স্বপ্ন হারিয়ে কাঁদছে ব্রাজিল
হঠাৎ নিস্তব্ধ হয়ে গেল রিও ডি জেনিরো। একটু আগেও প্রচণ্ড শব্দ তুলে বাজতে থাকা ভুভুজেলার আওয়াজ থেমে গেল, থেমে গেল সব কোলাহল। কী এক অভিশপ্ত নিস্তব্ধতায় আচ্ছন্ন কোপাকাবানা সৈকত। হাজার পঞ্চাশেক মানুষ মাথা নিচু করে হেঁটে চলেছে কোথায়। কারও মুখে কথা নেই, শুধু কান্না।
হ্যাঁ, কান্না। ব্রাজিলের জন্য দিনটা কান্না নিয়েই এসেছিল। রাস্তার ভবঘুরে থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি লুলা ডা সিলভা, উন্মাতাল সমর্থক থেকে শুরু করে নিরাবেগ সাংবাদিক—সব ব্রাজিলিয়ানের জন্য এক কান্নার উপলক্ষ তৈরি করে দিয়েছিল কার্লোস দুঙ্গার দল।
টেলিভিশন ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে সেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন ‘টিভি গ্লোবো’র নামকরা ধারাভাষ্যকার গ্যালভাও। কান্নাজড়ানো কণ্ঠে শুধু বললেন, ‘সত্যিকারের এক দুঃস্বপ্ন’! এই দুঃস্বপ্নটা ব্রাজিলের কোটি কোটি মানুষের মতো টেলিভিশনের সামনে বসে দেখেছেন দেশের রাষ্ট্রপতি লুলা ডা সিলভা।
কত স্বপ্ন নিয়ে দলকে বিশ্বকাপের আগে বিদায় জানিয়েছিলেন। হলুদ জার্সি পরে, ভুভুজেলা বাজিয়ে নিজের সমর্থন জানিয়েছেন। ‘হেক্সা’র স্বপ্নের কথা বলেছেন বারবার। হল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর আর সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজে কথা বলতে এলেনই না।
তবে তাঁর সঙ্গে বসে খেলা দেখা ব্রাজিল প্রেসিডেন্টের ক্যাবিনেট-বিষয়ক প্রধান জিলবার্তো কারভালহো জানিয়েছেন, লুলা একদম ভেঙে পড়েছেন, বিস্মিত হয়ে গেছেন, ‘দ্বিতীয়ার্ধে দলের এ রকম ধসে পড়া দেখে উনি মারাত্মক ধাক্কা খেয়েছেন। খেলোয়াড়েরা কীভাবে এমন মানসিকভাবে এলোমেলো হয়ে গেল সেটা বোঝার চেষ্টা করছিলেন। উনি বলছিলেন, কিছু খেলোয়াড় প্রত্যাশার চেয়ে খারাপ খেলেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব মিলিয়ে আমরা ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে পারছি না।’
কে বিশ্বাস করতে পারছে? ব্রাজিল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন, এমন বিদায় অবিশ্বাস করার একমাত্র কারণ তো এটা না। কার্লোস দুঙ্গার এই ব্রাজিল কী করে হল্যান্ডের কাছে হারে! দুঙ্গার দল তো হারতেই ভুলে গিয়েছিল, তারা কেন মাথা নিচু করে ফিরবে!
কোপাকাবানা বিচে প্রতিদিনের মতোই হাজার পঞ্চাশেক লোক জড়ো হয়েছিল বিশাল পর্দায় খেলা দেখার জন্য। উৎসবের সব প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু উৎসব থেমে গেল ওয়েসলি স্নাইডারের দ্বিতীয় গোলের পরই। খেলা শেষে শুরু হলো কান্না।
নিরাবেগ সাংবাদিকেরা চেষ্টা করছিলেন কাঁদতে থাকা এই জনসমুদ্রের মুখের কথা শুনতে। কিন্তু বেশির ভাগই কথা বলতে পারছিল না। দু-একজন যা মুখ খুলল, সে মুখে শুধু দুঙ্গা আর মেলোর প্রতি শাপশাপান্ত। ‘সব দোষ দুঙ্গার’—এমন সমালোচনাও করছে দেশটির সাধারণ মানুষ। সমালোচনা হচ্ছে রোনালদিনহো আর নেইমারকে দলে না নেওয়ায়।
শাপশাপান্ত না করলেও দলের এলোমেলো অবস্থা দেখে হতভম্ব হয়ে গেছেন সাবেক ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার ওয়াল্টার কাসাগ্রান্দে জুনিয়র, ‘খেলায় সমতা আসার পর থেকে দলটা যেমন করে মানসিকভাবে পুরোপুরি এলোমেলো হয়ে গেল, সেটা দেখে আমি স্রেফ হতভম্ব হয়ে গেছি।’
এখন থেকে ১১ জুলাই ফাইনাল পর্যন্ত হল্যান্ডকেই সমর্থন দিয়ে যাবেন বলে জানালেন আরেক ব্রাজিল সমর্থক। কেন? ‘কারণ সেটি হবে আমাদের জন্য সান্ত্বনা যে আমরা চ্যাম্পিয়ন দলটার কাছেই হেরেছি’—আদ্রিয়ানো আন্তোনিও নামের পেশায় আইনজীবী আর নেশায় ফুটবল-সমর্থকের ব্যাখ্যা।
কিন্তু এটাও কি সান্ত্বনা হতে পারে আসলে? কান্না তাই এত সহজে ব্রাজিলের পিছু ছাড়ছে না। পরপর দুটো বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ফেরার শোক ভুলতে সময় লাগবে। তার পরও আশায় দিন যায়। আশায় দিন কাটানোর সান্ত্বনাই নিজেকে দিচ্ছেন অনেক ব্রাজিলিয়ান।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চেলসো আমোরিম ভেঙে পড়েছেন। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বসে খেলা দেখা আমোরিম তার পরও স্বপ্ন দেখতে চান, ‘ব্রাজিলের প্রতিটি মানুষের মতো আমাদেরও মন খুব খারাপ। কিন্তু এই হারে সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। আমরা আগামীবার জিতব।’
আগামীবারের জন্য আসলে স্বপ্ন বুনছে পুরো ব্রাজিল। ২০১৪ বিশ্বকাপ যে হবে তাদেরই দেশে। আন্তোনিও যেমন বলছিলেন, ‘এরপর আমরা নিজেদের মাঠে খেলব, শিরোপা জিততে আমরা বাধ্য। আমি নিশ্চিত ২০১৪ সালের আমাদের আকাঙ্ক্ষিত ষষ্ঠ শিরোপা আমরা ঘরে তুলব।’
হ্যাঁ, কান্না। ব্রাজিলের জন্য দিনটা কান্না নিয়েই এসেছিল। রাস্তার ভবঘুরে থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি লুলা ডা সিলভা, উন্মাতাল সমর্থক থেকে শুরু করে নিরাবেগ সাংবাদিক—সব ব্রাজিলিয়ানের জন্য এক কান্নার উপলক্ষ তৈরি করে দিয়েছিল কার্লোস দুঙ্গার দল।
টেলিভিশন ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে সেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন ‘টিভি গ্লোবো’র নামকরা ধারাভাষ্যকার গ্যালভাও। কান্নাজড়ানো কণ্ঠে শুধু বললেন, ‘সত্যিকারের এক দুঃস্বপ্ন’! এই দুঃস্বপ্নটা ব্রাজিলের কোটি কোটি মানুষের মতো টেলিভিশনের সামনে বসে দেখেছেন দেশের রাষ্ট্রপতি লুলা ডা সিলভা।
কত স্বপ্ন নিয়ে দলকে বিশ্বকাপের আগে বিদায় জানিয়েছিলেন। হলুদ জার্সি পরে, ভুভুজেলা বাজিয়ে নিজের সমর্থন জানিয়েছেন। ‘হেক্সা’র স্বপ্নের কথা বলেছেন বারবার। হল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর আর সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজে কথা বলতে এলেনই না।
তবে তাঁর সঙ্গে বসে খেলা দেখা ব্রাজিল প্রেসিডেন্টের ক্যাবিনেট-বিষয়ক প্রধান জিলবার্তো কারভালহো জানিয়েছেন, লুলা একদম ভেঙে পড়েছেন, বিস্মিত হয়ে গেছেন, ‘দ্বিতীয়ার্ধে দলের এ রকম ধসে পড়া দেখে উনি মারাত্মক ধাক্কা খেয়েছেন। খেলোয়াড়েরা কীভাবে এমন মানসিকভাবে এলোমেলো হয়ে গেল সেটা বোঝার চেষ্টা করছিলেন। উনি বলছিলেন, কিছু খেলোয়াড় প্রত্যাশার চেয়ে খারাপ খেলেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব মিলিয়ে আমরা ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে পারছি না।’
কে বিশ্বাস করতে পারছে? ব্রাজিল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন, এমন বিদায় অবিশ্বাস করার একমাত্র কারণ তো এটা না। কার্লোস দুঙ্গার এই ব্রাজিল কী করে হল্যান্ডের কাছে হারে! দুঙ্গার দল তো হারতেই ভুলে গিয়েছিল, তারা কেন মাথা নিচু করে ফিরবে!
কোপাকাবানা বিচে প্রতিদিনের মতোই হাজার পঞ্চাশেক লোক জড়ো হয়েছিল বিশাল পর্দায় খেলা দেখার জন্য। উৎসবের সব প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু উৎসব থেমে গেল ওয়েসলি স্নাইডারের দ্বিতীয় গোলের পরই। খেলা শেষে শুরু হলো কান্না।
নিরাবেগ সাংবাদিকেরা চেষ্টা করছিলেন কাঁদতে থাকা এই জনসমুদ্রের মুখের কথা শুনতে। কিন্তু বেশির ভাগই কথা বলতে পারছিল না। দু-একজন যা মুখ খুলল, সে মুখে শুধু দুঙ্গা আর মেলোর প্রতি শাপশাপান্ত। ‘সব দোষ দুঙ্গার’—এমন সমালোচনাও করছে দেশটির সাধারণ মানুষ। সমালোচনা হচ্ছে রোনালদিনহো আর নেইমারকে দলে না নেওয়ায়।
শাপশাপান্ত না করলেও দলের এলোমেলো অবস্থা দেখে হতভম্ব হয়ে গেছেন সাবেক ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার ওয়াল্টার কাসাগ্রান্দে জুনিয়র, ‘খেলায় সমতা আসার পর থেকে দলটা যেমন করে মানসিকভাবে পুরোপুরি এলোমেলো হয়ে গেল, সেটা দেখে আমি স্রেফ হতভম্ব হয়ে গেছি।’
এখন থেকে ১১ জুলাই ফাইনাল পর্যন্ত হল্যান্ডকেই সমর্থন দিয়ে যাবেন বলে জানালেন আরেক ব্রাজিল সমর্থক। কেন? ‘কারণ সেটি হবে আমাদের জন্য সান্ত্বনা যে আমরা চ্যাম্পিয়ন দলটার কাছেই হেরেছি’—আদ্রিয়ানো আন্তোনিও নামের পেশায় আইনজীবী আর নেশায় ফুটবল-সমর্থকের ব্যাখ্যা।
কিন্তু এটাও কি সান্ত্বনা হতে পারে আসলে? কান্না তাই এত সহজে ব্রাজিলের পিছু ছাড়ছে না। পরপর দুটো বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ফেরার শোক ভুলতে সময় লাগবে। তার পরও আশায় দিন যায়। আশায় দিন কাটানোর সান্ত্বনাই নিজেকে দিচ্ছেন অনেক ব্রাজিলিয়ান।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চেলসো আমোরিম ভেঙে পড়েছেন। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বসে খেলা দেখা আমোরিম তার পরও স্বপ্ন দেখতে চান, ‘ব্রাজিলের প্রতিটি মানুষের মতো আমাদেরও মন খুব খারাপ। কিন্তু এই হারে সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। আমরা আগামীবার জিতব।’
আগামীবারের জন্য আসলে স্বপ্ন বুনছে পুরো ব্রাজিল। ২০১৪ বিশ্বকাপ যে হবে তাদেরই দেশে। আন্তোনিও যেমন বলছিলেন, ‘এরপর আমরা নিজেদের মাঠে খেলব, শিরোপা জিততে আমরা বাধ্য। আমি নিশ্চিত ২০১৪ সালের আমাদের আকাঙ্ক্ষিত ষষ্ঠ শিরোপা আমরা ঘরে তুলব।’
No comments