মাদকাসক্ত পুত্রের হাত কেটে নিলেন পিতা
মাদকাসক্ত পুত্রের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন পিতা জাহেদ আলী (৫৫)। পুত্র জাহাঙ্গীরের হাতে প্রায়ই লাঞ্ছিত হতে হতো তাকে। চুরি, ডাকাতি, বখাটেপনাসহ সব ধরনের অপরাধে যুক্ত ছিল মাদকাসক্ত জাহাঙ্গীর। তার অত্যাচারে এলাকাবাসীও অতিষ্ঠ ছিল। পুত্রের এমন সব অপকর্মের জন্য সাবেক মেম্বার পিতাকে সমাজে হেয়প্রতিপন্নও হতে হতো। মাদকাসক্ত পুত্রের অপকর্মের প্রতিবাদ করায় সম্প্রতি জাহেদ আলীকে গাছে বেঁধে নির্মমভাবে মারপিট করে চুল-দাড়ি পর্যন্ত কেটে দিয়েছিল জাহাঙ্গীর। দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তিনি বাড়িতে ফিরে আসলেও লজ্জা ও অপমানে বাড়ি থেকে তেমন বের হতেন না। শেষ পর্যন্ত অবাধ্য পুত্রের হাত কেটে নিয়ে তার ওপর হিংস্র প্রতিশোধ নিলেন ভুক্তভোগী পিতা। গতকাল দুপুরে তিনি তার আরেক ভাইকে সঙ্গে নিয়ে জাহাঙ্গীরের (২৬) ডান হাতের কুনুই পর্যন্ত কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। পুত্রকে শায়েস্তার পর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন অসহায় জাহেদ আলী। কটিয়াদী উপজেলার সহশ্রাম-ধূলদিয়া ইউনিয়নের বাগপাড়া গ্রামে ঘটে এ ঘটনা। মুমূর্ষু জাহাঙ্গীরকে বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্র জানায়, জাহাঙ্গীর এলাকায় খুবই খারাপ ছেলে বলে পরিচিত। মাদকাসক্ত পুত্রকে একবার তার পিতা-মাতা পুলিশে দিয়েছিল। তার ১৮ মাসের সাজাও হয়েছিল। পরে পাঁচ-ছয় মাস জেল খেটে জামিনে এসে পিতা-মাতা ও আত্মীয়স্বজনের ওপর চড়াও হয় সে। তারা জানান, জেলে গিয়েও নিজেকে শোধরাতে পারেনি জাহাঙ্গীর। জেল থেকে বের হয়ে সে একই কর্মকাণ্ড শুরু করে। ভবিষ্যতে সে যেন আর এ ধরনের অপকর্ম করতে না পারে তাই তারা এ নিষ্ঠুরতায় বাধ্য হয়েছে। কটিয়াদী থানার এসআই মো. কামরুল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি, মাদকাসক্তসহ বহু অভিযোগ আছে। সে বেশ কয়েকবার জেলও খেটেছে। কিন্তু তার অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে পিতা হয়তো এপথ বেছে নিয়েছেন। তিনি জানান, পিতা জাহেদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিচ্ছিন্ন হাতটিও পুলিশ উদ্ধার করেছে। এব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
No comments