রাত বাড়তেই অন্য রকম দৃশ্য by রুদ্র মিজান ও নুর মোহাম্মদ
ঘড়ির
কাঁটায় ১২টা বাজতেই শুরু হয় চারদিকে হৈহুল্লোড়। পটকার শব্দ। যুবক-যুবতীরা
নেমে আসে রাস্তায়। হ্যাপি নিউ ইয়ার ২০১৫ স্লোগানে কেঁপে ওঠে রাজপথ। আনন্দের
বন্যায় একে অপরকে জড়িয়ে ধরে নেমে পড়ে যুগলেরা। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেও
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি চত্বরে বাঁধভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়ে তরুণ-তরুণীরা।
রাজধানীর গুলশান, বনানী, উত্তরা, ধানমন্ডিতে রাতব্যাপী রাজপথে চলে হুল্লোড়।
কেউ কেউ রাজপথে নেমে আসে গাড়ি নিয়ে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে যেতে থাকে
দৃশ্যপট। বাড়ির ছাদে, পাঁচ তারকা হোটেলে চলে নানা আয়োজনে নববর্ষকে বরণ।
রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে গিয়ে দেখা যায় উন্মাতাল তরুণ-তরুণীরা।
সাউন্ড স্পিকারের বিটের তালে কেঁপে ওঠে পুরো হল। প্রধান আকর্ষণ চিয়ার্স
গার্লস। তাদের পরনে মিনি স্কার্ট, টাইট জিন্স, পাতলা টি-শার্ট। ডিস্ক জকির
বাজনায় নৃত্যরত তরুণ-তরুণীরা একে-অন্যকে জড়িয়ে ধরছে। এভাবেই চলছিল
থার্টিফার্স্ট নাইটের ডিজে পার্টি। ওই হোটেলের উৎসব হল রুমে জোক
এন্টারটেইনমেন্ট আয়োজন করেছিল ‘জোক নাইট’ নামের এক পার্টি। রাত তখন প্রায়
আড়াইটা। চিয়ার্স গার্লরা অনেকেই দর-কষাকষি করে উধাও হয়েছেন সঙ্গীর হাত ধরে।
ড্যান্সফ্লোরে ঘটে অনভিপ্রেত ঘটনাও। পুরুষের তুলনায় তখন নারী বা চিয়ার্স
গার্লের সংখ্যা কম। প্রতি নারীর সঙ্গে নাচছিলেন চার থেকে ছয় জন। নাচতে
নাচতে এক নারীকে জড়িয়ে ধরেন এক যুবক। তাৎক্ষণিকভাবে অন্য এক যুবক তার কলার
চেপে ধরে মারধর শুরু করেন। অবশ্য মুহূর্তের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ
করেন কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, ওই যুবকের নাম জামিলুর রেজা। তার সঙ্গে যিনি
নাচছিলেন তিনি পেশাদার কোন চিয়ার্স গার্ল নন। তার বান্ধবী। জামিলের সঙ্গে
আলাপকালে তিনি জানান, বান্ধবীকে তিনি এনেছেন শুধু তার সঙ্গে নাচার জন্য।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টার আগেই রেডিসন, ওয়েস্টিন, সোনারগাঁও, ঢাকা রিজেন্সি,
হোটেল সেরেনাসহ রাজধানীর অভিজাত হোটেলগুলোতে ভিড় করেন তরুণ-তরুণীরা। হোটেল
রেডিসনে গ্র্যান্ড বলরুমে জমকালো আয়োজন করেছিল ইমেজ ডট। ‘সিম্ফনি অভ ২০১৫’
শীর্ষক এই আয়োজনে পারফরম করেছেন ডিজে পরী, ডিজে মনিকা ও ডিজে সাদিয়া। তাদের
কানে হেডফোন, চোখের সামনে রাখা ডিস্ক প্লেয়ারে ডিজেদের দক্ষ হাতের জাদু।
আঙুলের নিয়ন্ত্রণে ভিন্ন ধরনের ফ্লোর কাঁপানো মিউজিক।
এ হোটেলে জোক নাইটে তখন পারফরম করছেন ডিজে জান, ডিজে ওয়াহিদসহ কয়েকজন নারী ডিজে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই মাতাল হয়ে হলরুমের সোফায় শুয়ে থাকেন। পার্টির শুরু থেকেই অল্প বিরতি দিয়েই বারবার নেচে-নেচে তরুণদের মাতিয়ে রেখেছিলেন স্বল্পবসনা চিয়ার্স গার্লরা। নাচের শুরুতেই তরুণদের কাছ থেকে বিয়ার পান করতে দেখা গেছে তাদের। অনেকে পান করেছেন শ্যাম্পেইনসহ নানা ব্যান্ডের বিদেশী মদ। পান করতে করতেই নেচেছেন তারা। মৌ নামে এক তরুণী পার্টির শুরু থেকেই নেচে নেচে আনন্দ দিচ্ছিলেন তরুণদের। পার্টিতে আসা তরুণীদের কেউ কেউ সঙ্গী নিয়ে এসেছেন। তবে অনেকেই পার্টিতে আসার পর সঙ্গী বেছে নিয়েছেন।
থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে হোটেল রেডিসনে ডিজে ছাড়াও লেজার, এলইডি এবং রোবোটিক ড্যান্সের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে টিকিটের মূল্য ছিল ৪০০০-৫০০০ টাকা। একই হোটেলের জোক নাইটের টিকিট মূল্য ছিল ৫০০০ এবং ৮০০০ টাকা। তবে লোক সমাগম হওয়ায় এক পর্যায়ে টিকিটের মূল্যেও ছাড় দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এছাড়া রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল সোনারগাঁওয়ের গ্র্যান্ড বলরুমে কমফোর্ট গ্রুপ আয়োজন করেছিল ‘থার্টিফার্স্ট নাইট সেলিব্রেশন’। সেখানে পারফরম করছেন ডিজে তান্নি। বিভিন্ন আইটেম গানে নেচেছেন মডেল নায়লা নাঈম। সংগীত পরিবেশন করছেন আঁখি আলমগীর। টিকিট মূল্য ছিল সিঙ্গেল ৫০০০ টাকা, ডিনারসহ ৭০০০ টাকা, ডিলাক্স কক্ষসহ ১৫০০০ টাকা।
ঢাকা রিজেন্সি হোটেলে আয়োজন করা হয়েছিল ‘রেড ভিন্টেজ’। বনানীর হোটেল সেরেনায় আয়োজন করা হয়েছিল ‘ব্যাকআউট এনওয়াইসি ২০১৫’ শীর্ষক নিউ ইয়ার পার্টি। এ সব পার্টির প্রচার করা হয়েছে মোবাইল ফোন ও ফেসবুকের মাধ্যমে। এবার থার্টিফার্স্ট নাইটের পার্টিতে তরুণ-তরুণীদের অংশগ্রহণ গত অন্য সকল বছরের চেয়ে কম ছিল বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে ইমেজ ডটের পরিচালক হাবিবুল্লাহ মামুন বলেন, অর্থনৈতিকভাবে দেশের মানুষ খুব ভাল নেই। পার্টিতে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও এত টাকায় টিকিট কেনা তাদের কাছে অনেকটা কঠিন। এছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতাকেও দায়ী করেছেন তিনি। যে কারণে প্রশাসন অনেক স্থানেই যথাসময়ে পার্টির অনুমতি দেয়নি। যে কারণে সেভাবে প্রচার করা যায়নি। এবার থার্টিফার্স্ট নাইটের পার্টিতে হরতালেরও প্রভাব পড়েছিল বলে মনে করেন ইমেজ ডটের এ পরিচালক।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সন্ধ্যা থেকেই ঢল নেমেছিল তরুণ-তরুণীদের। কিন্তু রাত ৮টার পর থেকে বহিরাগত কাউকে ওই এলাকায় ঢুকতে দেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের কঠোর অবস্থানের কারণে অনেকে ফিরে গেছেন শাহবাগ ও দোয়েল চত্বর, পলাশী ও বকশীবাজার মোড় থেকে। ঢাবি এলাকায় বসাবাসকারীদের নিজেদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে তবেই ঢুকতে হয়েছে। এত কিছুর পরও বাঁধভাঙা আনন্দ থেকে বাদ যাননি ঢাবি’র শিক্ষার্থীরা। তারা টিএসসিতে মিলিত হয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছিলেন। বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি গান বাজছিল সেখানে। সাউন্ডবক্সের শব্দে যেন নেচে উঠেছিল আশপাশের এলাকা। নাচে কম যাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। তাদের সঙ্গে আনন্দে উৎসবে মেতে উঠেছিলেন শিক্ষকরাও। তবে রাত ১২টার পর তরুণীদের সংখ্যা কমতে থাকে। পর্যটন স্পট হাতিরঝিলে তরুণ-তরুণীদের রাত ৮টার ঢুকতে না দিলেও ওই এলাকার আশপাশের বিভিন্ন বাসার ছাদে নাচ-গানের আয়োজন ছিল উল্লেখযোগ্য। থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে পুরো রাজধানী জুড়েই ছিল উৎসবের আমেজ। গুলশান, বনানী, উত্তরা, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি বাড়ির ছাদ থেকেই কম-বেশ পটকা ও আতশবাজির ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে, রাজধানীর প্রতিটি মোড়ে র্যাব, পুলিশের অবস্থান ছিল উল্লেখযোগ্য। চেকপোস্ট বসানো হয়েছিল বিভিন্নস্থানে। অভিজাত হোটেলগুলোর সামনে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এর মধ্যেই ওয়েস্টিনসহ কয়েকটি হোটেলে পার্কিয়ের অভাবে মূল সড়কে পার্টিতে অংশগ্রহণকারীদের গাড়ি পার্কিং করা ছিল। বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার আগেই এসব পার্টি শেষ করা হয়। পার্টি শেষ করার আগে সমস্বরে সবার কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে হ্যাপি নিউ ইয়ার।
এ হোটেলে জোক নাইটে তখন পারফরম করছেন ডিজে জান, ডিজে ওয়াহিদসহ কয়েকজন নারী ডিজে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই মাতাল হয়ে হলরুমের সোফায় শুয়ে থাকেন। পার্টির শুরু থেকেই অল্প বিরতি দিয়েই বারবার নেচে-নেচে তরুণদের মাতিয়ে রেখেছিলেন স্বল্পবসনা চিয়ার্স গার্লরা। নাচের শুরুতেই তরুণদের কাছ থেকে বিয়ার পান করতে দেখা গেছে তাদের। অনেকে পান করেছেন শ্যাম্পেইনসহ নানা ব্যান্ডের বিদেশী মদ। পান করতে করতেই নেচেছেন তারা। মৌ নামে এক তরুণী পার্টির শুরু থেকেই নেচে নেচে আনন্দ দিচ্ছিলেন তরুণদের। পার্টিতে আসা তরুণীদের কেউ কেউ সঙ্গী নিয়ে এসেছেন। তবে অনেকেই পার্টিতে আসার পর সঙ্গী বেছে নিয়েছেন।
থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে হোটেল রেডিসনে ডিজে ছাড়াও লেজার, এলইডি এবং রোবোটিক ড্যান্সের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে টিকিটের মূল্য ছিল ৪০০০-৫০০০ টাকা। একই হোটেলের জোক নাইটের টিকিট মূল্য ছিল ৫০০০ এবং ৮০০০ টাকা। তবে লোক সমাগম হওয়ায় এক পর্যায়ে টিকিটের মূল্যেও ছাড় দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এছাড়া রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল সোনারগাঁওয়ের গ্র্যান্ড বলরুমে কমফোর্ট গ্রুপ আয়োজন করেছিল ‘থার্টিফার্স্ট নাইট সেলিব্রেশন’। সেখানে পারফরম করছেন ডিজে তান্নি। বিভিন্ন আইটেম গানে নেচেছেন মডেল নায়লা নাঈম। সংগীত পরিবেশন করছেন আঁখি আলমগীর। টিকিট মূল্য ছিল সিঙ্গেল ৫০০০ টাকা, ডিনারসহ ৭০০০ টাকা, ডিলাক্স কক্ষসহ ১৫০০০ টাকা।
ঢাকা রিজেন্সি হোটেলে আয়োজন করা হয়েছিল ‘রেড ভিন্টেজ’। বনানীর হোটেল সেরেনায় আয়োজন করা হয়েছিল ‘ব্যাকআউট এনওয়াইসি ২০১৫’ শীর্ষক নিউ ইয়ার পার্টি। এ সব পার্টির প্রচার করা হয়েছে মোবাইল ফোন ও ফেসবুকের মাধ্যমে। এবার থার্টিফার্স্ট নাইটের পার্টিতে তরুণ-তরুণীদের অংশগ্রহণ গত অন্য সকল বছরের চেয়ে কম ছিল বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে ইমেজ ডটের পরিচালক হাবিবুল্লাহ মামুন বলেন, অর্থনৈতিকভাবে দেশের মানুষ খুব ভাল নেই। পার্টিতে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও এত টাকায় টিকিট কেনা তাদের কাছে অনেকটা কঠিন। এছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতাকেও দায়ী করেছেন তিনি। যে কারণে প্রশাসন অনেক স্থানেই যথাসময়ে পার্টির অনুমতি দেয়নি। যে কারণে সেভাবে প্রচার করা যায়নি। এবার থার্টিফার্স্ট নাইটের পার্টিতে হরতালেরও প্রভাব পড়েছিল বলে মনে করেন ইমেজ ডটের এ পরিচালক।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সন্ধ্যা থেকেই ঢল নেমেছিল তরুণ-তরুণীদের। কিন্তু রাত ৮টার পর থেকে বহিরাগত কাউকে ওই এলাকায় ঢুকতে দেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের কঠোর অবস্থানের কারণে অনেকে ফিরে গেছেন শাহবাগ ও দোয়েল চত্বর, পলাশী ও বকশীবাজার মোড় থেকে। ঢাবি এলাকায় বসাবাসকারীদের নিজেদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে তবেই ঢুকতে হয়েছে। এত কিছুর পরও বাঁধভাঙা আনন্দ থেকে বাদ যাননি ঢাবি’র শিক্ষার্থীরা। তারা টিএসসিতে মিলিত হয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছিলেন। বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি গান বাজছিল সেখানে। সাউন্ডবক্সের শব্দে যেন নেচে উঠেছিল আশপাশের এলাকা। নাচে কম যাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। তাদের সঙ্গে আনন্দে উৎসবে মেতে উঠেছিলেন শিক্ষকরাও। তবে রাত ১২টার পর তরুণীদের সংখ্যা কমতে থাকে। পর্যটন স্পট হাতিরঝিলে তরুণ-তরুণীদের রাত ৮টার ঢুকতে না দিলেও ওই এলাকার আশপাশের বিভিন্ন বাসার ছাদে নাচ-গানের আয়োজন ছিল উল্লেখযোগ্য। থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে পুরো রাজধানী জুড়েই ছিল উৎসবের আমেজ। গুলশান, বনানী, উত্তরা, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি বাড়ির ছাদ থেকেই কম-বেশ পটকা ও আতশবাজির ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে, রাজধানীর প্রতিটি মোড়ে র্যাব, পুলিশের অবস্থান ছিল উল্লেখযোগ্য। চেকপোস্ট বসানো হয়েছিল বিভিন্নস্থানে। অভিজাত হোটেলগুলোর সামনে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এর মধ্যেই ওয়েস্টিনসহ কয়েকটি হোটেলে পার্কিয়ের অভাবে মূল সড়কে পার্টিতে অংশগ্রহণকারীদের গাড়ি পার্কিং করা ছিল। বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার আগেই এসব পার্টি শেষ করা হয়। পার্টি শেষ করার আগে সমস্বরে সবার কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে হ্যাপি নিউ ইয়ার।
No comments