এবার দুঙ্গা সত্যিই কাঠগড়ায়
‘সাউদাদে’ বলে পর্তুগিজ ভাষায় বহুল প্রচলিত একটা শব্দ আছে। শব্দটার হুবহু অর্থ করা কঠিন। বলা যায়, হারিয়ে যাওয়া সুযোগের জন্য হাহাকার করা। ১৯৮২ বিশ্বকাপের ব্রাজিল দলের ক্ষেত্রে শব্দটার প্রয়োগ চলে।
নিশ্চিত করে বলা যায়, এবার আর ব্রাজিলের কোনো সংবাদমাধ্যম, কোনো বিশেষজ্ঞ এই শব্দটা উচ্চারণ করবেন না। গতকাল বিকেল নাগাদ ব্রাজিল দল যখন দেশে ফিরেছে, তখন নিশ্চিত করেই তাদের জন্য অপেক্ষা করে ছিল শুধু দুয়োধ্বনি।
১৮ বিশ্বকাপের ১৩টিতেই তো ব্রাজিল শিরোপা জেতেনি। কিন্তু এমন আওয়াজ সব সময়ই উঠেছে, তা নয়। ব্রাজিলের এই দলটা নিয়ে ব্রাজিলিয়ানদের অভিযোগের অন্ত নেই। প্রধান এবং প্রথম অভিযোগ, তারা সুন্দর ফুটবল খেলে না। এতকাল সাফল্যের নেশায় অনেকে কার্লোস দুঙ্গার এই ‘অন্যায়’ মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু সুন্দর ফুটবলও খেলবে না, ট্রফিও আসবে না; দুই বঞ্চনা ব্রাজিলিয়ানরা সহ্য করার কথা নয়!
আসলে সাফল্যই একটা হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল দুঙ্গার। নতুবা খেলোয়াড়ি জীবনের মতো কোচিং জীবনের শুরু থেকেই অসুন্দর ফুটবল খেলার জন্য দারুণ সমালোচিত হচ্ছিলেন তিনি। ১৯৭০ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কার্লোস আলবার্তো, কিংবদন্তি পেলে কিংবা সক্রেটিস; দুঙ্গার এই ফুটবলকে কেউই মেনে নিতে পারছিলেন না।
সমালোচনা শুধু সুন্দর ফুটবলকে বিসর্জন দেওয়া নিয়েই ছিল না। সমালোচনা ছিল দুঙ্গার দল নির্বাচন নিয়েও। বিশেষ করে দলে সৃজনশীল মিডফিল্ডার নিয়ে সমালোচনা চলছিল। দুঙ্গা তাঁর ২৩ সদস্যের দলে আক্রমণভাগের খেলোয়াড় নিয়েছিলেন মাত্র চারজন। সৃজনশীল মিডফিল্ডার বলতেও দুজনের বেশি ছিলেন না। মূলত সৃজনশীল খেলার জন্য দুঙ্গার মাঝমাঠ নির্ভর করেছিল শুধু কাকার ওপর। সেই কাকা আবার চোট-আঘাতের জের বয়ে বেড়াচ্ছিলেন।
ফর্মে থাকা রোনালদিনহোকে বাদ দিয়ে ম্যানইউ মিডফিল্ডার ক্লেবারসনকে নেওয়া বা সান্তোসের তরুণ তুর্কি পাউলো হেরিকে গানসোকে উপেক্ষা করাটা কেউ সহজভাবে নিতে পারেননি। এই বিশ্বকাপে দারুণ ব্যর্থতার পর ১৯৭০ বিশ্বকাপের বিজয়ী অধিনায়ক ‘ক্যাপ্টেন’ কার্লোস আলবার্তো আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন দুঙ্গার এই দল নির্বাচন নিয়ে ত্রুটির কথা, ‘সে বিশ্বকাপে দল নিয়ে যাওয়ার সময় শুধু একটা একতাবদ্ধ, একমতের খেলোয়াড়ের কথাই ভাবল। এটা একটা নির্বোধের মতো কাজ। জাতীয় দল সেরাদের জায়গা। ওর এই দর্শনের কারণে, ও সান্তোসের ওই ছেলেটাকে, যে এখন খুব ভালো ফর্মে আছে, তাকে নিল না। সঙ্গে বিশ্বকাপের মতো আসরে খুব প্রয়োজন, এমন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দেরও নিল না।’
আলবার্তোর বলা এই কথাগুলোই এত দিন ধরে বলে আসছে ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম। দুঙ্গার এই নির্বাচন-নীতি, খেলার ধরন নিয়ে সে দেশের সংবাদমাধ্যমের সমালোচনার কারণে কোচের সঙ্গে তাদের সম্পর্কও চরম খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এমনকি অনুশীলনে সাংবাদিকদের নিষিদ্ধও করেছিলেন দুঙ্গা।
তবে সবকিছুর পরও দুঙ্গাই জিতছিলেন। অন্তত দুটো ট্রফি দুঙ্গার কেশাগ্র স্পর্শ করার সুযোগ দিচ্ছিল না। খেলা যা-ই হোক, দুঙ্গা তো এনে দিয়েছেন কোপা আমেরিকা ও কনফেডারেশনস কাপ।
তবে দুঙ্গাও জানতেন, বিশ্বকাপটা জিততে না পারলে তীরবিদ্ধ হতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় এসেও অভিযোগ করেছেন, ব্রাজিল থেকে সাংবাদিকেরা নাকি এসেছেন দুঙ্গার পরাজয়ে আনন্দ করার জন্য।
সেই ‘আনন্দ’ করার সুযোগটা এবার পেয়ে গেলেন সাংবাদিকেরা। পদত্যাগ করেছেন দুঙ্গা। কিন্তু রেহাই মিলবে বলে মনে হয় না। সুন্দর ফুটবল মেরে ফেলার জন্য তাঁর গায়ে তীর বিঁধবে, সবচেয়ে বেশি তীর এসে বিঁধবে ব্রাজিলকে বদলে ফেলেও খালি হাতে ফেরার অপরাধে।
নিশ্চিত করে বলা যায়, এবার আর ব্রাজিলের কোনো সংবাদমাধ্যম, কোনো বিশেষজ্ঞ এই শব্দটা উচ্চারণ করবেন না। গতকাল বিকেল নাগাদ ব্রাজিল দল যখন দেশে ফিরেছে, তখন নিশ্চিত করেই তাদের জন্য অপেক্ষা করে ছিল শুধু দুয়োধ্বনি।
১৮ বিশ্বকাপের ১৩টিতেই তো ব্রাজিল শিরোপা জেতেনি। কিন্তু এমন আওয়াজ সব সময়ই উঠেছে, তা নয়। ব্রাজিলের এই দলটা নিয়ে ব্রাজিলিয়ানদের অভিযোগের অন্ত নেই। প্রধান এবং প্রথম অভিযোগ, তারা সুন্দর ফুটবল খেলে না। এতকাল সাফল্যের নেশায় অনেকে কার্লোস দুঙ্গার এই ‘অন্যায়’ মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু সুন্দর ফুটবলও খেলবে না, ট্রফিও আসবে না; দুই বঞ্চনা ব্রাজিলিয়ানরা সহ্য করার কথা নয়!
আসলে সাফল্যই একটা হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল দুঙ্গার। নতুবা খেলোয়াড়ি জীবনের মতো কোচিং জীবনের শুরু থেকেই অসুন্দর ফুটবল খেলার জন্য দারুণ সমালোচিত হচ্ছিলেন তিনি। ১৯৭০ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কার্লোস আলবার্তো, কিংবদন্তি পেলে কিংবা সক্রেটিস; দুঙ্গার এই ফুটবলকে কেউই মেনে নিতে পারছিলেন না।
সমালোচনা শুধু সুন্দর ফুটবলকে বিসর্জন দেওয়া নিয়েই ছিল না। সমালোচনা ছিল দুঙ্গার দল নির্বাচন নিয়েও। বিশেষ করে দলে সৃজনশীল মিডফিল্ডার নিয়ে সমালোচনা চলছিল। দুঙ্গা তাঁর ২৩ সদস্যের দলে আক্রমণভাগের খেলোয়াড় নিয়েছিলেন মাত্র চারজন। সৃজনশীল মিডফিল্ডার বলতেও দুজনের বেশি ছিলেন না। মূলত সৃজনশীল খেলার জন্য দুঙ্গার মাঝমাঠ নির্ভর করেছিল শুধু কাকার ওপর। সেই কাকা আবার চোট-আঘাতের জের বয়ে বেড়াচ্ছিলেন।
ফর্মে থাকা রোনালদিনহোকে বাদ দিয়ে ম্যানইউ মিডফিল্ডার ক্লেবারসনকে নেওয়া বা সান্তোসের তরুণ তুর্কি পাউলো হেরিকে গানসোকে উপেক্ষা করাটা কেউ সহজভাবে নিতে পারেননি। এই বিশ্বকাপে দারুণ ব্যর্থতার পর ১৯৭০ বিশ্বকাপের বিজয়ী অধিনায়ক ‘ক্যাপ্টেন’ কার্লোস আলবার্তো আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন দুঙ্গার এই দল নির্বাচন নিয়ে ত্রুটির কথা, ‘সে বিশ্বকাপে দল নিয়ে যাওয়ার সময় শুধু একটা একতাবদ্ধ, একমতের খেলোয়াড়ের কথাই ভাবল। এটা একটা নির্বোধের মতো কাজ। জাতীয় দল সেরাদের জায়গা। ওর এই দর্শনের কারণে, ও সান্তোসের ওই ছেলেটাকে, যে এখন খুব ভালো ফর্মে আছে, তাকে নিল না। সঙ্গে বিশ্বকাপের মতো আসরে খুব প্রয়োজন, এমন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দেরও নিল না।’
আলবার্তোর বলা এই কথাগুলোই এত দিন ধরে বলে আসছে ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম। দুঙ্গার এই নির্বাচন-নীতি, খেলার ধরন নিয়ে সে দেশের সংবাদমাধ্যমের সমালোচনার কারণে কোচের সঙ্গে তাদের সম্পর্কও চরম খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এমনকি অনুশীলনে সাংবাদিকদের নিষিদ্ধও করেছিলেন দুঙ্গা।
তবে সবকিছুর পরও দুঙ্গাই জিতছিলেন। অন্তত দুটো ট্রফি দুঙ্গার কেশাগ্র স্পর্শ করার সুযোগ দিচ্ছিল না। খেলা যা-ই হোক, দুঙ্গা তো এনে দিয়েছেন কোপা আমেরিকা ও কনফেডারেশনস কাপ।
তবে দুঙ্গাও জানতেন, বিশ্বকাপটা জিততে না পারলে তীরবিদ্ধ হতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় এসেও অভিযোগ করেছেন, ব্রাজিল থেকে সাংবাদিকেরা নাকি এসেছেন দুঙ্গার পরাজয়ে আনন্দ করার জন্য।
সেই ‘আনন্দ’ করার সুযোগটা এবার পেয়ে গেলেন সাংবাদিকেরা। পদত্যাগ করেছেন দুঙ্গা। কিন্তু রেহাই মিলবে বলে মনে হয় না। সুন্দর ফুটবল মেরে ফেলার জন্য তাঁর গায়ে তীর বিঁধবে, সবচেয়ে বেশি তীর এসে বিঁধবে ব্রাজিলকে বদলে ফেলেও খালি হাতে ফেরার অপরাধে।
No comments