ব্যাংকিং খাত সুসংহত, টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল উর্ধমুখী- * কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিবিড় তদারকি- * মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কে নেমেছে- * রিজার্ভ ১১ বিলিয়ন ডলারের বেশি- * প্রতারণা রোধে সবার কঠোর নজরদারি চাই গবর্নর
সুসংহত অবস্থা বিরাজ করছে দেশের বর্তমান ব্যাংকিং খাতে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতি আকু দায় শোধের পরও এগারো বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি রয়েছে। টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল ও উর্ধমুখী। এটি স্থিতিশীল ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহায়তা দিচ্ছে।
নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিবিড় তদারকি ও সুদূরপ্রসারী কর্মকৌশলের সঠিক বাস্তবায়নের কারণেই এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। আর্থিক খাত তদারকির কার্যকারিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পর্যালোচনায় দেশের ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতিকে এভাবেই মূল্যায়ন করা হয়েছে।
ওই পর্যালোচনায় বহুল আলোচিত হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনা সম্পর্কে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, সোনালী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনাটি সাময়িক বিরূপ ছায়া ফেললেও ওই ব্যাংকটির বা সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতের স্বাভাবিক দৈনন্দিন কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়নি। জনমনেও সরকারী মালিকানাধীন এই ব্যাংক-কোম্পানির প্রতি আস্থার চিড় ধরেনি। বরং সার্বিকভাবে ব্যাংকিং খাতে টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রায় স্থানীয় বাজারে তারল্য, সুদহার ও বিনিময়হার সম্পূর্ণ স্থিতিশীল ও স¦াভাবিক অবস্থায় রয়েছে।
ওদিকে দেশের ব্যাংকিং খাতের এ ক্রমোন্নতি ও মূল্যায়ন শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরেই থেমে থাকেনি। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা মুডি’স-এরও দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আন্তর্জাতিকমানের ওই সংস্থাটির পর্যালোচনায়ও বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত স্থিতিশীল রয়েছে এবং এখানে বড় রকমের ‘ইভেন্ট রিস্ক’ সুদূর পরাহত’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
ব্যাংকিং খাত নিয়ে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ মূল্যায়নে আরও বলা হয়েছে, ক্রমাগত বাড়ছে ব্যাংকিং খাতের আমানত। ঝুঁকিভিত্তিক মূলধন পর্যাপ্ততাও বেড়েছে প্রত্যাশার অধিক হারে। কমেছে ব্যাংকিং খাতের আমানত ও ঋণের ব্যবধান। সর্বশেষ স্ট্রেস টেস্টিংয়েও ব্যাংকগুলোর সার্বিক কর্মকা- স্বস্তিকর অবস্থায় রয়েছে। বাড়ছে উৎপাদনমুখী খাতগুলোতে অর্থায়নের পরিমাণ।
এ বিষয়ে গবর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, বিশ্ব মন্দাউত্তর টানাপোড়েনের পরিস্থিতিতেও আমাদের ব্যাংকিং খাত বেশ ভাল অবস্থানেই রয়েছে। ব্যাংকগুলোর সামগ্রিক ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ মূলধন পর্যাপ্ততা ব্যাসেল-২ ভিত্তিক অন্যূন ১০ শতাংশের আবশ্যকতার চেয়ে বেশি। ব্যাংকিং খাতে শ্রেণীকৃত ঋণের মাত্রা বর্তমানে ৭ দশমিক ১৭ শতাংশে রয়েছে। আমানত ও ঋণ প্রবৃদ্ধির মধ্যে গত বছর পরিদৃষ্ট অসামঞ্জস্য এখন দূর হয়েছে।
তিনি জানান, সর্বশেষ হিসাব মোতাবেক ব্যাংকিং খাতে আমানত ও ঋণের প্রবৃদ্ধির হার যথাক্রমে ২০ দশমিক ০৭ শতাংশ ও ১৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। অন্যদিকে অগ্রিম-আমানত অনুপাত (এডিআর) এখন ৭৯.৮৩ শতাংশ। সাম্প্রতিকতম স্ট্রেস টেস্টিংয়ে ব্যাংকগুলোর অবস্থান পাওয়া গেছে স্বস্তিকর পর্যায়ে। বিশেষ করে উৎপাদনমুখী খাতগুলোয় পর্যাপ্ত অর্থায়ন যোগানের দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রা ও ঋণ নীতি কার্যক্রমের সুদৃষ্টি ছিল বছরজুড়েই। এ কারণে কৃষি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ খাতগুলোয় পর্যাপ্ত ঋণ যোগান দেয়া সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সুদৃষ্টির কারণেই বিগত অর্থবছরে বেসরকারী খাতে সামগ্রিক ঋণ যোগানে ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সরকারী খাতে ঋণ যোগানের ১৮.৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির চেয়ে উচ্চতর মাত্রায় বজায় থেকেছে।
গবর্নর জানান, মূল্যস্ফীতি এখন নিম্নগামী। ইতোমধ্যে পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কের মাত্রায় নেমে এসেছে। এটি বাজার সুদহার স্থিতিশীল ও সহনীয় মাত্রায় আনা দ্রুততর করেছে। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ স্থিতি আকু দায় শোধের পরও এগারো বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি রয়েছে। টাকার মূল্যমানও স্থিতিশীল ও উর্ধমুখী। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা মুডি’স বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং স্থিতিশীল আউটলুকসহ বিএ৩ এ অপরিবর্তিত রেখেছে। এই রেটিংধারী অন্য দেশগুলোর গড় মাথাপিছু আয় বাংলাদেশের পাঁচগুণের বেশি হওয়া সত্ত্বেও এই রেটিংমান ধরে রাখা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার উজ্জ্বল সাফল্যের পরিচায়ক।
ড. আতিউর রহমান বলেন, আর্থিক খাতে প্রতারণামূলক কর্মকা- অনভিপ্রেত। কিন্তু সম্পূর্ণভাবে তা প্রতিরোধযোগ্যও নয়। উন্নত বিশ্বেও এ ধরনের ঘটনার দৃষ্টান্ত বিরল নয়। তবে তিনি মনে করেন, এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে ব্যাংকগুলোর স্বীয় সতর্কতা ও তৎপরতার ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি কঠোর হলেই কেবল এর পুনরাবৃত্তি নিরুৎসাহিত হবে।
এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সুসমনি¦তভাবে একযোগে দৃঢ়তা ও তৎপরতার সঙ্গে এগোতে হবে। এধরনের ঘটনা ঘটিয়ে কেউ যাতে পার পেতে না পারে সেদিকে প্রতিটি ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সুতীক্ষ নজর রাখতে হবে। দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও সহযোগিতার নেটওয়ার্কে যুক্ত রাখতে হবে। সরকারকেও সহায়তার হাত সর্বদা প্রসারিত রাখতে হবে।
ওই পর্যালোচনায় বহুল আলোচিত হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনা সম্পর্কে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, সোনালী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনাটি সাময়িক বিরূপ ছায়া ফেললেও ওই ব্যাংকটির বা সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতের স্বাভাবিক দৈনন্দিন কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়নি। জনমনেও সরকারী মালিকানাধীন এই ব্যাংক-কোম্পানির প্রতি আস্থার চিড় ধরেনি। বরং সার্বিকভাবে ব্যাংকিং খাতে টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রায় স্থানীয় বাজারে তারল্য, সুদহার ও বিনিময়হার সম্পূর্ণ স্থিতিশীল ও স¦াভাবিক অবস্থায় রয়েছে।
ওদিকে দেশের ব্যাংকিং খাতের এ ক্রমোন্নতি ও মূল্যায়ন শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরেই থেমে থাকেনি। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা মুডি’স-এরও দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আন্তর্জাতিকমানের ওই সংস্থাটির পর্যালোচনায়ও বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত স্থিতিশীল রয়েছে এবং এখানে বড় রকমের ‘ইভেন্ট রিস্ক’ সুদূর পরাহত’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
ব্যাংকিং খাত নিয়ে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ মূল্যায়নে আরও বলা হয়েছে, ক্রমাগত বাড়ছে ব্যাংকিং খাতের আমানত। ঝুঁকিভিত্তিক মূলধন পর্যাপ্ততাও বেড়েছে প্রত্যাশার অধিক হারে। কমেছে ব্যাংকিং খাতের আমানত ও ঋণের ব্যবধান। সর্বশেষ স্ট্রেস টেস্টিংয়েও ব্যাংকগুলোর সার্বিক কর্মকা- স্বস্তিকর অবস্থায় রয়েছে। বাড়ছে উৎপাদনমুখী খাতগুলোতে অর্থায়নের পরিমাণ।
এ বিষয়ে গবর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, বিশ্ব মন্দাউত্তর টানাপোড়েনের পরিস্থিতিতেও আমাদের ব্যাংকিং খাত বেশ ভাল অবস্থানেই রয়েছে। ব্যাংকগুলোর সামগ্রিক ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ মূলধন পর্যাপ্ততা ব্যাসেল-২ ভিত্তিক অন্যূন ১০ শতাংশের আবশ্যকতার চেয়ে বেশি। ব্যাংকিং খাতে শ্রেণীকৃত ঋণের মাত্রা বর্তমানে ৭ দশমিক ১৭ শতাংশে রয়েছে। আমানত ও ঋণ প্রবৃদ্ধির মধ্যে গত বছর পরিদৃষ্ট অসামঞ্জস্য এখন দূর হয়েছে।
তিনি জানান, সর্বশেষ হিসাব মোতাবেক ব্যাংকিং খাতে আমানত ও ঋণের প্রবৃদ্ধির হার যথাক্রমে ২০ দশমিক ০৭ শতাংশ ও ১৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। অন্যদিকে অগ্রিম-আমানত অনুপাত (এডিআর) এখন ৭৯.৮৩ শতাংশ। সাম্প্রতিকতম স্ট্রেস টেস্টিংয়ে ব্যাংকগুলোর অবস্থান পাওয়া গেছে স্বস্তিকর পর্যায়ে। বিশেষ করে উৎপাদনমুখী খাতগুলোয় পর্যাপ্ত অর্থায়ন যোগানের দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রা ও ঋণ নীতি কার্যক্রমের সুদৃষ্টি ছিল বছরজুড়েই। এ কারণে কৃষি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ খাতগুলোয় পর্যাপ্ত ঋণ যোগান দেয়া সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সুদৃষ্টির কারণেই বিগত অর্থবছরে বেসরকারী খাতে সামগ্রিক ঋণ যোগানে ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সরকারী খাতে ঋণ যোগানের ১৮.৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির চেয়ে উচ্চতর মাত্রায় বজায় থেকেছে।
গবর্নর জানান, মূল্যস্ফীতি এখন নিম্নগামী। ইতোমধ্যে পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কের মাত্রায় নেমে এসেছে। এটি বাজার সুদহার স্থিতিশীল ও সহনীয় মাত্রায় আনা দ্রুততর করেছে। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ স্থিতি আকু দায় শোধের পরও এগারো বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি রয়েছে। টাকার মূল্যমানও স্থিতিশীল ও উর্ধমুখী। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা মুডি’স বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং স্থিতিশীল আউটলুকসহ বিএ৩ এ অপরিবর্তিত রেখেছে। এই রেটিংধারী অন্য দেশগুলোর গড় মাথাপিছু আয় বাংলাদেশের পাঁচগুণের বেশি হওয়া সত্ত্বেও এই রেটিংমান ধরে রাখা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার উজ্জ্বল সাফল্যের পরিচায়ক।
ড. আতিউর রহমান বলেন, আর্থিক খাতে প্রতারণামূলক কর্মকা- অনভিপ্রেত। কিন্তু সম্পূর্ণভাবে তা প্রতিরোধযোগ্যও নয়। উন্নত বিশ্বেও এ ধরনের ঘটনার দৃষ্টান্ত বিরল নয়। তবে তিনি মনে করেন, এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে ব্যাংকগুলোর স্বীয় সতর্কতা ও তৎপরতার ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি কঠোর হলেই কেবল এর পুনরাবৃত্তি নিরুৎসাহিত হবে।
এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সুসমনি¦তভাবে একযোগে দৃঢ়তা ও তৎপরতার সঙ্গে এগোতে হবে। এধরনের ঘটনা ঘটিয়ে কেউ যাতে পার পেতে না পারে সেদিকে প্রতিটি ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সুতীক্ষ নজর রাখতে হবে। দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও সহযোগিতার নেটওয়ার্কে যুক্ত রাখতে হবে। সরকারকেও সহায়তার হাত সর্বদা প্রসারিত রাখতে হবে।
No comments