এপার-ওপার-ত্রিপুরায় ভোটের কড়া নাড়া by অমিত বসু
কলকাতার রসগোল্লার পরোয়া করে না ত্রিপুরা। ভরসা রাখে কুমিল্লার রসমালাইয়ের ওপর। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের পছন্দ মনোহরগঞ্জের মাতৃভাণ্ডারের ছানার মুড়কি। কাজের চাপে চরকির মতো ঘুরপাক খেলেও ফাঁক পেলেই মিষ্টির স্বাদ নিতে ভোলেন না।
নির্বাচন কড়া নাড়ছে। ব্যস্ততা থাকবেই। জনসংযোগ বাড়ানোর দায়িত্ব তাঁর একার নয়। দলের লোকরাও উৎসাহী। নির্বাচনী উত্তাপ পৌঁছে যাচ্ছে আগরতলা থেকে আখাউড়া। ঢাকার আগ্রহও প্রবল। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খবর রাখছেন। না রেখে উপায় নেই। বন্ধুত্বের দায়। ভারতের ২৮ রাজ্যের মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে কাছের ত্রিপুরা। অন্যতম কারণ ভৌগোলিক। পরের কারণ সাংস্কৃতিক। আচারে-বিচারে-ভাষায় ক্ষুদ্র বাংলাদেশ। নির্বিশেষ সম্পর্ক। ১৯৪৭-এ দেশ ভাগের সময় থেকেই ত্রিপুরা সুতোয় ঝুলছে। আসাম-মিজোরামের মধ্যে ঝুলন্ত ছেঁড়া ন্যাকড়া। দেশ কাটাছেঁড়ার দায়িত্ব নিয়ে র্যাডক্লিফ কী করবেন বুঝতে পারেননি। আসাম-মিজোরামের সঙ্গে সঙ্কীর্ণ সীমানা ছাড়া বাকি ৮৪ শতাংশই বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত। ভারতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম বাঙালি রাজ্য হয়েও কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগ কষ্টকর। সড়ক বা রেলপথে চার দিন। বিমানে ৪৫ মিনিট। বিমানে যাতায়াতের সামর্থ্য কয়জনের? ত্রিপুরা তাই কলকাতা থেকে দূরেই। ওখানে শিক্ষিত সমাজের অধিকাংশ মানুষ জানেন না, কলকাতা কেমন। ত্রিপুরার প্রায় ৫০ লাখ বাঙালি পশ্চিমবঙ্গের ১০ কোটি বাঙালির থেকে বিচ্ছিন্ন। সেই শূন্যতা মিটিয়েছে বাংলাদেশ। ঘনিষ্ঠতা নিত্য বর্ধমান। উৎসব-অনুষ্ঠানে, আপদ-বিপদে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে। হাসিনা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করতে পারেন, ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় ডাকলে সাড়া দিতে বাধ্য হন। হাসিনা-মানিক সম্পর্ক দিলি্ল বা কলকাতার ওপর নির্ভরশীল নয়। তাঁদের ছন্দ ভিন্ন। একাত্তরের বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরা কার্যত হয়ে উঠেছিল বাঙালির যুদ্ধশিবির। সেই বন্ধুত্বের জমি ক্রমেই উর্বর হচ্ছে। ত্রিপুরার প্রয়োজনীয় পণ্যের বেশির ভাগটাই আমদানি হয় বাংলাদেশ থেকে। জমির সার, বাড়িঘর নির্মাণের সিমেন্টও ত্রিপুরায় রপ্তানি করে বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ঘাটতি অনেকটাই পুষিয়ে দেয় ত্রিপুরা।
তিস্তাচুক্তি স্থগিত হওয়ায় ক্ষতি ত্রিপুরারও। তাদের ফেনী নদীর ভাগ পাওয়ার কথা ছিল, পায়নি। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে কলকাতায় পৌঁছানোর ট্রানজিটটাও আটকেছে। তিস্তাচুক্তি সম্পাদনের জন্য মানিক সরকার তদবির-তদারকি কম করেননি। শেষমেশ পেরে ওঠেননি। এসবের পরও বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগের সেতুটা আরো পোক্ত করতে সব রকম চেষ্টা চালিয়েছেন। সফলও হয়েছেন।
মানিক সরকার ফের জিতে মুখ্যমন্ত্রী হবেন কি না তা নিয়ে বাংলাদেশের এমনিতে মাথাব্যথার কারণ থাকতে পারে না। বেল পাকলে কাকের কী! ভিন দেশের একটি মিনি রাজ্যের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে যাবে কেন? না ভেবে উপায় নেই বলে। ২০১১ সালের ২০ মে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে। বামফ্রন্টকে হটিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে ঘিরে একসময় স্বপ্নের ডানা আকাশ ছুঁয়েছে। খুশির হাওয়ায় ভেসেছে বাংলাদেশ। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে যুগান্তর আসার প্রতীক্ষা। বাস্তবে হলো ভিন্ন। অন্য এক দুঃস্বপ্নে আছড়ে পড়ল বাঙালি। অপ্রত্যাশিত প্রতিকূলতায় শিউরে উঠল বাংলাদেশ-ভারত। ২০১১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং তিস্তাচুক্তি করতে ঢাকা রওনা হওয়ার মুহূর্তে মমতা জানিয়ে দিলেন, চুক্তিতে তাঁর মত নেই। আকাশ থেকে পড়লেন মনমোহন। বাংলাদেশের কাছে মুখ পুড়ল। কথা দিয়েও কথা না রাখার যন্ত্রণা! চুক্তি নিয়ে মমতার সঙ্গে তাঁর বিশদ আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত। তা সত্ত্বেও মমতার পিছুহাঁটা কেন? যন্ত্রণায় স্তব্ধ বাঙালি।
ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকার হার্দিকভাবে বাংলাদেশের পাশে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে গতি আনতে বদ্ধপরিকর মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। ভোটে যদি পট পাল্টায় তখন। মমতার তৃণমূল যদি শাসনের রজ্জু হাতে পায়? আপাতত ত্রিপুরায় তৃণমূলের কোথাও অস্তিত্ব নেই। রাজ্য বিধানসভায় তো দূরের কথা, পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ, পুরসভায়ও তারা ব্রাত্য। এসবের কোথাও একটি আসনও দখল করতে পারেনি। পাঁচ বছর আগেও নির্বাচনে নূ্যনতম ভোট না পাওয়ায় তৃণমূলের বহু প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়েছে। এবার কী হবে? ভোট টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচের মতো। ফলাফল অনিশ্চিত। দুর্বল দলও শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে পারে অবস্থার ফেরে।
একটা তফাত অবশ্য আছে পশ্চিমবঙ্গ আর ত্রিপুরার মধ্যে। গত বছর পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে বামফ্রন্টকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল তৃণমূল, দ্বিতীয় শক্তিশালী দল হিসেবে। কংগ্রেস তাদের সঙ্গে জোট বাঁধলেও ক্ষমতার নিরিখে ছিল নগণ্য। আসন রক্ষা হয়েছিল সেই মতোই। তৃণমূলের ছুড়ে দেওয়া সামান্য কয়েকটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই ক্ষান্ত থাকতে হয়েছিল তাদের। তৃণমূল মন্ত্রিসভা গঠন করার পর গুরুত্বহীন দপ্তর দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসকে। তাতেই সন্তুষ্ট থাকতে কষ্ট হলেও অন্য উপায় খুঁজে পায়নি।
ত্রিপুরার ছবিটা উল্টো। সেখানে বামফ্রন্টের পর দ্বিতীয় স্থানে কংগ্রেস। তৃণমূলকে তিন নম্বর দলও বলা যাবে না। তারা কার্যত অস্তিত্বহীন।
তৃণমূল মনে করছে, কংগ্রেসের ঘাড়ে চেপে ক্ষমতার স্বাদ পেলে মন্দ কী! আর কিছু না হোক, পা রাখার একটু জমি পাওয়া গেলেও অনেক। কংগ্রেস দ্বিধান্বিত। তারা বুঝতে পারছে না, কী করবে। বামফ্রন্টের কাছে হারতে হারতে তাদের মনোবল তলানিতে। একা লড়তে সংশয়। আর কিছু না হোক, মমতা ক্যারিশমায় যদি বামফ্রন্টবিরোধী হাওয়া তোলা যায়, আখেরে লাভ। বামবিরোধী ভোটাররা মমতাকে দেখলে আশ্বস্ত হতে পারে। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাম দুর্গের পতন ঘটিয়েছেন। ত্রিপুরায় বাম শক্তি খর্ব করার ক্ষমতাও তাঁর আছে। জেতা না গেলেও মুখরক্ষা কি সম্ভব?
বিগত নির্বাচনে কংগ্রেসের ফল ছিল শোচনীয়। মানুষের কাছে মুখ দেখাতে লজ্জা করত। মোট ৬০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র ১০টি। একটি পেয়েছিল উপজাতি দল আইএনপিপি, বাকি ৪৯টি বামফ্রন্টের। ত্রিপুরায় জঙ্গিরা প্রায় নিশ্চিহ্ন। ক্ষয়ে ক্ষয়ে যেটুকু আছে, তার সঙ্গে যোগাযোগ আইএনপিটির। পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদীদের কাজে লাগিয়ে তৃণমূল যেমন ভালো ফল পেয়েছিল, ত্রিপুরায় জঙ্গিরাও তেমন ভোটসহায়ক হতে পারে। এই শক্তিকে কাজে লাগানোর ক্ষমতা মমতার যতটা আছে, কংগ্রেসের ততটা নেই। সে কারণেই মমতাকে নিয়ে কংগ্রেসের কিছুটা আগ্রহ।
মমতার আপাতত ত্রিপুরাকে নিয়ে ভাবার সময় নেই। পশ্চিমবঙ্গকে নিয়েই হিমশিম খাচ্ছেন। জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন দ্রুত। আইনশৃঙ্খলার অবনতি, মূল্যবৃদ্ধি, তৃণমূলে গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে তিনি ব্যতিব্যস্ত। ত্রিপুরার কথা মাথায় আনতে পারছেন না। নির্বাচনের চার মাস বাকি। এর মধ্যে যদি অবস্থা বদলায়, তখন ত্রিপুরার চিন্তা; এখন কখনোই নয়।
লেখক : কলকাতার সাংবাদিক
তিস্তাচুক্তি স্থগিত হওয়ায় ক্ষতি ত্রিপুরারও। তাদের ফেনী নদীর ভাগ পাওয়ার কথা ছিল, পায়নি। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে কলকাতায় পৌঁছানোর ট্রানজিটটাও আটকেছে। তিস্তাচুক্তি সম্পাদনের জন্য মানিক সরকার তদবির-তদারকি কম করেননি। শেষমেশ পেরে ওঠেননি। এসবের পরও বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগের সেতুটা আরো পোক্ত করতে সব রকম চেষ্টা চালিয়েছেন। সফলও হয়েছেন।
মানিক সরকার ফের জিতে মুখ্যমন্ত্রী হবেন কি না তা নিয়ে বাংলাদেশের এমনিতে মাথাব্যথার কারণ থাকতে পারে না। বেল পাকলে কাকের কী! ভিন দেশের একটি মিনি রাজ্যের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে যাবে কেন? না ভেবে উপায় নেই বলে। ২০১১ সালের ২০ মে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে। বামফ্রন্টকে হটিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে ঘিরে একসময় স্বপ্নের ডানা আকাশ ছুঁয়েছে। খুশির হাওয়ায় ভেসেছে বাংলাদেশ। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে যুগান্তর আসার প্রতীক্ষা। বাস্তবে হলো ভিন্ন। অন্য এক দুঃস্বপ্নে আছড়ে পড়ল বাঙালি। অপ্রত্যাশিত প্রতিকূলতায় শিউরে উঠল বাংলাদেশ-ভারত। ২০১১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং তিস্তাচুক্তি করতে ঢাকা রওনা হওয়ার মুহূর্তে মমতা জানিয়ে দিলেন, চুক্তিতে তাঁর মত নেই। আকাশ থেকে পড়লেন মনমোহন। বাংলাদেশের কাছে মুখ পুড়ল। কথা দিয়েও কথা না রাখার যন্ত্রণা! চুক্তি নিয়ে মমতার সঙ্গে তাঁর বিশদ আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত। তা সত্ত্বেও মমতার পিছুহাঁটা কেন? যন্ত্রণায় স্তব্ধ বাঙালি।
ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকার হার্দিকভাবে বাংলাদেশের পাশে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে গতি আনতে বদ্ধপরিকর মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। ভোটে যদি পট পাল্টায় তখন। মমতার তৃণমূল যদি শাসনের রজ্জু হাতে পায়? আপাতত ত্রিপুরায় তৃণমূলের কোথাও অস্তিত্ব নেই। রাজ্য বিধানসভায় তো দূরের কথা, পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ, পুরসভায়ও তারা ব্রাত্য। এসবের কোথাও একটি আসনও দখল করতে পারেনি। পাঁচ বছর আগেও নির্বাচনে নূ্যনতম ভোট না পাওয়ায় তৃণমূলের বহু প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়েছে। এবার কী হবে? ভোট টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচের মতো। ফলাফল অনিশ্চিত। দুর্বল দলও শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে পারে অবস্থার ফেরে।
একটা তফাত অবশ্য আছে পশ্চিমবঙ্গ আর ত্রিপুরার মধ্যে। গত বছর পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে বামফ্রন্টকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল তৃণমূল, দ্বিতীয় শক্তিশালী দল হিসেবে। কংগ্রেস তাদের সঙ্গে জোট বাঁধলেও ক্ষমতার নিরিখে ছিল নগণ্য। আসন রক্ষা হয়েছিল সেই মতোই। তৃণমূলের ছুড়ে দেওয়া সামান্য কয়েকটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই ক্ষান্ত থাকতে হয়েছিল তাদের। তৃণমূল মন্ত্রিসভা গঠন করার পর গুরুত্বহীন দপ্তর দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসকে। তাতেই সন্তুষ্ট থাকতে কষ্ট হলেও অন্য উপায় খুঁজে পায়নি।
ত্রিপুরার ছবিটা উল্টো। সেখানে বামফ্রন্টের পর দ্বিতীয় স্থানে কংগ্রেস। তৃণমূলকে তিন নম্বর দলও বলা যাবে না। তারা কার্যত অস্তিত্বহীন।
তৃণমূল মনে করছে, কংগ্রেসের ঘাড়ে চেপে ক্ষমতার স্বাদ পেলে মন্দ কী! আর কিছু না হোক, পা রাখার একটু জমি পাওয়া গেলেও অনেক। কংগ্রেস দ্বিধান্বিত। তারা বুঝতে পারছে না, কী করবে। বামফ্রন্টের কাছে হারতে হারতে তাদের মনোবল তলানিতে। একা লড়তে সংশয়। আর কিছু না হোক, মমতা ক্যারিশমায় যদি বামফ্রন্টবিরোধী হাওয়া তোলা যায়, আখেরে লাভ। বামবিরোধী ভোটাররা মমতাকে দেখলে আশ্বস্ত হতে পারে। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাম দুর্গের পতন ঘটিয়েছেন। ত্রিপুরায় বাম শক্তি খর্ব করার ক্ষমতাও তাঁর আছে। জেতা না গেলেও মুখরক্ষা কি সম্ভব?
বিগত নির্বাচনে কংগ্রেসের ফল ছিল শোচনীয়। মানুষের কাছে মুখ দেখাতে লজ্জা করত। মোট ৬০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র ১০টি। একটি পেয়েছিল উপজাতি দল আইএনপিপি, বাকি ৪৯টি বামফ্রন্টের। ত্রিপুরায় জঙ্গিরা প্রায় নিশ্চিহ্ন। ক্ষয়ে ক্ষয়ে যেটুকু আছে, তার সঙ্গে যোগাযোগ আইএনপিটির। পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদীদের কাজে লাগিয়ে তৃণমূল যেমন ভালো ফল পেয়েছিল, ত্রিপুরায় জঙ্গিরাও তেমন ভোটসহায়ক হতে পারে। এই শক্তিকে কাজে লাগানোর ক্ষমতা মমতার যতটা আছে, কংগ্রেসের ততটা নেই। সে কারণেই মমতাকে নিয়ে কংগ্রেসের কিছুটা আগ্রহ।
মমতার আপাতত ত্রিপুরাকে নিয়ে ভাবার সময় নেই। পশ্চিমবঙ্গকে নিয়েই হিমশিম খাচ্ছেন। জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন দ্রুত। আইনশৃঙ্খলার অবনতি, মূল্যবৃদ্ধি, তৃণমূলে গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে তিনি ব্যতিব্যস্ত। ত্রিপুরার কথা মাথায় আনতে পারছেন না। নির্বাচনের চার মাস বাকি। এর মধ্যে যদি অবস্থা বদলায়, তখন ত্রিপুরার চিন্তা; এখন কখনোই নয়।
লেখক : কলকাতার সাংবাদিক
No comments