মাতৃত্বকালীন ছুটি

সরকার মাতৃত্বকালীন ছুটি ৪ মাস থেকে বাড়িয়ে ছয় মাস করলেও দেশের বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নারী শিক্ষক-কর্মচারীরা সেই সুবিধা পাচ্ছিলেন না। এখন থেকে তারাও এই ছুটি পাবেন। এ ব্যাপারে একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।


এটি নিঃসন্দেহে একটি ভাল উদ্যোগ। অন্যান্য কর্মক্ষেত্রের নারীরাও যাতে এ সুযোগ পায় সেটিও নিশ্চিত করা জরুরী।
কোন নবজাতকের যথাযথ যতœ নেয়ার জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি চার মাস সময় যথেষ্ট নয়। বিশেষ করে শিশু মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে হলে শিশুর প্রতি যথাযথ যতœ নেয়া জরুরী। আর মায়ের পক্ষেই তা সম্ভব। এ জন্য কর্মজীবী মা যাতে শিশুর পাশে থেকে তার সেবাযতœ করতে পারে সে ব্যবস্থাটা থাকা জরুরী। এ জন্যই সরকার মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়িয়েছে। এছাড়া সরকার ভিশন ২০২১-এর আলোকে ২০২১ সালের মধ্যে শিশু মৃত্যুর হার বর্তমানে হাজারে ৫৪ থেকে ১৫-তে এবং মাতৃমৃত্যুর হার ৩ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশে কমিয়ে আনার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। এছাড়া মায়েদের প্রসবকালীন মৃত্যু রোধে জরুরী প্রসূতিসেবা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সরকার জরুরী প্রসূতিসেবা কার্যক্রম কমিউনিটি ক্লিনিক, স্কিলড বার্থ এ্যাটেনডেন্ট ট্্েরনিং প্রোগ্রাম ও মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কিমসহ বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। দেশে মাতৃত্বকালীন চার মাসের যে ছুটি চালু রয়েছে তা যে যথেষ্ট নয় সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। সেজন্যই ছুটি বাড়িয়ে ছয় মাস করা হয়।
জন্মের পর শিশুর যেমন মায়ের সান্নিধ্যের প্রয়োজন তেমনি মায়ের দুধ ও তার স্বাস্থ্য তথা জীবনের জন্য অপরিহার্য। চার মাসের ছুটিতে এই কাজটি যথাযথভাবে এবং সময়মতো হয় না। সেজন্য ছয় মাসের ছুটি খুবই জরুরী। এতে বিশেষ করে উপকৃত হবে ওই ছোট শিশুটি। সে নিরোগ ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে সুন্দর মন নিয়ে বেড়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
গর্ভবতী প্রতিটি নারীর জন্য আধুনিক চিকিৎসাসেবা খুবই জরুরী। এখনও বেশ কিছু গর্ভবতী নারী শিশুর জন্ম দেন বাড়িতে। নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস সম্প্রতি পালিত হয়েছে দেশে। প্রকৃতপক্ষে নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে। গর্ভধারণকালীন নানা সমস্যাসহ প্রসবকালীন সমস্যাগুলো দূর করতে হবে প্রত্যেক প্রসূতির ক্ষেত্রে। সরকার এসব ব্যাপারে যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে। নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করার দিকে অনেকখানি এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তা সহায়ক হবে বলে সবার প্রত্যাশা।

No comments

Powered by Blogger.