ঢাকার বাইরের পরিস্থিতি মারাত্মক
বিএনপি
নেতৃত্বাধীন ২০ দলের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচিতে ঢাকার বাইরের
জেলাগুলোর পরিস্থিতি মারাত্মক বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল
আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, হরতাল-অবরোধে রাজধানীর বাইরের জেলাগুলোতে
পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ঢাকায় হয়তো কিছু বোঝা যায় না। এখনই
ঢাকার বাইরের জেলাগুলোকে সচল করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। গতকাল অর্থ
মন্ত্রণালয়ে ‘বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রযাত্রা এবং সামষ্টিক অর্থনীতির
সামপ্রতিক অবস্থান’ বিষয়ক ২৯ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন শেষে
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন,
অবরোধ-হরতালসহ সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দেশের অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি
হচ্ছে। প্রতি দিনই ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। এটা কোন রাজনীতি না, এটা সন্ত্রাস।
বাংলাদেশের উন্নয়নকে প্রতিহত করার জন্যই খালেদা জিয়া এটা করছেন। উনার
(খালেদা জিয়া) সঙ্গে; উনার সন্ত্রাসী-জঙ্গি কর্মসূচির সঙ্গে দেশের একজন
সাধারণ মানুষও নেই। উনার কর্মসূচি এখন ফুটো বেলুন। এমন বেলুন, যার ভেতরে
এয়ারও (বাতাস) নেই। সহিংস রাজনীতিতে সরকারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় সমস্যা
হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে মুহিত বলেন, অবশ্যই সমস্যা হচ্ছে। যেসব
লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা বাজেট দিয়েছিলাম, তা এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। ৭
দশমিক ৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে বলে ধরেছিলাম। হয়ত ৭ দশমিক ২
শতাংশ হতো, কিন্তু এখন দেখছি তারও কম হবে। খালেদা জিয়া বাংলাদেশের উন্নয়ন
ব্যাহত করতে চায় দাবি করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা গত ৫-৬ বছরে দেশের যে
উন্নয়ন করেছি সেটা ধ্বংস করাই তার একমাত্র উদ্দেশ্য। কিন্তু আমি তাকে বলতে
চাই। অনেক বাধা-বিপত্তি; চড়াই-উৎরাই পেরিয়েই কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে আমরা ৬
শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। তিনি যত চেষ্টাই করুক না
কেন; বাংলাদেশের মানুষ সব মোকাবিলা করে অর্থনীতির অগ্রযাত্রা অব্যাহত
রাখবে। অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি মোতায়েন করে দেশ সচল রাখতে গিয়ে অতিরিক্ত
খরচ হবে বা হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই
অতিরিক্ত বরাদ্দ দিতে হবে। কি পরিমাণ অতিরিক্ত বরাদ্দ দিতে হবে-
সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। দেশের
সামপ্রতিক পরিস্থিতির উত্তরণ কবে হবে? এমন জিজ্ঞাসার জবাবে অর্থমন্ত্রী
বলেন, নো বডি নোউজ। এ সময় অর্থ মন্ত্রী সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করে
জানতে চান, আপনারা বলতে পারবেন? গত জানুয়ারিতে আমি আশা করেছিলাম, এক
সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। এমন আশা তো আমি করতেই পারি। দেশ
কি এই অবস্থার মধ্য দিয়েই যাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল
আবদুল মুহিত বলেন, বাংলাদেশ একটি অদ্ভুত দেশ, প্রায়ই হরতাল-অবরোধ হয়। তবে
এর মধ্যেও মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির হার (জিডিপি) ৬ শতাংশের ওপর থাকছে।
সামপ্রতিক সহিংস পরিস্থিতিতে অর্থনীতির কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, ওই চিত্র
আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় সমন্বয় কাউন্সিলের বৈঠকে তুলে ধরা হবে বলে জানান
মন্ত্রী। এই মুহূর্তে দেশবাসীর প্রতি আপনার আহ্বান কি? এমন প্রশ্নের জবাবে
অর্থমন্ত্রী বলেন, এ আন্দোলন যারা করছে, তারা বাংলাদেশের শক্র। আমি সচেতন
ব্যক্তিদের (সেনসিটিভ পারসন) এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ, ব্যাংক ও আর্থিক
প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এম আসলাম আলম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান
নজিবুর রহমান ও অথনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. মেজবাউদ্দিন আহমেদ
উপস্থিত ছিলেন।
No comments