ইয়েমেনে হাউছিদের মতা দখল, নিরাপত্তা পরিষদের উদ্বেগ -আলজাজিরা
ইয়েমেনের
রাষ্ট্রীয় শাসন মতা দখল করেছে শিয়া হাউছি বিদ্রোহীরা। এ ঘটনার পর পরই
জাতিসঙ্ঘের প থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ‘পরবর্তী পদপে’ নেয়ার ঘোষণা দেয়া
হয়েছে। হাউছি বিদ্রোহীরা গত শুক্রবার শাসন মতা দখলে নেয়। রাজধানী সানার
রিপাবলিকান প্যালেস থেকে দেয়া এক টেলিভিশন বিবৃতিতে হাউছি নেতারা বলেন,
তারা পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট ‘প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিল’ গঠন করেছেন। পাশাপাশি
সংবিধান স্থগিত করে ৫৫১ সদস্যবিশিষ্ট অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় কাউন্সিলের
ঘোষণা দেয়া হয়েছে। হাউছিদের এ ঘোষণার পর পরই শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতিসঙ্ঘের
নিরাপত্তা কাউন্সিলের প থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে এক বিবৃতি দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নিরাপত্তা পরিষদ। তারা বলছে,
ইয়েমেনের হাউছি গোষ্ঠী যদি সত্ত্বর গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আলোচনায় অংশ না
নেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওই ব্যবস্থা সম্পর্কে
স্পষ্ট করে কিছু না বললেও তারা যে নতুন করে অবরোধ আরোপ করারই ইঙ্গিত করেছেন
তা স্পষ্ট। সম্প্রতি জাতিসঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে আম্মানে ওই আলোচনা শুরু
হয়েছিল। জাতিসঙ্ঘের ওই উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ার পর তারা এই কথা জানিয়েছেন।
জাতিসঙ্ঘ দূত জামাল বেনোমার শুক্রবার সৌদি আরবের উদ্দেশে আম্মান ত্যাগ
করেন। জাতিসঙ্ঘের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত ওই আলোচনায় অন্য পগুলো পার্লামেন্ট
বহাল রেখে আগাম নির্বাচন দাবি করেছিল। কিন্তু হাউসিরা তাদের এ দাবি মেনে
নেয়নি। তাদের যুক্তি ছিল, পার্লামেন্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তাই এ আইনসভার
দেশের সমস্যা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার নেই। মার্কিন পররাষ্ট্র
দফতর বলেছে, হাউছিদের এই ঘোষণা ইয়েমেনের রাজনৈতিক সঙ্কটের কোনো সমাধান আনতে
পারবে না। আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ কামনা ইয়েমেন সরকারের প থেকে এ ব্যাপারে
আন্তর্জাতিক হস্তপে কামনা করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সরকারি
কর্মকর্তা জানান, ‘আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের শক্তিশালী ভূমিকা গ্রহণ করার
সময় হয়েছে। ইরানের উসকানি নিয়ে সবাই চিন্তিত কিন্তু কেউ-ই বিষয়টি নিয়ে কথা
বলেছে না।’ অভিযোগ আছে ইরান হাউছি বিদ্রোহীদের অর্থ এবং সামরিক সাহায্য
দিচ্ছে। যদিও ইরান সরকার বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। হাউছি সদস্য
জামাল আল-সাউদি বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের আকস্মিক পদত্যাগের কারণে যে শূন্যতার
সৃষ্টি হয়েছে সেখান থেকে উত্তরণের জন্যই আমরা এ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে
যাচ্ছি’। যদিও অন্যান্য রাজনৈতিক দল বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি। সুন্নিপন্থী
দল ইসলাহ পার্টির রাশাদ আল-শারাবি বলেন, ‘হাউছিদের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত
হলে নিশ্চিতভাবেই দেশ নতুন করে সংঘর্ষের পথে এগিয়ে যাবে’। ইয়েমেনের
বিভিন্ন প্রদেশ থেকেও এই পরিকল্পনার সমালোচনা করা হয়েছে। দেশটির দ্বতীয়
সর্বোচ্চ নগর আদেনের গভর্নর আরুল আজিজ বিন হাবতুর বলেন, ‘এই পরিকল্পনা
সংবিধানবিরোধী’। বাহরাইন, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও
কুয়েত সরকারও এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
No comments