চাঁদে পানিসহ রাসায়নিক উপাদানের প্রমাণ
চাঁদে ধারণার চেয়ে অনেক বেশি পানি থাকার প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এ পানি রয়েছে মূলত বরফকণার আকারে। পানির পাশাপাশি পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহে বিপুল পরিমাণ মিথেন, অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন গ্যাস ও পারদের মতো কিছু অপ্রত্যাশিত রাসায়নিক উপাদানেরও অস্তিত্ব মিলেছে। গত বছর চাঁদের একটি গভীর গহ্বরে রকেট ও অনুসন্ধান যানের যুগপৎ বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ওই বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ভবিষ্যতে চাঁদে অভিযানে যাওয়া নভোচারীদের সেখানে টিকে থাকার ক্ষেত্রে এই পানি খুবই কাজে লাগবে। সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা সায়েন্স সাময়িকীকে বলেছেন, ২০০৯ সালের অক্টোবরে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ওই রকেটটির বিস্ফোরণ ঘটানোয় নয় থেকে ১৩ হাজার পাউন্ড পাথর, ধুলা ও অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ ঊর্ধ্বে উৎক্ষিপ্ত হয়। এটি বিশ্লেষণ নাসার অ্যামেস গবেষণা কেন্দ্রের গবেষক অ্যান্থনি কলাপ্রেট বলেন, ‘চাঁদে খুশি হওয়ার মতো পরিমাণে পানি রয়েছে। বরফকণা আকারে থাকা এ পানি গলাতে খুব বেশি তাপ দিতে হবে না। ভূগর্ভ থেকে উঠিয়ে ঘরের তাপমাত্রায় রাখলেই ধীরে ধীরে মাটি থেকে আলাদা হয়ে যাবে পানি।’ তিনি বলেন, ‘পাঁচ শতাংশ বরফসমৃদ্ধ এক টন মাটি থেকে ১১-১২ গ্যালন পানি উৎপাদন সম্ভব।’রকেট বিস্ফোরণের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে দেখা গেছে, বিস্ফোরণের পর সৃষ্ট ধূলিকণার ২০ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের তরল উপাদান দিয়ে গঠিত। এর মধ্যে রয়েছে মিথেন, অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন গ্যাস, কার্বন ডাই-অক্সাইড ও কার্বন মনোক্সাইড। বিপুল পরিমাণে পারদও রয়েছে, যাতে বিজ্ঞানীরা কিছুটা হতাশ। পারদ কিছুটা বিপজ্জনক ধাতু বলে চাঁদে মানুষের স্বস্তিতে অনুসন্ধান চালানো একটু কঠিন হবে। এ ছাড়া খুব সামান্য রুপারও অস্তিত্ব মিলেছে। চাঁদে পানিসমৃদ্ধ মাটির অবস্থান এমন একটি জায়গায়, যেখানে তাপমাত্রা নির্ণয় করা হয়েছে মাইনাস ২৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ রকম অবস্থায় শত শত কোটি বছর ধরে বরফ স্থায়ী থাকতে পারে। গবেষণায় ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, বছরে কিছু সময় সূর্যের আলো পড়ে চাঁদের এমন স্থানেও পানির অস্তিত্ব থাকতে পারে, যদি তা ভূগর্ভে বরফ আকারে সঞ্চিত থেকে থাকে। গবেষক দলের সদস্য ডেভিড পেইজ বলেছেন, এই আবিষ্কারের ফলে ভবিষ্যতে চাঁদে অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে আরও সুবিধা হবে।করে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় পানির প্রমাণ পাওয়া গেছে। রকেটের বিস্ফোরণে ৮০ থেকে ১০০ ফুট চওড়া বিশাল গর্ত তৈরি হয়। গত বৃহস্পতিবার সায়েন্স সাময়িকীতে এটি প্রকাশিত হয়েছে।
No comments