দরপত্র ছাড়াই ৯ প্রতিষ্ঠানের পণ্য ক্রয়ে সরকারি নির্দেশ by শামীমুল হক
দরপত্র ছাড়াই ৯টি প্রতিষ্ঠানের পণ্য ক্রয়ে সরকারি নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সকল মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও বিভাগের প্রধানদের চিঠি দেয়া হয়েছে। যে ৯টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করতে বলা হয়েছে সেগুলো হলো- চট্টগ্রামের পতেঙ্গার ইস্টার্ন কেবলস লিমিটেড, চিটাগাং ড্রাইডক লিমিটেড, জিইএমকো লিমিটেড, ন্যাশনাল টিউবস লিমিটেড, ঢাকার তেজগাঁওয়ের ইস্টার্ন টিউবস লিমিটেড, গাজীপুরের টঙ্গীর এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেড, চট্টগ্রামের কালুরঘাটের গাজী ওয়্যারস লিমিটেড, চট্টগ্রামের বাড়বকুণ্ডের প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানগুলো শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন (বিএসইসি) -এর অধীন। এরমধ্যে ইস্টার্ন কেবলস লিমিটেডে তৈরি হয়- পিভিসি ইন্স্যুলেটেড তামার তার। সাইজ: ০.৫ এমএম-২ এবং ১০০০ এমএম-২ পর্যন্ত। অ্যালুমিনিয়ম কন্ডাক্টর যেমন: বেয়ার, পিভিসি ও ইন্স্যুলেটেড। সাইজ: ২৩ এমএম-২ থেকে ৬২৮ এমএম-২ পর্যন্ত। ইস্টার্ন টিউবস লিমিটেডে তৈরি হয়- ফ্লোরোসেন্ট টিউবলাইট। ২৮ ও ৩২ মিলিমিটার ব্যাসের ৪ থেকে ৩৬ ওয়াট ও ৪০ ওয়াট। এছাড়া, তৈরি হয় সিএফএল বাল্ব। ১৫,২০,২৩,২৬,৩০,৩৬,৪২ ও ৬৫ ওয়াট। এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডে তৈরি হয়- জেডএস-৮০সিসি, ১০০ সিসি, ১১০ সিসি, ১২৫ সিসি ও ১৫০ সিসি বিভিন্ন মডেলের মোটরসাইকেল। গাজী ওয়্যারস লিমিটেডে তৈরি হয়-সুপার এনামেল তামার তার। সাইজ: এসডব্লিউজি ১১-৪৬। এনিল্ড তামার তার। সাইজ: এসডব্লিউজি ১০-৪৬ ও হার্ড ড্রন বেয়ার তামার তার। সাইজ: এসডব্লিউজি ০১-৪৬। চিটাগাং ড্রাইডক লিমিটেডে তৈরি হয়- জাহাজ মেরামত, নির্মাণ, ফেব্রিকেশন কাজ, ফুট ওভারব্রিজ, বেইলি ব্রিজ ও কারখানার যন্ত্রাংশ। জিইএমকো লিমিটেডে তৈরি হয়- ৫-২৫ কেভিএ সিঙ্গেল ফেজ এবং ৫০-৫০০ কেভিএ থ্রি ফেজ ট্রান্সফরমার ১১-৩৩/০.৪১৫ কেভি, লাইটনিং এরেস্টার ১১ কেভি, ড্রপআউট ফিউজ ১১ কেভি ও ফিউজ লিংক ২০এএমপিএস। ন্যাশনাল টিউবস লিমিটেডে তৈরি হচ্ছে-১ক্ষ্ম-২ক্ষ্ম থেকে ৪ক্ষ্ম ব্যাসের এমএস পাইপ ও জিআই পাইপ এবং ৩ক্ষ্ম-৪ক্ষ্ম থেকে ৮ক্ষ্ম ব্যাসের এপিআই পাইপ। প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে তৈরি হচ্ছে- মিটসুবিসি পাজেরো স্পোর্ট জিপ, টাটা বাস, মিনিট্রাক, আইচার মিনিবাস, ডাবল কেবিন পিকআপ, বিভিন্ন ব্যান্ডের মাইক্রোবাস ও রুপান্তরিত অ্যাম্বুলেন্স। বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরিতে তৈরি হচ্ছে- স্টেনলেস স্টিল সেভিং ব্লেড, টু-থ্রি ব্লেডের রেজার, সেভিং ক্রিম ও ফোম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
গত ৮ই জানুয়ারি বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় বিএসইসি ভবন থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও বিভাগে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে- সূত্র নং: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ১২-১২-২০০০, ২৫-০৯-২০০২ ও ১৪-১০-২০১০ তারিখের যথাক্রমে পত্র সংখ্যা-৫৩.২৩.১৮.০০.০০.০৫. ২০০০-৪৭৯(৬০), ৫৩.২৩.১৮.০০.০০.০৫.২০০০(অংশ) ৩৮৩(৭৩) ও ৫৩.২৩.১৬.০০.০০.০২.২০১০-৪৪৫ এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ১৬-০৩-২০১০ তারিখের পত্রসংখ্যা-পরি/এনইসি-একনেক/সমন্বয়-২/০৭/০৮ (অংশ-১) /২০০৯/৩৩৩। উপযুক্ত বিষয় ও সূত্রস্থ স্মারকসমূহের প্রতি আপনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনি অবগত আছেন যে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন (বিএসইসি)-এর অধীনে ৯টি চালু প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত পণ্য দেশে বিদ্যমান সকল প্রতিষ্ঠান থেকে গুণগতমান বিবেচনায় উৎকৃষ্ট ও মানসম্পন্ন হিসেবে বিবেচিত। এসব প্রতিষ্ঠানের পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে মৌলিক কাঁচামাল থেকে শেষ পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহার এবং কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত পণ্যের চেয়ে বিএসইসি’র প্রতিষ্ঠানসমূহের পণ্য অপেক্ষাকৃত অধিক মানসম্পন্ন ও নিরাপদ। সে কারণে সূত্রস্থ স্মারকসমূহের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানসমূহে উৎপাদিত পণ্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দরপত্র ব্যতিরেকে সরাসরি ক্রয়ের জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় তদসত্ত্বেও সরকারি দপ্তর/পরিদপ্তর /অধিদপ্তর/সংস্থা/করপোরেশন কর্তৃক তা যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে না। ফলে বিক্রয় আশানুরূপ না হওয়ায় সরকারিখাতের শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ জাতীয় অর্থনীতিতে অধিকতর কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে না। আরও উল্লেখ্য সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান/সংস্থাসমূহ কর্তৃক বিএসইএস-এর অধীনস্থ কারখানা/শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য ক্রয় ও সেবাগ্রহণ করার ক্ষেত্রে নিম্নমানের পণ্য ব্যবহারের কারণে দুর্ঘটনা বা অগ্নিকাণ্ড ঘটার সম্ভাবনা হ্রাস, সংস্কার ব্যয় হ্রাস, পণ্য আমদানির জন্য ব্যয়কৃত বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়, ইত্যাদি বিবেচনার দাবি রাখে। তাছাড়া, উল্লিখিত সরকারি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে লাভজনক হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া, স্থানীয় শিল্পের বিকাশ ও দেশীয় দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উন্নয়নসহ দেশের অর্থনীতির ভিত্তিকে সুদৃৃঢ় করবে। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে সংযুক্ত সরকারি নির্দেশনার আলোকে বিএনইসি’র প্রতিষ্ঠানসমূহে উৎপাদিত পণ্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দরপত্র ব্যতিরেকে সরাসরি ক্রয়ে আপনার অধীনস্থ সকল প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ প্রদানের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. ইমতিয়াজ হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত পত্র ইতিমধ্যে সকল মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, সংস্থার প্রধানদের কাছে পৌঁছেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১২/১২/২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক সবিতা মিত্র স্বাক্ষরিত পত্রসংখ্যা ৫৩.২৩.১৮.০০.০০.০৫.২০০০-৪৭৯(৬০)- বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো হয়। এতে বিষয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়-বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদিত পণ্য সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ক্রয় করা এবং সেবাগ্রহণ প্রসঙ্গে। বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ অত্যন্ত উন্নতমানের পণ্যসমূহ উৎপাদন ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেবা প্রদান করে আসছে। বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক পণ্যের মধ্যে রয়েছে ডোমেস্টিক ও পাওয়ার কেবল, ট্রান্সফরমার, টিউবলাইট, সুপার এনামেল, কপার ওয়্যার। যানবাহনের মধ্যে বাস, ট্রাক, জিপ, ট্রাক্টর, মোটরসাইকেল ইত্যাদি। প্রকৌশল পণ্যের মধ্যে রয়েছে-ডিজেল ইঞ্জিন, স্টেইনলেস স্টিল, রেজার ব্লেড ইত্যাদি। ইস্পাত পণ্যের মধ্যে এমএস/জিআই ও এপিআই পাইপ। এছাড়া জাহাজ/নৌযান নির্মাণ, মেরামত ও বিভিন্ন ফেব্রিকেশনের কাজ।
এতে আরও বলা হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন থেকে সরকারি অর্থে ক্রয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের বিভিন্ন কারখানা/শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য ও প্রদত্ত সেবা সকল সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ক্রয়ের নির্দেশ প্রদান করেছেন। চিঠিতে ৯টি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে বলা হয়-এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য ক্রয় করে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ প্রদানের এবং ক্রয় নিশ্চিতকরণের জন্য আদিষ্ট হয়ে অনুরোধ করা হলো। ২৫শে সেপ্টেম্বর ২০০২ সালে ফের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক মো. মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠি দিয়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের নির্দেশ দেয়া হয়। অপরদিকে এ বিষয়ে ২০১০ সালের ২রা মার্চ একনেক সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই সভার সিদ্ধান্তটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক শেখ মো. আবদুল আহাদ পত্রের মাধ্যমে শিল্প সচিবকে জানিয়ে দেন। এতে বলা হয়- এখন থেকে সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত দ্রব্যসামগ্রী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্রয় করতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় মালামাল না পাওয়া গেলে বাইরে থেকে ক্রয় করা যাবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে ২০১০ সালের ১০ই মার্চ সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পত্র দেয়া হয়। গত ৮ই জানুয়ারি বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় বিএসইসি ভবন থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও বিভাগে ফের বিষয়টি নিয়ে চিঠি দেয়া হয়।
গত ৮ই জানুয়ারি বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় বিএসইসি ভবন থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও বিভাগে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে- সূত্র নং: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ১২-১২-২০০০, ২৫-০৯-২০০২ ও ১৪-১০-২০১০ তারিখের যথাক্রমে পত্র সংখ্যা-৫৩.২৩.১৮.০০.০০.০৫. ২০০০-৪৭৯(৬০), ৫৩.২৩.১৮.০০.০০.০৫.২০০০(অংশ) ৩৮৩(৭৩) ও ৫৩.২৩.১৬.০০.০০.০২.২০১০-৪৪৫ এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ১৬-০৩-২০১০ তারিখের পত্রসংখ্যা-পরি/এনইসি-একনেক/সমন্বয়-২/০৭/০৮ (অংশ-১) /২০০৯/৩৩৩। উপযুক্ত বিষয় ও সূত্রস্থ স্মারকসমূহের প্রতি আপনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনি অবগত আছেন যে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন (বিএসইসি)-এর অধীনে ৯টি চালু প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত পণ্য দেশে বিদ্যমান সকল প্রতিষ্ঠান থেকে গুণগতমান বিবেচনায় উৎকৃষ্ট ও মানসম্পন্ন হিসেবে বিবেচিত। এসব প্রতিষ্ঠানের পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে মৌলিক কাঁচামাল থেকে শেষ পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহার এবং কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত পণ্যের চেয়ে বিএসইসি’র প্রতিষ্ঠানসমূহের পণ্য অপেক্ষাকৃত অধিক মানসম্পন্ন ও নিরাপদ। সে কারণে সূত্রস্থ স্মারকসমূহের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানসমূহে উৎপাদিত পণ্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দরপত্র ব্যতিরেকে সরাসরি ক্রয়ের জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় তদসত্ত্বেও সরকারি দপ্তর/পরিদপ্তর /অধিদপ্তর/সংস্থা/করপোরেশন কর্তৃক তা যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে না। ফলে বিক্রয় আশানুরূপ না হওয়ায় সরকারিখাতের শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ জাতীয় অর্থনীতিতে অধিকতর কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে না। আরও উল্লেখ্য সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান/সংস্থাসমূহ কর্তৃক বিএসইএস-এর অধীনস্থ কারখানা/শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য ক্রয় ও সেবাগ্রহণ করার ক্ষেত্রে নিম্নমানের পণ্য ব্যবহারের কারণে দুর্ঘটনা বা অগ্নিকাণ্ড ঘটার সম্ভাবনা হ্রাস, সংস্কার ব্যয় হ্রাস, পণ্য আমদানির জন্য ব্যয়কৃত বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়, ইত্যাদি বিবেচনার দাবি রাখে। তাছাড়া, উল্লিখিত সরকারি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে লাভজনক হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া, স্থানীয় শিল্পের বিকাশ ও দেশীয় দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উন্নয়নসহ দেশের অর্থনীতির ভিত্তিকে সুদৃৃঢ় করবে। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে সংযুক্ত সরকারি নির্দেশনার আলোকে বিএনইসি’র প্রতিষ্ঠানসমূহে উৎপাদিত পণ্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দরপত্র ব্যতিরেকে সরাসরি ক্রয়ে আপনার অধীনস্থ সকল প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ প্রদানের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. ইমতিয়াজ হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত পত্র ইতিমধ্যে সকল মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, সংস্থার প্রধানদের কাছে পৌঁছেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১২/১২/২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক সবিতা মিত্র স্বাক্ষরিত পত্রসংখ্যা ৫৩.২৩.১৮.০০.০০.০৫.২০০০-৪৭৯(৬০)- বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো হয়। এতে বিষয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়-বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদিত পণ্য সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ক্রয় করা এবং সেবাগ্রহণ প্রসঙ্গে। বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ অত্যন্ত উন্নতমানের পণ্যসমূহ উৎপাদন ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেবা প্রদান করে আসছে। বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক পণ্যের মধ্যে রয়েছে ডোমেস্টিক ও পাওয়ার কেবল, ট্রান্সফরমার, টিউবলাইট, সুপার এনামেল, কপার ওয়্যার। যানবাহনের মধ্যে বাস, ট্রাক, জিপ, ট্রাক্টর, মোটরসাইকেল ইত্যাদি। প্রকৌশল পণ্যের মধ্যে রয়েছে-ডিজেল ইঞ্জিন, স্টেইনলেস স্টিল, রেজার ব্লেড ইত্যাদি। ইস্পাত পণ্যের মধ্যে এমএস/জিআই ও এপিআই পাইপ। এছাড়া জাহাজ/নৌযান নির্মাণ, মেরামত ও বিভিন্ন ফেব্রিকেশনের কাজ।
এতে আরও বলা হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন থেকে সরকারি অর্থে ক্রয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের বিভিন্ন কারখানা/শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য ও প্রদত্ত সেবা সকল সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ক্রয়ের নির্দেশ প্রদান করেছেন। চিঠিতে ৯টি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে বলা হয়-এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য ক্রয় করে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ প্রদানের এবং ক্রয় নিশ্চিতকরণের জন্য আদিষ্ট হয়ে অনুরোধ করা হলো। ২৫শে সেপ্টেম্বর ২০০২ সালে ফের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক মো. মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠি দিয়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের নির্দেশ দেয়া হয়। অপরদিকে এ বিষয়ে ২০১০ সালের ২রা মার্চ একনেক সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই সভার সিদ্ধান্তটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক শেখ মো. আবদুল আহাদ পত্রের মাধ্যমে শিল্প সচিবকে জানিয়ে দেন। এতে বলা হয়- এখন থেকে সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত দ্রব্যসামগ্রী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্রয় করতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় মালামাল না পাওয়া গেলে বাইরে থেকে ক্রয় করা যাবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে ২০১০ সালের ১০ই মার্চ সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পত্র দেয়া হয়। গত ৮ই জানুয়ারি বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় বিএসইসি ভবন থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও বিভাগে ফের বিষয়টি নিয়ে চিঠি দেয়া হয়।
No comments