এক বছরে লাইসেন্সহীন গাড়ি বেড়েছে ৮৬ হাজার by পার্থ সারথি দাস
দেশে সাড়ে পাঁচ লাখ গাড়ি ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই চলছে। এ ধরনের গাড়ির সংখ্যা গত এক বছরে ৮৬ হাজার বেড়েছে। এ ছাড়া নিবন্ধনহীন প্রায় দুই লাখ গাড়ির বেশির ভাগই চলছে জাল লাইসেন্সে। স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স চালুর পরও তা না নিয়ে পুলিশের 'জরিমানার স্লিপ' দেখিয়ে মহাসড়ক ও রাজধানীর সড়কপথ দাপিয়ে চলছে এসব
গাড়ি। দেশে সড়ক দুর্ঘটনার শতকরা ৬১ ভাগই ঘটছে এসব গাড়ির চালকদের কারণে।
লাইসেন্সবিহীন বা জাল লাইসেন্সধারী চালকের বর্ধিত সংখ্যায় অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, বারবার বিজ্ঞাপন দিয়েও সরকারি প্রতিষ্ঠান বিআরটিসির (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন) গাড়ি চালানোর জন্য লাইসেন্সধারী যোগ্য চালক মিলছে না। সংস্থার পাঁচ শতাধিক চালকের ঘাটতি মেটাতে এখন শর্ত শিথিল করতে হচ্ছে। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বিআরটিএ ও বিআরটিসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সূত্র জানায়, গত এক বছরেই লাইসেন্স ছাড়া চলাচল করছে এমন গাড়ির সংখ্যা ৮৬ হাজার বেড়েছে। সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বিআরটিএতে নিবন্ধিত মোটরযান ছিল ১৫ লাখ পাঁচ হাজার। এই সময়ে ১০ লাখ ৪০ হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়। বাকি চার লাখ ৬৫ হাজার গাড়ি চলেছে জাল লাইসেন্সে বা লাইসেন্স ছাড়া। চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত বিআরটিএ ১৭ লাখ ৬৭ হাজার ৬২৮টি গাড়ির নিবন্ধনের অনুমোদন দেয়। এ সময় ১২ লাখ ১৬ হাজার গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়। এই হিসাবে এক বছরে লাইসেন্স ছাড়া চলাচলরত গাড়ি বেড়েছে ৮৬ হাজার।
বিআরটিএ থেকে জানা গেছে, ওস্তাদের কাছে গাড়ি চালানো শিখে কোনোরকমে একটি লাইসেন্স নিয়ে ভারী যানবাহন চালাচ্ছে অদক্ষ চালকদের একটি বড় অংশ। হালকা যানবাহন চালানোর লাইসেন্স নিয়ে ভারী যানবাহন চালাচ্ছে আরেকটি অংশ। পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলো এসব চালককে 'বৈধ লাইসেন্স' দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। মিরপুর অফিসসহ বিআরটিএর বিভিন্ন অফিসে কর্মচারীদের সহযোগিতায় এখনো জাল লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে। ৫০০ থেকে ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন চক্রের কাছে মিলছে এ ধরনের লাইসেন্স।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিভিন্ন জটিলতার কারণে লাইসেন্সবিহীন চালকের সংখ্যা বাড়ছে। গত জুনে চালকদের একটি বড় অংশের গাড়ি চালানোর লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ডিসেম্বরে শেষ হবে আরো একটি অংশের। কিন্তু যে হারে মেয়াদ শেষ হয় সে হারে লাইসেন্স নবায়ন হয় না। যাঁরা অনেক আগে থেকে গাড়ি চালাচ্ছেন তাঁদের ভারী গাড়ি চালানোর লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশ আমরা করেছিলাম।' তিনি বলেন, মহাসড়কে পুলিশ চালকদের হয়রানি করে। লাইসেন্স না থাকায় জরিমানার কাগজ দেখিয়েই চলছেন অনেক চালক।
বিআরটিএর চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান খান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'যাঁরা গাড়ি চালাচ্ছেন তাঁদের আইন মেনে লাইসেন্স কিভাবে দেওয়া যায়- এ নিয়ে আমরা ভাবছি অনেক আগে থেকেই। দুর্ঘটনা কমাতে হলে চালকদের প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্সের কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য সামাজিক সচেতনতাও জরুরি। তবে জালিয়াতি রোধে স্মার্টকার্ড একটি ফলদায়ক পদক্ষেপ। আগে লাইসেন্স নিতে যেখানে মাসের পর মাস লাগত বলে অভিযোগ ছিল, এখন তা নেই। অনেকে পরীক্ষা দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যেই লাইসেন্স পেয়ে যাচ্ছেন। তার পরও যাঁরা জাল লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন তাঁদের ধরতে বিআরটিএর সংশ্লিষ্ট বিভাগ সক্রিয় রয়েছে।'
বিআরটিসি যোগ্য চালক পাচ্ছে না : গত ২১ জুন বিআরটিএর চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান খান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক বিভাগের সচিব এম এ এন ছিদ্দিকের কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে বিআরটিসির জন্য চালক পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে ভারী গাড়ি চালানোর লাইসেন্সধারী চালক মিলছে না বলে উল্লেখ করা হয়। এ সমস্যার কোনো সুরাহা হয়নি এখনো। সমস্যা সমাধানে শর্ত শিথিলের সুপারিশ করা হয়। ওই চিঠি থেকে জানা গেছে, বিআরটিসিতে মোট অনুমোদিত অপারেটর (চালক) পদ এক হাজার ৪৭২টি। এর মধ্যে ৫৬৫টি পদ শূন্য রয়েছে। বেশ কয়েকবার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েও প্রয়োজনীয় সংখ্যক অপারেটর না পাওয়ায় পদগুলো পূরণ করা যাচ্ছে না। ভারত থেকে আমদানি করা দ্বিতল বাসসহ ৪২৮টি বাস অপারেটরের অভাবে চালানো সম্ভব হবে না। বৈদেশিক সাহায্য বা ঋণে আমদানি করা বিপুলসংখ্যক বাস পরিচালনা করতে না পারায় বিআরটিসিকে ঋণের দায় বহনসহ আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
চালক সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে বিআরটিসির উপমহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মেজর হেদায়েতুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, বিআরটিসির বাস চালানোর জন্য ভারী লাইসেন্সধারী চালক প্রয়োজন। কিন্তু আগ্রহী প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে অল্পসংখ্যক। এই অল্পসংখ্যক আগ্রহীদের পরীক্ষা নিয়ে আবার দেখা যাচ্ছে- কারো কারো দৃষ্টিশক্তি একেবারে নেই, কারোর দৃষ্টিশক্তি কমে গেছে। কেউ কেউ আবার শারীরিকভাবে অসমর্থ। এসব কারণে এখন হালকা লাইসেন্স রয়েছে- এমন আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে শিক্ষানবিশ চালক নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ইতিমধ্যে ৫০ জনের একটি দলের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।
লাইসেন্সবিহীন বা জাল লাইসেন্সধারী চালকের বর্ধিত সংখ্যায় অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, বারবার বিজ্ঞাপন দিয়েও সরকারি প্রতিষ্ঠান বিআরটিসির (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন) গাড়ি চালানোর জন্য লাইসেন্সধারী যোগ্য চালক মিলছে না। সংস্থার পাঁচ শতাধিক চালকের ঘাটতি মেটাতে এখন শর্ত শিথিল করতে হচ্ছে। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বিআরটিএ ও বিআরটিসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সূত্র জানায়, গত এক বছরেই লাইসেন্স ছাড়া চলাচল করছে এমন গাড়ির সংখ্যা ৮৬ হাজার বেড়েছে। সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বিআরটিএতে নিবন্ধিত মোটরযান ছিল ১৫ লাখ পাঁচ হাজার। এই সময়ে ১০ লাখ ৪০ হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়। বাকি চার লাখ ৬৫ হাজার গাড়ি চলেছে জাল লাইসেন্সে বা লাইসেন্স ছাড়া। চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত বিআরটিএ ১৭ লাখ ৬৭ হাজার ৬২৮টি গাড়ির নিবন্ধনের অনুমোদন দেয়। এ সময় ১২ লাখ ১৬ হাজার গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়। এই হিসাবে এক বছরে লাইসেন্স ছাড়া চলাচলরত গাড়ি বেড়েছে ৮৬ হাজার।
বিআরটিএ থেকে জানা গেছে, ওস্তাদের কাছে গাড়ি চালানো শিখে কোনোরকমে একটি লাইসেন্স নিয়ে ভারী যানবাহন চালাচ্ছে অদক্ষ চালকদের একটি বড় অংশ। হালকা যানবাহন চালানোর লাইসেন্স নিয়ে ভারী যানবাহন চালাচ্ছে আরেকটি অংশ। পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলো এসব চালককে 'বৈধ লাইসেন্স' দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। মিরপুর অফিসসহ বিআরটিএর বিভিন্ন অফিসে কর্মচারীদের সহযোগিতায় এখনো জাল লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে। ৫০০ থেকে ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন চক্রের কাছে মিলছে এ ধরনের লাইসেন্স।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিভিন্ন জটিলতার কারণে লাইসেন্সবিহীন চালকের সংখ্যা বাড়ছে। গত জুনে চালকদের একটি বড় অংশের গাড়ি চালানোর লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ডিসেম্বরে শেষ হবে আরো একটি অংশের। কিন্তু যে হারে মেয়াদ শেষ হয় সে হারে লাইসেন্স নবায়ন হয় না। যাঁরা অনেক আগে থেকে গাড়ি চালাচ্ছেন তাঁদের ভারী গাড়ি চালানোর লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশ আমরা করেছিলাম।' তিনি বলেন, মহাসড়কে পুলিশ চালকদের হয়রানি করে। লাইসেন্স না থাকায় জরিমানার কাগজ দেখিয়েই চলছেন অনেক চালক।
বিআরটিএর চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান খান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'যাঁরা গাড়ি চালাচ্ছেন তাঁদের আইন মেনে লাইসেন্স কিভাবে দেওয়া যায়- এ নিয়ে আমরা ভাবছি অনেক আগে থেকেই। দুর্ঘটনা কমাতে হলে চালকদের প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্সের কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য সামাজিক সচেতনতাও জরুরি। তবে জালিয়াতি রোধে স্মার্টকার্ড একটি ফলদায়ক পদক্ষেপ। আগে লাইসেন্স নিতে যেখানে মাসের পর মাস লাগত বলে অভিযোগ ছিল, এখন তা নেই। অনেকে পরীক্ষা দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যেই লাইসেন্স পেয়ে যাচ্ছেন। তার পরও যাঁরা জাল লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন তাঁদের ধরতে বিআরটিএর সংশ্লিষ্ট বিভাগ সক্রিয় রয়েছে।'
বিআরটিসি যোগ্য চালক পাচ্ছে না : গত ২১ জুন বিআরটিএর চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান খান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক বিভাগের সচিব এম এ এন ছিদ্দিকের কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে বিআরটিসির জন্য চালক পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে ভারী গাড়ি চালানোর লাইসেন্সধারী চালক মিলছে না বলে উল্লেখ করা হয়। এ সমস্যার কোনো সুরাহা হয়নি এখনো। সমস্যা সমাধানে শর্ত শিথিলের সুপারিশ করা হয়। ওই চিঠি থেকে জানা গেছে, বিআরটিসিতে মোট অনুমোদিত অপারেটর (চালক) পদ এক হাজার ৪৭২টি। এর মধ্যে ৫৬৫টি পদ শূন্য রয়েছে। বেশ কয়েকবার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েও প্রয়োজনীয় সংখ্যক অপারেটর না পাওয়ায় পদগুলো পূরণ করা যাচ্ছে না। ভারত থেকে আমদানি করা দ্বিতল বাসসহ ৪২৮টি বাস অপারেটরের অভাবে চালানো সম্ভব হবে না। বৈদেশিক সাহায্য বা ঋণে আমদানি করা বিপুলসংখ্যক বাস পরিচালনা করতে না পারায় বিআরটিসিকে ঋণের দায় বহনসহ আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
চালক সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে বিআরটিসির উপমহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মেজর হেদায়েতুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, বিআরটিসির বাস চালানোর জন্য ভারী লাইসেন্সধারী চালক প্রয়োজন। কিন্তু আগ্রহী প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে অল্পসংখ্যক। এই অল্পসংখ্যক আগ্রহীদের পরীক্ষা নিয়ে আবার দেখা যাচ্ছে- কারো কারো দৃষ্টিশক্তি একেবারে নেই, কারোর দৃষ্টিশক্তি কমে গেছে। কেউ কেউ আবার শারীরিকভাবে অসমর্থ। এসব কারণে এখন হালকা লাইসেন্স রয়েছে- এমন আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে শিক্ষানবিশ চালক নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ইতিমধ্যে ৫০ জনের একটি দলের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।
No comments