম্বর হচ্ছে: ৮২৬১১৮, ৮২৬২০৮ এবং ৮২৬৩৮৯ (যা পত্রিকায় প্রকাশিত ছিল না)।
অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, একটি পদের জন্য মৌখিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ তিনজনকে ডাকার সিদ্ধান্ত হয়। মাদারীপুর জেলায় আয়ার পদ শূন্য আছে চারটি। লিখিত পরীক্ষার পর চারটি পদের জন্য ১২ জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য বাছাই করে সংবাদপত্রে প্রকাশ করা হয়। কিন্তু পরে অধিদপ্তর থেকে ৩৩ জনের একটি তালিকা পাঠানো হয় জেলায়।
একই ঘটনা সুনামগঞ্জ, নীলফামারীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় ঘটেছে বলে অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
এসব বাড়তি রোল নম্বর সম্পর্কে জানতে চাইলে নিয়োগ কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, কম্পিউটারে যান্ত্রিক জটিলতার কারণে এই ভুল হয়েছে।
কিন্তু উত্তরপত্র যাচাইকারী কম্পিউটার প্রতিষ্ঠানটি যান্ত্রিক জটিলতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
নিয়োগ কমিটির সভাপতি নিয়ে প্রশ্ন: পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ ও বাছাই কমিটির সভাপতি এ কে এম মাহবুবুর রহমান। তিনি একজন মেডিকেল কর্মকর্তা। এ বছর ৩১ জানুয়ারি তাঁকে পরিচালকের (প্রশাসন) চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. আজিজুর রহমান তাঁর মন্ত্রণালয়ের সচিবকে লিখেছেন, মাহবুবুর রহমান অধিদপ্তরের নিয়মিত পদোন্নতি পাওয়া পরিচালক নন। তাঁকে পরিচালক প্রশাসনের দায়িত্ব দেওয়া বিধিসম্মত হয়নি।
নিয়োগ কমিটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি থাকার বিধান আছে। মন্ত্রণালয় আজিজুর রহমানকে প্রতিনিধি করে পাঠায়। কিন্তু নিয়োগ কমিটি গঠন ও কমিটির কিছু কাজ বিধিসম্মত হচ্ছে না—এমন অভিযোগ করে তিনি কমিটির কাজে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকেন।
১৬ আগস্ট সচিবকে লেখা চিঠিতে আজিজুর রহমান বলেছেন, ‘প্রাপ্ত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ কে এম মাহবুবুর রহমান মূলত প্রেষণে নিয়োজিত একজন মেডিকেল অফিসার, যাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় সহকারী পরিচালক (সিসি) পদে পদায়ন করেছে। তিনি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের নিয়মিত পদোন্নতি পাওয়া পরিচালক নন। মহাপরিচালক পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর কর্তৃক তাঁকে উপপরিচালক (সিসি) পদে পদায়ন করে পরিচালক প্রশাসনের অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা বিধিসম্মত নয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এম এম নিয়াজউদ্দিন বলেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই মাহবুবুর রহমানকে পলিচালক (প্রশাসন) ও নিয়োগ কমিটির সভাপতি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব লিখিতভাবে নিয়োগ কমিটির সভাপতি নির্বাচন ও ওএমআরডিএম সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ উত্থাপন করেছিলেন। সরকারের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার ওই অভিযোগ আমলে নেওয়া উচিত ছিল।’
খাতা দেখেছে কে: কম্পিউটারে লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করেছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওএমআরডিএম।
আজিজুর রহমানের চিঠি থেকে জানা যায়, ১৩ মার্চ নিয়োগ কমিটির সভায় তিনি বুয়েটের মাধ্যমে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, বুয়েট কারিগরি ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন নিয়োগ ও কারিগরি কাজ অত্যন্ত দক্ষতা, নিরাপত্তা, বিশ্বস্ততা ও নির্ভুলতার সঙ্গে করে। তা ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমোদিত অ্যাকশন প্ল্যানে বুয়েটের মাধ্যমে উত্তরপত্র মূল্যায়নের কথা বলা আছে।
বুয়েটকে না দিয়ে ওএমআরডিএমকে উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ কেন দেওয়া হলো—জানতে চাইলে মাহবুবুর রহমান বলেন, বুয়েটের চেয়ে ওএমআরডিএমতে খরচ কম। টেন্ডারের সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ওএমআরডিএম কাজ পেয়েছে।
ঠিকানা ধরে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি ভবনের তৃতীয় তলায় ছোট পাঁচটি কক্ষে ওএমআরডিএমের কার্যালয়। ভবন বা কার্যালয়ের সামনে কোনো সাইনবোর্ড নেই। ভেতরে ঢুকে দেখা গেল, কার্যালয়ের প্রতিটি কক্ষে প্রচুর কাগজপত্র।
প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী মো. জাহাদুর রহমান বলেন, তাঁরা ব্যবসা করেন। দরপত্রের মাধ্যমে কাজ পেয়েছেন।
যান্ত্রিক জটিলতার কারণে জেলায় পাঠানো তালিকায় অতিরিক্ত রোল নম্বর যুক্ত হয়েছে বলে নিয়োগ কমিটির প্রধান যে দাবি করেছেন, সে বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাদুর রহমান বলেন, তাঁরা কোনো ভুল করেননি। পত্রিকায় প্রকাশিত এবং সিলগালা করা ফলাফলে পার্থক্য থাকলে এর দায়দায়িত্ব পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের।
No comments