ম্যাক্রোঁর জয়ের পাঁচ কারণ
ফ্রান্সের রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন মধ্যপন্থী এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তবে এক বছর আগেও পরিস্থিতিটা ছিল ভিন্ন। দেশটির সবচেয়ে অজনপ্রিয় সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ম্যাক্রোঁ। এক বছর যেতে না যেতেই দেশের মূলধারার মধ্য-ডানপন্থী ও মধ্য-বামপন্থী দলের অনুসারীদের হারিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পেয়েছেন। বিশ্লেষকরা অবশ্য এ জয়ের পেছনে ৩৯ বছর বয়সী ম্যাক্রোঁর নিজস্ব ক্যারিশমার পাশাপাশি বেশ কিছু কারণ খুঁজে বের করেছেন।
ভাগ্যবান ম্যাক্রোঁ : এতে কোনো সন্দেহ নেই যে তিনি তার ভাগ্যের জোরেই এ জয় পেয়েছেন। নির্বাচনে ম্যাক্রোঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্য-ডানপন্থী প্রার্থী ফ্রাঁসোয়া ফিলোঁ ও সমাজতান্ত্রিক প্রার্থী বেনোঁ হ্যামনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠায় ভোটাররা নতুন কাউকে চেয়েছিল নিজেদের নেতা হিসেবে। প্যারিসভিত্তিক থিংক ট্যাংক ‘টেরা নোভা’র প্রতিনিধি মার্ক ওলিভার প্যাডিস বলেন, তিনি (ম্যাক্রোঁ) সত্যিই খুব ভাগ্যবান যে অপ্রত্যাশিতভাবে জনগণের সেই শূন্য জায়গাটি দখল করতে পেরেছেন।
চালাক ম্যাক্রোঁ : ফ্রান্সের নতুন প্রেসিডেন্টের ভাগ্যই কেবল সুপ্রসন্ন ছিল না। বরং তিনি খুব চতুরতার সঙ্গে নির্বাচনের গতিপথ তৈরি করে নিয়েছিলেন। নির্বাচনে ম্যাক্রোঁ সমাজতান্ত্রিক দলের হয়ে অংশ নিতে পারতেন। তবে ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি অনুধাবন করেন দলের অবস্থা জনগণের কাছে খুব বেশি গ্রহণযোগ্য নয়। প্যাডিস বলেন, ‘দূরদর্শী ম্যাক্রোঁ দলের অবস্থার বিষয়টি আগেই অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। তাই তিনি সেই পথ মাড়াননি।’ ২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রতিষ্ঠা করেন এন মার্শে! (এগিয়ে চলো) আন্দোলন। এর চার মাস পরেই প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলান্দ সরকার থেকে পদত্যাগ করেন ম্যাক্রোঁ।
করতে চেয়েছেন নতুন কিছু : প্যারিসভিত্তিক ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক এমিলি স্কালথেইস বলেন, ‘এন মার্শে প্রতিষ্ঠার পর ২০০৮ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বারাক ওবামার নির্বাচনী প্রচারণার পদ্ধতি অনুসরণ করেন ম্যাক্রোঁ। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবক তৈরির দিকে নজর দেন তিনি। কতিপয় অনভিজ্ঞ স্বেচ্ছাসেবক একটি গ্র্যান্ড মার্চের আয়োজন করেন।’ লক্ষ্য নির্ধারণ করেন, ৩ লক্ষাধিক পরিবারের কাছে তাদের প্রচারণা নিয়ে হাজির হবেন। সেই সব বাড়ির বাসিন্দাদের কাছ থেকে তুলে আনেন জনগণের চাওয়া-পাওয়ার কথা। সেগুলোকে পাথেয় করেই নিজের নির্বাচনী প্রচারণার কাজ শুরু করেন ম্যাক্রোঁ। এটাও তার সাফল্যের একটি কারণ।
ইতিবাচক বার্তা ছিল ম্যাক্রোঁর : নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী মেরিন লি পেনের চেয়ে ইতিবাচক বার্তা প্রদানের মাধ্যমে অনেক এগিয়ে ছিলেন ম্যাক্রোঁ। লি পেন যখন নিজেকে এলিটদের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দেন, তখন রাজনীতিতে নতুন আগন্তুক ম্যাক্রোঁ তৃণমূলের কথা তুলে ধরেন। স্বপ্ন দেখান সবাইকে নিয়ে নিরাপদ ও সমৃদ্ধিশালী ফ্রান্স গড়ার। প্যাডিস বলেন, ‘ফ্রান্সের জনগণের মন জয় করতে ম্যাক্রোঁর তাৎপর্যপূর্ণ আশাবাদী এমন পদক্ষেপ সত্যিই প্রশংসনীয়। প্রার্থীদের মধ্যে তিনিই একমাত্র এমন আশাবাদী বার্তা দিতে সক্ষম হয়েছেন।’
লি পেনের বিরুদ্ধে সোচ্চার : নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী লি পেন বেশ কিছু নেতিবাচক ইস্যু সামনে নিয়ে আসেন। এর মধ্যে অভিবাসনবিরোধী ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে আসা (ফ্রেক্সিট) এবং দেশের গতানুগতিক ধারা বদলে দেয়ার চিন্তা অন্যতম। সে ক্ষেত্রে ম্যাক্রোঁ তার আধুনিক চিন্তার সমন্বয়ে অভিবাসীদের জন্য সীমান্ত খুলে রাখার পাশাপাশি ইইউয়ের সঙ্গে সমন্বয় রেখে দেশকে সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ স্থান করার অঙ্গীকার করেন। বিবিসি।
হাঁফ ছেড়ে বাঁচল ইউরোপ : ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মধ্যপন্থী প্রার্থী এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর জয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল ইউরোপ। কারণ এ নির্বাচনে কট্টর ডানপন্থী প্রার্থী লি পেন জয়ী হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বড় ধরনের ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা ছিল। যুক্তরাজ্যের মতো ব্রেক্সিটের পথে হাঁটতে পারত ফ্রান্সও। তবে ম্যাক্রোঁর জয়ে সে শঙ্কা কেটে গেল। তবে ইইউপন্থী এ নেতার জয়ে নতুন করে শঙ্কায় পড়তে পারে ব্রেক্সিট আলোচনা। এ জন্য আগেভাগেই ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পরপরই ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ফোনালাপ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর একজন মুখপাত্র জানান, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে এ বিশাল জয়ের জন্য উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন তেরেসা। ম্যাক্রোঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল,
চালাক ম্যাক্রোঁ : ফ্রান্সের নতুন প্রেসিডেন্টের ভাগ্যই কেবল সুপ্রসন্ন ছিল না। বরং তিনি খুব চতুরতার সঙ্গে নির্বাচনের গতিপথ তৈরি করে নিয়েছিলেন। নির্বাচনে ম্যাক্রোঁ সমাজতান্ত্রিক দলের হয়ে অংশ নিতে পারতেন। তবে ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি অনুধাবন করেন দলের অবস্থা জনগণের কাছে খুব বেশি গ্রহণযোগ্য নয়। প্যাডিস বলেন, ‘দূরদর্শী ম্যাক্রোঁ দলের অবস্থার বিষয়টি আগেই অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। তাই তিনি সেই পথ মাড়াননি।’ ২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রতিষ্ঠা করেন এন মার্শে! (এগিয়ে চলো) আন্দোলন। এর চার মাস পরেই প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলান্দ সরকার থেকে পদত্যাগ করেন ম্যাক্রোঁ।
করতে চেয়েছেন নতুন কিছু : প্যারিসভিত্তিক ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক এমিলি স্কালথেইস বলেন, ‘এন মার্শে প্রতিষ্ঠার পর ২০০৮ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বারাক ওবামার নির্বাচনী প্রচারণার পদ্ধতি অনুসরণ করেন ম্যাক্রোঁ। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবক তৈরির দিকে নজর দেন তিনি। কতিপয় অনভিজ্ঞ স্বেচ্ছাসেবক একটি গ্র্যান্ড মার্চের আয়োজন করেন।’ লক্ষ্য নির্ধারণ করেন, ৩ লক্ষাধিক পরিবারের কাছে তাদের প্রচারণা নিয়ে হাজির হবেন। সেই সব বাড়ির বাসিন্দাদের কাছ থেকে তুলে আনেন জনগণের চাওয়া-পাওয়ার কথা। সেগুলোকে পাথেয় করেই নিজের নির্বাচনী প্রচারণার কাজ শুরু করেন ম্যাক্রোঁ। এটাও তার সাফল্যের একটি কারণ।
ইতিবাচক বার্তা ছিল ম্যাক্রোঁর : নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী মেরিন লি পেনের চেয়ে ইতিবাচক বার্তা প্রদানের মাধ্যমে অনেক এগিয়ে ছিলেন ম্যাক্রোঁ। লি পেন যখন নিজেকে এলিটদের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দেন, তখন রাজনীতিতে নতুন আগন্তুক ম্যাক্রোঁ তৃণমূলের কথা তুলে ধরেন। স্বপ্ন দেখান সবাইকে নিয়ে নিরাপদ ও সমৃদ্ধিশালী ফ্রান্স গড়ার। প্যাডিস বলেন, ‘ফ্রান্সের জনগণের মন জয় করতে ম্যাক্রোঁর তাৎপর্যপূর্ণ আশাবাদী এমন পদক্ষেপ সত্যিই প্রশংসনীয়। প্রার্থীদের মধ্যে তিনিই একমাত্র এমন আশাবাদী বার্তা দিতে সক্ষম হয়েছেন।’
লি পেনের বিরুদ্ধে সোচ্চার : নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী লি পেন বেশ কিছু নেতিবাচক ইস্যু সামনে নিয়ে আসেন। এর মধ্যে অভিবাসনবিরোধী ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে আসা (ফ্রেক্সিট) এবং দেশের গতানুগতিক ধারা বদলে দেয়ার চিন্তা অন্যতম। সে ক্ষেত্রে ম্যাক্রোঁ তার আধুনিক চিন্তার সমন্বয়ে অভিবাসীদের জন্য সীমান্ত খুলে রাখার পাশাপাশি ইইউয়ের সঙ্গে সমন্বয় রেখে দেশকে সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ স্থান করার অঙ্গীকার করেন। বিবিসি।
হাঁফ ছেড়ে বাঁচল ইউরোপ : ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মধ্যপন্থী প্রার্থী এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর জয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল ইউরোপ। কারণ এ নির্বাচনে কট্টর ডানপন্থী প্রার্থী লি পেন জয়ী হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বড় ধরনের ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা ছিল। যুক্তরাজ্যের মতো ব্রেক্সিটের পথে হাঁটতে পারত ফ্রান্সও। তবে ম্যাক্রোঁর জয়ে সে শঙ্কা কেটে গেল। তবে ইইউপন্থী এ নেতার জয়ে নতুন করে শঙ্কায় পড়তে পারে ব্রেক্সিট আলোচনা। এ জন্য আগেভাগেই ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পরপরই ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ফোনালাপ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর একজন মুখপাত্র জানান, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে এ বিশাল জয়ের জন্য উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন তেরেসা। ম্যাক্রোঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল,
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ-ক্লদ জাঙ্কার, ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্কসহ ইউরোপ ও বিশ্বনেতারা। ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ-ক্লদ জাঙ্কার টুইট করেন, ‘খুবই খুশি হয়েছি, ফরাসিরা ইউরোপের ভবিষ্যৎকে নির্বাচিত করেছেন। শক্তিশালী ও সুন্দর ইউরোপের জন্যই এ একতা।’ জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের মুখপাত্র স্টিফেন সেইবার্ট টুইটে লেখেন, ‘শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ ইউরোপের জন্য ম্যাক্রোঁর জয় হয়েছে।’ ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক বলেন, ‘স্বাধীনতা, সাম্য ও একতা’কে পছন্দ করেছেন ফরাসিরা। নির্বাচনের সময় ছড়িয়ে পড়া মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধেও রুখে দাড়িয়েছেন তারা।’
No comments