ত্রিপুরায় পাঁচ কারণে বিজেপি'র জয়
উত্তরপূর্ব
ভারতের রাজ্য ত্রিপুরায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়ী হয়েছে ভারতীয়
জনতা পার্টি ও আদিবাসীদের সংগঠন আই পি এফ টির জোট।
ত্রিপুরা বিধানসভার মোট ৬০টি আসনের ৫৯টিতে ভোট হয়েছে। এর মধ্যে বিজেপি ৩৫টিতে, আইপিএফটি ৮টিতে এবং সিপিআইএম ১৩টিতে জয়ী হয়েছে। তিনটি আসনের ফল এখনো পাওয়া যায় নি, কিন্তু বিজেপি-আইিএফটি জোট মোট ৪৩টি আসনে জেতায় তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত হয়ে গেছে।
রাজ্যে ২৫ বছর ধরে একটানা ক্ষমতায় থাকা বামফ্রন্ট পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে। তারা বলছে, "এই ফল অপ্রত্যাশিত"।
কিন্তু যে বিজেপি আজ এত বিপুল ভোট পেয়ে জয়ী হলো, সেই দলই ৫ বছর আগে ওই রাজ্যে প্রায় অস্তিত্বহীন ছিল।
তাহলে কীভাবে এল এই জয়? বিশ্লেষকরা যেসব কারণগুলি দিচ্ছেন, তা হল
১. প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া বা অ্যান্টি-ইনকামব্যান্সি ফ্যাক্টর: দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় রয়েছে বামপন্থীরা। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার নিজেই ২০ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী। তাই ক্ষমতাসীন সরকার-বিরোধী হাওয়া এবার ছিলই, তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে বিজেপি নিজেদের মূল স্লোগানও দিয়েছিল 'চলো পাল্টাই' - অর্থাৎ পরিবর্তন চাই।
বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতা রাম মাধব আজ আগরতলায় মন্তব্য করেছেন, "চলো পাল্টাই স্লোগানটাই যে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমর্থন পেয়েছে, সেটা তো দেখাই যাচ্ছে।"
"বহু মানুষ যে বিজেপিকে ভালবেসে ভোট দিয়েছে, তা মনে হয় না।
তারা বামফ্রন্ট সরকারকে পাল্টাতে চেয়েছে বলেই তাদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে," বলছিলেন ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক গৌতম চাকমা।
সি পি আই এমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ত্রিপুরার অন্যতম শীর্ষ নেতা গৌতম দাস অবশ্য বিবিসিকে বলছিলেন, "অ্যান্টি-ইনকামব্যান্সি ফ্যাক্টর কতটা কাজ করেছে, সেটা ফলের বিস্তারিত বিশ্লেষণ না করলে তো বোঝা সম্ভব নয়।।"
২. বেকারত্ব, দুর্নীতির অভিযোগ: বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিজেপি তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশের ভোট পেয়েছে এবার - যাদের শিক্ষাদীক্ষা রয়েছে, কিন্তু হাতে কোনও কাজ নেই। অধ্যাপক গৌতম চাকমার কথায়, "শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা এ রাজ্যে প্রায় পাঁচ লক্ষ। তাদের ক্ষোভ তো থাকবেই।"
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ত্রিপুরায় প্রচারে গিয়ে বারে বারে এই বিষয়টার ওপরে জোর দিয়েছিলেন, স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তরুণদের হাতে কাজ দেওয়ার। সেটা একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল বিজেপি-র পক্ষে, এবং বামফ্রন্টের বিপক্ষে।
"তবে ত্রিপুরাতে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হয় নি, এটা কোনওমতেই মেনে নেওয়া যায় না। তা সত্ত্বেও যেভাবে অনুন্নয়নের কথা বলে বিজেপি জিতল, এটা সত্যিই অভাবনীয়," - মন্তব্য সাংবাদিক আশিষ গুপ্তর।
ত্রিপুরা বিধানসভার মোট ৬০টি আসনের ৫৯টিতে ভোট হয়েছে। এর মধ্যে বিজেপি ৩৫টিতে, আইপিএফটি ৮টিতে এবং সিপিআইএম ১৩টিতে জয়ী হয়েছে। তিনটি আসনের ফল এখনো পাওয়া যায় নি, কিন্তু বিজেপি-আইিএফটি জোট মোট ৪৩টি আসনে জেতায় তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত হয়ে গেছে।
রাজ্যে ২৫ বছর ধরে একটানা ক্ষমতায় থাকা বামফ্রন্ট পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে। তারা বলছে, "এই ফল অপ্রত্যাশিত"।
কিন্তু যে বিজেপি আজ এত বিপুল ভোট পেয়ে জয়ী হলো, সেই দলই ৫ বছর আগে ওই রাজ্যে প্রায় অস্তিত্বহীন ছিল।
তাহলে কীভাবে এল এই জয়? বিশ্লেষকরা যেসব কারণগুলি দিচ্ছেন, তা হল
১. প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া বা অ্যান্টি-ইনকামব্যান্সি ফ্যাক্টর: দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় রয়েছে বামপন্থীরা। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার নিজেই ২০ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী। তাই ক্ষমতাসীন সরকার-বিরোধী হাওয়া এবার ছিলই, তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে বিজেপি নিজেদের মূল স্লোগানও দিয়েছিল 'চলো পাল্টাই' - অর্থাৎ পরিবর্তন চাই।
বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতা রাম মাধব আজ আগরতলায় মন্তব্য করেছেন, "চলো পাল্টাই স্লোগানটাই যে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমর্থন পেয়েছে, সেটা তো দেখাই যাচ্ছে।"
"বহু মানুষ যে বিজেপিকে ভালবেসে ভোট দিয়েছে, তা মনে হয় না।
তারা বামফ্রন্ট সরকারকে পাল্টাতে চেয়েছে বলেই তাদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে," বলছিলেন ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক গৌতম চাকমা।
সি পি আই এমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ত্রিপুরার অন্যতম শীর্ষ নেতা গৌতম দাস অবশ্য বিবিসিকে বলছিলেন, "অ্যান্টি-ইনকামব্যান্সি ফ্যাক্টর কতটা কাজ করেছে, সেটা ফলের বিস্তারিত বিশ্লেষণ না করলে তো বোঝা সম্ভব নয়।।"
২. বেকারত্ব, দুর্নীতির অভিযোগ: বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিজেপি তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশের ভোট পেয়েছে এবার - যাদের শিক্ষাদীক্ষা রয়েছে, কিন্তু হাতে কোনও কাজ নেই। অধ্যাপক গৌতম চাকমার কথায়, "শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা এ রাজ্যে প্রায় পাঁচ লক্ষ। তাদের ক্ষোভ তো থাকবেই।"
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ত্রিপুরায় প্রচারে গিয়ে বারে বারে এই বিষয়টার ওপরে জোর দিয়েছিলেন, স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তরুণদের হাতে কাজ দেওয়ার। সেটা একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল বিজেপি-র পক্ষে, এবং বামফ্রন্টের বিপক্ষে।
"তবে ত্রিপুরাতে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হয় নি, এটা কোনওমতেই মেনে নেওয়া যায় না। তা সত্ত্বেও যেভাবে অনুন্নয়নের কথা বলে বিজেপি জিতল, এটা সত্যিই অভাবনীয়," - মন্তব্য সাংবাদিক আশিষ গুপ্তর।
৩.
আদিবাসী ভোট এবার বিজেপি-র দিকে: ত্রিপুরার এক-তৃতীয়াংশ আসন আদিবাসীদের
জন্য সংরক্ষিত। সিপিআই এম নেতা গৌতম দাসের কথায়, "ওটাই ছিল আমাদের অন্যতম
শক্ত জনভিত্তি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেখানে আমরা প্রায় কিছুই জিততে পারি
নি। ওটাই আমাদের সবথেকে বড় ক্ষতি।"
আদিবাসী ভোট নিজেদের দিকে টানতে আঞ্চলিক দল আই পি এফ টির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিল বিজেপি। নয়টি আসনে আইপিএফটি লড়েছিল, যার মধ্যে আটটিতে তারা জিতেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক চাকমা অবশ্য বলছেন, "আই পি এফ টি-র ঘোষিত নীতি হল পৃথক তুইপ্রাল্যান্ডের দাবী। তা থেকে তারা সরবে না। কিন্তু বিজেপির পক্ষে সেই দাবী মেনে নেওয়া কঠিন। তাই এই দুই জোট সঙ্গীর মধ্যে সংঘাত বাঁধবেই অদূর ভবিষ্যতে।"
৪. তৃণমূল স্তরে সংগঠন গড়তে পেরেছে বিজেপি: বিগত নির্বাচনে যে দল কোনও শক্তি হিসাবেই পরিগণিত হত না, সেই দলই এবার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী হতে পারল - কারণ তারা গত প্রায় দুবছর ধরে জোর দিয়েছিল তৃণমূল স্তরে সংগঠন গড়ে তুলতে।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের নেতা সুনীল দেওধর ওখানেই ঘাঁটি গেড়েছিলেন, সঙ্গে ছিলেন আরেক আর এস এস নেতা ও বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব।
খুব কাছ থেকে এবারের ত্রিপুরা নির্বাচন দেখেছেন, এমন একজন সাংবাদিক দিল্লিতে অসমীয় প্রতিদিন কাগজের প্রতিনিধি আশিস গুপ্ত। তিনি বলছিলেন, "একটা সময়ে বামপন্থীরা যেভাবে ভোট করাত তৃণমূল স্তরে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে, এবার বিজেপি সেটাই করেছে। ভোটার লিস্ট ধরে বুথভিত্তিক দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছিল তারা অনেকদিন আগেই। বামপন্থীরা সংগঠনের গর্ব করে - কিন্তু সেই আগের মতো করে ভোট করানোর দিকে তাদের নজর ছিল না।"
কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ছাড়াও ত্রিপুরায় বিজেপির সংগঠন গড়ে তুলেছেন উত্তরপূর্বাঞ্চলে বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা। কংগ্রেস আমলে আসামের মন্ত্রী ছিলেন, তারপরে বিজেপির উত্তরপূর্ব জয়ের মূল কারিগর হয়ে উঠেছেন যিনি।
৫. কংগ্রেস থেকে তৃণমূল কংগ্রেস হয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতারা: বহু দিন ধরে কংগ্রেসই ছিল ত্রিপুরায় বামফ্রন্টের প্রধান বিরোধী শক্তি। কিন্তু বেশ কয়েক বছর আগে কংগ্রেসের একটা বড় অংশ যোগ দেয় তৃণমূল কংগ্রেসে - আর বছর কয়েক আগে সেই গোটা অংশটাই চলে আসে বিজেপিতে।
"তারপরেই বিজেপির চিত্রটা পাল্টে যায় আমূল," মন্তব্য অধ্যাপক গৌতম চাকমার।
নিজের অঞ্চলে তাদের সংগঠন আগে থেকেই মজবুত ছিল। সেটারই লাভ উঠিয়েছে বিজেপি।
সুত্রঃ বিবিসি
আদিবাসী ভোট নিজেদের দিকে টানতে আঞ্চলিক দল আই পি এফ টির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিল বিজেপি। নয়টি আসনে আইপিএফটি লড়েছিল, যার মধ্যে আটটিতে তারা জিতেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক চাকমা অবশ্য বলছেন, "আই পি এফ টি-র ঘোষিত নীতি হল পৃথক তুইপ্রাল্যান্ডের দাবী। তা থেকে তারা সরবে না। কিন্তু বিজেপির পক্ষে সেই দাবী মেনে নেওয়া কঠিন। তাই এই দুই জোট সঙ্গীর মধ্যে সংঘাত বাঁধবেই অদূর ভবিষ্যতে।"
৪. তৃণমূল স্তরে সংগঠন গড়তে পেরেছে বিজেপি: বিগত নির্বাচনে যে দল কোনও শক্তি হিসাবেই পরিগণিত হত না, সেই দলই এবার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী হতে পারল - কারণ তারা গত প্রায় দুবছর ধরে জোর দিয়েছিল তৃণমূল স্তরে সংগঠন গড়ে তুলতে।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের নেতা সুনীল দেওধর ওখানেই ঘাঁটি গেড়েছিলেন, সঙ্গে ছিলেন আরেক আর এস এস নেতা ও বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব।
খুব কাছ থেকে এবারের ত্রিপুরা নির্বাচন দেখেছেন, এমন একজন সাংবাদিক দিল্লিতে অসমীয় প্রতিদিন কাগজের প্রতিনিধি আশিস গুপ্ত। তিনি বলছিলেন, "একটা সময়ে বামপন্থীরা যেভাবে ভোট করাত তৃণমূল স্তরে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে, এবার বিজেপি সেটাই করেছে। ভোটার লিস্ট ধরে বুথভিত্তিক দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছিল তারা অনেকদিন আগেই। বামপন্থীরা সংগঠনের গর্ব করে - কিন্তু সেই আগের মতো করে ভোট করানোর দিকে তাদের নজর ছিল না।"
কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ছাড়াও ত্রিপুরায় বিজেপির সংগঠন গড়ে তুলেছেন উত্তরপূর্বাঞ্চলে বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা। কংগ্রেস আমলে আসামের মন্ত্রী ছিলেন, তারপরে বিজেপির উত্তরপূর্ব জয়ের মূল কারিগর হয়ে উঠেছেন যিনি।
৫. কংগ্রেস থেকে তৃণমূল কংগ্রেস হয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতারা: বহু দিন ধরে কংগ্রেসই ছিল ত্রিপুরায় বামফ্রন্টের প্রধান বিরোধী শক্তি। কিন্তু বেশ কয়েক বছর আগে কংগ্রেসের একটা বড় অংশ যোগ দেয় তৃণমূল কংগ্রেসে - আর বছর কয়েক আগে সেই গোটা অংশটাই চলে আসে বিজেপিতে।
"তারপরেই বিজেপির চিত্রটা পাল্টে যায় আমূল," মন্তব্য অধ্যাপক গৌতম চাকমার।
নিজের অঞ্চলে তাদের সংগঠন আগে থেকেই মজবুত ছিল। সেটারই লাভ উঠিয়েছে বিজেপি।
সুত্রঃ বিবিসি
No comments