দুই হাজার একর জমি ফেরত নেবে সরকার by ইফতেখার মাহমুদ
কোরিয়ান ইপিজেডের (কেইপিজেড) আড়াই হাজার একর জমির মধ্যে দুই হাজার একর জমিই ফেরত নেবে সরকার। চট্টগ্রামের আনোয়ারায় দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়াংওয়ান করপোরেশনের মালিকানাধীন কেইপিজেড যে ৫০০ একর জমিতে শিল্পকারখানা স্থাপন করেছে, তা ওই কোম্পানিটির নামেই থাকবে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ভূমি ব্যবহার কমিটির প্রথম সভায় এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
ওই সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, সভায় এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মধুমতী নদীর জরিপকাজ করার প্রস্তাব দেন এবং বিনিয়োগে প্রয়োজনীয় জায়গা বরাদ্দের অনুরোধ করেন। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন, কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ ৫০০ একর জমিতে শিল্পপ্রতিষ্ঠান করেছে, বাকি দুই হাজার একর জমি ফেলে রেখেছে।
কেইপিজেডের জমি ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম-১২ (আনোয়ারা ও পশ্চিম পটিয়া) আসনের সাংসদ ও ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, কেইপিজেডের দুই হাজার একর জমি ফিরিয়ে নেওয়াসহ বেশ কিছু ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে আরেকটি সভা হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী সভার সিদ্ধান্ত ও কার্যবিবরণীতে সই করেছেন গত ২৬ এপ্রিল। এর তিন দিন পর সভার সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও এফবিসিসিআইয়ের কাছে পাঠানো হয়।
সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পাড়-সংলগ্ন জমিতে নির্মিত যমুনা রিসোর্ট ইজারা নিয়েও ইজারাদার তেমন কিছু করেনি, ইজারার অর্থও ঠিকমতো দেয়নি। তাই যমুনা রিসোর্টের জায়গাও একইভাবে ফেরত নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। উল্লেখ্য, যমুনা রিসোর্টের জায়গা ইজারা নিয়েছে আবদুল আউয়াল মিন্টুর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
কেইপিজেডের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সাদাতের মন্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে কল ও খুদে বার্তা পাঠালেও কোনো সাড়া মেলেনি। কেইপিজেডের আইন উপদেষ্টা রানা দাশগুপ্ত বলেন, সরকার কেইপিজেডকে জমি দিয়েছিল শিল্পকারখানা স্থাপনের অবকাঠামো তৈরির জন্য। সেই কাজ কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সঠিকভাবে করেছে। কিন্তু তারা যাতে এখানে শিল্পকারখানা করতে না পারে, সে জন্য অনেক চক্রান্ত হয়েছে। গ্যাস-বিদ্যুৎ-সংযোগসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও সরকার তা দেয়নি। এখন সরকার তার ব্যর্থতা স্বীকার না করে উল্টো জমি কেড়ে নিতে চাইছে। কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবে।
কেইপিজেড সূত্রে জানা যায়, কেইপিজেডের এ জমির জন্য সর্বোচ্চ মৌজা দর অনুযায়ী, মূল্য পরিশোধ করা হলেও ১৫ বছরে এসব জমির নিবন্ধন ও নামজারি করে দেয়নি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। দেড় বছর আগে ৫০০ একর জমি নিবন্ধন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে কেইপিজেডকে দলিল পাঠানো হয়। তখন কর্তৃপক্ষ ওই নিবন্ধনে অস্বীকৃতি জানায়। তারা আড়াই হাজার একর জমি একসঙ্গে নিবন্ধন করার ইচ্ছার কথা জানায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আগের জেলা প্রশাসকের সময়েই তাদের ৫০০ একর জমি নিবন্ধনের দলিল পাঠানো হয়। কিন্তু তারা একসঙ্গে সবগুলো জমির নিবন্ধন নিতে চেয়েছিল। তবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বলেছে, প্রথমে ৫০০ একর দেওয়া হবে। অবশিষ্ট জমি দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে।
কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ার এলজি, স্যামসাংসহ ১০টি কোম্পানি এখানে বিনিয়োগ করতে এসেছিল। কিন্তু সরকার কেইপিজেডের নামে জমির নামজারি করে দেয়নি। আর বিদেশি কোম্পানিগুলো কেইপিজেডের নামে নামজারি ছাড়া সেখানে বিনিয়োগ করতে চায় না। ফলে জমিসংক্রান্ত এ জটিলতায় বিপুলসংখ্যক বিদেশি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ না করে ফিরে যায়।
কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ বলছে, এ বিশেষায়িত শিল্প এলাকায় ইয়াংওয়ান কোম্পানির চারটি কারখানার নির্মাণকাজ দ্রুত এগোচ্ছে। আরও ১০টি কারখানার নির্মাণকাজের প্রস্তুতি চলছে। এ শিল্পাঞ্চলটির অভ্যন্তরীণ ২২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণও প্রায় শেষ। ইতিমধ্যে কারখানাটিতে প্রায় ১২ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এক হাজার শ্রমিকের থাকার জন্য আবাসিক ভবন করা হয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো সূত্রে জানা গেছে, গত বছর কেইপিজেড থেকে প্রায় পাঁচ কোটি ডলার বা প্রায় চার শ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। কেইপিজেড এলাকায় এশিয়ার বৃহত্তম জুতা তৈরির কারখানা স্থাপনের কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। সাতটি কারখানা বর্তমানে উৎপাদনে রয়েছে, পাঁচটি কারখানায় উৎপাদন শুরুর জন্য মেশিন স্থাপন চলছে। আর চারটির নির্মাণকাজ চলছে।
কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের সঙ্গে একটি বিনিয়োগ সম্মেলনের পর কেইপিজেড স্থাপনের চুক্তি হয়। ওই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ান লিমিটেড এ ইপিজেড স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন নেয়।
ওই সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, সভায় এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মধুমতী নদীর জরিপকাজ করার প্রস্তাব দেন এবং বিনিয়োগে প্রয়োজনীয় জায়গা বরাদ্দের অনুরোধ করেন। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন, কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ ৫০০ একর জমিতে শিল্পপ্রতিষ্ঠান করেছে, বাকি দুই হাজার একর জমি ফেলে রেখেছে।
কেইপিজেডের জমি ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম-১২ (আনোয়ারা ও পশ্চিম পটিয়া) আসনের সাংসদ ও ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, কেইপিজেডের দুই হাজার একর জমি ফিরিয়ে নেওয়াসহ বেশ কিছু ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে আরেকটি সভা হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী সভার সিদ্ধান্ত ও কার্যবিবরণীতে সই করেছেন গত ২৬ এপ্রিল। এর তিন দিন পর সভার সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও এফবিসিসিআইয়ের কাছে পাঠানো হয়।
সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পাড়-সংলগ্ন জমিতে নির্মিত যমুনা রিসোর্ট ইজারা নিয়েও ইজারাদার তেমন কিছু করেনি, ইজারার অর্থও ঠিকমতো দেয়নি। তাই যমুনা রিসোর্টের জায়গাও একইভাবে ফেরত নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। উল্লেখ্য, যমুনা রিসোর্টের জায়গা ইজারা নিয়েছে আবদুল আউয়াল মিন্টুর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
কেইপিজেডের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সাদাতের মন্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে কল ও খুদে বার্তা পাঠালেও কোনো সাড়া মেলেনি। কেইপিজেডের আইন উপদেষ্টা রানা দাশগুপ্ত বলেন, সরকার কেইপিজেডকে জমি দিয়েছিল শিল্পকারখানা স্থাপনের অবকাঠামো তৈরির জন্য। সেই কাজ কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সঠিকভাবে করেছে। কিন্তু তারা যাতে এখানে শিল্পকারখানা করতে না পারে, সে জন্য অনেক চক্রান্ত হয়েছে। গ্যাস-বিদ্যুৎ-সংযোগসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও সরকার তা দেয়নি। এখন সরকার তার ব্যর্থতা স্বীকার না করে উল্টো জমি কেড়ে নিতে চাইছে। কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবে।
কেইপিজেড সূত্রে জানা যায়, কেইপিজেডের এ জমির জন্য সর্বোচ্চ মৌজা দর অনুযায়ী, মূল্য পরিশোধ করা হলেও ১৫ বছরে এসব জমির নিবন্ধন ও নামজারি করে দেয়নি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। দেড় বছর আগে ৫০০ একর জমি নিবন্ধন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে কেইপিজেডকে দলিল পাঠানো হয়। তখন কর্তৃপক্ষ ওই নিবন্ধনে অস্বীকৃতি জানায়। তারা আড়াই হাজার একর জমি একসঙ্গে নিবন্ধন করার ইচ্ছার কথা জানায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আগের জেলা প্রশাসকের সময়েই তাদের ৫০০ একর জমি নিবন্ধনের দলিল পাঠানো হয়। কিন্তু তারা একসঙ্গে সবগুলো জমির নিবন্ধন নিতে চেয়েছিল। তবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বলেছে, প্রথমে ৫০০ একর দেওয়া হবে। অবশিষ্ট জমি দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে।
কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ার এলজি, স্যামসাংসহ ১০টি কোম্পানি এখানে বিনিয়োগ করতে এসেছিল। কিন্তু সরকার কেইপিজেডের নামে জমির নামজারি করে দেয়নি। আর বিদেশি কোম্পানিগুলো কেইপিজেডের নামে নামজারি ছাড়া সেখানে বিনিয়োগ করতে চায় না। ফলে জমিসংক্রান্ত এ জটিলতায় বিপুলসংখ্যক বিদেশি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ না করে ফিরে যায়।
কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ বলছে, এ বিশেষায়িত শিল্প এলাকায় ইয়াংওয়ান কোম্পানির চারটি কারখানার নির্মাণকাজ দ্রুত এগোচ্ছে। আরও ১০টি কারখানার নির্মাণকাজের প্রস্তুতি চলছে। এ শিল্পাঞ্চলটির অভ্যন্তরীণ ২২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণও প্রায় শেষ। ইতিমধ্যে কারখানাটিতে প্রায় ১২ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এক হাজার শ্রমিকের থাকার জন্য আবাসিক ভবন করা হয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো সূত্রে জানা গেছে, গত বছর কেইপিজেড থেকে প্রায় পাঁচ কোটি ডলার বা প্রায় চার শ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। কেইপিজেড এলাকায় এশিয়ার বৃহত্তম জুতা তৈরির কারখানা স্থাপনের কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। সাতটি কারখানা বর্তমানে উৎপাদনে রয়েছে, পাঁচটি কারখানায় উৎপাদন শুরুর জন্য মেশিন স্থাপন চলছে। আর চারটির নির্মাণকাজ চলছে।
কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের সঙ্গে একটি বিনিয়োগ সম্মেলনের পর কেইপিজেড স্থাপনের চুক্তি হয়। ওই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ান লিমিটেড এ ইপিজেড স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন নেয়।
No comments