মিডিয়ার জ্যোতি জ্যোতিকা by কামরুজ্জামান মিলু

সারাহ বেগম কবরীর `আয়না` ছবির মাধ্যমে ২০০৬ সালে জ্যোতিকা জ্যোতির মিডিয়ায় পথচলা শুরু। অভিনয় জীবনের প্রথম কাজটি কবরীর মতো গুণী অভিনেত্রীর সঙ্গে করতে পেরে তিনি দারুণ আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত।


২০০৪ সালে লাক্সতারকা নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে জ্যোতি তার জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। জ্যোতি অভিনীত প্রথম নাটক `মোহনা`।
জ্যোতি বর্তমানে কাহিনীচিত্র জীবনঢুলীতে অভিনয় করছেন। শ্যুটিং শুরু হচ্ছে অক্টোবরে।
joyছবিটির কাহিনী ও চিত্রনাট্য রচনা করেছেন পরিচালক তানভীর মোকাম্মেল। জীবনঢুলী ছবিকে এবছর অনুদান দিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়। জ্যোতি আয়নার পর বেলাল আহমেদের নন্দিত নরকে, সর্বশেষ তানভীর মোকাম্মেলের রাবেয়াতে অভিনয় করেছেন। কয়েক বছর পর জীবনঢুলীতে অভিনয় করছেন জ্যোতি। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গল্পের এ ছবির শ্যুটিং শুরু হচ্ছে আগামী ১০ অক্টোবর। ছবিতে জ্যোতি অভিনয় করবেন শতাব্দী ওয়াদুদের বিপরীতে।
জ্যোতি বংলানিউজকে বললেন, “রাবেয়ার পর আবার তানভীর মোকাম্মেলের ছবিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি, এটা আমার জন্য অনেক বড় ব্যাপার। অনেক আনন্দের।”
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় নিম্নবর্ণের এক গরিব ঢাকি জীবনকৃষ্ণ দাসের অভিজ্ঞতার গল্প নিয়ে ছবিটি। জীবনকৃষ্ণ দাসের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করবেন জ্যোতি।
এখন অভিনয়শিল্পী হয়ে সবকিছু হওয়ারই সুযোগ তৈরি হয়েছে কন্যা রাশির এ কন্যার। তবে অভিনয়ে এলেন কীভাবে, তা জানা দরকার; জ্যোতি বলেন, “২০০০ সালের দিকে আমি ময়মনসিংহ শহরে আসি। এখানে আনন্দমোহন কলেজে ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স করার জন্য ভর্তি হই। তখন জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে আমার নিয়মিত যাতায়াত শুরু হয়। শিল্পকলা একাডেমীর চার বছর মেয়াদি আবৃত্তি ও নাট্যকলার ওপর একটি কোর্স করি। একই সময়ে ময়মনসিংহের বহুরূপী থিয়েটারের সদস্য হই। কিন্তু কি কপাল আমার! মঞ্চ নাটকে পরে আর কাজ করা হয়নি।”
সুদীর্ঘ সাধনা ও ত্যাগ-তিতীক্ষার পরে জ্যোতি এ অবস্থানে আসতে পেরেছেন। আজীবন তিনি জ্যোতির আলোয় আলোকিত থাকতে চান। একে একে বেশকিছু দর্শকপ্রিয় নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প অবলম্বনে `সম্পত্তি সমর্পণ` ও `দৃষ্টিদান`, কাজী নজরুল ইসলামের গল্প অবলম্বনে `অগ্নিগিরি`, `এক কুঠুরী দুই দরজা`, ধারাবাহিক নাটক `চতুর্ভূজ`, `রাতের গল্প`, `শেষ অধ্যায়`, `পিছুটান`, `দহন` ইত্যাদি।
joyজ্যোতি অভিনীত সাম্প্রতিক ধারাবাহিকগুলোর মধ্যে রয়েছে- `অগ্নিপথ`, `রাঙা মা`, `বিজয়`, `ঘুড়ি ওড়ে`, `যাদুর শহর`, `অহঙ্কার`, `আশা টকিজ`, `কলেজ রোড`, `পালাবার পথ নেই`, `আপন আপন খেলা` ইত্যাদি।
এছাড়াও তিনি সম্প্রতি ঈদের জন্য প্রায় ১২টির মতো নাটকের কাজ সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে- সৈয়দ শামসুল হকের লেখা ‘স্বপ্ন দেখা সাহস’, আশিকুর রহমানের ‘বিয়ে ভীতি’, শতাব্দী জাহিদের ‘স্বপ্নবুনন’, রনির ‘জাগরণের রংটা ধূসর ছিল’, নজরুল কোরেশীর ‘ভালোবাসার লাল পিঁপড়া’ উল্লেখযোগ্য।
জ্যোতিকা জ্যোতির চার ভাইবোনের মধ্যে বড়। বাবা নিতাই পাল স্কুল শিক্ষক। ছেলেবেলা থেকেই জ্যোতি ছিলেন খুবই শান্ত ও স্পষ্টবাদী। সততা, বিশ্বস্ততা ও অধ্যবসায়- এ তিনটি তার জীবনের মূলমন্ত্র।

জ্যোতির বিশ্বাস, একমাত্র আত্মবিশ্বাস দ্বারাই সব অর্জন সম্ভব। সঙ্গে পরিপূরক পরিশ্রম ও সৎচিন্তা থাকলে কোনো বাধাই লক্ষ্যনিবিষ্ট পথের অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে না। আর এ আদর্শে উজ্জীবিত হয়েই তিনি এগিয়ে চলছেন দুর্বার গতিতে।

জ্যোতি সবশেষে বলেন, “আমি তো প্রতিনিয়ত নিজেকে অভিনয়ের জন্য পরিবর্তনের চেষ্টা করি। আগের কাজ দেখে ভুলগুলো শুধরে নিই। আমি মনে করি, এটা করা দরকার। দর্শকদের ভালোবাসা নিয়ে আমি সামনে এগিয়ে যেতে চাই।”

No comments

Powered by Blogger.