চা-শ্রমিকদের জীবন! by মোহন রবিদাস
বাংলাদেশের চা-শ্রমিকেরা বহুকাল ধরে
নিরক্ষরতা, নিপীড়ন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বঞ্চনার মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করে
আসছে। দেশের মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ নেই। তারা রোদে পুড়ে,
বৃষ্টিতে ভিজে, খালি পায়ে, জোঁক, মশা, সাপসহ বিষাক্ত পোকামাকড়ের কামড়
খেয়ে মাত্র ৬৯ টাকার বিনিময়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি কাজ করে, কোনো কথা
বলে না।
দেশের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর তুলনায় চা-শ্রমিকেরা সব দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে নিরক্ষরতা। দেশে বাজেটের একটা বিরাট অংশ যেখানে ব্যয় হচ্ছে শিক্ষা খাতে, সেখানে চা-বাগানের শিক্ষার হার অতি নগণ্য। দেশের অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে যেমন কোটা-সুবিধা রয়েছে, চা-শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য তেমন কিছু নেই।
চা-বাগানগুলোতে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা খুবই নাজুক। অভিজ্ঞ বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রী না থাকায় চা-বাগানগুলোতে মাতৃমৃত্যুর হার খুব বেশি। ১৯৬২ সালের টি প্ল্যান্টেশন লেবার অর্ডিন্যান্স এবং ১৯৭৭ সালের প্ল্যান্টেশন রুলসে চা-বাগানগুলোতে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা মালিকের দায়িত্ব থাকলেও তা প্রতিপালনের ব্যবস্থা নেই। চা-শ্রমিকেরা ৮ বাই ১১ ফুট মাপের একটি ঘরে অন্তত তিনটি প্রজন্ম বাস করে।
জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবাই প্রজাতন্ত্রের নাগরিক। এখানে কোনো জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করা চলবে না। চা-বাগানে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চবিদ্যালয়, কারিগরি বিদ্যালয়, কলেজ প্রতিষ্ঠা ও চা-বাগানের ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষ শিক্ষাবৃত্তির প্রচলন করা উচিত। চা-বাগান এলাকায় পর্যাপ্ত সরকারি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে চা-শ্রমিকদের বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের মানুষ মনে করলে এসব অবশ্যই করতে হবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, লোক প্রশাসন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
দেশের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর তুলনায় চা-শ্রমিকেরা সব দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে নিরক্ষরতা। দেশে বাজেটের একটা বিরাট অংশ যেখানে ব্যয় হচ্ছে শিক্ষা খাতে, সেখানে চা-বাগানের শিক্ষার হার অতি নগণ্য। দেশের অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে যেমন কোটা-সুবিধা রয়েছে, চা-শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য তেমন কিছু নেই।
চা-বাগানগুলোতে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা খুবই নাজুক। অভিজ্ঞ বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রী না থাকায় চা-বাগানগুলোতে মাতৃমৃত্যুর হার খুব বেশি। ১৯৬২ সালের টি প্ল্যান্টেশন লেবার অর্ডিন্যান্স এবং ১৯৭৭ সালের প্ল্যান্টেশন রুলসে চা-বাগানগুলোতে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা মালিকের দায়িত্ব থাকলেও তা প্রতিপালনের ব্যবস্থা নেই। চা-শ্রমিকেরা ৮ বাই ১১ ফুট মাপের একটি ঘরে অন্তত তিনটি প্রজন্ম বাস করে।
জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবাই প্রজাতন্ত্রের নাগরিক। এখানে কোনো জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করা চলবে না। চা-বাগানে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চবিদ্যালয়, কারিগরি বিদ্যালয়, কলেজ প্রতিষ্ঠা ও চা-বাগানের ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষ শিক্ষাবৃত্তির প্রচলন করা উচিত। চা-বাগান এলাকায় পর্যাপ্ত সরকারি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে চা-শ্রমিকদের বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের মানুষ মনে করলে এসব অবশ্যই করতে হবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, লোক প্রশাসন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments