কথা নয়, জনগণ কাজ দেখতে চায় - দুর্নীতি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী
শনিবার আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য নিরসন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে আয়োজিত সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোর কণ্ঠে বলেছেন, দুর্নীতিবাজ যে রাজনৈতিক দলেরই হোক, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই হুঁশিয়ারি দুর্নীতিজর্জরিত এই দেশের জনগণের কাছে উত্সাহব্যঞ্জক হওয়ার কথা। কিন্তু এ কথা আর নতুন নয় বলে খুব একটা উত্সাহ বোধ করা যায় না।
জনগণ দেখে আসছে, ক্ষমতাসীন সব সরকারই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠে কথা বলে, কিন্তু দুর্নীতি বন্ধ হওয়া দূরে থাক, তা বরং ক্রমাগত বেড়েই চলে। আর সেসব দুর্নীতি করে বা তার সঙ্গে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জড়িত থাকে সরকার বা ক্ষমতাকেন্দ্রের মধ্যকার ও তার চারপাশের লোকজনই। কিন্তু সেই সরকার যত দিন ক্ষমতায় থাকে, তত দিন দুর্নীতিবাজদের বিচার দূরে থাক, অভিযোগ পর্যন্ত আমলে নেওয়া হয় না। ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর সেই সরকারের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন বলেছেন, জনগণের সম্পদ লুট করে যাঁরা বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা সম্ভবত বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে। এই ধারাতেই দেশ চলছে—অতীতের ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতির কথা প্রচার করা, মামলা করা। আর যাঁদের বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তাঁরা বলেন, এগুলো রাজনৈতিক বিদ্বেষপ্রসূত মিথ্যা মামলা; রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানি করাই এসবের উদ্দেশ্য। এভাবে বাংলাদেশে দুর্নীতি দমনবিষয়ক সব কথাবার্তা অনেকটাই প্রহসনের রূপ গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বলছেন, দলনির্বিশেষে কোনো দুর্নীতিবাজকেই ছাড় দেওয়া হবে না, এটা তাঁর সরকার কীভাবে করবে? কদিন আগেই খবর বেরিয়েছে, স্বয়ং দুদকের চেয়ারম্যান বলেছেন যে এই প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করার প্রক্রিয়া চলছে; এর থাবার নখগুলো কেটে নেওয়ার উদ্যোগ চলছে। অর্থাত্ দুদককে আরও শক্তিশালী করার নামে সরকারের তৈরি এক কমিটি দুদক-আইন সংশোধনের জন্য যেসব সুপারিশ করেছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হলে দুদকের ক্ষমতা অনেক ক্ষেত্রে কমে যাবে। যেমন, কোনো সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনতে হলে সরকারের পূর্বানুমতি নিতে হবে। দুর্নীতিসংক্রান্ত সরকারি গোপন নথিপত্র দেখার যে ক্ষমতা দুদকের রয়েছে, কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আইন সংশোধন করলে দুদকের সেই ক্ষমতাও আর থাকবে না। তাহলে প্রধানমন্ত্রী যে বলছেন, দুদক স্বাধীন, তারা স্বাধীনভাবে কাজ করবে—সেটা কীভাবে হবে? সরকারি খাতের কোনো দুর্নীতির বিরুদ্ধেই তো দুদক ব্যবস্থা নিতে পারবে না পূর্বানুমতির অভাবে। আর সরকারের রুই-কাতলাদের দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের পূর্বানুমতি চাইলে দুদককে যে অনুমতি দেওয়া হবে—এমন ভরসা মোটেই পাওয়া যায় না; বরং এমন সংশয়ই জাগে যে সরকারি খাতের দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের ব্যবস্থা নেওয়ার বর্তমান ক্ষমতাকে খর্ব করার মতলবেই অমন সংশোধনীর সুপারিশ করা হয়েছে।
সরকার নিজে নীতি-নৈতিকতা মেনে চললে, ক্ষমতার উচ্চ পর্যায়ে অনিয়ম-দুর্নীতি প্রশ্রয় না পেলে দুর্নীতির প্রবণতা এমন উদগ্র হতে পারে না। সরকারের প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, বিভাগ, সাংসদ ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধি—সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি কমানো সম্ভব, যদি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে নেতৃত্বের অঙ্গীকার আন্তরিক হয়। দুর্নীতি দমন নিয়ে ভালো ভালো কথা জনগণ আর শুনতে চায় না; তারা দেখতে চায়, দুর্নীতিবাজদের বিচার ও শাস্তি হচ্ছে এবং দুর্নীতি হ্রাস পাচ্ছে।
জনগণ দেখে আসছে, ক্ষমতাসীন সব সরকারই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠে কথা বলে, কিন্তু দুর্নীতি বন্ধ হওয়া দূরে থাক, তা বরং ক্রমাগত বেড়েই চলে। আর সেসব দুর্নীতি করে বা তার সঙ্গে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জড়িত থাকে সরকার বা ক্ষমতাকেন্দ্রের মধ্যকার ও তার চারপাশের লোকজনই। কিন্তু সেই সরকার যত দিন ক্ষমতায় থাকে, তত দিন দুর্নীতিবাজদের বিচার দূরে থাক, অভিযোগ পর্যন্ত আমলে নেওয়া হয় না। ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর সেই সরকারের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন বলেছেন, জনগণের সম্পদ লুট করে যাঁরা বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা সম্ভবত বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে। এই ধারাতেই দেশ চলছে—অতীতের ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতির কথা প্রচার করা, মামলা করা। আর যাঁদের বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তাঁরা বলেন, এগুলো রাজনৈতিক বিদ্বেষপ্রসূত মিথ্যা মামলা; রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানি করাই এসবের উদ্দেশ্য। এভাবে বাংলাদেশে দুর্নীতি দমনবিষয়ক সব কথাবার্তা অনেকটাই প্রহসনের রূপ গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বলছেন, দলনির্বিশেষে কোনো দুর্নীতিবাজকেই ছাড় দেওয়া হবে না, এটা তাঁর সরকার কীভাবে করবে? কদিন আগেই খবর বেরিয়েছে, স্বয়ং দুদকের চেয়ারম্যান বলেছেন যে এই প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করার প্রক্রিয়া চলছে; এর থাবার নখগুলো কেটে নেওয়ার উদ্যোগ চলছে। অর্থাত্ দুদককে আরও শক্তিশালী করার নামে সরকারের তৈরি এক কমিটি দুদক-আইন সংশোধনের জন্য যেসব সুপারিশ করেছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হলে দুদকের ক্ষমতা অনেক ক্ষেত্রে কমে যাবে। যেমন, কোনো সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনতে হলে সরকারের পূর্বানুমতি নিতে হবে। দুর্নীতিসংক্রান্ত সরকারি গোপন নথিপত্র দেখার যে ক্ষমতা দুদকের রয়েছে, কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আইন সংশোধন করলে দুদকের সেই ক্ষমতাও আর থাকবে না। তাহলে প্রধানমন্ত্রী যে বলছেন, দুদক স্বাধীন, তারা স্বাধীনভাবে কাজ করবে—সেটা কীভাবে হবে? সরকারি খাতের কোনো দুর্নীতির বিরুদ্ধেই তো দুদক ব্যবস্থা নিতে পারবে না পূর্বানুমতির অভাবে। আর সরকারের রুই-কাতলাদের দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের পূর্বানুমতি চাইলে দুদককে যে অনুমতি দেওয়া হবে—এমন ভরসা মোটেই পাওয়া যায় না; বরং এমন সংশয়ই জাগে যে সরকারি খাতের দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের ব্যবস্থা নেওয়ার বর্তমান ক্ষমতাকে খর্ব করার মতলবেই অমন সংশোধনীর সুপারিশ করা হয়েছে।
সরকার নিজে নীতি-নৈতিকতা মেনে চললে, ক্ষমতার উচ্চ পর্যায়ে অনিয়ম-দুর্নীতি প্রশ্রয় না পেলে দুর্নীতির প্রবণতা এমন উদগ্র হতে পারে না। সরকারের প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, বিভাগ, সাংসদ ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধি—সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি কমানো সম্ভব, যদি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে নেতৃত্বের অঙ্গীকার আন্তরিক হয়। দুর্নীতি দমন নিয়ে ভালো ভালো কথা জনগণ আর শুনতে চায় না; তারা দেখতে চায়, দুর্নীতিবাজদের বিচার ও শাস্তি হচ্ছে এবং দুর্নীতি হ্রাস পাচ্ছে।
No comments