গুজবের ধূম্রজালে রাজনীতি by আবুল ফারাহ মাসুম
উত্তাপ, উত্তেজনা, গুজব ও বিভিন্নমুখী খেলাধুলায় রাজনীতির গতিপ্রকৃতি
নিয়ে নানা সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এক দিকে সরকারের সর্বোচ্চপর্যায় থেকে
ঘৃণা ছড়ানো ও ফাঁসির দাবি নিয়ে গণ-অবস্থান হচ্ছে,
অন্য
দিকে এর বিপরীতে দেশব্যাপী দিনের পর দিন হরতালের ডাক দেয়া ও তা পালনের
মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে চরম সঙ্ঘাত সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। আবার এর
পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে নানা ইস্যুতে সভা-সমাবেশ করে বর্তমান
সরকারকে আরেকবার ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছেন। সেনাকর্মকর্তাদের সমাবেশে
গণতন্ত্রের জন্য ত্যাগ স্বীকার, অধস্তন কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলার মধ্যে আনা
এবং গুজবে কান না দেয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অন্য দিকে
বিরোধী ১৮ দলীয় জোটের আন্দোলনের যৌথ কর্মসূচি না থাকায় তত্ত্বাবধায়ক
সরকারের দাবির বিষয়টি আড়ালে চলে যেতে শুরু করেছে। ট্রাইব্যুনাল ইস্যু
নিয়ে কঠোর কর্মসূচি আসছে জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামী থেকে। এর মধ্যে
ট্রাইব্যুনাল ইস্যু থেকে বিএনপি এক প্রকার নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার কথা
প্রকাশ করেছে, এটি জামায়াতের নিজস্ব ইস্যু ও দাবি বলে ঘোষণা করে। ঠিক এ
সময়টাতে বিএনপির বিশেষ ধারার কিছু নেতা এবং মহাজোটের বাম ধারার শরিকেরা
প্রকাশ্যে ও আড়ালে আওয়ামী লীগের সাথে জামায়াতে ইসলামীর গোপন সমঝোতার কথা
বলতে শুরু করেছেন। বিএনপির এক নেতা অন্য নেতার বিরুদ্ধে কথা বলছেন
সন্দেহের আঙুল তুলে। এর মাধ্যমে এক দিকে সঙ্ঘাত অন্য দিকে জটিল সমীকরণের
রাজনৈতিক খেলার সূচনা লক্ষ করা যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সামনে এখন প্রধান লক্ষ্য হলো আরেক মেয়াদে ক্ষমতায় আসা। নতুন করে ক্ষমতায় আসতে হলে সাধারণভাবে জনগণের সমর্থনকে জয় করা আর বিরোধী পক্ষমুক্ত মাঠ সৃষ্টিÑ এ দু’টি কৌশল থাকে। আওয়ামী লীগ শেষোক্ত কৌশলকে দিয়েছে বিশেষভাবে গুরুত্ব। ফলে অনেকটা জনগণের সমর্থন নিয়ে যে ২০০৮ সালে দলটি নির্বাচিত হয়েছিল, সেটাকে ধরে রাখার প্রচেষ্টার চেয়েও বিরোধী দলকে দুর্বল করা এবং তাদের চ্যালেঞ্জের শক্তি নিঃশেষ করার পদক্ষেপ গত চার বছরে বেশি নেয়া হয়েছে। এ সময় গ্যাস, বিদ্যুৎ, তেলের দাম বাড়ানোর ফলে চার বছরে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল, হলমার্ক, শেয়ারবাজার ও সর্বশেষ পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির কেলেঙ্কারি সৃষ্টি হয়েছে। চাঁদাবাজি খুন, গুম, ধর্ষণ ও আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি আওয়ামী লীগের জনসমর্থনের ভিত্তিকে ঘুণে খাওয়ার মতো খেয়ে ফেলছে। এসব বিষয় যে হাইকমান্ডের অজানা ছিল তা নয়। কিন্তু হিসাবটা হলো জনসমর্থন যতই কমে যাক না কেন, বিরোধী পক্ষের যদি মাঠে দাঁড়ানোর মতো অবস্থা না থাকে তা হলে আওয়ামী লীগের সামনে আবার ক্ষমতায় আসার পথে কোনো বাধা আসবে না। এ কৌশলের অংশ হিসেবে প্রথম লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বেগম জিয়া ও তার পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটিতে আরাফাত রহমান কোকোকে শাস্তিও দেয়া হয়েছে। আরেকটি মামলা শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে, যা সম্পন্ন করে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে কারাদণ্ড দেয়া সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে সাড়ে তিন দশকের ব্যবহার করা সেনানিবাসের বাড়ি থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতার পাশাপাশি বিএনপির কার্যকর প্রায় সব নেতার বিরুদ্ধেই মামলা দেয়া হয়েছে। তাদের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থ ও স্থাপনাতেও পরোক্ষভাবে হুমকি সৃষ্টি করা হয়েছে। এর বাইরে মাঠপর্যায়ের কার্যকর নেতাদের কাউকে কাউকে গুম বা হত্যা করা হয়েছে আবার কাউকে মামলা দিয়ে দেশছাড়া করা হয়েছে।
বিরোধী জোটের দ্বিতীয় প্রধান দল জামায়াতে ইসলামীর প্রতি নেয়া হয়েছে আরো চরম পদক্ষেপ। এর অংশ হিসেবে যুদ্ধাপরাধ বিচারে ট্রাইব্যুনাল করে দলের প্রায় সব নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দলটির প্রথম, দ্বিতীয় এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে তৃতীয় সারির নেতারাও এখন জেলে অথবা ফেরারি অবস্থায় দৌড়ের ওপরে রয়েছেন। রাষ্ট্রীয় ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় চালিত গণমাধ্যমে চার বছর ধরে তাদের বিরুদ্ধে অব্যাহত ঘৃণা ছড়ানো হয়েছে। এ বিষয়টি ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টেও উল্লেখ করা হয়েছে। এর প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালকে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধারণা এবং বিভিন্ন গোপন জরিপে প্রাপ্ত ফল অনুসারে মোটামুটি অবাধ কোনো নির্বাচন যদি হয় তাহলে বিরোধী জোট ভালো সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী হবে। এ কারণে বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচন করা হলেই তা আওয়ামী লীগের জন্য আবার ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে আর ক্ষমতায় আসতে পারাটাই আর্থিক ও অন্যান্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য হবে সর্বোত্তম উপায় বলে মনে করছেন সরকারি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বিএনপিকে ক্ষমতার বাইরে রাখার জন্য এভাবে হিসাব-নিকাশ করেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়। বিদ্যমান ব্যবস্থাকে মেনে নিয়ে বিএনপি নির্বাচনে এলে প্রশাসনিক ম্যানুপুলেশনের মাধ্যমে নির্বাচনে জয়ী হওয়া সম্ভব হবে আওয়ামী লীগের জন্য। আর বয়কট করলে সরকারি দলের পক্ষে একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ইতোমধ্যে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এখন শেষোক্ত কৌশল কার্যকর করার ক্ষেত্রে সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো দু’টি। এর একটি হলো বিরোধী জোটের সর্বাত্মক আন্দোলন। আর দ্বিতীয়টি হলো কূটনৈতিক অংশীদারদের একতরফা নির্বাচনে সম্মত না হওয়া।
এসব বিষয়কে সামনে রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলন প্রতিহত করতে সরকারের নেয়া প্রধান কৌশল হলো, আন্দোলনের শক্তিগুলোকে বিভাজিত করে রাখা। এ ক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের ইস্যুটিকে সরকার বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এই ইস্যুই হলো জামায়াতের জন্য নেতৃত্ব ও দলকে টিকিয়ে রাখার জীবনমরণ ইস্যু। এ ইস্যুতে বিএনপি শিথিল থাকলে জামায়াতের জন্য এটি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার বিষয় হতে পারে। আর এটিকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করা গেলে সেটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে বিভক্তি সৃষ্টি করবে। ট্রাইব্যুনাল ইস্যুতে একসময় প্রকাশ্য ভূমিকা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন ট্রাইব্যুনাল ভেঙে দেয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু সে অবস্থান থেকে দলটি সরে আসে। যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রত্যক্ষ বিরোধিতা না করে এর স্বচ্ছতার দাবি এখন বিএনপির। দলটির নেতৃত্ব মনে করছে, মুক্তিযোদ্ধাদের দল হিসেবে যুদ্ধাপরাধের দায় নিতে যাবে কেন বিএনপি? বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে জামায়াতের জন্য। জামায়াত চেয়েছিল বিএনপি ট্রাইব্যুনাল ইস্যুতে কর্মসূচি না দিলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে কর্মসূচি দেবে। এতে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ধারাবাহিকতা থাকবে। কিন্তু বিএনপি নেতৃত্বের সাইডলাইন থেকে বলা হয়, অক্টোবরের আগে বিএনপির কর্মসূচি দেয়ার মতো অবস্থায় নেই। হাইকমান্ড অবশ্য পরে সে বক্তব্য গ্রহণ না করে মার্চ-এপ্রিলে কর্মসূচি দেয়ার কথা বলে। এসব টানাপড়েনে শেষ পর্যন্ত জামায়াত ট্রাইব্যুনাল ইস্যুতে একক কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যায়।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্য হলো গত চার বছরে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে প্রচার-প্রচারণাকে এমনপর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে যাতে দেশের দৃশ্যমান জনমত এর পক্ষে মনে হয়। যদিও সরকারের মন্ত্রী বা নেতাকর্মীদের সব কর্মকাণ্ডের মূল ফোকাস ট্রাইব্যুনালের ওপর দেয়ার পরও সরকারের সমর্থন অব্যাহতভাবে কমছে। এ কারণে স্থানীয় সরকারগুলোর নির্বাচনে সরকার বারবার পরাজিত হয়েছে। কিন্তু প্রচারণার ফলে বিএনপি নেতৃত্বের একটি বড় অংশ মনে করেছে ট্রাইব্যুনালের বিরোধিতাই যথেষ্ট নয় বরং এই প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থনও দেয়া প্রয়োজন। তাদের একটি অংশ এমনো মনে করে যে, জামায়াতের সাথে রাজনৈতিক জোট বিএনপির জন্য যতটা আশীর্বাদ তার চেয়ে বেশি বরং আপদ। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের পরিকল্পনার সাথে বিএনপি নেতৃত্বের এই অংশটির ভাবনা ও সমীকরণের মিল হয়ে যায়।
আওয়ামী লীগ এখন যে রাজনৈতিক বিকল্পকে সামনে রেখে কাজ করছে তার একটি হলো বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচন করা। প্রতিবেশী ভারত ছাড়া অন্য কোনো কূটনৈতিক অংশীদারের কাছে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না মনে করে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় বিকল্পটির জন্যও কাজ শুরু করেছে। সেই বিকল্প হলো বিএনপির অভ্যন্তরে এবং জোটের মধ্যে বিভক্তি ও অবিশ্বাস সৃষ্টি করা। এ জন্য পদক্ষেপ হিসেবে বিএনপির নেতাদের একটি অংশের সাথে আরেক অংশের দূরত্ব সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব একের পর এক মামলায় কয়েক মাস জেলে থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সংশয় তৈরির জন্য বলা হচ্ছে মির্জা ফখরুলের ভাবমূর্তি তৈরির জন্যই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাতে তিনি প্রয়োজনের সময় বিকল্প ব্যক্তি হিসেবে নেতৃত্ব দিতে পারেন। আবার আরেকজন আইনজ্ঞ সিনিয়র নেতার ব্যাপারে বলা হচ্ছে, তাকে মোটেই বিশ্বাস করা যায় না। তিনি তলে তলে সরকারের সাথে সমন্বয় রেখে কাজ করেন। দলের সহসভাপতি পর্যায়ের সম্প্রতি প্রভাবশালী হয়ে ওঠা এক নেতা দলের সিনিয়র কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে মাইনাস ওয়ানের কাজ চলছে বলে উল্লেখ করেছেন বিদেশী কূটনীতিকের কাছে। আরেকটি পক্ষ মিডিয়ার চাপাচাপিতে মুখফসকে বেরিয়ে যাওয়া একটি খণ্ডিত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিএনপির ত্যাগী নেতা ও সমন্বয়ককে জোটের সংহতির বিপক্ষের লোক হিসেবে প্রচার চালানো হচ্ছে। অথচ বিএনপি নেতৃত্বের মধ্যে দল ও জোটের সংহতি টিকিয়ে রাখার জন্য যারা সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখছেন, তিনি তার শীর্ষে। দল উপদলের ঊর্ধ্বে থেকে তিনি একান্তভাবে বিএনপি রাজনীতির মূলধারার প্রতিনিধিত্ব করেন। বিএনপির বলিষ্ঠ নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ব্যাপারে ছড়ানো হচ্ছে বিরোধী দলের কোথায় কী হচ্ছে তার সব কিছু তিনি প্রতিবেশী একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পৌঁছে দেন। এভাবে নানামুখী প্রচারণা চালিয়ে বিএনপির পুরো নেতৃত্বকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। একজনের প্রতি আরেকজনের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি করার চেষ্টা হচ্ছে। সরকারের কোন এজেন্সি কখন কার সাথে কোথায় যোগাযোগ করছে এসব কথাও আড়ালে-আবডালে ছড়ানো হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য বিএনপির সংহতি নষ্ট করা এবং দলের শক্তিকে দুর্বল করে রাখা। শেষ পর্যন্ত এটি সফল হলে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে সফল করা হবে কঠিন। আর এতে সাফল্য আসবে আওয়ামী লীগের কৌশলে।
১৮ দলীয় জোটের মধ্যে অবিশ্বাস ও বিভাজন আনতেও একই পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে। বিএনপির বিরুদ্ধে জামায়াতকে বলা হচ্ছে দলটির দুর্দিনে পাশে থাকছে না বিএনপি। আর বিএনপি নেতৃত্বকে বলা হচ্ছে জামায়াতকে বিশ্বাস করা যায় না। তারা ১৯৮৬ সালের মতো আবার আওয়ামী লীগের সাথে নির্বাচনে চলে যেতে পারে। এসব বিষয়ে বিরোধীদলীয় নেতা শক্ত অবস্থানে থাকায় দল ও জোটে বিভাজনের প্রচেষ্টা সফল হয়নি। তবে এর পরও সে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং প্রতিনিয়ত ডালপালা বিস্তার করছে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় ফিরে আসা আগামী পাঁচ বছর জামায়াতের জন্য কী পরিস্থিতি নিয়ে আসবে তা দলটির নেতৃত্ব যেমন গত চার বছর সময় দিয়ে বুঝতে পারেন, তেমনিভাবে বিএনপির জন্য আরো পাঁচ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা যে মোটেই সহনীয় নয়, সেটি দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা তিলে তিলে অনুভব করেন। আর বিএনপি নেতৃত্বের সবাই জানেন তাদের ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থ রক্ষা হবে দলকে ক্ষমতায় নিয়ে যেতে পারলে, আওয়ামী লীগকে সহায়তা করলে নয়। এর পরও নানা বৈরী পরিস্থিতির কারণে সামাজিক বা অন্যবিধ যোগাযোগ সরকার বা সরকারি দলের সাথে থাকতেই পারে। কিন্তু এ যোগাযোগকে দলের স্বার্থবিরোধী না ভেবে আন্দোলনকে বেগবান করতে পারলে সুবিধাবাদিতা স্থান পাবে না। রাজনৈতিক টানাপড়েনের এ সময়ে বিরোধীদলীয় নেতৃত্বের এ বিষয়টি উপলব্ধি করা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আর দূরে থাকা দরকার তাদের জন্য পেতে রাখা ফাঁদ থেকে।
আওয়ামী লীগের সামনে এখন প্রধান লক্ষ্য হলো আরেক মেয়াদে ক্ষমতায় আসা। নতুন করে ক্ষমতায় আসতে হলে সাধারণভাবে জনগণের সমর্থনকে জয় করা আর বিরোধী পক্ষমুক্ত মাঠ সৃষ্টিÑ এ দু’টি কৌশল থাকে। আওয়ামী লীগ শেষোক্ত কৌশলকে দিয়েছে বিশেষভাবে গুরুত্ব। ফলে অনেকটা জনগণের সমর্থন নিয়ে যে ২০০৮ সালে দলটি নির্বাচিত হয়েছিল, সেটাকে ধরে রাখার প্রচেষ্টার চেয়েও বিরোধী দলকে দুর্বল করা এবং তাদের চ্যালেঞ্জের শক্তি নিঃশেষ করার পদক্ষেপ গত চার বছরে বেশি নেয়া হয়েছে। এ সময় গ্যাস, বিদ্যুৎ, তেলের দাম বাড়ানোর ফলে চার বছরে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল, হলমার্ক, শেয়ারবাজার ও সর্বশেষ পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির কেলেঙ্কারি সৃষ্টি হয়েছে। চাঁদাবাজি খুন, গুম, ধর্ষণ ও আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি আওয়ামী লীগের জনসমর্থনের ভিত্তিকে ঘুণে খাওয়ার মতো খেয়ে ফেলছে। এসব বিষয় যে হাইকমান্ডের অজানা ছিল তা নয়। কিন্তু হিসাবটা হলো জনসমর্থন যতই কমে যাক না কেন, বিরোধী পক্ষের যদি মাঠে দাঁড়ানোর মতো অবস্থা না থাকে তা হলে আওয়ামী লীগের সামনে আবার ক্ষমতায় আসার পথে কোনো বাধা আসবে না। এ কৌশলের অংশ হিসেবে প্রথম লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বেগম জিয়া ও তার পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটিতে আরাফাত রহমান কোকোকে শাস্তিও দেয়া হয়েছে। আরেকটি মামলা শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে, যা সম্পন্ন করে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে কারাদণ্ড দেয়া সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে সাড়ে তিন দশকের ব্যবহার করা সেনানিবাসের বাড়ি থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতার পাশাপাশি বিএনপির কার্যকর প্রায় সব নেতার বিরুদ্ধেই মামলা দেয়া হয়েছে। তাদের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থ ও স্থাপনাতেও পরোক্ষভাবে হুমকি সৃষ্টি করা হয়েছে। এর বাইরে মাঠপর্যায়ের কার্যকর নেতাদের কাউকে কাউকে গুম বা হত্যা করা হয়েছে আবার কাউকে মামলা দিয়ে দেশছাড়া করা হয়েছে।
বিরোধী জোটের দ্বিতীয় প্রধান দল জামায়াতে ইসলামীর প্রতি নেয়া হয়েছে আরো চরম পদক্ষেপ। এর অংশ হিসেবে যুদ্ধাপরাধ বিচারে ট্রাইব্যুনাল করে দলের প্রায় সব নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দলটির প্রথম, দ্বিতীয় এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে তৃতীয় সারির নেতারাও এখন জেলে অথবা ফেরারি অবস্থায় দৌড়ের ওপরে রয়েছেন। রাষ্ট্রীয় ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় চালিত গণমাধ্যমে চার বছর ধরে তাদের বিরুদ্ধে অব্যাহত ঘৃণা ছড়ানো হয়েছে। এ বিষয়টি ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টেও উল্লেখ করা হয়েছে। এর প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালকে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধারণা এবং বিভিন্ন গোপন জরিপে প্রাপ্ত ফল অনুসারে মোটামুটি অবাধ কোনো নির্বাচন যদি হয় তাহলে বিরোধী জোট ভালো সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী হবে। এ কারণে বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচন করা হলেই তা আওয়ামী লীগের জন্য আবার ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে আর ক্ষমতায় আসতে পারাটাই আর্থিক ও অন্যান্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য হবে সর্বোত্তম উপায় বলে মনে করছেন সরকারি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বিএনপিকে ক্ষমতার বাইরে রাখার জন্য এভাবে হিসাব-নিকাশ করেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়। বিদ্যমান ব্যবস্থাকে মেনে নিয়ে বিএনপি নির্বাচনে এলে প্রশাসনিক ম্যানুপুলেশনের মাধ্যমে নির্বাচনে জয়ী হওয়া সম্ভব হবে আওয়ামী লীগের জন্য। আর বয়কট করলে সরকারি দলের পক্ষে একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ইতোমধ্যে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এখন শেষোক্ত কৌশল কার্যকর করার ক্ষেত্রে সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো দু’টি। এর একটি হলো বিরোধী জোটের সর্বাত্মক আন্দোলন। আর দ্বিতীয়টি হলো কূটনৈতিক অংশীদারদের একতরফা নির্বাচনে সম্মত না হওয়া।
এসব বিষয়কে সামনে রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলন প্রতিহত করতে সরকারের নেয়া প্রধান কৌশল হলো, আন্দোলনের শক্তিগুলোকে বিভাজিত করে রাখা। এ ক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের ইস্যুটিকে সরকার বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এই ইস্যুই হলো জামায়াতের জন্য নেতৃত্ব ও দলকে টিকিয়ে রাখার জীবনমরণ ইস্যু। এ ইস্যুতে বিএনপি শিথিল থাকলে জামায়াতের জন্য এটি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার বিষয় হতে পারে। আর এটিকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করা গেলে সেটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে বিভক্তি সৃষ্টি করবে। ট্রাইব্যুনাল ইস্যুতে একসময় প্রকাশ্য ভূমিকা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন ট্রাইব্যুনাল ভেঙে দেয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু সে অবস্থান থেকে দলটি সরে আসে। যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রত্যক্ষ বিরোধিতা না করে এর স্বচ্ছতার দাবি এখন বিএনপির। দলটির নেতৃত্ব মনে করছে, মুক্তিযোদ্ধাদের দল হিসেবে যুদ্ধাপরাধের দায় নিতে যাবে কেন বিএনপি? বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে জামায়াতের জন্য। জামায়াত চেয়েছিল বিএনপি ট্রাইব্যুনাল ইস্যুতে কর্মসূচি না দিলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে কর্মসূচি দেবে। এতে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ধারাবাহিকতা থাকবে। কিন্তু বিএনপি নেতৃত্বের সাইডলাইন থেকে বলা হয়, অক্টোবরের আগে বিএনপির কর্মসূচি দেয়ার মতো অবস্থায় নেই। হাইকমান্ড অবশ্য পরে সে বক্তব্য গ্রহণ না করে মার্চ-এপ্রিলে কর্মসূচি দেয়ার কথা বলে। এসব টানাপড়েনে শেষ পর্যন্ত জামায়াত ট্রাইব্যুনাল ইস্যুতে একক কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যায়।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্য হলো গত চার বছরে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে প্রচার-প্রচারণাকে এমনপর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে যাতে দেশের দৃশ্যমান জনমত এর পক্ষে মনে হয়। যদিও সরকারের মন্ত্রী বা নেতাকর্মীদের সব কর্মকাণ্ডের মূল ফোকাস ট্রাইব্যুনালের ওপর দেয়ার পরও সরকারের সমর্থন অব্যাহতভাবে কমছে। এ কারণে স্থানীয় সরকারগুলোর নির্বাচনে সরকার বারবার পরাজিত হয়েছে। কিন্তু প্রচারণার ফলে বিএনপি নেতৃত্বের একটি বড় অংশ মনে করেছে ট্রাইব্যুনালের বিরোধিতাই যথেষ্ট নয় বরং এই প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থনও দেয়া প্রয়োজন। তাদের একটি অংশ এমনো মনে করে যে, জামায়াতের সাথে রাজনৈতিক জোট বিএনপির জন্য যতটা আশীর্বাদ তার চেয়ে বেশি বরং আপদ। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের পরিকল্পনার সাথে বিএনপি নেতৃত্বের এই অংশটির ভাবনা ও সমীকরণের মিল হয়ে যায়।
আওয়ামী লীগ এখন যে রাজনৈতিক বিকল্পকে সামনে রেখে কাজ করছে তার একটি হলো বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচন করা। প্রতিবেশী ভারত ছাড়া অন্য কোনো কূটনৈতিক অংশীদারের কাছে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না মনে করে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় বিকল্পটির জন্যও কাজ শুরু করেছে। সেই বিকল্প হলো বিএনপির অভ্যন্তরে এবং জোটের মধ্যে বিভক্তি ও অবিশ্বাস সৃষ্টি করা। এ জন্য পদক্ষেপ হিসেবে বিএনপির নেতাদের একটি অংশের সাথে আরেক অংশের দূরত্ব সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব একের পর এক মামলায় কয়েক মাস জেলে থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সংশয় তৈরির জন্য বলা হচ্ছে মির্জা ফখরুলের ভাবমূর্তি তৈরির জন্যই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাতে তিনি প্রয়োজনের সময় বিকল্প ব্যক্তি হিসেবে নেতৃত্ব দিতে পারেন। আবার আরেকজন আইনজ্ঞ সিনিয়র নেতার ব্যাপারে বলা হচ্ছে, তাকে মোটেই বিশ্বাস করা যায় না। তিনি তলে তলে সরকারের সাথে সমন্বয় রেখে কাজ করেন। দলের সহসভাপতি পর্যায়ের সম্প্রতি প্রভাবশালী হয়ে ওঠা এক নেতা দলের সিনিয়র কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে মাইনাস ওয়ানের কাজ চলছে বলে উল্লেখ করেছেন বিদেশী কূটনীতিকের কাছে। আরেকটি পক্ষ মিডিয়ার চাপাচাপিতে মুখফসকে বেরিয়ে যাওয়া একটি খণ্ডিত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিএনপির ত্যাগী নেতা ও সমন্বয়ককে জোটের সংহতির বিপক্ষের লোক হিসেবে প্রচার চালানো হচ্ছে। অথচ বিএনপি নেতৃত্বের মধ্যে দল ও জোটের সংহতি টিকিয়ে রাখার জন্য যারা সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখছেন, তিনি তার শীর্ষে। দল উপদলের ঊর্ধ্বে থেকে তিনি একান্তভাবে বিএনপি রাজনীতির মূলধারার প্রতিনিধিত্ব করেন। বিএনপির বলিষ্ঠ নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ব্যাপারে ছড়ানো হচ্ছে বিরোধী দলের কোথায় কী হচ্ছে তার সব কিছু তিনি প্রতিবেশী একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পৌঁছে দেন। এভাবে নানামুখী প্রচারণা চালিয়ে বিএনপির পুরো নেতৃত্বকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। একজনের প্রতি আরেকজনের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি করার চেষ্টা হচ্ছে। সরকারের কোন এজেন্সি কখন কার সাথে কোথায় যোগাযোগ করছে এসব কথাও আড়ালে-আবডালে ছড়ানো হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য বিএনপির সংহতি নষ্ট করা এবং দলের শক্তিকে দুর্বল করে রাখা। শেষ পর্যন্ত এটি সফল হলে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে সফল করা হবে কঠিন। আর এতে সাফল্য আসবে আওয়ামী লীগের কৌশলে।
১৮ দলীয় জোটের মধ্যে অবিশ্বাস ও বিভাজন আনতেও একই পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে। বিএনপির বিরুদ্ধে জামায়াতকে বলা হচ্ছে দলটির দুর্দিনে পাশে থাকছে না বিএনপি। আর বিএনপি নেতৃত্বকে বলা হচ্ছে জামায়াতকে বিশ্বাস করা যায় না। তারা ১৯৮৬ সালের মতো আবার আওয়ামী লীগের সাথে নির্বাচনে চলে যেতে পারে। এসব বিষয়ে বিরোধীদলীয় নেতা শক্ত অবস্থানে থাকায় দল ও জোটে বিভাজনের প্রচেষ্টা সফল হয়নি। তবে এর পরও সে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং প্রতিনিয়ত ডালপালা বিস্তার করছে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় ফিরে আসা আগামী পাঁচ বছর জামায়াতের জন্য কী পরিস্থিতি নিয়ে আসবে তা দলটির নেতৃত্ব যেমন গত চার বছর সময় দিয়ে বুঝতে পারেন, তেমনিভাবে বিএনপির জন্য আরো পাঁচ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা যে মোটেই সহনীয় নয়, সেটি দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা তিলে তিলে অনুভব করেন। আর বিএনপি নেতৃত্বের সবাই জানেন তাদের ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থ রক্ষা হবে দলকে ক্ষমতায় নিয়ে যেতে পারলে, আওয়ামী লীগকে সহায়তা করলে নয়। এর পরও নানা বৈরী পরিস্থিতির কারণে সামাজিক বা অন্যবিধ যোগাযোগ সরকার বা সরকারি দলের সাথে থাকতেই পারে। কিন্তু এ যোগাযোগকে দলের স্বার্থবিরোধী না ভেবে আন্দোলনকে বেগবান করতে পারলে সুবিধাবাদিতা স্থান পাবে না। রাজনৈতিক টানাপড়েনের এ সময়ে বিরোধীদলীয় নেতৃত্বের এ বিষয়টি উপলব্ধি করা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আর দূরে থাকা দরকার তাদের জন্য পেতে রাখা ফাঁদ থেকে।
No comments