আইন প্রতিমন্ত্রীর ভাগনে আগুনে পুড়ে মারা গেছেন

রাজধানীর মিরপুরের কাজীপাড়ায় গতকাল রোববার সকালে আহমেদ শওকত মাসুদ (৪৩) নামে এক ব্যবসায়ী আগুনে পুড়ে মারা গেছেন। তিনি আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ভাগনে। হাসপাতালে প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ল্যাপটপ বিস্ফোরণে বিছানায় আগুন ধরে, তাতে দগ্ধ হয়ে শওকত মারা গেছে।


তবে পুলিশ আগুনের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি।
শওকত তাঁর দূরসম্পর্কের এক ভাইকে নিয়ে ফুফা কাজী আতাউর রহমানের কাজীপাড়ার বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। পাশের ফ্ল্যাটে থাকেন আতাউর রহমান।
পাশের বাড়ির গাড়িচালক নওশাদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, আটটার দিকে তিনি গলির চায়ের দোকানে ছিলেন। চিৎকার শুনে দৌড়ে এসে দেখেন ওই ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে, ভেতরে আগুন। বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী নজরুল ইসলাম জানান, আগুন নেভাতে লোকজন ভিড় করলে তিনি ভবনটির ফটক খুলে দেন।
শওকতের ফুফাতো ভাই কাজী জিয়াউর রহমান বলেন, চিৎকারে ঘুম ভাঙে। দরজা খুলে বেরিয়ে দেখেন ভবনের বাসিন্দারা সিঁড়ি বেয়ে দ্রুত নিচে নামছে। আশপাশের লোকজন এসে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শওকতকে উদ্ধার করে। তখনো বিছানায় আগুন জ্বলছিল। লোকজন সবাই মিলে আগুন নিভিয়ে ফেলে। শওকতকে একাধিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। বেলা পৌনে ১২টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
জিয়াউর রহমান জানান, শওকতের সঙ্গে থাকা ভাই ঘটনার আগেই বাসা থেকে বেরিয়ে কাজে যান।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, শওকতের শরীরের পেছনের ভাগ মারাত্মক দগ্ধ ছিল। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসানো ছিল।
ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিছানার চাদর, তোষক-জাজিম পোড়া। খাট পোড়েনি। খাট থেকে কিছু দূরে ট্রলির ওপরে রাখা টেলিভিশন অক্ষত। কাছে দুটি ফোমের চেয়ার। একটি চেয়ারের ওপর বন্ধ থাকা একটি ল্যাপটপের পেছনের অংশ পোড়া, সঙ্গের ‘মডেম’ পোড়া।
মিরপুর থানা পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ওই বাসা থেকে আলামত সংগ্রহ করে। মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, শওকত আগুনে পুড়ে মারা গেছেন। তবে কীভাবে আগুন লেগেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
শওকতের ফুপাতো ভাই জিয়াউর রহমান বলেন, রাতে শওকত ল্যাপটপটি চার্জ দিয়ে ঘুমিয়েছিল। সকালে সেটি বিস্ফোরিত হলে বিছানায় আগুন ধরে যায়। আর তাতে ঘুমন্ত শওকত মারা যান। ঢাকা মেডিকেলে আইন প্রতিমন্ত্রীও ল্যাপটপ বিস্ফোরণের কথা বলেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, শওকত আরব-বাংলাদেশ ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সম্প্রতি চাকরি ছেড়ে দিয়ে আইপিএসের ব্যবসা শুরু করেন। শওকতের সঙ্গে স্ত্রীর ছাড়াছাড়ি হয়েছে কয়েক বছর আগে। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপাজলার নাড়ইতে। বাবার নাম বদরউদ্দিন।

No comments

Powered by Blogger.