‘দেশে কিডনি রোগীর তুলনায় ডায়ালাইসিস সেন্টার খুবই কম’
কিডনি
রোগে তুলনামূলকভাবে পুরুষদের চেয়ে নারীরাই বেশি আক্রান্ত হয় এবং
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে কিডনি চিকিৎসার ক্ষেত্রে নারীরা
পিছিয়ে পড়া এবং অবহেলিত এমন মন্তব্য করেন বিশেষজ্ঞরা। দেশে ব্যাপকসংখ্যক
কিডনি রোগীর তুলনায় ডায়ালাইসিস সেন্টার খুবই কম বলে তারা জানিয়েছেন।
নারীদের কিডনি চিকিৎসায় বৈষম্য দূরীকরণে স্বয়ং সরকারকে বিশেষ ভূমিকা রাখার
আহ্বান জানান তারা। গতকাল ডেইলি স্টার সেন্টার-পত্রিকার সভাকক্ষে বেসরকারি
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি
(ক্যাম্পস) উদ্যোগে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তারা এসব বলেন। ‘বিশ্ব কিডনি
দিবস-২০১৮’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সংগঠনটি এই বৈঠকের
আয়োজন করে। বক্তারা জানান, বিশ্বব্যাপী কিডনি রোগ একটি ভয়াবহ স্বাস্থ্য
সমস্যা।
প্রতিবছর বিশ্বের প্রায় ৬ লাখ নারী অকাল মৃত্যুবরণ করে কিডনি বিকল হয়ে। সারা বিশ্বে ১৪ শতাংশ নারী পক্ষান্তরে ১২ শতাংশ পুরুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত, অথচ চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারীরা অবহেলিত, তারা পুরুষশাষিত সমাজে বৈষম্যের শিকার। অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শীর্ষ পদগুলোতে এখন নারীর উপস্থিতি অনেক বেশি। এমবিবিএসে ভর্তির ক্ষেত্রেও এখন মেয়ে প্রার্থীর সংখ্যা তুলনাভাবে অনেক বেশি। তাই বোঝা যাচ্ছে যে, পিছিয়ে পড়া নারীর অপবাদ ঘুচাতে এখন আমরা অগ্রসর হচ্ছি। কিডনি ফাউন্ডেশন-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, দেশে ব্যাপক সংখ্যক কিডনি রোগীর তুলনায় ডায়ালাইসিস সেন্টার খুবই কম, মাত্র ৯৬টি এবং ১৮ হাজার রোগী এসব সেন্টারে সপ্তাহে ২ বার করে ডায়ালাইসিস পায়। বেসরকারি সেন্টারগুলোতে ৩৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত ডায়ালাইসিস মূল্য রাখা হয় যা নিম্নবিত্ত এমনকি মধ্যবিত্তের জন্য বহন করা অসম্ভব। তিনি বলেন, সাইথ এশিয়াতে মোট কিডনি রোগীর তুলনায় মাত্র ১৫ শতাংশ রোগী ডায়ালাইসিসের সুযোগ পায় বাকি বিশাল সংখ্যক রোগী অর্থাভাবে ডায়ালাইসিস নিতে পারে না। তাই বাংলাদেশে ডায়ালাইসিস খরচ কমাতে সরকারি-বেসরকারি ভাবে বাস্তবিক উদ্যোগ নিতে হবে। নারীদের কিডনি চিকিৎসায় বৈষম্য দূরীকরণে স্বয়ং সরকারকে বিশেষ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি। চলচ্চিত্র অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ বলেন, মানুষ এবং মানবতার প্রতি বোধের পরিবর্তন সর্বাগ্রে জরুরি। তিনি কিডনি বিষয়ে এবং নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি করতে বিষয়ভিত্তিক নাটক, এমনকি সিনেমা তৈরি করে হলেও বার্তাগুলো পৌঁছাতে হবে। ক্যাম্পস-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এবং ল্যাবএইড স্পেশ্যালাইজড হাসপাতালের কিডনি বিভাগের চিফ কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. এমএ সামাদ এই গোলটেবিল বৈঠকের সঞ্চালনা ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অধ্যাপক ডা. এমএ সামাদ বলেন, নারীরা এদেশে সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রায় সবক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া কিংবা অবহেলার শিকার। সেক্ষেত্রে অনুৎপাদনশীলতা, গুরুত্বহীনতা, জড়তা, লোকলজ্জা, সহজাত লুকিয়ে রাখার প্রবণতা এসব কারণের জন্য বিশেষ করে চিকিৎসাসেবা গ্রহণের বা প্রদানের ক্ষেত্রে নারীরা এখনো সীমাহীন বৈষম্যের শিকার। এ চিত্র বাংলাদেশে যেমন প্রকট, বহির্বিশ্বে বা বিশ্বজুড়ে ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে বিভিন্ন দেশে ও চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারীর প্রতি অবহেলা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। এ বিষয়টি মাথায় রেখে বিশ্ব কিডনি দিবস উদযাপন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক “বিশ্ব কিডনি দিবস ২০১৮”-এর প্রতিপাদ্য হিসেবে “কিডনি অ্যান্ড উইমেন হেলথ : ইনকুড, ভ্যালু, এমপাওয়ার” নির্ধারণ করা হয়েছে। ডা. এমএ সামাদ বলেন, পৃথিবীব্যাপী কিডনি রোগের প্রবৃদ্ধি অত্যন্ত ব্যাপক। বাংলাদেশে প্রায় ২ কোটি লোক কোনো না কোনো কিডনি রোগে আক্রান্ত। কিডনি বিকলের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল বিধায় এদেশের শতকরা ১০ জন রোগী এ চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারে না। অর্থাভাবে চিকিৎসাহীন থেকে অকালে প্রাণ হারান সিংহভাগ রোগী। পক্ষান্তরে, একটু সচেতন হলে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগের উপস্থিতি ও এর কারণ শনাক্ত করে তার চিকিৎসা করা। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি অধ্যাপক ডা. রফিকুল আলম, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইউরোলজির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এমএ সালাম, ক্যাব-এর চেয়ারম্যান গোলাম রহমান, ডা. লায়লা আঞ্জুমান বানু প্রমুখ।
প্রতিবছর বিশ্বের প্রায় ৬ লাখ নারী অকাল মৃত্যুবরণ করে কিডনি বিকল হয়ে। সারা বিশ্বে ১৪ শতাংশ নারী পক্ষান্তরে ১২ শতাংশ পুরুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত, অথচ চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারীরা অবহেলিত, তারা পুরুষশাষিত সমাজে বৈষম্যের শিকার। অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শীর্ষ পদগুলোতে এখন নারীর উপস্থিতি অনেক বেশি। এমবিবিএসে ভর্তির ক্ষেত্রেও এখন মেয়ে প্রার্থীর সংখ্যা তুলনাভাবে অনেক বেশি। তাই বোঝা যাচ্ছে যে, পিছিয়ে পড়া নারীর অপবাদ ঘুচাতে এখন আমরা অগ্রসর হচ্ছি। কিডনি ফাউন্ডেশন-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, দেশে ব্যাপক সংখ্যক কিডনি রোগীর তুলনায় ডায়ালাইসিস সেন্টার খুবই কম, মাত্র ৯৬টি এবং ১৮ হাজার রোগী এসব সেন্টারে সপ্তাহে ২ বার করে ডায়ালাইসিস পায়। বেসরকারি সেন্টারগুলোতে ৩৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত ডায়ালাইসিস মূল্য রাখা হয় যা নিম্নবিত্ত এমনকি মধ্যবিত্তের জন্য বহন করা অসম্ভব। তিনি বলেন, সাইথ এশিয়াতে মোট কিডনি রোগীর তুলনায় মাত্র ১৫ শতাংশ রোগী ডায়ালাইসিসের সুযোগ পায় বাকি বিশাল সংখ্যক রোগী অর্থাভাবে ডায়ালাইসিস নিতে পারে না। তাই বাংলাদেশে ডায়ালাইসিস খরচ কমাতে সরকারি-বেসরকারি ভাবে বাস্তবিক উদ্যোগ নিতে হবে। নারীদের কিডনি চিকিৎসায় বৈষম্য দূরীকরণে স্বয়ং সরকারকে বিশেষ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি। চলচ্চিত্র অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ বলেন, মানুষ এবং মানবতার প্রতি বোধের পরিবর্তন সর্বাগ্রে জরুরি। তিনি কিডনি বিষয়ে এবং নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি করতে বিষয়ভিত্তিক নাটক, এমনকি সিনেমা তৈরি করে হলেও বার্তাগুলো পৌঁছাতে হবে। ক্যাম্পস-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এবং ল্যাবএইড স্পেশ্যালাইজড হাসপাতালের কিডনি বিভাগের চিফ কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. এমএ সামাদ এই গোলটেবিল বৈঠকের সঞ্চালনা ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অধ্যাপক ডা. এমএ সামাদ বলেন, নারীরা এদেশে সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রায় সবক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া কিংবা অবহেলার শিকার। সেক্ষেত্রে অনুৎপাদনশীলতা, গুরুত্বহীনতা, জড়তা, লোকলজ্জা, সহজাত লুকিয়ে রাখার প্রবণতা এসব কারণের জন্য বিশেষ করে চিকিৎসাসেবা গ্রহণের বা প্রদানের ক্ষেত্রে নারীরা এখনো সীমাহীন বৈষম্যের শিকার। এ চিত্র বাংলাদেশে যেমন প্রকট, বহির্বিশ্বে বা বিশ্বজুড়ে ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে বিভিন্ন দেশে ও চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারীর প্রতি অবহেলা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। এ বিষয়টি মাথায় রেখে বিশ্ব কিডনি দিবস উদযাপন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক “বিশ্ব কিডনি দিবস ২০১৮”-এর প্রতিপাদ্য হিসেবে “কিডনি অ্যান্ড উইমেন হেলথ : ইনকুড, ভ্যালু, এমপাওয়ার” নির্ধারণ করা হয়েছে। ডা. এমএ সামাদ বলেন, পৃথিবীব্যাপী কিডনি রোগের প্রবৃদ্ধি অত্যন্ত ব্যাপক। বাংলাদেশে প্রায় ২ কোটি লোক কোনো না কোনো কিডনি রোগে আক্রান্ত। কিডনি বিকলের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল বিধায় এদেশের শতকরা ১০ জন রোগী এ চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারে না। অর্থাভাবে চিকিৎসাহীন থেকে অকালে প্রাণ হারান সিংহভাগ রোগী। পক্ষান্তরে, একটু সচেতন হলে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগের উপস্থিতি ও এর কারণ শনাক্ত করে তার চিকিৎসা করা। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি অধ্যাপক ডা. রফিকুল আলম, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইউরোলজির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এমএ সালাম, ক্যাব-এর চেয়ারম্যান গোলাম রহমান, ডা. লায়লা আঞ্জুমান বানু প্রমুখ।
No comments