মাওলানা সুবহানকে আজ গ্রেফতারের আবেদন করা হবে- যুদ্ধাপরাধী বিচার- হত্যা, ধর্ষণ ও লুটের অভিযোগ
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুস সুবহানকে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারের জন্য আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে আবেদন করা হবে। উল্লেখ্য, তিনি পাবনা জেলায় একটি মামলায় বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হয়েছেন।
তার বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্মান্তরিতকরণ ও বিতাড়নের অভিযোগ আনা হচ্ছে বলে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম জানিয়েছেন। মাওলানা আব্দুস সুবহানের বিরুদ্ধে বৃহত্তর পাবনা জেলায় ১৪০৮ জন নিরীহ মানুষকে হত্যার অভিযোগ আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন বলেছেন, আজ সকালেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাকে গ্রেফতারের আবেদন জানানো হবে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল থেকে মাওলানা আব্দুস সুবহানকে গ্রেফতার করা হয়। পাবনা থানার মামলা নম্বর ২/৪/১২ নম্বর মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হলেও এখন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার দেখানো হবে। প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন জনকণ্ঠকে বলেন, জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আব্দুস সুবহানের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে, একাত্তর সালের ১৭ মে অভিযুক্ত মাওলানা আব্দুস সুবহান তার উপস্থিতিতে পিস কমিটি, রাজাকার আলবদর বাহিনী নিয়ে পাবনা জেলার কুচিয়াপাড়া ও শাখারিপাড়াতে হানা দিয়ে সুধীর চন্দ্র অধিকারী, গোপাল চন্দ্র সাহাসহ ৮ জনকে হত্যা করে। এ সময় তারা ২০/২৫টি হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে।
একাত্তরের মে মাসের কোন একদিন শান্তি কমিটি, রাজাকার বাহিনী ও আলশামস বাহিনী নিয়ে পাবনা জেলার ফরিদপুর থানার ডেমরাতে প্রায় ১ হাজার লোককে হত্যা করা হয়। এ সময় সেখানে নারী নির্যাতনও করা হয়েছে। মে মাসের প্রথম দিকে সুজানগর থানার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে ভোর বেলায় তার নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনী আক্রমণ চালিয়ে ৪০০ জনকে হত্যা করেছে। এ সময় সেখানে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। নারীদের ওপর নির্যাতনও করা হয়েছে। এ সব অভিযোগসহ আরও কিছু অভিযোগ আনা হচ্ছে।
প্রসিকিউটর সূত্রে জানা গেছে, মাওলানা আব্দুস সুবহান ভাল উর্দু জানতেন, সে কারণে পাকবাহিনীর কাছে তার বেশি কদর ছিল। তিনি বাঙালীদের পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর কাছে তুলে দিয়েছে। এবং তাদের চিনিয়ে দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ১৯৭০ সাল পর্যন্ত পাবনা জেলার আমির ছিলেন। ১৯৭১ সালে শান্তিকমিটির সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে সহসভাপতি ছিলেন। ১৯৭২ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধে স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে হাজির হবার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। মাওলানা আব্দুস সুবহানের বিরুদ্ধে তদন্ত কাজ করছেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা মতিউর রহমান।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২-এ বর্তমান ১২ জনের মধ্যে ১০ জনের বিচার কাজ চলছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম, বর্তমান আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মীর কাশেম আলী, এটিএম আজাহার আলী, হাজী মোবারক হোসেন, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আব্দুল আলীম। বাচ্চু রাজাকার হিসেবে পরিচিত মাওলানা আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন।
এদিকে তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, শীঘ্রই আরও কয়েক জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে জড়িত চৌধুরী মইনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খান ছাড়াও খুলনার একেএম ইউসুফ, হবিগঞ্জের সৈয়দ কাওসারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধউত্তর পৃথিবীর সবচেয়ে নৃশংস গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ঘটে বাংলাদেশে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই ভূখণ্ডে মাত্র নয় মাসের ব্যবধানে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তার দোষররা ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে। সরকারী হিসাবে ২ লাখ আর বেসরকারী হিসাবে ৪ লাখ নারীকে ধর্ষণ করেছে। হাজার হাজার ঘরবাড়ি, জনপদ ধ্বংস করেছে। সেই গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগে এখন তাদের বিচার শুরু হয়েছে। তদন্ত সংস্থার প্রধান এমএ হান্নান খান জানিয়েছেন, আগামী মাসের মধ্যে আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে। এমনকি কাজ শেষ হলে এ মাসের মধ্যেও কয়েকজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হতে পারে।জনক
প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন বলেছেন, আজ সকালেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাকে গ্রেফতারের আবেদন জানানো হবে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল থেকে মাওলানা আব্দুস সুবহানকে গ্রেফতার করা হয়। পাবনা থানার মামলা নম্বর ২/৪/১২ নম্বর মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হলেও এখন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার দেখানো হবে। প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন জনকণ্ঠকে বলেন, জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আব্দুস সুবহানের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে, একাত্তর সালের ১৭ মে অভিযুক্ত মাওলানা আব্দুস সুবহান তার উপস্থিতিতে পিস কমিটি, রাজাকার আলবদর বাহিনী নিয়ে পাবনা জেলার কুচিয়াপাড়া ও শাখারিপাড়াতে হানা দিয়ে সুধীর চন্দ্র অধিকারী, গোপাল চন্দ্র সাহাসহ ৮ জনকে হত্যা করে। এ সময় তারা ২০/২৫টি হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে।
একাত্তরের মে মাসের কোন একদিন শান্তি কমিটি, রাজাকার বাহিনী ও আলশামস বাহিনী নিয়ে পাবনা জেলার ফরিদপুর থানার ডেমরাতে প্রায় ১ হাজার লোককে হত্যা করা হয়। এ সময় সেখানে নারী নির্যাতনও করা হয়েছে। মে মাসের প্রথম দিকে সুজানগর থানার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে ভোর বেলায় তার নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনী আক্রমণ চালিয়ে ৪০০ জনকে হত্যা করেছে। এ সময় সেখানে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। নারীদের ওপর নির্যাতনও করা হয়েছে। এ সব অভিযোগসহ আরও কিছু অভিযোগ আনা হচ্ছে।
প্রসিকিউটর সূত্রে জানা গেছে, মাওলানা আব্দুস সুবহান ভাল উর্দু জানতেন, সে কারণে পাকবাহিনীর কাছে তার বেশি কদর ছিল। তিনি বাঙালীদের পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর কাছে তুলে দিয়েছে। এবং তাদের চিনিয়ে দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ১৯৭০ সাল পর্যন্ত পাবনা জেলার আমির ছিলেন। ১৯৭১ সালে শান্তিকমিটির সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে সহসভাপতি ছিলেন। ১৯৭২ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধে স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে হাজির হবার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। মাওলানা আব্দুস সুবহানের বিরুদ্ধে তদন্ত কাজ করছেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা মতিউর রহমান।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২-এ বর্তমান ১২ জনের মধ্যে ১০ জনের বিচার কাজ চলছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম, বর্তমান আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মীর কাশেম আলী, এটিএম আজাহার আলী, হাজী মোবারক হোসেন, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আব্দুল আলীম। বাচ্চু রাজাকার হিসেবে পরিচিত মাওলানা আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন।
এদিকে তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, শীঘ্রই আরও কয়েক জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে জড়িত চৌধুরী মইনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খান ছাড়াও খুলনার একেএম ইউসুফ, হবিগঞ্জের সৈয়দ কাওসারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধউত্তর পৃথিবীর সবচেয়ে নৃশংস গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ঘটে বাংলাদেশে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই ভূখণ্ডে মাত্র নয় মাসের ব্যবধানে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তার দোষররা ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে। সরকারী হিসাবে ২ লাখ আর বেসরকারী হিসাবে ৪ লাখ নারীকে ধর্ষণ করেছে। হাজার হাজার ঘরবাড়ি, জনপদ ধ্বংস করেছে। সেই গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগে এখন তাদের বিচার শুরু হয়েছে। তদন্ত সংস্থার প্রধান এমএ হান্নান খান জানিয়েছেন, আগামী মাসের মধ্যে আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে। এমনকি কাজ শেষ হলে এ মাসের মধ্যেও কয়েকজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হতে পারে।জনক
No comments