ঢাকা-হুলারহাট লঞ্চ রুট-যাত্রীস্বার্থ কেন উপেক্ষিত?
লঞ্চ, বাস কিংবা যে কোনো ধরনের যানবাহন চালুর ক্ষেত্রে মালিকপক্ষ অবশ্যই বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাইবে। একই সঙ্গে যাত্রীস্বার্থও সুরক্ষিত করা চাই। ঢাকার সঙ্গে নৌপথে দক্ষিণাঞ্চলীয় পিরোজপুর জেলার যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে এ নীতি যথাযথ অনুসৃত হচ্ছে না।
রোববার সমকালে 'নতুন রোটেশন পদ্ধতিতে যাত্রীদুর্ভোগ বেড়েছে' শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ রুটে যাত্রীদের চাপ রয়েছে যথেষ্ট এবং সেজন্য প্রতিদিন চারটি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসত। ঢাকা থেকেও ছেড়ে যেত সমসংখ্যক লঞ্চ। বেশিরভাগ মালিকের সঙ্গে পরামর্শ না করেই বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ বা বিআইডবি্লউটিএ প্রথমে প্রতিদিন তিনটি এবং পরে দুটি লঞ্চ চলাচলের বিধান রেখে রোটেশন পদ্ধতির অনুমোদন দেয়। এর ফলে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, যাত্রী থাকলেও পর্যাপ্তসংখ্যক লঞ্চ ছাড়ছে না। ডেকে নিশ্চল বসে থাকছে যেসব লঞ্চ, তাদের মালিকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। কর্মচারীদের বসিয়ে রেখে বেতন দিতে হচ্ছে। মাসে একটি লঞ্চ মোট ১০টি ট্রিপ ভাগে পাচ্ছে, আর বাকি ২০ দিন থাকতে হয় নোঙর ফেলে। অন্যদিকে, প্রতিদিন যে দুটি লঞ্চ ভাণ্ডারিয়া ও হুলারহাট থেকে ঢাকার পথে ছেড়ে আসছে, তাতে যাত্রীদের চাপ পড়ছে বেশি। কেন এ নিয়ম? বেশিরভাগ মালিকের অভিযোগ, বিআইডবি্লউটিএ প্রভাবশালী দু'একজন মালিকের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে যাত্রীসাধারণের স্বার্থ উপেক্ষা করেছে। এসব প্রভাবশালী মালিকের লঞ্চ অন্য রুটে চালানো হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। সরকার অব্যাহতভাবে বলছে যে, নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী বহন কঠোরভাবে দণ্ডনীয়। বিআইডবি্লউটিএ এমন বিধান করেছে, যাতে এ রুটে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কোনো বিকল্প নেই। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কারণে ভাড়া কিন্তু কমছে না। বরং যাত্রীদের জিম্মি করে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়। কেবিন পাওয়া তো রীতিমতো সোনার হরিণ ধরার মতো। বিআইডবি্লউটিএ কর্মকর্তাদের দাবি, রোটেশন পদ্ধতিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। যাত্রী সংখ্যা বেশি হলে রুটে নৌযানের সংখ্যা বাড়ানো হবে। প্রকৃতপক্ষে এখন এমন বাস্তবতাই বিরাজ করছে। আমরা আশা করব, বিআইডবি্লউটিএ কর্মকর্তারা দ্রুত তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন এবং মুষ্টিমেয় মালিককের নয়, বরং সংখ্যাগরিষ্ঠ
যাত্রীর স্বার্থকেই প্রাধান্য দেবেন।
যাত্রীর স্বার্থকেই প্রাধান্য দেবেন।
No comments