পিএসসি নখদন্তহীন নয় : চেয়ারম্যান-সব সেটের প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় পরীক্ষা স্থগিত
প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার কারণেই সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) ৩৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া স্থগিত করেছে। সব সেটের প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় বিকল্প সেটের মাধ্যমেও পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ ছিল না বলে জানিয়েছে কমিশন সূত্র।
গতকাল রবিবার এক জরুরি বৈঠকে আগামী দেড় মাসের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিএসসি। এ ছাড়া প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে কমিশন। গতকাল এক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ঘটনার সঙ্গে জড়িত জালিয়াত চক্রের হীন কার্যক্রম সমূলে বন্ধ করার জন্য তাদের সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত বা কোনো আলামত কারো কাছে থাকলে তা সরকারি কর্মকমিশনকে সরবরাহ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
পিএসসির চেয়ারম্যান এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে আমরা এখনো সন্দেহের ঊর্ধ্বে উঠতে পারিনি। বিভ্রান্তি এড়াতে আংশিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এতে পরীক্ষার্থীরা লাভবান হবেন। গুজব হোক আর বাস্তব হোক, তাঁদের ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হবে না।'
পিএসসির চেয়ারম্যান আরো বলেন, 'বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ ছাপা হচ্ছিল। আমরা সরকারের বিভিন্ন এজেন্সিকে বিষয়টি জানাই। তারা বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি। শনিবার সকাল পর্যন্ত তারা পরিষ্কার কিছু জানাতে পারেনি। আমরাও সন্দেহের উর্ধ্বে উঠতে পারিনি।'
নিশ্চিত না হওয়ার পরও কেন পরীক্ষা স্থগিত করলেন- জানতে চাইলে এ টি আহমেদুল হক বলেন, 'প্রশ্নপত্র নিয়ে যে উৎকণ্ঠা ছিল, আমি মনে করি পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণায় সেই উৎকণ্ঠা দূর হয়েছে। তা ছাড়া সমন্বয়ক সংস্থা হিসেবে পিএসসি তো দায় এড়াতে পারে না।'
এখনো পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিটি গঠন না করার কারণ জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, 'আমরা তদন্ত করব। সব বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খ খতিয়ে দেখা হবে। পিএসসির সদস্য নাসিরুল ইসলাম তদন্ত করবেন। এখানে পিএসসি এককভাবে জড়িত নয়। আমরা শুধু সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করি। আমরা প্রশ্নপত্র তৈরি করি না। মডারেশন করি না। এমনকি প্রিন্টিংও পিএসসি করে না। কাজেই কোথায় গণ্ডগোল হয়েছে, তা খুঁজে বের করতে হলে সরকারের সহায়তা লাগবে। আমরা সে সহায়তা চেয়েছি। গোয়েন্দাদের আরো তৎপর থাকতে হবে। এরই মধ্যে বিজি প্রেসের সঙ্গে কথা হয়েছে।'
পত্রপত্রিকায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি বারবার প্রকাশিত হলেও পিএসসি তা গুজব বলে উড়িয়ে দেয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, 'গুজব ছড়িয়ে অনেকে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে। নিশ্চিত না হয়ে একটি জাতীয় পরীক্ষা স্থগিত করা যায় না। আমরা যে সময়ে এসে স্থগিত করেছি, তা উপযুক্ত সময়। আরো আগে স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিলে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারতাম না। আর পরীক্ষা হয়ে গেলে পরীক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট হতে পারতেন না।'
অতীতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে সব সময় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নাম জড়িত ছিল। এবারও অভিযোগের তীর ছাত্রলীগ, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাদের দিকে। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটত ছাত্রদল নেতাদের মাধ্যমে। ছাত্রলীগ নেতারা জড়িত নয়- এমন কোনো প্রমাণ পিএসসির কাছে রয়েছে কি না জানতে চাইলে আহমেদুল হক বলেন, 'পিএসসিতে কোনো ছাত্রলীগ নেতার প্রবেশাধিকার নেই। তাঁরা কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে সেটা পিএসসিতে নয়, অন্য কোথাও। এখনো পর্যন্ত আমার কাছে কোনো ছাত্রলীগ নেতা আসেননি। কোনো তদবিরও করেননি। অনেক সময় পিএসসির কর্মচারীদের জড়িয়েও অভিযোগ তোলা হয়। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, এতে ছাত্রলীগ নেতা বা পিএসসির কর্মচারী- কারোরই কোনো হাত নেই। কর্মচারীরা এত দূর পর্যন্ত যেতেই পারেন না।'
বিভিন্ন সরকারের সময় কমিশনকে রাজনীতিকরণের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে আহমেদুল হক বলেন, 'বর্তমান কমিশন রাজনীতিকরণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কমিশন স্বাধীনভাবেই কাজ করে। আমি কোনো দিন কোনো ছাত্র সংগঠন করিনি। কারো মিছিলে যাইনি। কাজেই এসব অভিযোগ ঠিক নয়। সমালোচনার জন্যই সমালোচনা করা উচিত নয়।'
সম্প্রতি পিএসসির বিদায়ী চেয়ারম্যান সা'দত হুসাইন বলেছেন, পিএসসি নখদন্তহীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বর্তমান চেয়ারম্যান বলেন, 'আমি তা মনে করি না। কারণ যেখানে পৌঁছালে একটি প্রতিষ্ঠানকে নখদন্তহীন বলা হয়, পিএসসি সেখানে যায়নি। পিএসসির কানো কাজে সরকারের কোনো প্রভাব নেই। আমরা আমাদের মতো করে স্বাধীনভাবে কাজ করি। কাজেই পিএসসিকে কোনোভাবেই নখদন্তহীন প্রতিষ্ঠান বলা যাবে না। পিএসসি একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠান।'
পিএসসির চেয়ারম্যান এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে আমরা এখনো সন্দেহের ঊর্ধ্বে উঠতে পারিনি। বিভ্রান্তি এড়াতে আংশিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এতে পরীক্ষার্থীরা লাভবান হবেন। গুজব হোক আর বাস্তব হোক, তাঁদের ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হবে না।'
পিএসসির চেয়ারম্যান আরো বলেন, 'বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ ছাপা হচ্ছিল। আমরা সরকারের বিভিন্ন এজেন্সিকে বিষয়টি জানাই। তারা বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি। শনিবার সকাল পর্যন্ত তারা পরিষ্কার কিছু জানাতে পারেনি। আমরাও সন্দেহের উর্ধ্বে উঠতে পারিনি।'
নিশ্চিত না হওয়ার পরও কেন পরীক্ষা স্থগিত করলেন- জানতে চাইলে এ টি আহমেদুল হক বলেন, 'প্রশ্নপত্র নিয়ে যে উৎকণ্ঠা ছিল, আমি মনে করি পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণায় সেই উৎকণ্ঠা দূর হয়েছে। তা ছাড়া সমন্বয়ক সংস্থা হিসেবে পিএসসি তো দায় এড়াতে পারে না।'
এখনো পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিটি গঠন না করার কারণ জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, 'আমরা তদন্ত করব। সব বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খ খতিয়ে দেখা হবে। পিএসসির সদস্য নাসিরুল ইসলাম তদন্ত করবেন। এখানে পিএসসি এককভাবে জড়িত নয়। আমরা শুধু সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করি। আমরা প্রশ্নপত্র তৈরি করি না। মডারেশন করি না। এমনকি প্রিন্টিংও পিএসসি করে না। কাজেই কোথায় গণ্ডগোল হয়েছে, তা খুঁজে বের করতে হলে সরকারের সহায়তা লাগবে। আমরা সে সহায়তা চেয়েছি। গোয়েন্দাদের আরো তৎপর থাকতে হবে। এরই মধ্যে বিজি প্রেসের সঙ্গে কথা হয়েছে।'
পত্রপত্রিকায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি বারবার প্রকাশিত হলেও পিএসসি তা গুজব বলে উড়িয়ে দেয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, 'গুজব ছড়িয়ে অনেকে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে। নিশ্চিত না হয়ে একটি জাতীয় পরীক্ষা স্থগিত করা যায় না। আমরা যে সময়ে এসে স্থগিত করেছি, তা উপযুক্ত সময়। আরো আগে স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিলে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারতাম না। আর পরীক্ষা হয়ে গেলে পরীক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট হতে পারতেন না।'
অতীতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে সব সময় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নাম জড়িত ছিল। এবারও অভিযোগের তীর ছাত্রলীগ, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাদের দিকে। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটত ছাত্রদল নেতাদের মাধ্যমে। ছাত্রলীগ নেতারা জড়িত নয়- এমন কোনো প্রমাণ পিএসসির কাছে রয়েছে কি না জানতে চাইলে আহমেদুল হক বলেন, 'পিএসসিতে কোনো ছাত্রলীগ নেতার প্রবেশাধিকার নেই। তাঁরা কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে সেটা পিএসসিতে নয়, অন্য কোথাও। এখনো পর্যন্ত আমার কাছে কোনো ছাত্রলীগ নেতা আসেননি। কোনো তদবিরও করেননি। অনেক সময় পিএসসির কর্মচারীদের জড়িয়েও অভিযোগ তোলা হয়। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, এতে ছাত্রলীগ নেতা বা পিএসসির কর্মচারী- কারোরই কোনো হাত নেই। কর্মচারীরা এত দূর পর্যন্ত যেতেই পারেন না।'
বিভিন্ন সরকারের সময় কমিশনকে রাজনীতিকরণের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে আহমেদুল হক বলেন, 'বর্তমান কমিশন রাজনীতিকরণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কমিশন স্বাধীনভাবেই কাজ করে। আমি কোনো দিন কোনো ছাত্র সংগঠন করিনি। কারো মিছিলে যাইনি। কাজেই এসব অভিযোগ ঠিক নয়। সমালোচনার জন্যই সমালোচনা করা উচিত নয়।'
সম্প্রতি পিএসসির বিদায়ী চেয়ারম্যান সা'দত হুসাইন বলেছেন, পিএসসি নখদন্তহীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বর্তমান চেয়ারম্যান বলেন, 'আমি তা মনে করি না। কারণ যেখানে পৌঁছালে একটি প্রতিষ্ঠানকে নখদন্তহীন বলা হয়, পিএসসি সেখানে যায়নি। পিএসসির কানো কাজে সরকারের কোনো প্রভাব নেই। আমরা আমাদের মতো করে স্বাধীনভাবে কাজ করি। কাজেই পিএসসিকে কোনোভাবেই নখদন্তহীন প্রতিষ্ঠান বলা যাবে না। পিএসসি একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠান।'
No comments