হামলার সিদ্ধান্ত হয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে by নূরুজ্জামান
যখন ছাত্রলীগের মিছিল থেকে বিশ্বজিতের ওপর নারকীয় আক্রমণ চালানো হয়, রড দিয়ে পিটিয়ে ও চাপাতির কোপে ক্ষতবিক্ষত করা হয় তার শরীর, তখন অল্প দূরেই নীরব দাঁড়িয়ে ছিলেন লালবাগ জোনের ডিসি হারুনের নেতৃত্বে পুলিশ দল।
তারা এগিয়ে গেলে হয়তো বিশ্বজিৎ এভাবে মারা যেতেন না, অন্তত বেঁচে থাকতেন। এমন বক্তব্য দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এছাড়া বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের ভিডিও ফুটেজ এবং সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তেও পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার তথ্য পাওয়া গেছে। গতকাল এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিসি হারুন অর রশীদ বলেন, ছাত্রলীগের মিছিলটি তার এলাকা থেকে বেরুলেও বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে অন্য এলাকায়। এ কারণে তিনি হামলাকারীদের থামাতে পারেননি।
এদিকে ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পরও বিশ্বজিৎ দাস হত্যাকাণ্ডে জড়িত ঘাতকদের গ্রেপ্তার নিয়ে ধূম্রজাল কাটেনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলছেন, গতকাল পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে গতকাল সন্ধ্যায় পুলিশের পক্ষ থেকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চিহ্নিত হামলাকারী মাহফুজুর রহমান নাহিদসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে বাকি ৮ জনের বিষয়ে কোন তথ্য নেই তার কাছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজুর রহমান নাহিদ, কাইয়ুম মিয়া টিপু ও এইচএম কিবরিয়া। তাদের গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, ঘটনার আগের দিন রাতে তারা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতা জবির সভাপতি ও সেক্রেটারির সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়- অবরোধের পক্ষে কেউ মিছিল বের করলে হামলা চালাতে হবে। কাউকে ছাড় দেয়া যাবে না। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা সহযোগিতা করবে। ওই সাহসেই তারা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এদিকে গতকাল সকালে মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে ছাত্রলীগ কর্মী রফিকুল ইসলাম শাকিলসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেছেন এক আইনজীবী। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ৯ই ডিসেম্বর সূত্রাপুর থানা এলাকায় বিশ্বজিৎ নামে এক যুবক দুষ্কৃতকারীদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন। পরে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। উল্লিখিত ঘটনার বিভিন্ন সময় ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া এবং ফটোসাংবাদিকদের ধারণকৃত ছবি এবং গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে। এ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে গতকাল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার টিম (দক্ষিণ) এবং বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন-এর নেতৃত্বে একটি দল রাজধানীর পলাশী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মাহফুজুর রহমান নাহিদকে গ্রেপ্তার করে। তার পিতার নাম আবদুর রহমান। বাড়ি ভোলা জেলার দৌলতখান থানার দক্ষিণ জয়নগর গ্রামে। ২০০৪ সালে সে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। পরে বাংলা বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে। একই দিন অপর একটি অভিযানে গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার হাসান আরাফাতের নেতৃত্বে রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস গেট এলাকা থেকে এইচএম কিবরিয়া ও কাইয়ুম মিয়া টিপুকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিবরিয়ার পিতার নাম আতিকুর রহমান। তার বাড়ি বরিশাল জেলার আগৈলঝড়া থানার চেংগুটিয়া গ্রামে। সে ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছে। কাইয়ুম মিয়া টিপুর পিতার নাম মিজানুর রহমান। তার বাড়ি কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার বড়িয়াচড়া গ্রামে। ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়। গোয়েন্দাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাহিদ জানায়, সে ছিল জবি ছাত্রলীগ কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ প্রত্যাশী। এ কারণে ঘটনার দিন সকালে জবি ছাত্রলীগ সভাপতি ও সেক্রেটারির নেতৃত্বে অবরোধ বিরোধী মিছিলে অংশ নেয়। হঠাৎ ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পরপরই ছাত্রলীগ নেতা ইউনুছ ও রাজনের নির্দেশে ১২-১৫ জনের একটি দল শিবির সন্দেহে বিশ্বজিৎকে ধাওয়া করে। রাজন তার হাতে থাকা রড দিয়ে প্রথম আঘাত করার পরপরই তারা একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সে আরও জানায়, হামলার সময় তার হাতে লাঠি ছিল। ওই লাঠি দিয়েই বিশ্বজিৎকে পিটিয়েছে। তবে শাকিলের হাতে থাকা চাপাতির কোপেই বিশ্বজিতের মৃত্যু ত্বরান্বিত হয়। গ্রেপ্তারকৃত কিবরিয়া ও টিপু জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রলীগের মিছিল মিটিংয়ে জড়িত। ঘটনার দিন মিছিলের পেছনে ছিল তারা। রাজন ও ইউনুছের নির্দেশ পেয়েই তারা বিশ্বজিতের ওপর হামলা চালিয়েছে। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃত নাহিদ হামলার কথা স্বীকার করেছে। তার সঙ্গে শাকিল ও তাহসিন নামে আরও দু’জন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছিল। তাহসিনের পিতা হাতিয়া উপজেলা মাদরাসার শিক্ষক। স্থানীয় জামায়াত নেতা। অন্যদিকে আরেক শনাক্ত সন্ত্রাসী শাকিলের বড় ভাই পটুয়াখালী পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলেই হত্যা রহস্য উদঘাটন করা সহজ হবে বলে জানান তিনি। ওদিকে গতকাল দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সূত্রাপুর থানার এসআই মাহবুবুল আলম আকন্দ বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় জড়িত সন্দেহে আরও চারজনকে আদালতে হাজির করে শ্যোন এরেস্টের আবেদন করে। তারা হলো মামুন অর রশিদ, ফারুক হোসেন, কাজী নাহিদুজ্জামান তুহিন ও মোসলেহ উদ্দীন মোসলেম। বিভিন্ন গণমাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের যেসব ছবি প্রচারিত হয়েছে তাদের মধ্যে এদের কেউই নেই। মামুনের বাসা রাজধানীর দক্ষিণ খানের মধুবাগে, ফারুকের বাড়ি দক্ষিণখানের পূর্বপাড়ার এয়ারপোর্ট লেনে, তুহিনের বাসা ডেমরার সারুলিয়ায়, মোসলেমের বাসা বাড্ডার মধ্যপাড়ায়। তদন্ত কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম আকন্দ বলেন, সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে পুলিশের সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দু’দফায় ৮ জন ও তৃতীয় দফায় ১১ জন গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিয়ে পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছেন। এখন ওই বিভ্রান্তি কাটাতেই ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিতর্ক অবসানের পথ খুঁজছেন। ওয়ারি জোন পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, বিশ্বজিৎ হত্যার পর পুরান ঢাকার ১১০ নম্বর লালমোহন সাহা স্ট্রিট থেকে শিবির সন্দেহে জগন্নাথ ও কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা ফুলকুঁড়ি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ারি জোনের ডিসি গাজী মোজাম্মেল হকের কাছে জানতে চান, বিশ্বজিতের ঘটনায় কোন আসামি গ্রেপ্তার আছে কিনা? জবাবে তিনি ওই ৮জনের গ্রেপ্তার খবর দিলে মন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্বজিতের আসামিদের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। এরপরেই বিভ্রান্তি শুরু হয়। সূত্রাপুর থানা পুলিশ সূত্র জানায়, ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারকৃত শিবির কর্মীদের মধ্যে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার আসামিদের তালাশ করা হচ্ছে। এ কারণে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করে অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, পথচারী বিশ্বজিৎ হত্যা নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন পুলিশ-র্যাবসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। হত্যাকাণ্ডের ঘাতকদের ধরতে নানা কৌশল নেয়ার পরও প্রকৃত আসামিদের বেশির ভাগই গ্রেপ্তার হচ্ছে না। বিশেষ করে ভিডিও ফুটেজ ও পত্রিকায় প্রকাশিত ছবিতে যাদের নাম এসেছে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। সূত্র মতে, বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার ঘাতকদের ধরতে পুলিশ কর্মকর্তারা দফায় দফায় বৈঠক করছেন। ঘটনার পর থেকে গতকাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকেও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। কার নির্দেশে অবরোধ বিরোধী মিছিল করা হয়েছিল তা-ও অবহিত করেছে তদন্তকারী সংস্থাকে। নেতাকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দারা আরও জানতে পারেন, অবরোধের আগের দিন রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি শরীফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-আপ্যায়ন সম্পাদক মশিউর রহমান সুমনসহ কয়েকজন মিলে বিশেষ বৈঠক করেন। ওই বৈঠক শেষে জবির সভাপতি ও সেক্রেটারির সঙ্গে বৈঠক করেন ছাত্রলীগ নেতা ইমদাদুল হক, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, লিমন, তাহসীন, কামরুল, শান্তসহ প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মী। সিদ্ধান্তের আলোকে গত রোববার সকাল থেকেই ক্যাম্পাস এলাকায় অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তবে পথচারী বিশ্বজিৎকে হত্যা করার কোন পরিকল্পনা ছিল না বলে জানিয়েছেন আটক কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। এ প্রসঙ্গে ডিবি পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, আটক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। আটককৃতদের মধ্যে অনেককেই ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে কয়েকজনকে আটক রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অবরোধ পালনকারীদের ওপর হামলার জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতার নির্দেশের তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিবের দাবি- বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে বিএনপি-জামায়াতই দায়ী
স্টাফ রিপোর্টার জানান, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব দাবি করেছেন, বিশ্বজিৎ দাস হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কেউই ছাত্রলীগের কর্মী নন। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপি ও জামায়াতকে দায়ী করে তিনি বলেন, মানুষ হত্যা করে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের ওপর দোষ চাপানো তাদের (বিএনপি-জামায়াত) ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গতকাল বিকাল পাঁচটায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কথা বলেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে আবুল কালাম আজাদ অভিযুক্ত খুনি মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ওরফে নাহিদ, মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিল, মীর মো. নূরে আলম ওরফে লিমন, মো. ইমদাদুল হক ও মো. ওবাইদুল কাদেরের পরিবারের সদস্যদের পরিচয় ও নানা তথ্য তুলে ধরেন। প্রেস সচিবের বক্তব্য অনুযায়ী অভিযুক্তদের মধ্যে মো. ওবায়দুল কাদেরের পিতা নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার একটি মাদরাসার শিক্ষক। তার বড় ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের বড় নেতা ছিলেন। ওবায়দুল কাদের আগে শিবিরের কর্মী ছিলেন। এছাড়া মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিলের পিতার নাম আনছার আলী। তিনি কর অফিসের একজন অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন। তার বড় ভাই পটুয়াখালী পৌর যুবদলের আহ্বায়ক। অন্যদের মধ্যে মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ওরফে নাহিদ ভোলার একটি মাদরাসা থেকে আলিম ও ফাজিল পাস করেন। তার নানা কুখ্যাত রাজাকার। তার বড় ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হল শাখা ছাত্রশিবিরের নেতা। তিনি ছাত্রলীগের নেতা ফারুক হত্যা মামলার আসামি। এছাড়া মীর মো. নূরে আলম ওরফে লিমনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, ছিনতাই, অপহরণসহ একাধিক মামলা রয়েছে। অভিযুক্ত মো. ইমদাদুল হকের বাড়ি যশোরে শার্শা উপজেলায়। ইমদাদুলের চাচা শাহজাহান আলী জামায়াতের কর্মী। অন্যদের মধ্যে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিলের বাড়ি নরসিংদীতে। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাসের ছাত্র। প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বজিতের খুনিদের গ্রেপ্তারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শুধু বিশ্বজিতের নয়, হরতাল ও অবরোধে নিহত ও আহত সবার হতাহতের তদন্ত হবে এবং তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন, সন্ত্রাসীদের কোন দলীয় পরিচয় নেই। তারা যে কেউ হোক, তাদের কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে। প্রেস সচিব জানান, তারা জ্বালাও, পোড়াও, মানুষ হত্যা, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে সাধারণ মানুষকে ভীত সন্ত্রস্ত করার মাধ্যমে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চাইছে। তাদের এ অরাজকতা সৃষ্টির কারণেই গত রোববার অবরোধের সময় পুরান ঢাকায় বিশ্বজিৎ দাস নৃশংসভাবে খুন হয়।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিবের দাবি- বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে বিএনপি-জামায়াতই দায়ী
স্টাফ রিপোর্টার জানান, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব দাবি করেছেন, বিশ্বজিৎ দাস হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কেউই ছাত্রলীগের কর্মী নন। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপি ও জামায়াতকে দায়ী করে তিনি বলেন, মানুষ হত্যা করে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের ওপর দোষ চাপানো তাদের (বিএনপি-জামায়াত) ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গতকাল বিকাল পাঁচটায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কথা বলেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে আবুল কালাম আজাদ অভিযুক্ত খুনি মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ওরফে নাহিদ, মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিল, মীর মো. নূরে আলম ওরফে লিমন, মো. ইমদাদুল হক ও মো. ওবাইদুল কাদেরের পরিবারের সদস্যদের পরিচয় ও নানা তথ্য তুলে ধরেন। প্রেস সচিবের বক্তব্য অনুযায়ী অভিযুক্তদের মধ্যে মো. ওবায়দুল কাদেরের পিতা নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার একটি মাদরাসার শিক্ষক। তার বড় ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের বড় নেতা ছিলেন। ওবায়দুল কাদের আগে শিবিরের কর্মী ছিলেন। এছাড়া মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিলের পিতার নাম আনছার আলী। তিনি কর অফিসের একজন অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন। তার বড় ভাই পটুয়াখালী পৌর যুবদলের আহ্বায়ক। অন্যদের মধ্যে মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ওরফে নাহিদ ভোলার একটি মাদরাসা থেকে আলিম ও ফাজিল পাস করেন। তার নানা কুখ্যাত রাজাকার। তার বড় ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হল শাখা ছাত্রশিবিরের নেতা। তিনি ছাত্রলীগের নেতা ফারুক হত্যা মামলার আসামি। এছাড়া মীর মো. নূরে আলম ওরফে লিমনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, ছিনতাই, অপহরণসহ একাধিক মামলা রয়েছে। অভিযুক্ত মো. ইমদাদুল হকের বাড়ি যশোরে শার্শা উপজেলায়। ইমদাদুলের চাচা শাহজাহান আলী জামায়াতের কর্মী। অন্যদের মধ্যে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিলের বাড়ি নরসিংদীতে। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাসের ছাত্র। প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বজিতের খুনিদের গ্রেপ্তারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শুধু বিশ্বজিতের নয়, হরতাল ও অবরোধে নিহত ও আহত সবার হতাহতের তদন্ত হবে এবং তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন, সন্ত্রাসীদের কোন দলীয় পরিচয় নেই। তারা যে কেউ হোক, তাদের কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে। প্রেস সচিব জানান, তারা জ্বালাও, পোড়াও, মানুষ হত্যা, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে সাধারণ মানুষকে ভীত সন্ত্রস্ত করার মাধ্যমে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চাইছে। তাদের এ অরাজকতা সৃষ্টির কারণেই গত রোববার অবরোধের সময় পুরান ঢাকায় বিশ্বজিৎ দাস নৃশংসভাবে খুন হয়।
No comments