গার্মেন্টসে নারী শ্রমিকরা শারীরিক মানসিক ও যৌন হয়রানির শিকার- অধিকাংশ ফ্যাক্টরিতে ১০ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করানো হচ্ছে ॥ গোলটেবিল বৈঠকে জরিপ তথ্য
পোশাক শিল্পে নারী শ্রমিকরা শারীরিক, মানসিক ও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। অধিকাংশ কারখানায় ১০ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করানো হচ্ছে। মঙ্গলবার ‘তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিক নির্যাতন ও সহিংসতা প্রতিরোধ ‘শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ জরিপ উপস্থাপন করা হয়।
জরিপ রিপোর্টে বলা হয়, সাপ্তাহিক, অসুস্থ, মাতৃত্বকালীন ছুটি অনেক ফ্যাক্টরিতে নেই। ওভার টাইম বাধ্যতামূলক। ১৯৯০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫শ’ শ্রমিক আগুনে পুড়ে ও ভবন ধসে মারা গেছে। অনেক ফ্যাক্টরিতে শিশু সেবা কেন্দ্র নেই, রয়েছে নিরাপত্তা সরঞ্জামের ঘাটতি, জরুরী প্রবেশপথ নেই।
মোট শ্রমিকের এক শতাংশের নিচে ট্রেড ইউনিয়ন করে। সর্বনিম্ন বেতন হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। বিভিন্ন সময়ে শ্রমিকদের জেল খাটতে হয়েছে। শ্রমিকসংক্রান্ত ইস্যুগুলোতে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। এক ঘণ্টা দেরি করে ফ্যাক্টরিতে এলে পুরো দিনের বেতন কাটা হচ্ছে। জরিপে এক শ্রমিকের পারিশ্রমিক ৬ হাজার টাকা এবং পরিবার নিয়ে বাস করছে ওই শ্রমিকের বেতন ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়া হয়। এছাড়া প্রতিটি কারখানায় হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন এবং এ সংক্রান্ত বিষয়ে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের সুপারিশ করা হয়।
গোলটেবিলে বক্তারা বলেন, রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প বরাবরই নেতিবাচক প্রচারের শিকার। বিশেষ মহল বায়ারদের কাছে ভুল তথ্য উপস্থাপন করে রফতানি বাধাগ্রস্ত করছে। তাঁরা পোশাক শিল্প নিয়ে বিদেশীদের কাছে ভুল তথ্য উপস্থাপন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
বক্তারা আরও বলেন, এমন কোন বক্তব্য দেয়া ঠিক হবে না যাতে সুযোগ নিয়ে বিদেশী ক্রেতারা মূল্য কমিয়ে দেয়। বিশ্বে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের অবস্থান দ্বিতীয়। শ্রমিকদের নিয়ে বিদেশী ক্রেতাদের কাছে মিথ্যে তথ্য তুলে ধরলে প্রথম স্থানে যেতে পারবে না। উল্টো দ্বিতীয় থেকে টেনে নামানোর মতো অবস্থা হবে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ফেয়ার ওয়ার ফাউন্ডেশন (এফডব্লিউএফ), অল্টারনেটিভ মুভমেন্ট ফর রিসোর্স এ্যান্ড ফ্রিডম সোসাইটি (এএমআরএফ) এবং আওয়াজ ফাউন্ডেশনের উদ্বেগে ওই গোলটেবিলের আয়োজন করা হয়। আওয়াজ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক নাজমা আক্তারের সভাপতিত্বে পোশাক শিল্পের ওপর একটি ছোট জরিপ উপস্থাপন করেন এএমআরএফের কর্মকর্তা খোরশেদ আলম। ওই গোলটেবিল বৈঠকে বিজিএমইএ পরিচালক নাহিদ হাসান বলেন, এ শিল্প ৩০ বছরের পুরনো শিল্প। বর্তমান পোশাক শিল্পে সহিংসতা অনেক কমেছে। তিনি শ্রমিকদের সমস্যাগুলো বিজিএমইএ’র সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের আহ্বান জানান শ্রমিক সংগঠনগুলোর প্রতি।
ওই গোলটেবিল বৈঠকে বিজিএমইএ যুগ্ম সচিব রফিকুল ইসলাম উপস্থাপিত জরিপের সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, বর্তমান বায়ারদের প্রতিনিধিরা প্রতিনিয়তই ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করছেন। আগের মতো কারখানাগুলোতে নারী শ্রমিকদের হয়রানি করা হচ্ছে না। এ ধরনের ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হলে বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তৈরি পোশাকে বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত ২৭৫ জন আগুনে এবং ৬৪ জন শ্রমিক ভবন ধসে মারা গেছে। প্রতিটি কারখানায় ১০ থেকে ১৪ ঘণ্টার কাজ হচ্ছে সঠিক তথ্য নয়। জরিপে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। বিদেশীদের সামনে এ ধরনের ভুল তথ্য উপস্থাপনের আগে বিবেচনা করা দরকার ছিল।
জার্মান চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কারখানা তখনই ভাল চলবে যখন শ্রমিককে মালিক বুঝতে শিখবে। পোশাক শিল্পে সমস্যা আছে। তবে প্রতিপক্ষ হয়ে সমাধান করা যাবে না। জাগো বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সভাপতি বাহরানে সুলতান বলেন, আগের তুলনায় এই শিল্পে ভাংচুর অনেক কমেছে। নমনীয় হয়ে আলোচনার মাধ্যমে বায়ারদের সঙ্গে কাজ করতে হবে। বিদেশে দেশের সুনাম নষ্ট করা ঠিক হবে না।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) মিস সেলিনা বলেন, পোশাক শিল্পে ৮০ শতাংশ নারী। হয়রানি হচ্ছে। তবে জিডিপিতে পোশাক খাতের অবদান বেশি। এর ভাল দিকগুলোও তুলে আনা দরকার। রিপোর্ট করে সমস্যার সমাধান করা যাবে না। শ্রমিকদের সচেতন করতে হবে।
এ্যাডভোকেট নেসার আহমেদ বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে সমস্যা আছে। এটা পিতৃতান্ত্রিক ও পুঁজিবাদী সমাজ। সংবিধানে কোন বৈষম্যের স্থান নেই। হয়রানির স্থান দেয়া হয়নি। হয়রানি হচ্ছে তা ধরে নিয়ে কীভাবে সমাধান করা যায় সেটি নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দরকার।
মোট শ্রমিকের এক শতাংশের নিচে ট্রেড ইউনিয়ন করে। সর্বনিম্ন বেতন হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। বিভিন্ন সময়ে শ্রমিকদের জেল খাটতে হয়েছে। শ্রমিকসংক্রান্ত ইস্যুগুলোতে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। এক ঘণ্টা দেরি করে ফ্যাক্টরিতে এলে পুরো দিনের বেতন কাটা হচ্ছে। জরিপে এক শ্রমিকের পারিশ্রমিক ৬ হাজার টাকা এবং পরিবার নিয়ে বাস করছে ওই শ্রমিকের বেতন ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়া হয়। এছাড়া প্রতিটি কারখানায় হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন এবং এ সংক্রান্ত বিষয়ে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের সুপারিশ করা হয়।
গোলটেবিলে বক্তারা বলেন, রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প বরাবরই নেতিবাচক প্রচারের শিকার। বিশেষ মহল বায়ারদের কাছে ভুল তথ্য উপস্থাপন করে রফতানি বাধাগ্রস্ত করছে। তাঁরা পোশাক শিল্প নিয়ে বিদেশীদের কাছে ভুল তথ্য উপস্থাপন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
বক্তারা আরও বলেন, এমন কোন বক্তব্য দেয়া ঠিক হবে না যাতে সুযোগ নিয়ে বিদেশী ক্রেতারা মূল্য কমিয়ে দেয়। বিশ্বে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের অবস্থান দ্বিতীয়। শ্রমিকদের নিয়ে বিদেশী ক্রেতাদের কাছে মিথ্যে তথ্য তুলে ধরলে প্রথম স্থানে যেতে পারবে না। উল্টো দ্বিতীয় থেকে টেনে নামানোর মতো অবস্থা হবে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ফেয়ার ওয়ার ফাউন্ডেশন (এফডব্লিউএফ), অল্টারনেটিভ মুভমেন্ট ফর রিসোর্স এ্যান্ড ফ্রিডম সোসাইটি (এএমআরএফ) এবং আওয়াজ ফাউন্ডেশনের উদ্বেগে ওই গোলটেবিলের আয়োজন করা হয়। আওয়াজ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক নাজমা আক্তারের সভাপতিত্বে পোশাক শিল্পের ওপর একটি ছোট জরিপ উপস্থাপন করেন এএমআরএফের কর্মকর্তা খোরশেদ আলম। ওই গোলটেবিল বৈঠকে বিজিএমইএ পরিচালক নাহিদ হাসান বলেন, এ শিল্প ৩০ বছরের পুরনো শিল্প। বর্তমান পোশাক শিল্পে সহিংসতা অনেক কমেছে। তিনি শ্রমিকদের সমস্যাগুলো বিজিএমইএ’র সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের আহ্বান জানান শ্রমিক সংগঠনগুলোর প্রতি।
ওই গোলটেবিল বৈঠকে বিজিএমইএ যুগ্ম সচিব রফিকুল ইসলাম উপস্থাপিত জরিপের সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, বর্তমান বায়ারদের প্রতিনিধিরা প্রতিনিয়তই ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করছেন। আগের মতো কারখানাগুলোতে নারী শ্রমিকদের হয়রানি করা হচ্ছে না। এ ধরনের ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হলে বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তৈরি পোশাকে বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত ২৭৫ জন আগুনে এবং ৬৪ জন শ্রমিক ভবন ধসে মারা গেছে। প্রতিটি কারখানায় ১০ থেকে ১৪ ঘণ্টার কাজ হচ্ছে সঠিক তথ্য নয়। জরিপে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। বিদেশীদের সামনে এ ধরনের ভুল তথ্য উপস্থাপনের আগে বিবেচনা করা দরকার ছিল।
জার্মান চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কারখানা তখনই ভাল চলবে যখন শ্রমিককে মালিক বুঝতে শিখবে। পোশাক শিল্পে সমস্যা আছে। তবে প্রতিপক্ষ হয়ে সমাধান করা যাবে না। জাগো বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সভাপতি বাহরানে সুলতান বলেন, আগের তুলনায় এই শিল্পে ভাংচুর অনেক কমেছে। নমনীয় হয়ে আলোচনার মাধ্যমে বায়ারদের সঙ্গে কাজ করতে হবে। বিদেশে দেশের সুনাম নষ্ট করা ঠিক হবে না।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) মিস সেলিনা বলেন, পোশাক শিল্পে ৮০ শতাংশ নারী। হয়রানি হচ্ছে। তবে জিডিপিতে পোশাক খাতের অবদান বেশি। এর ভাল দিকগুলোও তুলে আনা দরকার। রিপোর্ট করে সমস্যার সমাধান করা যাবে না। শ্রমিকদের সচেতন করতে হবে।
এ্যাডভোকেট নেসার আহমেদ বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে সমস্যা আছে। এটা পিতৃতান্ত্রিক ও পুঁজিবাদী সমাজ। সংবিধানে কোন বৈষম্যের স্থান নেই। হয়রানির স্থান দেয়া হয়নি। হয়রানি হচ্ছে তা ধরে নিয়ে কীভাবে সমাধান করা যায় সেটি নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দরকার।
No comments