বাংলাদেশেরও আগ্রহ যে ম্যাচে by নোমান মোহাম্মদ
'ম্যাককালামের ব্যাটে ঠিকমতো বল লাগলেই ছক্কা হয়, না লাগলেও হয়'- শুক্রবার পাল্লেকেলেতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে উড়ে যাওয়ার পর মুশফিকুর রহিমের উপলব্ধি। নিঃসংশয়ে বলা যায়, আজও ব্যাট হাতে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের সংহারী মূর্তি দেখার আশায় বাংলাদেশ অধিনায়ক।
কারণ তাঁর ব্যাটে পাকিস্তানের সম্ভাব্য ধ্বংসের ওপরই যে নির্ভর করছে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের টিকে থাকা! আজ নিউজিল্যান্ড জিতলে সুপার এইটে ওঠার দরজা খোলাই থাকবে বাংলাদেশের জন্য। পরের ম্যাচে পাকিস্তানকে হারালেই দ্বিতীয়বারের মতো সেরাদের পাশে উঠে যাবেন মুশফিকরা।
পাকিস্তান জিতলেও একেবারে বাদ হয়ে যাবে না বাংলাদেশ। তবে নিউজিল্যান্ড ম্যাচে নেট রান রেটের যে করুণ অবস্থা, তাতে আজ পাকিস্তানের হারের প্রার্থনাই করছে বাংলাদেশ। তবে খেলাটা টি-টোয়েন্টি, যে খেলাটা বিশ্বের অন্য যেকোনো দলের চেয়েই ভালো খেলে পাকিস্তান। অন্যদিকে কিউইদের 'ডানা' তো মাত্র দুটি- মার্টিন গাপটিল এবং ম্যাককালাম। এই দুটি ডানা ভেঙে দিতে পারলে পাল্লেকেলেতে লুটিয়ে পড়ারই কথা নিউজিল্যান্ডারদের। আর টপ অর্ডারের এই দুজনকে আউট করার মতো বোলিং অস্ত্রও আছে পাকিস্তানের। দুর্বোধ্য স্পিনের মায়াজালে সবচেয়ে বেশি টেস্ট উইকেটের মালিক মুরালিধরনের দেশের এই বিশ্বকাপে একজন বোলারকে নিয়েই আলোচনা সবচেয়ে বেশি। সেই সাঈদ আজমল আছেন পাকিস্তান দলে। কোন বলটা কোন দিকে বাঁক নেবে- প্রতিনিয়তই ব্যাটসম্যানকে ধন্দে ফেলে দিতে পারেন পাকিস্তানের এই অফস্পিনার। আর কে না জানে, স্পিনের সামনে অস্বস্তিবোধ করেন কিউই ব্যাটসম্যানরা। গাপটিল তো বটেই, ম্যাককালামও রয়েছেন এই স্পিন-অসহায়দের দলে।
তবে বাংলাদেশ ম্যাচের আগেও জমে থাকা একই সংশয় ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে দিয়েছেন টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে সফলতম ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পর জানিয়েছিলেন এই সাফল্যের রহস্যও, 'নেটে বাঁহাতি স্পিনারদের প্রচুর খেলে খেলে নিজেকে তৈরি করেছি।' কে জানে, আজও অতিমানবীয় কিছু করে এসে ম্যাককালাম বলেন কিনা, 'দুসরা প্র্যাকটিস করার সুফল পেলাম!'
অবশ্য সামর্থ্যে বাংলাদেশের চেয়ে যোজন এগিয়ে পাকিস্তান। সাঈদ আজমলের স্পিনের উল্টো দিকে গতি আর সুইংয়ে কিউই ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলে দিতে পারেন উমর গুল। ব্যাটে আগের মতো ঝড় তুলতে না পারলেও শহীদ আফ্রিদির লেগস্পিনকে সমীহ করেন বিশ্বের সব ব্যাটসম্যানই। অধিনায়ক মোহাম্মদ হাফিজও রান আটকে রাখতে পারেন নিয়ন্ত্রিত অফস্পিন বোলিংয়ে। তবে দ্রুতগতির টি-টোয়েন্টিতে বোলিং সাফল্যের অনেকটাই নির্ভর করে ফিল্ডিংয়ের ওপর। ম্যাককালামের একটা ক্যাচ পড়া কিংবা গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ে ঢিলেমির কারণে বাড়তি রান দিয়ে ফেলার পরিণতির সর্বশেষ উদাহরণ বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ। আর কে না জানে, ফিল্ডিংটা ক্বচিৎ-কদাচিৎ ভালো করে পাকিস্তান।
ব্যাটিংটা আরো মুড়মুড়ে। আজ রাজা তো কাল ভিখারি- এমন অতীতের কারণে ক্রিকেটের পাকিস্তান সবচেয়ে 'আনপ্রেডিক্টেবল'। ইমরান নাজির-নাসির জামশেদের ক্ষমতা আছে শুরুর ৬ ওভারের সর্বোচ্চ ফায়দা নেওয়ার। আবার ভয়ও আছে তেড়েফুঁড়ে মারতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন তাঁরা! আফ্রিদি-রাজ্জাকদের ব্যাটেও আগেই সেই নির্ভরতা নেই। তাই ঘুরেফিরে পাকিস্তানের ভরসাও দুজনের ওপর- হাফিজ এবং কামরান আকমল।
এই অবস্থায় করাচিতে বসে দেওয়া পাকিস্তানের সাবেক গ্রেট আবদুল কাদিরের পরামর্শ, 'ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং তিন বিভাগেই ধারাবাহিক হতে হবে পাকিস্তানকে। সবাই জানে পাকিস্তান প্রতিভাধরদের নিয়ে গড়া আনপ্রেডিক্টেবল একটি দল। কিন্তু প্রতিভা যতই থাকুক, ধারাবাহিকতা ছাড়া শীর্ষে ওঠা সম্ভব নয়।' সাবেক এই লেগস্পিনারের দৃষ্টিতেও পাকিস্তানের শক্তি, 'বোলিং। কিন্তু শুধু বোলিং দিয়ে তো আর জেতা যাবে না। ব্যাটিংটাও ভালো হতে হবে।'
পাকিস্তানকে হারিয়ে সরাসরি সুপার এইটে জায়গা করে নিতে আলাদা ছক আছে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক রস টেলরেরও, 'গত এক-দেড় বছর হলো খুব ভালো ক্রিকেট খেলছে হাফিজ এবং আজমল। তবে এখানে একটা ম্যাচ খেলে ফেলায় উইকেটের চরিত্রটা বুঝে গেছি। বাংলাদেশ ম্যাচে ভালো খেলার পর আমাদের আত্মবিশ্বাসও এখন তুঙ্গে। আমি নিশ্চিত যে পাকিস্তানের বিপক্ষেও আমরা ভালো খেলব।'
পাল্লেকেলেতে পাকিস্তানের আগে একটা ম্যাচ খেলে ফেলার সুবিধা কি সত্যিই নিতে পারবে নিউজিল্যান্ড? রস টেলরের কথায় সে রকম ইঙ্গিত কিন্তু আছে, 'উইকেট মাঝেমধ্যে অন্য রকম আচরণ করেছে। যতটা ভেবেছিলাম বল ততটা ঘোরেনি। একই উইকেটে পরের ম্যাচে বল ঘুরতেও পারে। দেখা যাক কী হয়!' আজও যেন উইকেট থেকে স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা না পান, নিউজিল্যান্ডারদের গতকালের সান্ধ্য প্রার্থনায় হয়তো অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এটা। আজকের ম্যাচকে ঘিরে বাংলাদেশের প্রত্যাশার সঙ্গে কিউইদের প্রার্থনা মিলে যাওয়া অসম্ভব নয়।
সাঈদ আজমলকে উড়িয়ে মারছেন ম্যাককালাম- এমন দৃশ্যে আজ হয়তো উপভোগ করবেন শুক্রবারের ম্যাচে সবচেয়ে নিগৃহীত বাংলাদেশি বোলারও!
পাকিস্তান জিতলেও একেবারে বাদ হয়ে যাবে না বাংলাদেশ। তবে নিউজিল্যান্ড ম্যাচে নেট রান রেটের যে করুণ অবস্থা, তাতে আজ পাকিস্তানের হারের প্রার্থনাই করছে বাংলাদেশ। তবে খেলাটা টি-টোয়েন্টি, যে খেলাটা বিশ্বের অন্য যেকোনো দলের চেয়েই ভালো খেলে পাকিস্তান। অন্যদিকে কিউইদের 'ডানা' তো মাত্র দুটি- মার্টিন গাপটিল এবং ম্যাককালাম। এই দুটি ডানা ভেঙে দিতে পারলে পাল্লেকেলেতে লুটিয়ে পড়ারই কথা নিউজিল্যান্ডারদের। আর টপ অর্ডারের এই দুজনকে আউট করার মতো বোলিং অস্ত্রও আছে পাকিস্তানের। দুর্বোধ্য স্পিনের মায়াজালে সবচেয়ে বেশি টেস্ট উইকেটের মালিক মুরালিধরনের দেশের এই বিশ্বকাপে একজন বোলারকে নিয়েই আলোচনা সবচেয়ে বেশি। সেই সাঈদ আজমল আছেন পাকিস্তান দলে। কোন বলটা কোন দিকে বাঁক নেবে- প্রতিনিয়তই ব্যাটসম্যানকে ধন্দে ফেলে দিতে পারেন পাকিস্তানের এই অফস্পিনার। আর কে না জানে, স্পিনের সামনে অস্বস্তিবোধ করেন কিউই ব্যাটসম্যানরা। গাপটিল তো বটেই, ম্যাককালামও রয়েছেন এই স্পিন-অসহায়দের দলে।
তবে বাংলাদেশ ম্যাচের আগেও জমে থাকা একই সংশয় ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে দিয়েছেন টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে সফলতম ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পর জানিয়েছিলেন এই সাফল্যের রহস্যও, 'নেটে বাঁহাতি স্পিনারদের প্রচুর খেলে খেলে নিজেকে তৈরি করেছি।' কে জানে, আজও অতিমানবীয় কিছু করে এসে ম্যাককালাম বলেন কিনা, 'দুসরা প্র্যাকটিস করার সুফল পেলাম!'
অবশ্য সামর্থ্যে বাংলাদেশের চেয়ে যোজন এগিয়ে পাকিস্তান। সাঈদ আজমলের স্পিনের উল্টো দিকে গতি আর সুইংয়ে কিউই ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলে দিতে পারেন উমর গুল। ব্যাটে আগের মতো ঝড় তুলতে না পারলেও শহীদ আফ্রিদির লেগস্পিনকে সমীহ করেন বিশ্বের সব ব্যাটসম্যানই। অধিনায়ক মোহাম্মদ হাফিজও রান আটকে রাখতে পারেন নিয়ন্ত্রিত অফস্পিন বোলিংয়ে। তবে দ্রুতগতির টি-টোয়েন্টিতে বোলিং সাফল্যের অনেকটাই নির্ভর করে ফিল্ডিংয়ের ওপর। ম্যাককালামের একটা ক্যাচ পড়া কিংবা গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ে ঢিলেমির কারণে বাড়তি রান দিয়ে ফেলার পরিণতির সর্বশেষ উদাহরণ বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ। আর কে না জানে, ফিল্ডিংটা ক্বচিৎ-কদাচিৎ ভালো করে পাকিস্তান।
ব্যাটিংটা আরো মুড়মুড়ে। আজ রাজা তো কাল ভিখারি- এমন অতীতের কারণে ক্রিকেটের পাকিস্তান সবচেয়ে 'আনপ্রেডিক্টেবল'। ইমরান নাজির-নাসির জামশেদের ক্ষমতা আছে শুরুর ৬ ওভারের সর্বোচ্চ ফায়দা নেওয়ার। আবার ভয়ও আছে তেড়েফুঁড়ে মারতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন তাঁরা! আফ্রিদি-রাজ্জাকদের ব্যাটেও আগেই সেই নির্ভরতা নেই। তাই ঘুরেফিরে পাকিস্তানের ভরসাও দুজনের ওপর- হাফিজ এবং কামরান আকমল।
এই অবস্থায় করাচিতে বসে দেওয়া পাকিস্তানের সাবেক গ্রেট আবদুল কাদিরের পরামর্শ, 'ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং তিন বিভাগেই ধারাবাহিক হতে হবে পাকিস্তানকে। সবাই জানে পাকিস্তান প্রতিভাধরদের নিয়ে গড়া আনপ্রেডিক্টেবল একটি দল। কিন্তু প্রতিভা যতই থাকুক, ধারাবাহিকতা ছাড়া শীর্ষে ওঠা সম্ভব নয়।' সাবেক এই লেগস্পিনারের দৃষ্টিতেও পাকিস্তানের শক্তি, 'বোলিং। কিন্তু শুধু বোলিং দিয়ে তো আর জেতা যাবে না। ব্যাটিংটাও ভালো হতে হবে।'
পাকিস্তানকে হারিয়ে সরাসরি সুপার এইটে জায়গা করে নিতে আলাদা ছক আছে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক রস টেলরেরও, 'গত এক-দেড় বছর হলো খুব ভালো ক্রিকেট খেলছে হাফিজ এবং আজমল। তবে এখানে একটা ম্যাচ খেলে ফেলায় উইকেটের চরিত্রটা বুঝে গেছি। বাংলাদেশ ম্যাচে ভালো খেলার পর আমাদের আত্মবিশ্বাসও এখন তুঙ্গে। আমি নিশ্চিত যে পাকিস্তানের বিপক্ষেও আমরা ভালো খেলব।'
পাল্লেকেলেতে পাকিস্তানের আগে একটা ম্যাচ খেলে ফেলার সুবিধা কি সত্যিই নিতে পারবে নিউজিল্যান্ড? রস টেলরের কথায় সে রকম ইঙ্গিত কিন্তু আছে, 'উইকেট মাঝেমধ্যে অন্য রকম আচরণ করেছে। যতটা ভেবেছিলাম বল ততটা ঘোরেনি। একই উইকেটে পরের ম্যাচে বল ঘুরতেও পারে। দেখা যাক কী হয়!' আজও যেন উইকেট থেকে স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা না পান, নিউজিল্যান্ডারদের গতকালের সান্ধ্য প্রার্থনায় হয়তো অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এটা। আজকের ম্যাচকে ঘিরে বাংলাদেশের প্রত্যাশার সঙ্গে কিউইদের প্রার্থনা মিলে যাওয়া অসম্ভব নয়।
সাঈদ আজমলকে উড়িয়ে মারছেন ম্যাককালাম- এমন দৃশ্যে আজ হয়তো উপভোগ করবেন শুক্রবারের ম্যাচে সবচেয়ে নিগৃহীত বাংলাদেশি বোলারও!
No comments