লাল দুর্গে গেরুয়া ঝড়: ত্রিপুরায় ২৫ বছরের বাম শাসনের অবসান
উত্তর-পূর্ব
ভারতের নিস্তরঙ্গ ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরায় রেকর্ড তৈরি করেছে ভারতীয় জনতা
পার্টি। লাল দুর্গে গেরুয়া ঝড়ে উড়ে গেছে স্বচ্ছতা ও সততার প্রতীক হিসেবে
সারা ভারতে চিহ্নিত মানিক সরকারের বাম সরকার। বাঙালি অধ্যুষিত পশ্চিমবঙ্গে
ঠিক যেভাবে বাম সরকারের পতন হয়েছিল সাত বছর আগে, ঠিক একই ভাবে দীর্ঘ ২৫
বছরের বাম শাসনের সাফল্য সত্ত্বেও আরেক বাঙালি অধ্যুষিত ত্রিপুরায় সিপিআইএম
ও তার সহযোগীরা ক্ষমতা থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন আম জনতার রায়ে।
ঐতিহাসিক জয়ের দাবি নিয়ে সরকার গঠন করতে চলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি।
নাগাল্যান্ডেও বিজেপি জোট সরকার তৈরি করতে চলেছে। এর ফলে ভারতের ২১টি
রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসতে চলেছে।
অন্যদিকে ত্রিপুরা ও নাগাল্যান্ডে বিজয়ের ফলে উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত বোন বলে পরিচিত রাজ্যগুলোর ৫টিতেই বিজেপি আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে। অসম, অরুণাচল প্রদেশ এবং মণিপুরে বর্তমানে রয়েছে বিজেপি পরিচালিত সরকার। এবার বিজেপির লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা ও ওড়িশা। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর মতে, তবেই বিজেপির স্বর্ণযুগ আসবে। ত্রিপুরায় বিশাল ব্যবধানে জয়ের পর উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। টুইটারে তার প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন এই জয় তার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি লিখেছেন, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরার মানুষ জনাদেশ দিয়েছেন। বিজেপির ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতিকে সমর্থন করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। মানুষের স্বপ্নপূরণের জন্য বদ্ধপরিকর আমরা। ?এবারের উত্তর-পূর্ব ভারতের তিন রাজ্যের মধ্যে ত্রিপুরায় নির্বাচন নিয়ে চরম উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল। বিজেপি ত্রিপুরা দখলের স্বপ্নে সর্বশক্তি নিয়ে প্রচারে নেমেছিল। তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ত্রিপুরা বিধানসভার ৬০ আসনের মধ্যে ৫৯ আসনের নির্বাচনে বিজেপি ও ইন্ডিজিনাস পিপলস ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা (আইপিটিএফ) জোট সম্মিলিতভাবে জয়ী হয়েছে ৪৩টি আসনে। দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি জোট। আর সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট পেয়েছে মাত্র ১৬টি আসন। গত নির্বাচনে বামফ্রন্ট জয়ী হয়েছিল ৫০টি আসনে। নরেন্দ্র মোদির ‘চলো পাল্টাই’ ডাকে ত্রিপুরার মানুষ যেভাবে সাড়া দিয়েছেন তা এক কথায় অভূতপূর্ব। ২০১৩ সালের নির্বাচনে যেখানে বিজেপি ত্রিপুরায় মাত্র ১.৫৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল সেখানে ৫ বছরের ব্যবধানে বিজেপি ৪১.২০ শতাংশ মানুষের রায় পেয়েছে। সারা ভারতের নির্বাচনের ইতিহাসে বিজেপির এই উত্থান ইতিহাস তৈরি করেছে। শুধু তাই নয়, বিজেপি ও ইন্ডিজিনাস পিপলস ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা (আইপিটিএফ) যুক্তভাবে পেয়েছে ৪৯.৫০ শতাংশ ভোট। সিপিআইএম ভোট এর মাত্র ৫ শতাংশ। এবারও রাজনীতিতে এই দল ৪৪.০১ শতাংশ ভোট পেয়ে বৃহত্তম দল হিসেবে নিজের প্রমাণ করেছে। ত্রিপুরায় হারের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সিপিআইএম-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, রাজ্য ৪৫% শতাংশ মানুষ সিপিআইএমকে ভোট দিয়েছেন এটাও ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। এতে দলের মনোবল বেড়েছে। তবে টানা ২৫ বছর ক্ষমতা থেকেছে সিপিআইএম, এরফলে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার ফ্যাক্টর কাজ করেছে। বামফ্রন্টের ভোট মাত্র ৫-৬ শতাংশ কমলেও আসন সংখ্যার নিরিখে তাদের বিপর্যয় ঘটেছে। উত্তর-পূর্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা রাম মাধব বলেছেন, ত্রিপুরসুন্দরী দেবীর আশীর্বাদেই এই ঐতিহাসিক জয় এসেছে। মানুষ তাদের পরিবর্তনের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। বিজেপি নেতারা যদিও দাবি করেছেন, উন্নয়ন কর্মসূচিতে জোর দেয়ার ফলেই এই বদল সম্ভব হয়েছে, কিন্তু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, উপজাতি এলাকাগুলোতে বামেদের জনসমর্থনের ভিত্তি এই নির্বাচনে পুরোপুরি ধসে গিয়েছে। বামফ্রন্ট এবারের নির্বাচনে যেসব আসন হারিয়েছেন তার বড় অংশই উপজাতি এলাকার আসন। রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পঁচিশ বছরের নিরবচ্ছিন্ন বাম শাসনকালের অবধারিত অঙ্গ হিসেবে তৈরি হয়েছিল প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা। সাধারণ মানুষের মধ্যকার পুঞ্জীভূত ক্ষোভের আঁচ বাম নেতারা পেয়েছিলেন। তবে এভাবে মানুষ যে মুখ ফিরিয়ে নেবেন তা তারা ভাবতেও পারেননি। অন্যদিকে বিজেপি সুকৌশলে জনজাতির জন্য আলাদা রাজ্যের দাবি সুকৌশলে তুলে ধরে সিপিআইএমের সেই শক্ত ঘাঁটিতেই আঘাত হেনেছে। অথচ ত্রিপুরার বাঙালি ও জনজাতির মধ্যে বাম আমলে শান্তি ও সম্প্রীতির এক আবহ ছিল বলে অনেকেই মনে করেন। তবে আইপিএফটির মতো বিচ্ছিন্নতাবাদী দলের সঙ্গে বিজেপির অনৈতিক জোট সেই সম্প্রীতির আবহ ধরে রাখতে পারবে কিনা সেটা নিয়েই চিন্তিত বাম নেতারা। অন্যদিকে, নাগাল্যান্ডে এতদিন বিরোধীহীন বিধানসভা চলছিল। ভোটের আগে আসন ভাগাভাগি নিয়ে মতান্তরে বিজেপি-নাগা পিপলস ফ্রন্টের (এনপিএফ) প্রাক ভোট মিত্রতা না হলেও, ভোটের আগেই এনপিএফ জানিয়েছিল তাদের সঙ্গে বিজেপির মিত্রতা চলবে। ফলে বিজেপি ও ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি ভোটে (এনডিপিপি) জোট বিধানসভার ৬০টি আসনের মধ্যে ২৯টিতে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসা নিশ্চিত করেছে। এনপিএফ পেয়েছে ২৫টি আসন। অন্যরা পেয়েছে ৬টি আসন। ত্রিপুরা ও নাগাল্যান্ডে কংগ্রেস নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেও মেঘালয়ে তারা অস্তিত্ব রক্ষা করতে পেরেছে। কংগ্রেস ৬০টি বিধানসভার মধ্যে ২১ আসনে জয়ী হয়েছে। ন্যাশনালিস্ট পিপলস পার্টি (এনপিপি) পেয়েছে ১৯টি আসন। ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক পার্টি পেয়েছে ৬টি আসন। আর দুই রাজ্যে অভূতপূর্ব ফলের দাবিদার বিজেপি মেঘালয়ে মাত্র ২টি আসন পেয়ে খুশি থেকেছে। অন্যরা পেয়েছে ১১টি আসন। ফলে মেঘালয়ে ফল ত্রিশঙ্কু হয়েছে।
অন্যদিকে ত্রিপুরা ও নাগাল্যান্ডে বিজয়ের ফলে উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত বোন বলে পরিচিত রাজ্যগুলোর ৫টিতেই বিজেপি আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে। অসম, অরুণাচল প্রদেশ এবং মণিপুরে বর্তমানে রয়েছে বিজেপি পরিচালিত সরকার। এবার বিজেপির লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা ও ওড়িশা। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর মতে, তবেই বিজেপির স্বর্ণযুগ আসবে। ত্রিপুরায় বিশাল ব্যবধানে জয়ের পর উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। টুইটারে তার প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন এই জয় তার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি লিখেছেন, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরার মানুষ জনাদেশ দিয়েছেন। বিজেপির ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতিকে সমর্থন করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। মানুষের স্বপ্নপূরণের জন্য বদ্ধপরিকর আমরা। ?এবারের উত্তর-পূর্ব ভারতের তিন রাজ্যের মধ্যে ত্রিপুরায় নির্বাচন নিয়ে চরম উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল। বিজেপি ত্রিপুরা দখলের স্বপ্নে সর্বশক্তি নিয়ে প্রচারে নেমেছিল। তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ত্রিপুরা বিধানসভার ৬০ আসনের মধ্যে ৫৯ আসনের নির্বাচনে বিজেপি ও ইন্ডিজিনাস পিপলস ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা (আইপিটিএফ) জোট সম্মিলিতভাবে জয়ী হয়েছে ৪৩টি আসনে। দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি জোট। আর সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট পেয়েছে মাত্র ১৬টি আসন। গত নির্বাচনে বামফ্রন্ট জয়ী হয়েছিল ৫০টি আসনে। নরেন্দ্র মোদির ‘চলো পাল্টাই’ ডাকে ত্রিপুরার মানুষ যেভাবে সাড়া দিয়েছেন তা এক কথায় অভূতপূর্ব। ২০১৩ সালের নির্বাচনে যেখানে বিজেপি ত্রিপুরায় মাত্র ১.৫৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল সেখানে ৫ বছরের ব্যবধানে বিজেপি ৪১.২০ শতাংশ মানুষের রায় পেয়েছে। সারা ভারতের নির্বাচনের ইতিহাসে বিজেপির এই উত্থান ইতিহাস তৈরি করেছে। শুধু তাই নয়, বিজেপি ও ইন্ডিজিনাস পিপলস ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা (আইপিটিএফ) যুক্তভাবে পেয়েছে ৪৯.৫০ শতাংশ ভোট। সিপিআইএম ভোট এর মাত্র ৫ শতাংশ। এবারও রাজনীতিতে এই দল ৪৪.০১ শতাংশ ভোট পেয়ে বৃহত্তম দল হিসেবে নিজের প্রমাণ করেছে। ত্রিপুরায় হারের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সিপিআইএম-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, রাজ্য ৪৫% শতাংশ মানুষ সিপিআইএমকে ভোট দিয়েছেন এটাও ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। এতে দলের মনোবল বেড়েছে। তবে টানা ২৫ বছর ক্ষমতা থেকেছে সিপিআইএম, এরফলে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার ফ্যাক্টর কাজ করেছে। বামফ্রন্টের ভোট মাত্র ৫-৬ শতাংশ কমলেও আসন সংখ্যার নিরিখে তাদের বিপর্যয় ঘটেছে। উত্তর-পূর্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা রাম মাধব বলেছেন, ত্রিপুরসুন্দরী দেবীর আশীর্বাদেই এই ঐতিহাসিক জয় এসেছে। মানুষ তাদের পরিবর্তনের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। বিজেপি নেতারা যদিও দাবি করেছেন, উন্নয়ন কর্মসূচিতে জোর দেয়ার ফলেই এই বদল সম্ভব হয়েছে, কিন্তু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, উপজাতি এলাকাগুলোতে বামেদের জনসমর্থনের ভিত্তি এই নির্বাচনে পুরোপুরি ধসে গিয়েছে। বামফ্রন্ট এবারের নির্বাচনে যেসব আসন হারিয়েছেন তার বড় অংশই উপজাতি এলাকার আসন। রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পঁচিশ বছরের নিরবচ্ছিন্ন বাম শাসনকালের অবধারিত অঙ্গ হিসেবে তৈরি হয়েছিল প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা। সাধারণ মানুষের মধ্যকার পুঞ্জীভূত ক্ষোভের আঁচ বাম নেতারা পেয়েছিলেন। তবে এভাবে মানুষ যে মুখ ফিরিয়ে নেবেন তা তারা ভাবতেও পারেননি। অন্যদিকে বিজেপি সুকৌশলে জনজাতির জন্য আলাদা রাজ্যের দাবি সুকৌশলে তুলে ধরে সিপিআইএমের সেই শক্ত ঘাঁটিতেই আঘাত হেনেছে। অথচ ত্রিপুরার বাঙালি ও জনজাতির মধ্যে বাম আমলে শান্তি ও সম্প্রীতির এক আবহ ছিল বলে অনেকেই মনে করেন। তবে আইপিএফটির মতো বিচ্ছিন্নতাবাদী দলের সঙ্গে বিজেপির অনৈতিক জোট সেই সম্প্রীতির আবহ ধরে রাখতে পারবে কিনা সেটা নিয়েই চিন্তিত বাম নেতারা। অন্যদিকে, নাগাল্যান্ডে এতদিন বিরোধীহীন বিধানসভা চলছিল। ভোটের আগে আসন ভাগাভাগি নিয়ে মতান্তরে বিজেপি-নাগা পিপলস ফ্রন্টের (এনপিএফ) প্রাক ভোট মিত্রতা না হলেও, ভোটের আগেই এনপিএফ জানিয়েছিল তাদের সঙ্গে বিজেপির মিত্রতা চলবে। ফলে বিজেপি ও ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি ভোটে (এনডিপিপি) জোট বিধানসভার ৬০টি আসনের মধ্যে ২৯টিতে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসা নিশ্চিত করেছে। এনপিএফ পেয়েছে ২৫টি আসন। অন্যরা পেয়েছে ৬টি আসন। ত্রিপুরা ও নাগাল্যান্ডে কংগ্রেস নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেও মেঘালয়ে তারা অস্তিত্ব রক্ষা করতে পেরেছে। কংগ্রেস ৬০টি বিধানসভার মধ্যে ২১ আসনে জয়ী হয়েছে। ন্যাশনালিস্ট পিপলস পার্টি (এনপিপি) পেয়েছে ১৯টি আসন। ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক পার্টি পেয়েছে ৬টি আসন। আর দুই রাজ্যে অভূতপূর্ব ফলের দাবিদার বিজেপি মেঘালয়ে মাত্র ২টি আসন পেয়ে খুশি থেকেছে। অন্যরা পেয়েছে ১১টি আসন। ফলে মেঘালয়ে ফল ত্রিশঙ্কু হয়েছে।
No comments