বিয়ে, মাদক ও একজন বিচারক
বিয়ের রাত। বাসরঘরে বরের অপেক্ষায় নববধূ। বর এলেন। উপহার হিসেবে নববধূর হাতে ধরিয়ে দিলেন কিছু মাদকদ্রব্য। ইতস্তত নববধূ তাঁর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাতটির একাংশ ব্যয় করে ফেললেন সেই মাদকদ্রব্য শৌচাগারে ফ্লাস করে দিতে।
এই কাহিনি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালতের একজন বিচারকের। সোনিয়া সোটোমেয়র নামের এই নারী দেশটির সুপ্রিম কোর্টের প্রথম হিস্পানিক বিচারপতি। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া বিচারকদের একজন তিনি। নিজের এক আত্মজীবনীমূলক বইয়ে এ রকম অসংখ্য ঘটনার স্মৃতিচারণা করেছেন ৫৮ বছর বয়সী সোনিয়া। বইটির নাম মাই বিলাভড ওয়ার্ল্ড।সোনিয়া এক অতিসাধারণ পরিবারে জন্ম নেওয়ার পর নানা চড়াই-উতরাই পার হয়ে কীভাবে এই পর্যায়ে এসেছেন, সেই গল্প শুনিয়েছেন তাঁর বইয়ে। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের দারিদ্র্যপীড়িত ব্রোনক্স এলাকায়। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তাঁর বিয়ে হয় পুয়ের্তোরিকোর কেভিন নুনানের সঙ্গে। স্বামীর কখনোই কোনো ব্যাংক হিসাব ছিল না। এ রকম দারিদ্র্যের মধ্যেই তাঁকে সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হয়েছে।
সোনিয়া লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট ওবামার মতোই তিনি একসময় ধূমপান করতেন। এমনও সময় গেছে, যখন দিনে ৭০টি পর্যন্ত সিগারেট লেগেছে তাঁর। তবে পরের ঘটনাটা আর ওবামার মতো হয়নি। ওবামা হোয়াইট হাউসে প্রবেশের পর সিগারেট ছাড়তে মাসের পর মাস চেষ্টা করেছেন। আর বিচারক সোনিয়া সেটা করেছেন মাত্র পাঁচ দিনের চেষ্টায়। একবার ছাড়ার পর এ জীবনে তিনি আর সেটা মুখে নেননি।
সোনিয়া ও কেভিন সাত বছর সংসার করেছেন। এরপর শান্তিপূর্ণভাবে উভয়ের সম্মতিতে ছাড়াছাড়ি হয়েছে। বাসর রাতের সেই ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন কেভিন। নিউইয়র্ক ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন আগের সেই ঘটনাটি ছিল এক মজার গল্প। বন্ধুরা তাঁকে কৌতুক করে মাদকের বড়িগুলো দিয়েছিলেন। তবে দুজনের কেউই তা গ্রহণ করেননি।
বইটিতে বিচারক সোনিয়ার জীবনের প্রথম দিকের ঘটনার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হওয়ার পরের কোনো ঘটনা উল্লেখ করেননি তিনি। গত বছর ওবামার স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার বিল অনুমোদন করেছিলেন তিনিই। এসব ঘটনারও উল্লেখ নেই বইয়ে। সোনিয়া ও তাঁর সহযোগী আট বিচারক চলতি বছরের শেষের দিকে সমলিঙ্গের বিয়ের বিষয়ে রুল জারি করবেন। এর মাধ্যমে ৫০টি অঙ্গরাজ্যকে সমলিঙ্গের বিয়ের অনুমোদন দিতে বাধ্য করা হতে পারে। দ্য টেলিগ্রাফ।
No comments