সিলেটের থার্টিফাস্টে বেসামাল ডিজেরা by ওয়েছ খছরু
উন্মাতাল
হয়ে পড়েছিল সিলেটের থার্টিফার্স্ট। হরেক রকমের আয়োজন। এরই মধ্যে হুইস্কি ও
বিয়ারের অঢেল আয়োজন। চা-বাগানের নির্জন বাংলো। কিংবা পাঁচ তারকা হোটেল।
রাত ১২টা ১ মিনিটে থার্টিফার্স্টে নেচে উঠলো সিলেট। আকাশে উড়লো বর্ণিল
আতশবাজি। জানান দিয়ে গেল এসেছে নতুন বছর। এভাবেই অন্যরকম এক উন্মাদনায় নেচে
উঠেছিল প্রবাসী শহর সিলেট। আর সিলেটের থার্টিফার্স্টকে অনেকটা সঙ্কুচিত
করে দিয়েছিল প্রশাসন। প্রশাসন বাইরে কোন আয়োজন করতে দেয়নি। তাতে কি। চার
দেয়ালে অন্যরকম থার্টিফার্স্টে মেতে উঠলো সিলেট। তবে, থার্টিফার্স্টের পর
নতুন করে আলোচনায় এসেছেন সিলেটে ডিজে গার্লরা। তাদের নিয়ে আলোচনার অন্ত নেই
সিলেটে। যারা থার্টিফার্স্টের জমকালো আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন তারা সিলেটের
ডিজেদের ভিন্ন প্রশংসায় মেতে উঠেছেন। সিলেট শহরতলীর খাদিমপাড়ার একটি নির্জন
বাংলোর থার্টিফার্স্ট নাইটে অংশ নিয়েছিলেন এক যুবক। তিনি গতকাল জানালেন,
ওই বাংলোর থার্টিফার্স্ট নাইটে অংশ নিয়েছিল সিলেটের একটি ডিজে গ্রুপ। ওই
গ্রুপে সিলেটের মডেল শাওন, তিশাসহ কয়েকজন অংশ নেন। রাত তখন ১২টা। পার্টির
আয়োজন চূড়ান্ত। রয়েছে বিদেশী মদের বাহারি আয়োজন। এরই মধ্যেই শুরু হলো
হ্যাপি নিউ ইয়ারের ড্যান্স। উন্মাতাল নাচের তালে তালে কেঁপে উঠলো আয়োজন।
শুরু হলো সুরা পানের পালা। রাত ১টার দিকে ওই আসরে সকল বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস
শুরু হয়। যুবক-যুবতীরা একসঙ্গে ড্যান্স শুরু করেন। করেন ঢলাঢলিও। ওই আসরে
থাকা ৫ জন ডিজে গার্ল রাত ২টার পর থেকে পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে হারিয়ে যান
অজানায়। সিলেটের বিমানবন্দর সড়কের চা বাগানের এক বাংলোতে অংশ নিয়েছেন শহরের
অনেক নামী-দামি লোকজন। ওই আসরও ছিল বর্ণিল। ঢাকা ও সিলেটের ডিজে গার্লরা
মাতিয়ে তোলেন থার্টিফার্স্টের আসর। অর্ধকাপড় পরিহিত ডিজেরা ড্যান্সের তালে
তালে নতুন বছরকে বরণ করেন ভিন্নভাবে। ওই আসরে উপস্থিত থাকা এক ব্যবসায়ী
জানিয়েছেন, ডিজের আড়ালে থার্টিফার্স্টের ওই আসরও পরিণত হয়েছিল উন্মাতাল
ড্যান্সে। রাত গভীর হতেই আগত ডিজেরা পুরুষ বন্ধুদের হাত ধরে চলে যায়
অজানায়। সিলেটের রোজভিউ হোটেলে থার্টিফার্স্টে ছিল বাহারী আয়োজন। অনেক
প্রবাসী থার্টিফার্স্টকে বরণ করতে পাঁচতারকা ওই হোটেলকে বেছে নিয়েছিলেন।
হোটেলে হল রুমগুলোতে ছিল নাচ-গানের আয়োজন। এছাড়া মদ-বিয়ারের বর্ণিলতায়
ডিজেরাই মাতিয়ে রাখেন পুরো থার্টিফার্স্ট। সিলেটের দরগাহ্ গেইটস্থ হোটেল
স্টার প্যাসিফিক এ থার্টিফার্স্টের আয়োজনে কোন বাড়াবাড়ি হয়নি। তবে, ডিজের
তালে তালে নেচে-গেয়ে থার্টিফার্স্ট উদযাপন হয়েছে। থার্টিফার্স্ট উপলক্ষে
এবার সিলেটের মাঝারি মানের হোটেলগুলোতে হয়েছে আয়োজন। হোটেল হিলটাউন, মেট্রো
ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল অনুরাগ, ফরচুন গার্ডেন, সুবহানীঘাট এলাকার কয়েকটি
হোটেলেও ছিল জমকালো ডিজের আয়োজন। এছাড়া সিলেটের সুরমা নদীতে ভাসমান
রেস্টুরেন্ট রিভারক্রুজেও ছিল বর্ণিল আয়োজন। তবে, রাত ১২টার আগে চাঁদনীঘাট
এলাকা থেকে নোঙর তুলে ভেসে যায় সেটি। সুরমা নদীর বর্ণিল আয়োজনে ভেসে ভেসে
থার্টিফার্স্ট পালন করেন অংশগ্রহণকারীরা। ওদিকে, সিলেটের থার্টিফার্স্টে
ডিজে গার্লরা অতিরিক্ত মদ খেয়ে উন্মাতাল হয়ে পড়েছিলেন। এ কারণে বেশ কয়েকটি
অনুষ্ঠানের আয়োজক বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। ডিজে পার্টিতে অংশগ্রহণকারীরা
জানিয়েছেন, সিলেটের ডিজে গার্লরা থার্টিফার্স্টের আগে থেকেই বুকিং হয়ে
গিয়েছিলেন। এ কারণে পুলিশি ঝামেলা এড়াতে দুপুরের মধ্যেই তারা চলে যান
নির্ধারিত স্থানে। রাতভর আমোদ-ফূর্তির পর গতকাল দুপুরের দিকে তারা বাসায়
ফেরেন। এদিকে, সিলেটের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয়
থার্টিফার্স্টের। রাত ১২টা ১ মিনিটে ডিজে পার্টির মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ
করে নেন শিক্ষার্থীরা। তবে, বিশ্ববিদ্যালয় ডিজেতে শিক্ষার্থীরাই অংশ নেন।
বাইরে কেউ অংশ নিতে পারেননি।
No comments