বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ : শেষ মুহূর্তের গোলে মালয়েশিয়া চ্যাম্পিয়ন
বাংলাদেশকে
হারিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়
করেছে মালয়েশিয়া। আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে স্বাগতিক বাংলাদেশকে ৩-২
গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় সফরকারী দলটি। ম্যাচ শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে
বিজয়ী দলের হাতে শিরোপা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ম্যাচের শুরু
থেকেই বেশ গোছানো খেলা শুরু করে মালয়েশিয়া। তবে আক্রমণের দিক থেকে এগিয়ে
ছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য বড় দুর্ভাগ্য হিসেবে দেখা
দেয় জাহিদের ইনজুরি। খেলার ৮ম মিনিটেই ইনজুরির শিকার হন বাংলাদেশ দলের
ওয়েঙ্গার জাহিদ হোসেন। বদলি হিসেবে মাঠে আসেন আবদুল বাতেন মজুমদার। শুরুতে
একাদশের এই রদবদলে স্বাগতিক দলের ম্যাচ পরিকল্পনায় কিছুটা ফাটল ধরে। তারপরও
আক্রমণে ছিল তারাই। ১১তম মিনিটে রায়হানের লম্বা থ্রোয়ের বলে মালয়েশিয়ার
গোল পোস্টে জটলার সৃষ্টি হয়, সেখান থেকে এমিলি হেড করলে বল লক্ষ্য ভ্রষ্ট
হয়। ১৪তম মিনিটে ফের লম্বা থ্রো করেন রায়হান। এবারও জটলা থেকে জামাল ভুইয়া
শট নিলে বল বার ঘেষে বাইরে চলে যায়। ১৬ মিনিটের সময় প্রতি আক্রমণে যায়
মালয়েশিয়া। এবার লম্বা থ্রো করেন মিডফিল্ডার মোহাম্মদ আরিফ ফারহান। বল
কাড়াকাড়ির সময় বাংলাদেশ গোলপোস্টের সামনে জটলার সৃষ্টি হলেও একজন ডিফেন্ডার
বল কিায়ার করেন। ম্যাচের বয়স যখন ৩১ মিনিট তখন বাংলাদেশ দলের ডি বক্সের
বাইরে মালয়েশিয়ার এক খেলোয়াড়কে বাধা দিতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনে স্বাগতিক দলের
ডিফেন্ডাররা। ফলে বেজে ওঠে রেফারির বাঁশি। ফ্রি কিক থেকে সফরকারী দলের
স্ট্রাইকার কুমারান অন্তত ৪০ গজ দূর থেকে বাঁকানো শটে বাংলাদেশের গোল
পোস্টে বল পাঠিয়ে দলকে এগিয়ে দেন ১-০ ব্যবধানে। ৩৮তম মিনিটে বাংলাদেশের আরো
একটি আক্রমণ ব্যর্থ করে দেয় সফরকারী ডিফেন্ডাররা। কিন্তু ৪১ মিনিটে গিয়ে
ফের ভুল করে বসে স্বাগতিক দলের রক্ষণ বিভাগ। এসময় দুই ডিফেন্ডারের মাঝে
দাঁড়ানো কুমারান ফের বল পেয়ে ক্ষিপ্রগতিতে এগিয়ে গিয়ে স্বাগতিক গোলরক্ষক
শহিদুল হককে বোকা বানান প্লেসিং শটে । ফলে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় মালয়েশিয়া।
এসময় দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে কিছুটা পেশী শক্তি ব্যবহারের চেষ্টা পরিলতি
হয়। এরপর অবশ্য স্বাগতিকরা একাধিক আক্রমণ রচনা করলেও দেখা পায়নি গোলের।
ফলে ০-২ গোলে পিছিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে মামুনুল বাহিনী। দ্বিতীয়ার্ধের
শুরুতে যেন পাল্টে যায় বাংলাদেশ দলের চেহারা। দারুণ উদ্যাম নিয়ে খেলতে
থাকে তারা। এর ফলাফল হিসেবে ১০ মিনিটের মধ্যেই দুই গোল পরিশোধ করে খেলায়
সমতা ফিরিয়ে আনে বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধের ৩ মিনিটের মধ্যেই ১ম গোল পরিশোধ
করে তারা। ম্যাচের ৪৮তম মিনিটে সেই রায়হানের লম্বা থ্রো থেকে দুর্দান্ত এক
হেডের সাহায্যে গোল করে ব্যবধান কমিয়ে দেন এমিলি (২-১)। ৫৩তম মিনিটে ডান
প্রান্ত থেকে পাওয়া কর্নার থেকে মামুনুল শট নিলে চলন্ত বলে হেড করেন
ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান। এতে ২-২ গোলে সমতায় ফিরে বাংলাদেশ। এরপরও আক্রমণ
অব্যাহত রেখেছে লুডভিক ডি ক্রুইফের শীষ্যরা। তবে সম্ভব হয়নি এগিয়ে যাওয়া।
শেষ পর্যন্ত ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে কর্নার থেকে ফের গোল করে এগিয়ে যায়
মালয়েশিয়া। অতিরিক্ত তিন মিনিটের শেষ মিনিটে (৯২ মিনিটে) মোহাম্মদ
সিজওয়ানের কর্নার থেকে দুর্দান্ত হেড করেন সতীর্থ খেলোয়াড় মোহাম্মদ ফাইজাত।
এতেই ফের ৩-২ গোলে এগিয়ে যায় মালয়েশিয়া। শেষ পর্যন্ত ওই লীড নিয়েই মাঠ
ছাড়ে মারয়েশিয়া। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও লাভ করেছেন ম্যাচ জয়ী গোলদাতা
ফাইজাত। টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার লাভ করেছেন স্বাগতিক দলের মিডফিল্ডার
জামাল ভুঁইয়া।
সূত্র : বাসস।
সূত্র : বাসস।
No comments