‘অঘোষিত জরুরি অবস্থা’ -হঠকারী সিদ্ধান্তটি বাতিল করুন
রাজধানী ঢাকায় আগামী এক মাস কোনো দলকে সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না—স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর কী যুক্তি ও কোন আইনের বলে এ ঘোষণা দিলেন? গত রোববার তিনি যখন এ ঘোষণা দেন, তখন কি বিস্মৃত হয়েছিলেন যে বাংলাদেশের সংবিধানের তৃতীয় ভাগে মৌলিক অধিকার হিসেবে প্রত্যেক নাগরিকের সভা-সমাবেশ করার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে? অথবা তিনি ও তাঁর সরকার কি মনে করছেন যে তাঁরা ইচ্ছা করলেই জনগণের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিতে পারেন?
বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে পরিষ্কার ভাষায় লেখা রয়েছে: ‘জনশৃঙ্খলা ও জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণ ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হইবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।’ রাজধানীতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার এই সিদ্ধান্ত জানানোর সঙ্গে সঙ্গে সরকার বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কর্তব্য ছিল, কী কারণে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা জনসাধারণকে ব্যাখ্যা করে বলা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একটি ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এই বলে যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সভা-সমাবেশের সময় ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও ইত্যাদি দুর্বৃত্তপনা করা হয় বলে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বললেন, সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণকার্য পরিচালনার সুবিধার্থে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কার কথা কতটা সত্য কে জানে, তবে সরকারের ভেতরে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের ঘাটতি বেশ স্পষ্ট।
সভা-সমাবেশের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমন ব্যবস্থা করতে চান, যেন দায়িত্বটা আদৌ পালন করতে না হয়। দেশে যদি এমন গুরুতর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে থাকে যে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা অপরিহার্য বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছে, তাহলে সে কথা পরিষ্কার ভাষায় জনগণকে বলা দরকার। একদিকে তাঁরা বলবেন, সবকিছু তাঁদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, অন্যদিকে সংবিধানপ্রদত্ত অধিকার খর্ব করবেন—এটা তো গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আইনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তার গুরুতর অবনতি ছাড়া সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার দৃষ্টান্ত সাম্প্রতিক ইতিহাসে অত্যন্ত বিরল। বিপজ্জনক পরিস্থিতির আশঙ্কা সৃষ্টি হলে কিছু নির্দিষ্ট স্থানে বা এলাকায় সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার মতো নিবর্তনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয় কেবল জরুরি আইনে। সরকার কি বলতে চায়, দেশে এখন সে রকম অবস্থাই বিরাজ করছে? রাজধানীতে এক মাস সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার মানে কি সেই অর্থে ‘অঘোষিত জরুরি অবস্থা’?
সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করতে গিয়ে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি থেকে বিচ্যুত হয়ে এমন দমনমূলক আচরণ করছে, যা স্বৈরতান্ত্রিক। এভাবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অধিকারচর্চার গণতান্ত্রিক পথগুলো বন্ধ করে দিলে অস্থিরতা ও উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা প্রকটতর হবে। সেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সরকার হঠকারী সিদ্ধান্তটি বাতিল করলেই ভালো হবে।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে পরিষ্কার ভাষায় লেখা রয়েছে: ‘জনশৃঙ্খলা ও জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণ ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হইবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।’ রাজধানীতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার এই সিদ্ধান্ত জানানোর সঙ্গে সঙ্গে সরকার বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কর্তব্য ছিল, কী কারণে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা জনসাধারণকে ব্যাখ্যা করে বলা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একটি ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এই বলে যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সভা-সমাবেশের সময় ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও ইত্যাদি দুর্বৃত্তপনা করা হয় বলে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বললেন, সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণকার্য পরিচালনার সুবিধার্থে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কার কথা কতটা সত্য কে জানে, তবে সরকারের ভেতরে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের ঘাটতি বেশ স্পষ্ট।
সভা-সমাবেশের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমন ব্যবস্থা করতে চান, যেন দায়িত্বটা আদৌ পালন করতে না হয়। দেশে যদি এমন গুরুতর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে থাকে যে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা অপরিহার্য বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছে, তাহলে সে কথা পরিষ্কার ভাষায় জনগণকে বলা দরকার। একদিকে তাঁরা বলবেন, সবকিছু তাঁদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, অন্যদিকে সংবিধানপ্রদত্ত অধিকার খর্ব করবেন—এটা তো গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আইনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তার গুরুতর অবনতি ছাড়া সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার দৃষ্টান্ত সাম্প্রতিক ইতিহাসে অত্যন্ত বিরল। বিপজ্জনক পরিস্থিতির আশঙ্কা সৃষ্টি হলে কিছু নির্দিষ্ট স্থানে বা এলাকায় সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার মতো নিবর্তনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয় কেবল জরুরি আইনে। সরকার কি বলতে চায়, দেশে এখন সে রকম অবস্থাই বিরাজ করছে? রাজধানীতে এক মাস সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার মানে কি সেই অর্থে ‘অঘোষিত জরুরি অবস্থা’?
সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করতে গিয়ে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি থেকে বিচ্যুত হয়ে এমন দমনমূলক আচরণ করছে, যা স্বৈরতান্ত্রিক। এভাবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অধিকারচর্চার গণতান্ত্রিক পথগুলো বন্ধ করে দিলে অস্থিরতা ও উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা প্রকটতর হবে। সেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সরকার হঠকারী সিদ্ধান্তটি বাতিল করলেই ভালো হবে।
No comments