বিচার বিভাগ নিয়ে কথা উঠছেঃ লক্ষণ শুভ নয়
সরকারের ইচ্ছাতেই আদালতগুলো চলছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বলতে এখন আর কিছু নেই,—এ কথাগুলো ইদানীং উচ্চারিত হচ্ছে আইনজীবীদের মুখে মুখে। বিভিন্ন নিম্নআদালতের সাম্প্রতিক আচরণ খতিয়ে দেখলে বোঝা যায়, আইনজীবীদের এই মূল্যায়ন ও তজ্জনিত হতাশা অকারণ নয়।
একই ধরনের মামলায় আদালতের দুই ধরনের সিদ্ধান্ত দেশবাসীকে হতচকিত করে তুলেছে। দেখা যাচ্ছে মামলার ধরন এক হলেও কারওটা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং কারওটা সরাসরি খারিজ করে দেয়া হচ্ছে। যেসব মামলা গ্রহণ করে বিবাদীর বিরুদ্ধে সমন, ক্ষেত্রবিশেষে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হচ্ছে তার প্রত্যেকটির বাদী সরকার পক্ষের লোক। আর পত্রপাঠ খারিজ করে দেয়া মামলাটির বাদী ছিলেন বিরোধীদলীয় সিনিয়র সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী। তিনি মামলা দায়ের করেছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি, সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক সেনাপ্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। তার মামলার ভিত্তি ছিল জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্য। ওই বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন যে, জরুরি অবস্থার সময় তাকে আটক করে খাদ্যে স্লো পয়জন দেয়া হয়েছিল। বিষক্রিয়ার মাধ্যমে একজনকে হত্যার চেষ্টা ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে গুরুতর অপরাধ। অভিযোগটি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে করেছেন বিধায় এটাকে আমলে না নেয়ার সুযোগ নেই। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী সংসদে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে বিচলিত হয়েছেন এবং এ দুষ্কর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে চেয়েছেন বলেই এ মামলা। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কিন্তু মামলাটি এ যুক্তিতে খারিজ করে দেন যে, আলোচ্য ক্ষেত্রে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী নিজে ক্ষতিগ্রস্ত নন।
অথচ বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত একটি খবর দৈনিক আমার দেশ-এ প্রকাশিত হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাদের দায়ের করা ২৪টি মামলা গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন জেলার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। একটি মামলায় আমার দেশ সম্পাদকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। একই ঘটনায় পৃথকভাবে আওয়ামী লীগ নেতারা বিভিন্ন জেলায় মামলা দায়ের করছেন কেন এবং মামলার বিষয়বস্তুতে তারা নিজেরা ক্ষতিগ্রস্ত কিনা সে বিবেচনা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত করেননি। একইভাবে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ করায় তার বিরুদ্ধে ১২টির বেশি মামলা দায়ের করেছেন বিভিন্ন জেলার আওয়ামী লীগ নেতারা। সংশ্লিষ্ট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সব মামলা গ্রহণ করে সমন জারি করেছেন, ২টি ক্ষেত্রে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছেন।
কিছুদিনের ব্যবধানে এই ঘটনাগুলো এমন স্থূলভাবে ঘটেছে যে, বিচার বিভাগকে সুতার টানে পরিচালিত করার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে সবার কাছে। সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, ‘এর একটিই উত্তর; আইন কোনো দেশে দু’ধরনের হতে পারে না। আইন সবার জন্য এক ধরনের হবে। একই আইনের দুই ধরনের প্রয়োগ হলে বিচারব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা থাকবে না।’ বিজ্ঞ আইনজীবীর বক্তব্য এমন প্রাঞ্জল যে এরপর আর আমাদের বলার কিছু নেই।
অথচ বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত একটি খবর দৈনিক আমার দেশ-এ প্রকাশিত হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাদের দায়ের করা ২৪টি মামলা গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন জেলার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। একটি মামলায় আমার দেশ সম্পাদকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। একই ঘটনায় পৃথকভাবে আওয়ামী লীগ নেতারা বিভিন্ন জেলায় মামলা দায়ের করছেন কেন এবং মামলার বিষয়বস্তুতে তারা নিজেরা ক্ষতিগ্রস্ত কিনা সে বিবেচনা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত করেননি। একইভাবে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ করায় তার বিরুদ্ধে ১২টির বেশি মামলা দায়ের করেছেন বিভিন্ন জেলার আওয়ামী লীগ নেতারা। সংশ্লিষ্ট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সব মামলা গ্রহণ করে সমন জারি করেছেন, ২টি ক্ষেত্রে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছেন।
কিছুদিনের ব্যবধানে এই ঘটনাগুলো এমন স্থূলভাবে ঘটেছে যে, বিচার বিভাগকে সুতার টানে পরিচালিত করার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে সবার কাছে। সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, ‘এর একটিই উত্তর; আইন কোনো দেশে দু’ধরনের হতে পারে না। আইন সবার জন্য এক ধরনের হবে। একই আইনের দুই ধরনের প্রয়োগ হলে বিচারব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা থাকবে না।’ বিজ্ঞ আইনজীবীর বক্তব্য এমন প্রাঞ্জল যে এরপর আর আমাদের বলার কিছু নেই।
No comments