ফিচার- 'মোরা বড় হতে চাই' by আহসান হাবীব ইমরোজ
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। বন্ধুরা, আশা করি তোমরা সবাই খুব ভাল আছো।
নিশ্চয়ই গত মাস অর্থাৎ জুলাইয়ের ১১ তারিখ পর্যন্ত তোমাদের মন পড়ে ছিল সেই নেলসন ম্যান্ডেলার দক্ষিণ আফ্রিকায়, আন্তর্জাতিক ফুটবল বিশ্বকাপের মাঠগুলোতে।
কানে কানে জিজ্ঞেস করছি এখন পর্যন্ত কি মনটা সেখান থেকে বইয়ের পাতায় ফিরেছে? প্রিয় কিশোর বন্ধুরা, চল না গত মাসটা একটু রিভিশন দিয়েই আমরা নতুন আলোচনায় যাই। ঠিক আছে?
‘ঢাকা কী জন্য বিখ্যাত?’
মাস দেড়েক আগে ঢাকায় কোন এক কৃতী ছাত্র সমাবেশে এমন এক বেসুরো প্রশ্ন করায় প্রায় সবাই সমস্বরে বলে উঠলো মসজিদের শহর। দু-একজন একটু তেড়ে বললো, আরে না না, এখন মূর্তির শহর। আমি বললাম নাহ্ কিচ্ছু হয়নি, এখন আম ও জামের শহর। সবাইতো অবাক, মুখে একরাশ বিরক্তি। অবশেষে থলের বেড়াল বের করলাম, আরে বুঝছো না আম মানে আমজনতা অর্থাৎ মানুষ আর মানুষ; আর জাম মানে জ্যাম শ্বাসরুদ্ধকর গাড়ির জ্যাম বা যানজট। সবাই হো হো করে একগাল হেসে নিল।
এই মুহূর্তে কিন্তু আগের উত্তরটা দিলে ওরা আমাকে ভীষণ ঝাড়ি (মানে রেগে বা তেড়ে উঠা-কথ্য ভাষায় ব্যবহৃত এখনও অভিধানে স্থান পায়নি, ঝামটার কাছাকাছি অর্থ) দিয়ে বসতো আরে ছ্যা, আপনি তো দেখছি কিচ্ছু জানেনও না এমনকি দেখেনও না। ঢাকা এখন পতাকার শহর। ও হ্যাঁ আরেকটু খোলাসা করে বলা যায় আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের পতাকার শহর। এই তো সেদিন উত্তরাগামী বাসের জন্য মগবাজার চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। ওমা! মাত্র ৫০-৬০ গজ রাস্তার দুই পার্শ্বে প্রায় ৬৮টি আর্জেন্টিনার এবং ২৫টির মতো ব্রাজিলের পতাকা লাগানো আছে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সারা দেশের একই চিত্র। ওদিকে গত ১৩ জুন ইত্তেফাক আজিজুর রহীম পিউ প্রেরিত একটি ছবিসহ নিউজ করে ‘পতাকায় ঢাকা রাস্তা’ এতে বলা হয় :
‘বিশ্বকাপ ফুটবল মানেই টান টান উত্তেজনা। … এই হাওয়ায় ভাসছে পুরো দেশ। গাড়ি-বাড়ি সর্বত্রই ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, ইতালি, ইংল্যান্ডের পতাকা শোভা পাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্জেন্টাইন সমর্থক ছাত্র-ছাত্রীরা প্রায় ৮০০ ফুট লম্বা পতাকা তৈরি করেছে। আর সেই পতাকা নিয়ে গতকাল তারা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। দেখে মনে হয় পতাকায় ঢাকা পড়ে গেছে ক্যাম্পাসের রাস্তা।’
বিশ্বকাপ ফুটবল : উত্তেজনা বনাম উন্মাদনা
ঠিক এই টাইপের শিরোনামে গত ১৩ জুন প্রথম আলোর একটি লেখা আমার দৃষ্টি কেড়ে নেয়। লেখক বাংলাদেশের এক নামকরা ব্যক্তিত্ব। তার সেই মজার লেখাটি থেকে তোমাদের একবারে বঞ্চিত করতে চাই না। তিনি হলেন মোহাম্মদ কায়কোবাদ, অধ্যাপক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ফেলো, বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। মনের আবেগ দিয়ে তিনি লিখেন :
বিশ্বকাপ নিয়ে আমাদের দেশে যে উত্তেজনা, প্রতিটি খেলা দেখার জন্য যে মহা-আয়োজন, এমনটি আর মনে হয় না অন্য কোনো দেশে হয়। ইংলিশ লিগ নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে লাঠালাঠি, মারামারি, গোলাগুলির ভূরি ভূরি উদাহরণ রয়েছে। এমনকি এই কর্মকাণ্ডগুলো বিদেশের মাটিতেও তারা করে থাকে। তবে বাংলাদেশের আকাশে বিশ্বের ফুটবল-দেশগুলোর যত পতাকা ওড়ানো হয়, তা শুধু ইংল্যান্ড কেন, বিশ্বের অন্য কোনো দেশেও ওড়ানো হয় কি না সন্দেহ। অস্ট্রেলিয়া অত্যন্ত নামকরা একটি খেলুড়ে দেশ। পৃথিবীর প্রতি ২০০ জনের মাত্র একজনের বাস এই দেশে, কিন্তু অলিম্পিক খেলায় এদের পদক প্রাপ্তির হার অনেক বেশি। অন্যান্য খেলায়ও দোর্দণ্ড প্রতাপ তাদের। কিন্তু তার পরও সেখানে ভিনদেশী কোনো পতাকা দেখি না ।… যত দূর জানি, আমাদের দেশীয় পতাকা যখন-তখন যত্রতত্র যে কেউ ওড়াতে পারে না। একটি বিধিবিধান মেনে চলতে হয়। গাড়িতে যে কেউ ওড়াতে পারে না। অবশ্য বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসে সাধারণ জনগণকে এই অধিকার দেয়া হয়েছে। বিদেশী পতাকা ওড়ানোর কি কোনো বিধিনিষেধ নেই?
ঢাকা শহরসহ শহরতলির আকাশ ধীরে ধীরে পতাকায় ছেয়ে যায়। এখানে একটি প্রতিযোগিতাও লক্ষ করা যাচ্ছে, কে কত বড় পতাকা ওড়াতে পারে। ফলে অধিকতর বড় পতাকায় বাংলাদেশের আকাশ ছেয়ে যাচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে পতাকাটি বাংলাদেশের নয়। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ইতালি, স্পেন, ফান্স, জার্মানির পতাকাই বেশি লক্ষণীয়। সবচেয়ে বেশি আর্জেন্টিনা। … এর নাকি মূল কারণ ম্যারাডোনা। খেলার মাঠে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের বুকে লাথি মেরেছেন, মাদক সেবন করেছেন, ঈশ্বরের হাত দিয়ে গোল করেছেন। তাহলে কী হবে, খেলোয়াড় তো ভালো ছিলেন। তাই মানুষ হিসেবে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলেও খেলোয়াড় হিসেবে সমর্থক বেশি। তাই আর্জেন্টিনার জনপ্রিয়তা বেশি। এর সঙ্গে অবশ্য ফকল্যান্ড পুনরুদ্ধারের সহমর্মিতাও কাজ করতে পারে। তার পরও ফুটবলামোদী মানুষের অনুভূতি বিচার-বিবেচনা-যুক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয় … ম্যারাডোনা-বন্দনার জন্য কোটি কোটি ফুটবল-উন্মত্ত মানুষ। আমার এক সহকর্মী বললেন, শুধু পতাকার পেছনে বাংলাদেশে ব্যয় হবে কমপক্ষে অর্ধশত কোটি টাকা (ভাগ্যিস, ব্রাজিল আর্জেন্টিনা আগে ভাগেই বিদায় নিয়েছিল, নইলে পতাকাকেন্দ্রিক খরচ এই হতদরিদ্র দেশের কয়েকশত কোটি টাকায় দাঁড়াতো, তার চাইতে বড় কথা খুনাখুনি হয়ে যেতে পারতো বিস্তর)। যে দেশের রাজধানীতে যখন-তখন দালান ধসে পড়ে আর আগুন লেগে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়, সে দেশে এই অর্থের অধিকতর যৌক্তিক ও মানবিক ব্যবহার হতে পারত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশপ্রেমের বীজ কখনো আমাদের মধ্যে রোপিত হয়নি। বিভিন্ন দেশে দেশসেবায় সুস্পষ্ট বিধিনিষেধ রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রত্যেক নাগরিককেই সেনাবাহিনী-সংশি-ষ্ট সেবাদান করতে হয়। এ রকম বিধান অন্যান্য দেশেও রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে নেই। হতে পারত এসএসসি কিংবা এইচএসসি পরীক্ষার পর বয়স্ক শিক্ষার কর্মসূচি, এমনকি রাস্তাঘাট, পার্ক পরিষ্কারের কিংবা অন্যান্য স্থানীয় উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে ছাত্রদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের মধ্যে দেশপ্রেমের প্রাতিষ্ঠানিক বীজ বপন। তাই দেশের প্রতি মায়ামমতা আমাদের নেই বললেই চলে। ভারতীয়রা বিদেশী পণ্য কিনতে লজ্জাবোধ করে আর আমরা লজ্জাবোধ করি দেশীয় পণ্য কিনতে। অবশ্য বিশ¡কাপ উপলক্ষে আরও বড় বড় অসংখ্য বিদেশী টিভি কিনে ফেলব। আমাদের খেটে খাওয়া বঞ্চিত মানুষের চিত্তবিনোদনের সুযোগ কম। তাও যদি আবার বাংলাদেশের টিভিতে হিন্দি ছবি আর গান করে চিত্তবিনোদন করতে হয়, তাহলে স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা আমাদের ভাষা, কৃষ্টি, ঐতিহ্য সর্বোপরি আমাদের দেশের সমৃদ্ধি কী করে ঘটাব? …বাংলাদেশের আকাশ দেখে আমাদের পতাকা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে না, বিশেষ করে বিদেশীরা নিশ্চয়ই খুবই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যাবে। আকাশে ওড়া পতাকা দেখে কোনোমতেই বলার সুযোগ নেই, আমরা আমাদের দেশ নিয়ে গর্বিত। এর মধ্যেও কিন্তু গর্বের একটি বিষয় রয়েছে, দরিদ্র খেটে খাওয়া ফেরিওয়ালার যে লাঠিতে বিক্রির জন্য নানা দেশের পতাকা ওড়ানো থাকবে, এর সর্বোচ্চ স্থানে থাকবে বাংলাদেশের পতাকা; যদিও সে জানে, ওই পতাকাটি কারও কেনার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এই ভাগ্যবিড়ম্বিত খেটে খাওয়া মানুষটাকে অভিবাদন জানাই। বিশ্বকাপের আসরে এর থেকে বড় কোনো বাংলাদেশী নেই।
উন্নয়ন-প্রতিকূল সংস্কৃতিতে দেশটি সয়লাব। দূরপাল-ার বাসে হিন্দি গান, বিয়ের আসরে হিন্দি গান, প্রতি রাতে ও দিনে বাসায় বাসায় হিন্দি ছবির অত্যাচার। কবে আমাদের দেশে উন্নয়ন-অনুকূল সংস্কৃতি জেগে উঠবে? তবে বিশ¡কাপের এই ঋতুতে প্রার্থনা একটিই, বিশ্বকাপকে উপলক্ষ করে দেশের ক্ষতি যাতে সর্বনিম্ন হয়, টেলিভিশন চালানোর বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে যাতে উৎপাদন ব্যাহত না হয়, খেলা দেখতে গিয়ে যাতে আমাদের স্কুল-কলেজ-বিশ¡বিদ্যালয়ের ক-াস, পরীক্ষা ও অন্যান্য শিক্ষা-সংশি-ষ্ট কর্মসূচি ব্যাহত না হয়, বিশ¡কাপের বিজয়ে প্রতিটি দেশের দর্শকদের উচ্ছ্বসিত হওয়া দেখে যাতে আমাদের মনে দেশপ্রেম জেগে ওঠে।
ফিফার মে মাসের র্যাংকিং অনুযায়ী প্রথম ১০টি দেশ হলো ব্রাজিল, স্পেন, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, জার্মানি, আর্জেন্টিনা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়া। ২০৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫৭, শ্রীলঙ্কার ১৫৯, নেপালের ১৬১, পাকিস্তানের ১৬৫, ভারতের ১৩৩, মালদ্বীপের ১৪২ ও মিয়ানমারের ১৪৭। আমাদের মতো বড় জনসংখ্যা নিয়ে এমন নিচু র্যাংকিং রয়েছে কেবল পাকিস্তানের। বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ মানুষ আমাদের উপমহাদেশে বাস করলেও কোনো দেশেরই র্যাংক সম্মানজনক নয়। এই গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যানকে অবহেলা করার সুযোগ নেই। এই খেলায় দর্শক হিসেবেই আমাদের আনন্দ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে এই আনন্দ যাতে কোনোক্রমেই আমাদের জাতিসত্তা, আমাদের দেশকে ক্ষুদ্র করে না হয়, সেদিকেও যতœবান হতে হবে। এই আনন্দ যাতে দেশের উৎপাদনকে ব্যাহত না করে, অন্যান্য কর্মকাণ্ডকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে। বিগত বিশ¡কাপগুলোতে আমরা দেখেছি, আমাদের অফিস-আদালতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাত্রাতিরিক্ত অনুপস্থিতি, কর্মে অনাগ্রহ। অধিক রাত জেগে খেলা দেখার ফলে শিল্প-কলকারখানার উৎপাদন ব্যাহত, অফিস-আদালতের কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা, স্কুল-কলেজ-বিশ¡বিদ্যালয়ের শিক্ষা কর্মসূচি ব্যাহত। এই বিশ¡সভায় আমরা কোনকালে প্রতিনিধিত্ব করতে পারব, তা খুবই আশাবাদী ফুটবলামোদীও বলতে পারবে না, কবে ‘আমার সোনার বাংলা’ সঙ্গীতটি সেখানে বেজে উঠবে। সেই বিশ¡কাপ নিয়ে উন্মাদনা, উত্তেজনা, উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত করা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
শুনেছি, মহাসম্পদশালী জাপানে বিশ¡কাপ দেখানো হয়, তবে যে খেলাগুলোতে জাপান থাকে। সে ধরনের নিয়ম পালন করলে অবশ্য আমরা কোনো দিনই হয়তো বিশ¡কাপের খেলা দেখতে পারব না। তবে এ ক্ষেত্রে একটি যৌক্তিক সমাধানে আসা উচিত। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটা শুধু দর্শকদের উন্মাদনা নয়, আমাদের সব গণমাধ্যমই বিশ¡কাপ নিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়বে। টেলিভিশনের নানা চ্যানেল দেশীয় ফুটবল বিশেষজ্ঞদের নিয়ে টক শো করবে, পুরস্কার পাওয়ার জন্য এসএমএস করার নানা সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি হবে। কোন খেলার দ্বিতীয়ার্ধে কোন খেলোয়াড়টি বেশি দৌড়াবে, গোলের ব্যবধান কত হবে, কতজন বদলি খেলোয়াড় খেলবে, কত দূর থেকে নেয়া শটে গোল হবে ইত্যাকার মহাগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে এসএমএস এবং যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য পুরস্কার। তাতে এসএমএস করে হাজার হাজার টাকা খরচ হবে। পত্রিকার পাতায় আসবে ফুটবল নিয়ে পরিসংখ্যানসমৃদ্ধ নানা লেখা। তা ছাড়া খেলোয়াড় ও তাদের বান্ধবীদের নিয়ে বাড়তি আনন্দের নানা ঘটনা, যার বাহুল্যে নিসন্দেহে চাপা পড়ে যাবে আমাদের নানা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
প্রিয় বন্ধুরা, তোমাদের অনেকের হয়তো কষ্ট লাগছে আমার সংগ্রহ করা এই কাঠখোট্টা কথাগুলো শুনে। তোমরা ছোট, তারপরও এই কষ্টের কথাগুলো তোমাদের বলছি তার কারণ কী? যাতে করে কুইনাইনের মতো তিক্ত হলেও তোমরা জীবনের বাস্তবতাটুকু বুঝতে পারো। অধ্যাপক কায়কোবাদ সাহেবের এই আবেগ দিয়ে লেখাটি প্রকাশের মাত্র এক সপ্তাহের ভেতরই তার আশঙ্কা বাস্তবায়ন করে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান বুয়েট বন্ধ হয়ে গেল রীতিমত মারামারি করে। অথচ যে দেশে বিশ্বকাপের এতো আয়োজন সেই দক্ষিণ আফ্রিকায় কোন বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু বন্ধ করতে হয়নি। দেখ কী দুর্ভাগ্য! বিদেশী সংবাদমাধ্যমসমূহ আমাদের কিভাবে চিত্রিত করছে, তোমরা আন্ডারলাইন ও বোল্ড করা অংশগুলো শুধু দেখ।
Associated Press, Updated : June 21, 2010 10 : 22 IST, Dhaka
A top public university in Bangladesh closed indefinitely after students clashed over whether to cancel classes to watch the FIFA World Cup.Bangladesh University of Engineering and Technology asked students to leave dormitories by Sunday to calm the situation, said Habibur Rahman, pro-vice chancellor of the university in the capital.
The decision was made late Saturday after at least five students were injured in violence between two groups of students.One group demanded an early summer vacation so they could watch football on television without any tension. They asked other students not to attend classes or take tests and locked the university’s main gate, prompting clashes with senior students who wanted classes to continue. No date has been set for when the university will reopen.Earlier this month, hundreds of angry football fans smashed vehicles in Dhaka after power outages interrupted live TV broadcasts of a World Cup match between Argentina and Nigeria.Football is the most popular sport in Bangladesh even though the South Asian nation has never qualified for any major international tournament.
যদিও বিশ্বের সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের তুলনায় বুয়েটের অবস্থান অনেক পেছনে, ৩৮০১ নাম্বারে। (Two leading public universities of the country-University of Dhaka (DU) and Bangladesh University of Engineering and Technology (BUET) have been ranked as 4922 and 3801 in global position respectively according to Webometrics January survey.)
কিন্তু তবু এই বুয়েট হচ্ছে বাংলাদেশের একটি গর্ব করার মতো প্রতিষ্ঠান ACM International Collegiate Programming Contest এ আমরা বুয়েটের পক্ষ থেকে সারা বিশ্বে ২০০০ এবং ২০০৮ সালে ১১তম স্থান অর্জন করেছি। এখানকার সাবেক ছাত্র বাংলাদেশের গর্ব ফজলুর রহমান খান যিনি ডিজাইন করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের এক সময়কার সর্বোচ্চ বিল্ডিং ১০৮ তলা বিশিষ্ট সিয়ারর্স টাওয়ার।
সত্য ঘটনা অবলম্বনে একটি কৌতুক দিয়েই শেষ করছি ‘খুচরা ব্যবসায়ী থেকে রেফারি হওয়া স্টিফেন ল্যান্নয় ২০ জুন আইভোরি কোস্ট বনাম ব্রাজিল ম্যাচে কাকাকে লাল কার্ড দেখান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাংলাদেশের কোন এক এলাকার মানুষ রাস্তা অবরোধ এমনকি গাড়ি ভাঙচুর পর্যন্ত করে। পুলিশ দু-একজনকে আটক করে কিছু প্যাদানি দিয়ে জিজ্ঞেস করে খেলা হচ্ছে দক্ষিণ আফিকায় লাল কার্ড পেল ব্রাজিলের কাকা তুমি বাংলাদেশের গাড়ি ভাঙ্গছো কেন। ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীর উত্তর ‘আজকে রেফারি কাকাকে লাল কার্ড দেখিয়েছে কালকে বাবাকে (মানে আব্বা) দেখাবে না তার কী গ্যারান্টি আছে? হা হা হা…। একেইতো বলে ‘চিলে কান নিলরে- দে দৌড়’। তাই বোধ হয় প্রাচীনকাল থেকে মুরব্বিরা এ জাতির একটি উপাধি দিয়েছেন ‘হুজুগে বাঙ্গাল’। এতোগুলো কথা কেন বলছি, কারণ ইতোমধ্যেই এ খেলার জন্য এলাকায় এলাকায় মিছিল, পাল্টা মিছিল এমকি যুদ্ধ পরিণতিতে মারাত্মক আহত ও জীবনও দিতে হয়েছে এদেশের মানুষদের। আচ্ছা তোমরাই বলো, এমনিতেই মারামারি খুব খারাপ কাজ, নয় কি? ধরো, তোমার ক্লাসের যে ছেলেটির রোল নম্বর ১৫৭ সে যদি ফার্স্ট বেঞ্চে বসার জন্য মারামারি করে তবে তোমরাই কী বলবে, আর স্যার কী বলবেন তাকে? এভাবে জাতির কোন উন্নয়ন হতে পারে না এমনকি আত্মমর্যাদা সহকারে ক্যারিয়ারও গঠন সম্ভব নয়। তাই নতুন করে সব ভাবতে হবে।
জীবনের লক্ষ্য কী হবে ?
ইতঃপূর্বে এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেছি, আজ একটু চুম্বক কথা বলছি। অনেকেই জীবনের লক্ষ্য হিসেবে এমন কিছু নিতে চায় যা দিয়ে মানুষের বেশি বেশি দৃষ্টিআকর্ষণ করা যায়। তার মানে তারকা খ্যাতি পাওয়া যায়। এখানেও কিন্তু কাজ করছে সেই অনুভূতিগুলো তা হলো প্রশংসা পাওয়া, খ্যাতি অর্জন ইত্যাদি। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো এই যেনতেন প্রকারে পৃথিবীতে খ্যাতি পাওয়া মানুষগুলোর দুনিয়ার জীবনটাই অধিকাংশ সময়ই সুখের হয় না। আর আখেরাতের খবরতো আল্লাহপাকই জানেন।
মাত্র ৫০ বছর বয়সে বিদায় নেয়া মাইকেল জ্যাকসনের কথাই বলা যাক। তার কিসের অভাব ছিল? তার সম্পদের পরিমাণ চিন্তা করা যায়? যুক্তরাজ্যের মিরর পত্রিকার খবর মতে, শুধুমাত্র জ্যাকসনের বাসভবন পাঁচ হাজার ৮০০ একর আয়তনের নেভারল্যান্ডের দাম হতে পারে ছয় কোটি পাউন্ড অর্থাৎ ছয় শ’ কোটি টাকা। ১৯৮৮ সালে পপসম্রাট এ খামার কিনেছিলেন। পিটার প্যানের কাল্পনিক এক দ্বীপের নামানুসারে ক্যালিফোর্নিয়ার এ খামারের নাম তিনি রাখেন নেভারল্যান্ড। ২০০৫ সাল পর্যন্ত এখানেই থাকতেন মাইকেল। ওয়েবসাইট।
তিনি এতটাই জনপ্রিয় ছিলেন যে তার মৃত্যুর পর শুধু ইয়াহু নিউজ সাইটেই ঢুঁ মারে এক কোটি ৬৪ লাখ নেট ব্যবহারকারী। এটা একটা রেকর্ড। এ ছাড়া গুগল নিউজ সাইটেও এত লোক হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল যে, প্রথমে ভেবেছিল তারা বুঝি সাইবার হামলার শিকার হয়েছে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।
কিন্তু তবু তিনি সুখী ছিলেন না। মাইকেল জ্যাকসনের হৃদয় আগেই জেনেছিল, তার শেষটাও তার সাবেক শ্বশুর এলভিস প্রিসলির মতই হবে। এলভিস প্রিসলির মেয়ে ও মাইকেল জ্যাকসনের সাবেক স্ত্রী লিসা মেরি এ কথা বলেছেন। মাইকেলকে তার আত্মবিধ্বংসী আচরণ থেকে নিজে বাঁচাতে পারেননি বলেই মূলত তাদের বিচ্ছেদ হয়। রক এন রোল এর প্রকৃত সম্রাট এলভিস প্রিসলির একমাত্র সন্তান লিসা জানান, একবার মৃত্যু নিয়ে জ্যাকসনের সঙ্গে তার কথা হয়েছিল। সেটা ছিল ১৯৭৭ সালের ১৬ আগস্ট। ‘জ্যাকসন আমার দিকে স্থির দৃষ্টিতে বড় বড় চোখে তাকিয়ে শান্ত গলায় থেমে থেমে বলল, আমি ভয় পাচ্ছি আমার জীবনও না ওর (এলভিস) মত করে শেষ হয়। যেভাবে সে মারা গেল।’ মাদকসেবনকারী এলভিস প্রিসলি মাত্র ৪২ বছর বয়সে মারা যান।
খ্যাতির লক্ষ্যে, তথাকথিত আরো সুন্দর আরো আকর্ষণীয় হওয়ার জন্য তিনি নিজের চেহারাতেও কাঁচি চালিয়ে অর্থাৎ প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে পরিবর্তন এনেছেন বারবার, নিচের ছবিগুলো থেকে তা বোঝা যাবে। নিজের দুঃখকে ঢেকে রাখার জন্য তিনি এতটাই পেরেশান ছিলেন যে প্রতি মাসে ৫০ হাজার ডলার অর্থাৎ প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার ব্যথানাশক ঔষধ খেতেন। অর্থাৎ প্রতিদিন প্রায় সোয়া লক্ষ টাকার ঔষধ। বিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। অবশেষে সব শেষ হয়ে গেল। শুধু জ্যাকসন নয়, দেশে-বিদেশে বাঁধভাঙা তারকাদের জীবন সুখের নয়। হয় অকাল মৃত্যু অথবা ডিভোর্স অথবা মারাত্মক মাদকাসক্তি তাদের নিত্য সঙ্গী। সুতরাং শুধুমাত্র দুনিয়ার খ্যাতিই মানুষের জীবনের লক্ষ্য হতে পারে না। এতে করে দুনিয়াতে হতে হবে খুবই অসুখী। আর আখেরাত, সেও কি ভালো হবে?
কানে কানে জিজ্ঞেস করছি এখন পর্যন্ত কি মনটা সেখান থেকে বইয়ের পাতায় ফিরেছে? প্রিয় কিশোর বন্ধুরা, চল না গত মাসটা একটু রিভিশন দিয়েই আমরা নতুন আলোচনায় যাই। ঠিক আছে?
‘ঢাকা কী জন্য বিখ্যাত?’
মাস দেড়েক আগে ঢাকায় কোন এক কৃতী ছাত্র সমাবেশে এমন এক বেসুরো প্রশ্ন করায় প্রায় সবাই সমস্বরে বলে উঠলো মসজিদের শহর। দু-একজন একটু তেড়ে বললো, আরে না না, এখন মূর্তির শহর। আমি বললাম নাহ্ কিচ্ছু হয়নি, এখন আম ও জামের শহর। সবাইতো অবাক, মুখে একরাশ বিরক্তি। অবশেষে থলের বেড়াল বের করলাম, আরে বুঝছো না আম মানে আমজনতা অর্থাৎ মানুষ আর মানুষ; আর জাম মানে জ্যাম শ্বাসরুদ্ধকর গাড়ির জ্যাম বা যানজট। সবাই হো হো করে একগাল হেসে নিল।
এই মুহূর্তে কিন্তু আগের উত্তরটা দিলে ওরা আমাকে ভীষণ ঝাড়ি (মানে রেগে বা তেড়ে উঠা-কথ্য ভাষায় ব্যবহৃত এখনও অভিধানে স্থান পায়নি, ঝামটার কাছাকাছি অর্থ) দিয়ে বসতো আরে ছ্যা, আপনি তো দেখছি কিচ্ছু জানেনও না এমনকি দেখেনও না। ঢাকা এখন পতাকার শহর। ও হ্যাঁ আরেকটু খোলাসা করে বলা যায় আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের পতাকার শহর। এই তো সেদিন উত্তরাগামী বাসের জন্য মগবাজার চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। ওমা! মাত্র ৫০-৬০ গজ রাস্তার দুই পার্শ্বে প্রায় ৬৮টি আর্জেন্টিনার এবং ২৫টির মতো ব্রাজিলের পতাকা লাগানো আছে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সারা দেশের একই চিত্র। ওদিকে গত ১৩ জুন ইত্তেফাক আজিজুর রহীম পিউ প্রেরিত একটি ছবিসহ নিউজ করে ‘পতাকায় ঢাকা রাস্তা’ এতে বলা হয় :
‘বিশ্বকাপ ফুটবল মানেই টান টান উত্তেজনা। … এই হাওয়ায় ভাসছে পুরো দেশ। গাড়ি-বাড়ি সর্বত্রই ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, ইতালি, ইংল্যান্ডের পতাকা শোভা পাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্জেন্টাইন সমর্থক ছাত্র-ছাত্রীরা প্রায় ৮০০ ফুট লম্বা পতাকা তৈরি করেছে। আর সেই পতাকা নিয়ে গতকাল তারা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। দেখে মনে হয় পতাকায় ঢাকা পড়ে গেছে ক্যাম্পাসের রাস্তা।’
বিশ্বকাপ ফুটবল : উত্তেজনা বনাম উন্মাদনা
ঠিক এই টাইপের শিরোনামে গত ১৩ জুন প্রথম আলোর একটি লেখা আমার দৃষ্টি কেড়ে নেয়। লেখক বাংলাদেশের এক নামকরা ব্যক্তিত্ব। তার সেই মজার লেখাটি থেকে তোমাদের একবারে বঞ্চিত করতে চাই না। তিনি হলেন মোহাম্মদ কায়কোবাদ, অধ্যাপক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ফেলো, বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। মনের আবেগ দিয়ে তিনি লিখেন :
বিশ্বকাপ নিয়ে আমাদের দেশে যে উত্তেজনা, প্রতিটি খেলা দেখার জন্য যে মহা-আয়োজন, এমনটি আর মনে হয় না অন্য কোনো দেশে হয়। ইংলিশ লিগ নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে লাঠালাঠি, মারামারি, গোলাগুলির ভূরি ভূরি উদাহরণ রয়েছে। এমনকি এই কর্মকাণ্ডগুলো বিদেশের মাটিতেও তারা করে থাকে। তবে বাংলাদেশের আকাশে বিশ্বের ফুটবল-দেশগুলোর যত পতাকা ওড়ানো হয়, তা শুধু ইংল্যান্ড কেন, বিশ্বের অন্য কোনো দেশেও ওড়ানো হয় কি না সন্দেহ। অস্ট্রেলিয়া অত্যন্ত নামকরা একটি খেলুড়ে দেশ। পৃথিবীর প্রতি ২০০ জনের মাত্র একজনের বাস এই দেশে, কিন্তু অলিম্পিক খেলায় এদের পদক প্রাপ্তির হার অনেক বেশি। অন্যান্য খেলায়ও দোর্দণ্ড প্রতাপ তাদের। কিন্তু তার পরও সেখানে ভিনদেশী কোনো পতাকা দেখি না ।… যত দূর জানি, আমাদের দেশীয় পতাকা যখন-তখন যত্রতত্র যে কেউ ওড়াতে পারে না। একটি বিধিবিধান মেনে চলতে হয়। গাড়িতে যে কেউ ওড়াতে পারে না। অবশ্য বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসে সাধারণ জনগণকে এই অধিকার দেয়া হয়েছে। বিদেশী পতাকা ওড়ানোর কি কোনো বিধিনিষেধ নেই?
ঢাকা শহরসহ শহরতলির আকাশ ধীরে ধীরে পতাকায় ছেয়ে যায়। এখানে একটি প্রতিযোগিতাও লক্ষ করা যাচ্ছে, কে কত বড় পতাকা ওড়াতে পারে। ফলে অধিকতর বড় পতাকায় বাংলাদেশের আকাশ ছেয়ে যাচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে পতাকাটি বাংলাদেশের নয়। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ইতালি, স্পেন, ফান্স, জার্মানির পতাকাই বেশি লক্ষণীয়। সবচেয়ে বেশি আর্জেন্টিনা। … এর নাকি মূল কারণ ম্যারাডোনা। খেলার মাঠে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের বুকে লাথি মেরেছেন, মাদক সেবন করেছেন, ঈশ্বরের হাত দিয়ে গোল করেছেন। তাহলে কী হবে, খেলোয়াড় তো ভালো ছিলেন। তাই মানুষ হিসেবে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলেও খেলোয়াড় হিসেবে সমর্থক বেশি। তাই আর্জেন্টিনার জনপ্রিয়তা বেশি। এর সঙ্গে অবশ্য ফকল্যান্ড পুনরুদ্ধারের সহমর্মিতাও কাজ করতে পারে। তার পরও ফুটবলামোদী মানুষের অনুভূতি বিচার-বিবেচনা-যুক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয় … ম্যারাডোনা-বন্দনার জন্য কোটি কোটি ফুটবল-উন্মত্ত মানুষ। আমার এক সহকর্মী বললেন, শুধু পতাকার পেছনে বাংলাদেশে ব্যয় হবে কমপক্ষে অর্ধশত কোটি টাকা (ভাগ্যিস, ব্রাজিল আর্জেন্টিনা আগে ভাগেই বিদায় নিয়েছিল, নইলে পতাকাকেন্দ্রিক খরচ এই হতদরিদ্র দেশের কয়েকশত কোটি টাকায় দাঁড়াতো, তার চাইতে বড় কথা খুনাখুনি হয়ে যেতে পারতো বিস্তর)। যে দেশের রাজধানীতে যখন-তখন দালান ধসে পড়ে আর আগুন লেগে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়, সে দেশে এই অর্থের অধিকতর যৌক্তিক ও মানবিক ব্যবহার হতে পারত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশপ্রেমের বীজ কখনো আমাদের মধ্যে রোপিত হয়নি। বিভিন্ন দেশে দেশসেবায় সুস্পষ্ট বিধিনিষেধ রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রত্যেক নাগরিককেই সেনাবাহিনী-সংশি-ষ্ট সেবাদান করতে হয়। এ রকম বিধান অন্যান্য দেশেও রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে নেই। হতে পারত এসএসসি কিংবা এইচএসসি পরীক্ষার পর বয়স্ক শিক্ষার কর্মসূচি, এমনকি রাস্তাঘাট, পার্ক পরিষ্কারের কিংবা অন্যান্য স্থানীয় উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে ছাত্রদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের মধ্যে দেশপ্রেমের প্রাতিষ্ঠানিক বীজ বপন। তাই দেশের প্রতি মায়ামমতা আমাদের নেই বললেই চলে। ভারতীয়রা বিদেশী পণ্য কিনতে লজ্জাবোধ করে আর আমরা লজ্জাবোধ করি দেশীয় পণ্য কিনতে। অবশ্য বিশ¡কাপ উপলক্ষে আরও বড় বড় অসংখ্য বিদেশী টিভি কিনে ফেলব। আমাদের খেটে খাওয়া বঞ্চিত মানুষের চিত্তবিনোদনের সুযোগ কম। তাও যদি আবার বাংলাদেশের টিভিতে হিন্দি ছবি আর গান করে চিত্তবিনোদন করতে হয়, তাহলে স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা আমাদের ভাষা, কৃষ্টি, ঐতিহ্য সর্বোপরি আমাদের দেশের সমৃদ্ধি কী করে ঘটাব? …বাংলাদেশের আকাশ দেখে আমাদের পতাকা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে না, বিশেষ করে বিদেশীরা নিশ্চয়ই খুবই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যাবে। আকাশে ওড়া পতাকা দেখে কোনোমতেই বলার সুযোগ নেই, আমরা আমাদের দেশ নিয়ে গর্বিত। এর মধ্যেও কিন্তু গর্বের একটি বিষয় রয়েছে, দরিদ্র খেটে খাওয়া ফেরিওয়ালার যে লাঠিতে বিক্রির জন্য নানা দেশের পতাকা ওড়ানো থাকবে, এর সর্বোচ্চ স্থানে থাকবে বাংলাদেশের পতাকা; যদিও সে জানে, ওই পতাকাটি কারও কেনার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এই ভাগ্যবিড়ম্বিত খেটে খাওয়া মানুষটাকে অভিবাদন জানাই। বিশ্বকাপের আসরে এর থেকে বড় কোনো বাংলাদেশী নেই।
উন্নয়ন-প্রতিকূল সংস্কৃতিতে দেশটি সয়লাব। দূরপাল-ার বাসে হিন্দি গান, বিয়ের আসরে হিন্দি গান, প্রতি রাতে ও দিনে বাসায় বাসায় হিন্দি ছবির অত্যাচার। কবে আমাদের দেশে উন্নয়ন-অনুকূল সংস্কৃতি জেগে উঠবে? তবে বিশ¡কাপের এই ঋতুতে প্রার্থনা একটিই, বিশ্বকাপকে উপলক্ষ করে দেশের ক্ষতি যাতে সর্বনিম্ন হয়, টেলিভিশন চালানোর বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে যাতে উৎপাদন ব্যাহত না হয়, খেলা দেখতে গিয়ে যাতে আমাদের স্কুল-কলেজ-বিশ¡বিদ্যালয়ের ক-াস, পরীক্ষা ও অন্যান্য শিক্ষা-সংশি-ষ্ট কর্মসূচি ব্যাহত না হয়, বিশ¡কাপের বিজয়ে প্রতিটি দেশের দর্শকদের উচ্ছ্বসিত হওয়া দেখে যাতে আমাদের মনে দেশপ্রেম জেগে ওঠে।
ফিফার মে মাসের র্যাংকিং অনুযায়ী প্রথম ১০টি দেশ হলো ব্রাজিল, স্পেন, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, জার্মানি, আর্জেন্টিনা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়া। ২০৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫৭, শ্রীলঙ্কার ১৫৯, নেপালের ১৬১, পাকিস্তানের ১৬৫, ভারতের ১৩৩, মালদ্বীপের ১৪২ ও মিয়ানমারের ১৪৭। আমাদের মতো বড় জনসংখ্যা নিয়ে এমন নিচু র্যাংকিং রয়েছে কেবল পাকিস্তানের। বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ মানুষ আমাদের উপমহাদেশে বাস করলেও কোনো দেশেরই র্যাংক সম্মানজনক নয়। এই গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যানকে অবহেলা করার সুযোগ নেই। এই খেলায় দর্শক হিসেবেই আমাদের আনন্দ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে এই আনন্দ যাতে কোনোক্রমেই আমাদের জাতিসত্তা, আমাদের দেশকে ক্ষুদ্র করে না হয়, সেদিকেও যতœবান হতে হবে। এই আনন্দ যাতে দেশের উৎপাদনকে ব্যাহত না করে, অন্যান্য কর্মকাণ্ডকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে। বিগত বিশ¡কাপগুলোতে আমরা দেখেছি, আমাদের অফিস-আদালতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাত্রাতিরিক্ত অনুপস্থিতি, কর্মে অনাগ্রহ। অধিক রাত জেগে খেলা দেখার ফলে শিল্প-কলকারখানার উৎপাদন ব্যাহত, অফিস-আদালতের কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা, স্কুল-কলেজ-বিশ¡বিদ্যালয়ের শিক্ষা কর্মসূচি ব্যাহত। এই বিশ¡সভায় আমরা কোনকালে প্রতিনিধিত্ব করতে পারব, তা খুবই আশাবাদী ফুটবলামোদীও বলতে পারবে না, কবে ‘আমার সোনার বাংলা’ সঙ্গীতটি সেখানে বেজে উঠবে। সেই বিশ¡কাপ নিয়ে উন্মাদনা, উত্তেজনা, উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত করা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
শুনেছি, মহাসম্পদশালী জাপানে বিশ¡কাপ দেখানো হয়, তবে যে খেলাগুলোতে জাপান থাকে। সে ধরনের নিয়ম পালন করলে অবশ্য আমরা কোনো দিনই হয়তো বিশ¡কাপের খেলা দেখতে পারব না। তবে এ ক্ষেত্রে একটি যৌক্তিক সমাধানে আসা উচিত। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটা শুধু দর্শকদের উন্মাদনা নয়, আমাদের সব গণমাধ্যমই বিশ¡কাপ নিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়বে। টেলিভিশনের নানা চ্যানেল দেশীয় ফুটবল বিশেষজ্ঞদের নিয়ে টক শো করবে, পুরস্কার পাওয়ার জন্য এসএমএস করার নানা সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি হবে। কোন খেলার দ্বিতীয়ার্ধে কোন খেলোয়াড়টি বেশি দৌড়াবে, গোলের ব্যবধান কত হবে, কতজন বদলি খেলোয়াড় খেলবে, কত দূর থেকে নেয়া শটে গোল হবে ইত্যাকার মহাগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে এসএমএস এবং যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য পুরস্কার। তাতে এসএমএস করে হাজার হাজার টাকা খরচ হবে। পত্রিকার পাতায় আসবে ফুটবল নিয়ে পরিসংখ্যানসমৃদ্ধ নানা লেখা। তা ছাড়া খেলোয়াড় ও তাদের বান্ধবীদের নিয়ে বাড়তি আনন্দের নানা ঘটনা, যার বাহুল্যে নিসন্দেহে চাপা পড়ে যাবে আমাদের নানা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
প্রিয় বন্ধুরা, তোমাদের অনেকের হয়তো কষ্ট লাগছে আমার সংগ্রহ করা এই কাঠখোট্টা কথাগুলো শুনে। তোমরা ছোট, তারপরও এই কষ্টের কথাগুলো তোমাদের বলছি তার কারণ কী? যাতে করে কুইনাইনের মতো তিক্ত হলেও তোমরা জীবনের বাস্তবতাটুকু বুঝতে পারো। অধ্যাপক কায়কোবাদ সাহেবের এই আবেগ দিয়ে লেখাটি প্রকাশের মাত্র এক সপ্তাহের ভেতরই তার আশঙ্কা বাস্তবায়ন করে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান বুয়েট বন্ধ হয়ে গেল রীতিমত মারামারি করে। অথচ যে দেশে বিশ্বকাপের এতো আয়োজন সেই দক্ষিণ আফ্রিকায় কোন বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু বন্ধ করতে হয়নি। দেখ কী দুর্ভাগ্য! বিদেশী সংবাদমাধ্যমসমূহ আমাদের কিভাবে চিত্রিত করছে, তোমরা আন্ডারলাইন ও বোল্ড করা অংশগুলো শুধু দেখ।
Associated Press, Updated : June 21, 2010 10 : 22 IST, Dhaka
A top public university in Bangladesh closed indefinitely after students clashed over whether to cancel classes to watch the FIFA World Cup.Bangladesh University of Engineering and Technology asked students to leave dormitories by Sunday to calm the situation, said Habibur Rahman, pro-vice chancellor of the university in the capital.
The decision was made late Saturday after at least five students were injured in violence between two groups of students.One group demanded an early summer vacation so they could watch football on television without any tension. They asked other students not to attend classes or take tests and locked the university’s main gate, prompting clashes with senior students who wanted classes to continue. No date has been set for when the university will reopen.Earlier this month, hundreds of angry football fans smashed vehicles in Dhaka after power outages interrupted live TV broadcasts of a World Cup match between Argentina and Nigeria.Football is the most popular sport in Bangladesh even though the South Asian nation has never qualified for any major international tournament.
যদিও বিশ্বের সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের তুলনায় বুয়েটের অবস্থান অনেক পেছনে, ৩৮০১ নাম্বারে। (Two leading public universities of the country-University of Dhaka (DU) and Bangladesh University of Engineering and Technology (BUET) have been ranked as 4922 and 3801 in global position respectively according to Webometrics January survey.)
কিন্তু তবু এই বুয়েট হচ্ছে বাংলাদেশের একটি গর্ব করার মতো প্রতিষ্ঠান ACM International Collegiate Programming Contest এ আমরা বুয়েটের পক্ষ থেকে সারা বিশ্বে ২০০০ এবং ২০০৮ সালে ১১তম স্থান অর্জন করেছি। এখানকার সাবেক ছাত্র বাংলাদেশের গর্ব ফজলুর রহমান খান যিনি ডিজাইন করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের এক সময়কার সর্বোচ্চ বিল্ডিং ১০৮ তলা বিশিষ্ট সিয়ারর্স টাওয়ার।
সত্য ঘটনা অবলম্বনে একটি কৌতুক দিয়েই শেষ করছি ‘খুচরা ব্যবসায়ী থেকে রেফারি হওয়া স্টিফেন ল্যান্নয় ২০ জুন আইভোরি কোস্ট বনাম ব্রাজিল ম্যাচে কাকাকে লাল কার্ড দেখান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাংলাদেশের কোন এক এলাকার মানুষ রাস্তা অবরোধ এমনকি গাড়ি ভাঙচুর পর্যন্ত করে। পুলিশ দু-একজনকে আটক করে কিছু প্যাদানি দিয়ে জিজ্ঞেস করে খেলা হচ্ছে দক্ষিণ আফিকায় লাল কার্ড পেল ব্রাজিলের কাকা তুমি বাংলাদেশের গাড়ি ভাঙ্গছো কেন। ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীর উত্তর ‘আজকে রেফারি কাকাকে লাল কার্ড দেখিয়েছে কালকে বাবাকে (মানে আব্বা) দেখাবে না তার কী গ্যারান্টি আছে? হা হা হা…। একেইতো বলে ‘চিলে কান নিলরে- দে দৌড়’। তাই বোধ হয় প্রাচীনকাল থেকে মুরব্বিরা এ জাতির একটি উপাধি দিয়েছেন ‘হুজুগে বাঙ্গাল’। এতোগুলো কথা কেন বলছি, কারণ ইতোমধ্যেই এ খেলার জন্য এলাকায় এলাকায় মিছিল, পাল্টা মিছিল এমকি যুদ্ধ পরিণতিতে মারাত্মক আহত ও জীবনও দিতে হয়েছে এদেশের মানুষদের। আচ্ছা তোমরাই বলো, এমনিতেই মারামারি খুব খারাপ কাজ, নয় কি? ধরো, তোমার ক্লাসের যে ছেলেটির রোল নম্বর ১৫৭ সে যদি ফার্স্ট বেঞ্চে বসার জন্য মারামারি করে তবে তোমরাই কী বলবে, আর স্যার কী বলবেন তাকে? এভাবে জাতির কোন উন্নয়ন হতে পারে না এমনকি আত্মমর্যাদা সহকারে ক্যারিয়ারও গঠন সম্ভব নয়। তাই নতুন করে সব ভাবতে হবে।
জীবনের লক্ষ্য কী হবে ?
ইতঃপূর্বে এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেছি, আজ একটু চুম্বক কথা বলছি। অনেকেই জীবনের লক্ষ্য হিসেবে এমন কিছু নিতে চায় যা দিয়ে মানুষের বেশি বেশি দৃষ্টিআকর্ষণ করা যায়। তার মানে তারকা খ্যাতি পাওয়া যায়। এখানেও কিন্তু কাজ করছে সেই অনুভূতিগুলো তা হলো প্রশংসা পাওয়া, খ্যাতি অর্জন ইত্যাদি। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো এই যেনতেন প্রকারে পৃথিবীতে খ্যাতি পাওয়া মানুষগুলোর দুনিয়ার জীবনটাই অধিকাংশ সময়ই সুখের হয় না। আর আখেরাতের খবরতো আল্লাহপাকই জানেন।
মাত্র ৫০ বছর বয়সে বিদায় নেয়া মাইকেল জ্যাকসনের কথাই বলা যাক। তার কিসের অভাব ছিল? তার সম্পদের পরিমাণ চিন্তা করা যায়? যুক্তরাজ্যের মিরর পত্রিকার খবর মতে, শুধুমাত্র জ্যাকসনের বাসভবন পাঁচ হাজার ৮০০ একর আয়তনের নেভারল্যান্ডের দাম হতে পারে ছয় কোটি পাউন্ড অর্থাৎ ছয় শ’ কোটি টাকা। ১৯৮৮ সালে পপসম্রাট এ খামার কিনেছিলেন। পিটার প্যানের কাল্পনিক এক দ্বীপের নামানুসারে ক্যালিফোর্নিয়ার এ খামারের নাম তিনি রাখেন নেভারল্যান্ড। ২০০৫ সাল পর্যন্ত এখানেই থাকতেন মাইকেল। ওয়েবসাইট।
তিনি এতটাই জনপ্রিয় ছিলেন যে তার মৃত্যুর পর শুধু ইয়াহু নিউজ সাইটেই ঢুঁ মারে এক কোটি ৬৪ লাখ নেট ব্যবহারকারী। এটা একটা রেকর্ড। এ ছাড়া গুগল নিউজ সাইটেও এত লোক হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল যে, প্রথমে ভেবেছিল তারা বুঝি সাইবার হামলার শিকার হয়েছে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।
কিন্তু তবু তিনি সুখী ছিলেন না। মাইকেল জ্যাকসনের হৃদয় আগেই জেনেছিল, তার শেষটাও তার সাবেক শ্বশুর এলভিস প্রিসলির মতই হবে। এলভিস প্রিসলির মেয়ে ও মাইকেল জ্যাকসনের সাবেক স্ত্রী লিসা মেরি এ কথা বলেছেন। মাইকেলকে তার আত্মবিধ্বংসী আচরণ থেকে নিজে বাঁচাতে পারেননি বলেই মূলত তাদের বিচ্ছেদ হয়। রক এন রোল এর প্রকৃত সম্রাট এলভিস প্রিসলির একমাত্র সন্তান লিসা জানান, একবার মৃত্যু নিয়ে জ্যাকসনের সঙ্গে তার কথা হয়েছিল। সেটা ছিল ১৯৭৭ সালের ১৬ আগস্ট। ‘জ্যাকসন আমার দিকে স্থির দৃষ্টিতে বড় বড় চোখে তাকিয়ে শান্ত গলায় থেমে থেমে বলল, আমি ভয় পাচ্ছি আমার জীবনও না ওর (এলভিস) মত করে শেষ হয়। যেভাবে সে মারা গেল।’ মাদকসেবনকারী এলভিস প্রিসলি মাত্র ৪২ বছর বয়সে মারা যান।
খ্যাতির লক্ষ্যে, তথাকথিত আরো সুন্দর আরো আকর্ষণীয় হওয়ার জন্য তিনি নিজের চেহারাতেও কাঁচি চালিয়ে অর্থাৎ প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে পরিবর্তন এনেছেন বারবার, নিচের ছবিগুলো থেকে তা বোঝা যাবে। নিজের দুঃখকে ঢেকে রাখার জন্য তিনি এতটাই পেরেশান ছিলেন যে প্রতি মাসে ৫০ হাজার ডলার অর্থাৎ প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার ব্যথানাশক ঔষধ খেতেন। অর্থাৎ প্রতিদিন প্রায় সোয়া লক্ষ টাকার ঔষধ। বিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। অবশেষে সব শেষ হয়ে গেল। শুধু জ্যাকসন নয়, দেশে-বিদেশে বাঁধভাঙা তারকাদের জীবন সুখের নয়। হয় অকাল মৃত্যু অথবা ডিভোর্স অথবা মারাত্মক মাদকাসক্তি তাদের নিত্য সঙ্গী। সুতরাং শুধুমাত্র দুনিয়ার খ্যাতিই মানুষের জীবনের লক্ষ্য হতে পারে না। এতে করে দুনিয়াতে হতে হবে খুবই অসুখী। আর আখেরাত, সেও কি ভালো হবে?
========================
ইসলামী গল্প- 'সেনাপতির নির্দেশ' by কায়েস মাহমুদ ইসলামী গল্প- 'বয়ে যায় নিরন্তর' by কায়েস মাহমুদ ইসলামী গল্প- 'ভালোবাসার বিশাল' by আকাশ কায়েস মাহমুদ গল্প- 'একজন ভোলা চাচা' by দিলারা মেসবাহ গল্প- 'বীথির ভাবনা' by হেলাল আরিফীন গল্প- 'স্বপ্ন' by তাওহীদুর রহমান গল্প- 'আবিরের মাধবী লতা' by নিয়াজুল হাসান জুয়েল মোল্লা ফিচার- 'ঝাড়ুদার মাছ' by আরিফ হাসান গল্প- 'এগিয়ে যাবার স্বপ্ন' by মাহফুজা জাহান তাকিয়া গল্প- 'লাল ফ্রক' by আবু রায়হান মিকাঈল প্রবন্ধ- ‘আর নয় শিশুশ্রম' by জাকারিয়া হাবিব পাইলট কিশোর ফিচার- 'আমার ঘুড়ি আকাশ জুড়ি' by মাসুম কবির কিশোর ফিচার- 'চাই চীনাবাদাম' by শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া আলোচনা- 'ধর্মীয় আবেগের আচ্ছাদনে রাজনীতি' by এবিএম মূসা অদ্ভুত ফিচার- 'সাপের সঙ্গে বসবাস' কিশোর আলোচনা- 'দুর্ভাগা হিরোশিমা-নাগাসাকি' by মীর আমজাদ আলী কল্পিত বিজ্ঞান কাহিনী- 'আবিষ্কার কাজী' by মাসুম বিল্লাহ কল্পিত বিজ্ঞান কাহিনী- 'ছায়াহীন আগন্তুক' by আমিনুল ইসলাম আকন্দ কল্পিত বিজ্ঞান কাহিনী- 'জায়ান্ট হান্টার' by মহিউদ্দিন আকবর গল্প- 'হাসে বাঁকা চাঁদ' by আহসান হাবিব বুলবুল গল্প- 'বড়বাড়ির জঙ্গলে' by শরীফ আবদুল গোফরান
কিশোরকন্ঠ এর সৌজন্যে
লেখকঃ আহসান হাবীব ইমরোজ
এই ফিচার'টি পড়া হয়েছে...
No comments