‘ফেবারিট’মোহামেডান,‘প্রত্যয়ী’আবাহনী by মাসুদ আলম
আজ সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ একটা দল উত্সব করবে। মাথা উঁচু করে ক্লাবে ফেরার প্রস্তুতি নেবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম থেকে। অন্য দলটা একবুক হতাশা নিয়ে ক্লাবে যাবে। দুই দলকে তো আর একসঙ্গে খুশি করতে পারবে না একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল! শেষ পর্যন্ত জয়মাল্য উঠবে কার গলায়, তা দেখতে গোটা ফুটবল-অঙ্গনই অধীর আগ্রহে অপেক্ষমাণ। আবার সেই লড়াই। আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ!
২০তম সিটিসেল ফেডারেশন কাপ ফাইনালের আবেদন নিয়ে নতুন করে লিখতে যাওয়া বাহুল্য। তার চেয়ে বরং প্রেক্ষাপটটা দেখা যাক। তারও আগে বলে নেওয়া দরকার, ফেডারেশন কাপ বরাবরই মোহামেডানের কাছে পয়মন্ত। মোহামেডান এবার নিয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলছে ১৪ বার। আবাহনী ১৩ বার। সাদা-কালোরা জিতেছে নয়বার, আকাশি-নীলরা সাতবার। মোহামেডানের জন্য সবচেয়ে প্রেরণাদায়ী তথ্য হলো, ফাইনালে দুদলের আট লড়াইয়ে মোহামেডান পাঁচবার জয়ী। আবাহনী মাত্র দুবার!
আবাহনী ক্লাবে পরিসংখ্যান নিয়ে কথা বলতে যান, ওসব পাত্তাই দেবে না তারা। পরিসংখ্যানে কী আসে-যায়! তবে ২০০০ সালে মোহামেডানকে হারিয়ে শিরোপা জেতা আবাহনী গত ৮টি বছর ফেডারেশন কাপ ঘরে তুলতে পারেনি—এটা তারা ভুলতে পারছে না কিছুতেই। কোচ অমলেশ সেনকে এ কারণেই আক্ষেপ নিয়ে বলতে হয়, ‘অনেক দিন টুর্নামেন্টটা পাই না আমরা। এবার পেতেই হবে। না পেলে কষ্ট পাব ভীষণ। এত দিনের আশা...।’
গত বছর সুযোগ এসেছিল, কিন্তু ফাইনালে উঠলেও টাইব্রেকারে হারতে হয়েছে মোহামেডানের কাছে। তারপর গত বি-লিগে মোহামেডানের বিপক্ষে এক ড্র এক জয়। তবে সর্বশেষ লড়াইটি ছিল আবাহনীর কাছে হতাশার প্রতিশব্দ। বড় আঘাতটা এসেছে গত মার্চে, যখন কোটি টাকার সুপার কাপ আবাহনীকে হারিয়ে জিতে নেয় মোহামেডান। প্রায় সাত মাস পর আজ মোহামেডানকে আবার সামনে পাচ্ছে আবাহনী। আবাহনীর অপেক্ষার পালা শেষ হওয়া আর মোহামেডানের শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জই এই ম্যাচ। এসব এক পাশে রেখে দেখার বিষয় অবশ্য একটাই—সেমিফাইনালে দুদলই ছন্দে ফেরার পর ফাইনালে কে কাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এমেকা-বুকোলা-এমিলিকে নিয়ে গড়া ক্ষুরধার আক্রমণভাগ মোহামেডানের সবচেয়ে বড় শক্তি। বুকোলা-এমিলি জুটি চার ম্যাচে ১৫ গোল করেছে। এই ত্রয়ীকে কীভাবে সামলাবে আবাহনী, এর ওপরই তাদের সাফল্য নির্ভর করবে। তবে জমাট রক্ষণ থাকায় ভয়ের কারণ দেখছে না আবাহনী। মোহামেডানের মাঝমাঠ ও আক্রমণ যতটা শক্তিশালী, রক্ষণ ততটা নয়। মোহামেডানের রক্ষণকে এ পর্যন্ত তেমন পরীক্ষা দিতে হয়নি। আবাহনী এই পরীক্ষাটা হয়তো নিয়েই ছাড়বে। ভেঙে পড়লে বিপদ আছে মোহামেডানের, তা যতই কাগজের হিসাবে এগিয়ে থাকুক সাদা-কালোরা।
আবাহনীর বড় ভরসার নাম যথারীতি ঘানাইয়ান স্ট্রাইকার ইব্রাহিম। তাঁর পা থেকে ফাইনাল পাসটা ভালোভাবে বেরোলে গোলের জন্য হয়তো ভাবতে হবে না আবাহনীকে। গতবার এমিলিকে ফাইনাল পাস দিয়ে বেশির ভাগ গোলই করিয়েছেন ইব্রাহিম। এবার এমিলি দল ছাড়ায় সেটা আর হচ্ছে না। আবাহনীর অন্যতম সমস্যা এখানেই। তবে ছয় ফুটের ওপরে লম্বা ২২ বছরের তরুণ ঘানাইয়ান স্ট্রাইকার শেরিফ আছেন, যাঁর কাছে থেকে ম্যাচজয়ী গোল পেয়ে যেতে পারে আবাহনী!
না, সেটা হতে দেবে না মোহামেডান। চ্যালেঞ্জটা তো তাদেরই বেশি। কাগজে-কলমে এ বছর দেশের সেরা দলটা গড়ার পর এখন আবাহনীর বিপক্ষে দিতে হবে আসল পরীক্ষাটা। মোহামেডানের জন্য সুখবর, দুদিন আগে ফেনী সকারের বিপক্ষে সেমিফাইনালে জ্বলে ওঠার প্রেরণা নিয়েই যেতে পারছে ফাইনালে। সেই প্রেরণা থেকেই বিকেলে ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোচ মারুফুল হক দাবি করলেন, ‘আমরাই এ ম্যাচে ফেবারিট।’
ইতিহাস বলছে, আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে ফেবারিট থাকে না। তার পরও নিজেদের ফেবারিট দাবির ব্যাখ্যাটা দিলেন মারুফ, ‘আমাদের অনেক ক্ষিপ্র গতির খেলোয়াড় আছে। আছে কোয়ালিটি খেলোয়াড়। আমরা ছন্দে ফিরেছি। নিজেদের খেলাটা খেলতে পারলে আমি মনে করি, আমরাই এগিয়ে। আবাহনীর সমস্যা আছে মাঝমাঠে। তাদের আক্রমণ গড়ে ওঠে ধীরে।’
মোহামেডান এগিয়ে আছে কি না মাঠেই প্রমাণ হবে। তবে সংবাদ সম্মেলনে একজন জিজ্ঞেস করে বসলেন, ‘আবাহনী জিতলে অঘটন হয়ে যাবে?’ অন্য এক সাংবাদিক প্রশ্নটাকে সংশোধন করে দিলেন, ‘আবাহনী ফকিরের পুল নয়...।’ আবাহনী আছে আবাহনীর মতোই। কাল দুপুরে ক্লাবে বারান্দায় দাঁড়িয়ে সেমিফাইনালে দুই গোল করা এনামুল বললেন, ‘টেনশনের কী আছে! ভালো খেলব...জিতব...এই তো।’
চারদিকে ‘মোহামেডান মোহামেডান’ রব শুনে আবাহনী অধিনায়ক বিপ্লব একটু বিরক্ত। খানিকটা চ্যালেঞ্জের সুরেই তিনি বললেন, ‘সবাই দেখছি মোহামেডানকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়ে দিচ্ছে। ঠিক আছে বানাক। কিন্তু আমরা মাঠে প্রমাণ করব কারা সেরা।’ ‘ফেবারিট-তত্ত্ব’ নিয়ে মোহামেডান অধিনায়ক আরমান আজিজের দেখা গেল ভিন্নমত, ‘আমরা ফেবারিট কি না জানি না। আমাদের সেরাটা দেখাতে হবে মাঠেই।’
মাঠই যদি শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের মঞ্চ হয়, তাহলে ফুটবলও তার রোমাঞ্চের পসরা সাজাবে আজ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে।
২০তম সিটিসেল ফেডারেশন কাপ ফাইনালের আবেদন নিয়ে নতুন করে লিখতে যাওয়া বাহুল্য। তার চেয়ে বরং প্রেক্ষাপটটা দেখা যাক। তারও আগে বলে নেওয়া দরকার, ফেডারেশন কাপ বরাবরই মোহামেডানের কাছে পয়মন্ত। মোহামেডান এবার নিয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলছে ১৪ বার। আবাহনী ১৩ বার। সাদা-কালোরা জিতেছে নয়বার, আকাশি-নীলরা সাতবার। মোহামেডানের জন্য সবচেয়ে প্রেরণাদায়ী তথ্য হলো, ফাইনালে দুদলের আট লড়াইয়ে মোহামেডান পাঁচবার জয়ী। আবাহনী মাত্র দুবার!
আবাহনী ক্লাবে পরিসংখ্যান নিয়ে কথা বলতে যান, ওসব পাত্তাই দেবে না তারা। পরিসংখ্যানে কী আসে-যায়! তবে ২০০০ সালে মোহামেডানকে হারিয়ে শিরোপা জেতা আবাহনী গত ৮টি বছর ফেডারেশন কাপ ঘরে তুলতে পারেনি—এটা তারা ভুলতে পারছে না কিছুতেই। কোচ অমলেশ সেনকে এ কারণেই আক্ষেপ নিয়ে বলতে হয়, ‘অনেক দিন টুর্নামেন্টটা পাই না আমরা। এবার পেতেই হবে। না পেলে কষ্ট পাব ভীষণ। এত দিনের আশা...।’
গত বছর সুযোগ এসেছিল, কিন্তু ফাইনালে উঠলেও টাইব্রেকারে হারতে হয়েছে মোহামেডানের কাছে। তারপর গত বি-লিগে মোহামেডানের বিপক্ষে এক ড্র এক জয়। তবে সর্বশেষ লড়াইটি ছিল আবাহনীর কাছে হতাশার প্রতিশব্দ। বড় আঘাতটা এসেছে গত মার্চে, যখন কোটি টাকার সুপার কাপ আবাহনীকে হারিয়ে জিতে নেয় মোহামেডান। প্রায় সাত মাস পর আজ মোহামেডানকে আবার সামনে পাচ্ছে আবাহনী। আবাহনীর অপেক্ষার পালা শেষ হওয়া আর মোহামেডানের শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জই এই ম্যাচ। এসব এক পাশে রেখে দেখার বিষয় অবশ্য একটাই—সেমিফাইনালে দুদলই ছন্দে ফেরার পর ফাইনালে কে কাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এমেকা-বুকোলা-এমিলিকে নিয়ে গড়া ক্ষুরধার আক্রমণভাগ মোহামেডানের সবচেয়ে বড় শক্তি। বুকোলা-এমিলি জুটি চার ম্যাচে ১৫ গোল করেছে। এই ত্রয়ীকে কীভাবে সামলাবে আবাহনী, এর ওপরই তাদের সাফল্য নির্ভর করবে। তবে জমাট রক্ষণ থাকায় ভয়ের কারণ দেখছে না আবাহনী। মোহামেডানের মাঝমাঠ ও আক্রমণ যতটা শক্তিশালী, রক্ষণ ততটা নয়। মোহামেডানের রক্ষণকে এ পর্যন্ত তেমন পরীক্ষা দিতে হয়নি। আবাহনী এই পরীক্ষাটা হয়তো নিয়েই ছাড়বে। ভেঙে পড়লে বিপদ আছে মোহামেডানের, তা যতই কাগজের হিসাবে এগিয়ে থাকুক সাদা-কালোরা।
আবাহনীর বড় ভরসার নাম যথারীতি ঘানাইয়ান স্ট্রাইকার ইব্রাহিম। তাঁর পা থেকে ফাইনাল পাসটা ভালোভাবে বেরোলে গোলের জন্য হয়তো ভাবতে হবে না আবাহনীকে। গতবার এমিলিকে ফাইনাল পাস দিয়ে বেশির ভাগ গোলই করিয়েছেন ইব্রাহিম। এবার এমিলি দল ছাড়ায় সেটা আর হচ্ছে না। আবাহনীর অন্যতম সমস্যা এখানেই। তবে ছয় ফুটের ওপরে লম্বা ২২ বছরের তরুণ ঘানাইয়ান স্ট্রাইকার শেরিফ আছেন, যাঁর কাছে থেকে ম্যাচজয়ী গোল পেয়ে যেতে পারে আবাহনী!
না, সেটা হতে দেবে না মোহামেডান। চ্যালেঞ্জটা তো তাদেরই বেশি। কাগজে-কলমে এ বছর দেশের সেরা দলটা গড়ার পর এখন আবাহনীর বিপক্ষে দিতে হবে আসল পরীক্ষাটা। মোহামেডানের জন্য সুখবর, দুদিন আগে ফেনী সকারের বিপক্ষে সেমিফাইনালে জ্বলে ওঠার প্রেরণা নিয়েই যেতে পারছে ফাইনালে। সেই প্রেরণা থেকেই বিকেলে ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোচ মারুফুল হক দাবি করলেন, ‘আমরাই এ ম্যাচে ফেবারিট।’
ইতিহাস বলছে, আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে ফেবারিট থাকে না। তার পরও নিজেদের ফেবারিট দাবির ব্যাখ্যাটা দিলেন মারুফ, ‘আমাদের অনেক ক্ষিপ্র গতির খেলোয়াড় আছে। আছে কোয়ালিটি খেলোয়াড়। আমরা ছন্দে ফিরেছি। নিজেদের খেলাটা খেলতে পারলে আমি মনে করি, আমরাই এগিয়ে। আবাহনীর সমস্যা আছে মাঝমাঠে। তাদের আক্রমণ গড়ে ওঠে ধীরে।’
মোহামেডান এগিয়ে আছে কি না মাঠেই প্রমাণ হবে। তবে সংবাদ সম্মেলনে একজন জিজ্ঞেস করে বসলেন, ‘আবাহনী জিতলে অঘটন হয়ে যাবে?’ অন্য এক সাংবাদিক প্রশ্নটাকে সংশোধন করে দিলেন, ‘আবাহনী ফকিরের পুল নয়...।’ আবাহনী আছে আবাহনীর মতোই। কাল দুপুরে ক্লাবে বারান্দায় দাঁড়িয়ে সেমিফাইনালে দুই গোল করা এনামুল বললেন, ‘টেনশনের কী আছে! ভালো খেলব...জিতব...এই তো।’
চারদিকে ‘মোহামেডান মোহামেডান’ রব শুনে আবাহনী অধিনায়ক বিপ্লব একটু বিরক্ত। খানিকটা চ্যালেঞ্জের সুরেই তিনি বললেন, ‘সবাই দেখছি মোহামেডানকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়ে দিচ্ছে। ঠিক আছে বানাক। কিন্তু আমরা মাঠে প্রমাণ করব কারা সেরা।’ ‘ফেবারিট-তত্ত্ব’ নিয়ে মোহামেডান অধিনায়ক আরমান আজিজের দেখা গেল ভিন্নমত, ‘আমরা ফেবারিট কি না জানি না। আমাদের সেরাটা দেখাতে হবে মাঠেই।’
মাঠই যদি শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের মঞ্চ হয়, তাহলে ফুটবলও তার রোমাঞ্চের পসরা সাজাবে আজ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে।
No comments