ফেসবুক ব্যবহারের ফলে হিংসা, বিষণ্নতা
ফেসবুকের
মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অত্যধিক ব্যবহারের ফলে ব্যবহারকারীরা
বিষণ্নতায় ভুগতে পারেন। বুধবার প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটাই
দাবি করা হয়েছে। ফেসবুক ব্রাউজ করা আজ লাখো মানুষের দৈনন্দিন কাজের অংশ হয়ে
উঠেছে। গবেষকরা চিহ্নিত করেছেন, কিভাবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের
সঙ্গে আবেগীয়ভাবে জড়িয়ে আছেন ব্যবহারকারীরা। এছাড়া এর নিত্য ব্যবহার মানসিক
স্বাস্থ্যের ওপর কেমন প্রভাব ফেলতে পারে, তা-ও বের হয়ে এসেছে ওই মিসৌরি
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের একটি গবেষণায়। এ খবর দিয়েছে দ্য টেলিগ্রাফ
অনলাইন। গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যবহারকারীদের মধ্যে ফেসবুক ব্যবহারের ফলে
অন্য ব্যবহারকারীর প্রতি ঈর্ষা বা হিংসার জন্ম নিলে তা থেকে বিষণ্নতাবোধের
জন্ম হতে পারে। গবেষণার সঙ্গে জড়িত অধ্যাপক মার্গারেট ডাফি বলেন, যেভাবে
ফেসবুক ব্যবহার করেন ব্যবহারকারীরা, তার ফলে এর প্রতি নিজেদের প্রতিক্রিয়ার
মধ্যেও পার্থক্যের সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, যদি ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এর ভাল
দিকগুলো বেছে নিয়ে নিজের পরিবার ও পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায়
রাখেন এবং জীবনের মজার ও গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি
করেন, তাহলে ফেসবুক হতে পারে বেশ মজার ও স্বাস্থ্যকর কর্মকাণ্ডের জায়গা।
তবে পরিচিত কেউ অর্থনৈতিকভাবে কতটা ভাল আছে, বা পুরনো কোন বন্ধু তার
সম্পর্ক নিয়ে কতটা সুখে আছে, তা দেখার জন্য যারা ফেসবুক ব্যবহার করেন,
তাদের মধ্যে ঈর্ষা বা হিংসার জন্ম নিতে পারে। এর ফলে তাদের মধ্যে ক্রমেই
বিষণ্নতাবোধের সৃষ্টি হতে পারে। এ গবেষণার জন্য ৭০০ তরুণ ফেসবুক
ব্যবহারকারীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। দেখা গেছে, এদের মধ্যে যারা ফেসবুক
অনেকটা ‘নজরদারির’ কাজে ব্যবহার করেন, তাদের মধ্যে বিষণ্নতাবোধের লক্ষণ
রয়েছে। অন্যদিকে যারা যোগাযোগ রাখার জন্য ফেসবুক ব্যবহার করেন, তারা এর
নেতিবাচক প্রভাবে ভোগেন না। বন্ধুদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে কে কতটা ভাল
অবস্থানে রয়েছে, এসব দেখতে অনেকে ফেসবুক ব্যবহার করেন। একে গবেষণায়
নজরদারিমূলক ফেসবুক ব্যবহার বলে বোঝানো হয়েছে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে,
নজরদারির কাজে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে, বন্ধু বা পরিচিত কারও বিলাসী
ছুটির দিন, নতুন গাড়ি বা বাড়ি, এমনকি সুখী সম্পর্ক নিয়ে করা ফেসবুক পোস্টের
ফলে ঈর্ষা বা হিংসার বোধ জন্মায়। গবেষকরা জানিয়েছেন, এ বোধের ফলে ক্রমেই
বিষণ্নতাবোধের শিকার হন ওই ব্যবহারকারীরা। অধ্যাপক ডাফি বলেন, অনেক মানুষের
জন্য ফেসবুক খুবই ইতিবাচক দিক হতে পারে। কিন্তু অপর একজনের সঙ্গে নিজের
জীবনযাপনের তুলনার জন্য যদি ফেসবুক ব্যবহার করা হয়, তাহলে এর খুব নেতিবাচক
প্রভাব সৃষ্টি হতে পারে। এ ধরনের আচরণ এড়ানোর জন্য ফেসবুক ব্যবহারকারীদের
উচিত এসব ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হওয়া।
No comments