পবিত্র কোরআনের আলো-ইহুদিদের প্ররোচনা সত্ত্বেও শান্ত থাকার নির্দেশ
১২৮. রাব্বা-না ওয়াজআ'লনা- মুছলিমাইনি লাকা ওয়া মিন যুর্রিইয়্যাতিনা- উম্মাতাম মুছলিমাতাল্ লাকা; ওয়াআরিনা- মানা-ছিকানা ওয়াতুব আ'লাইনা-; ইন্নাকা আনতাত্ তাওয়্যা-বুর রাহীম।১২৯. রাব্বা-না ওয়াবআ'ছ ফীহিম রাসুলাম্ মিনহুম ইয়াতলু আ'লাইহিম আ-ইয়া-তিকা ওয়াইউআ'লি্লমুহুমুল কিতা-বা ওয়ালহিকমাতা ওয়াইউযাক্কীহিম; ইন্নাকা আনতাল আযীযুল হাকীম।
১৩০. ওয়ামাইঁয়্যারগাবু আ'ম্ মিল্লাতি ইব্রাহীমা ইল্লা- মান ছাফিহা নাফছাহু- ওয়ালাক্বাদিছ্বত্বাফাইনা-হু ফিদ্ দুনইয়া; ওয়াইন্নাহু- ফিল আখিরাতি লামিনাছ্ ছালিহীন। (সুরা বাকারা, আয়াত ১২৮-১৩০)
অনুবাদ : ১২৮. (তাঁরা বললেন) হে আমাদের প্রভু, 'আমাদের উভয়কে তুমি তোমার অনুগত (মুসলিম) বান্দা বানাও এবং আমাদের বংশধরদের মধ্য থেকেও। তুমি আমাদের বংশধরদের মধ্য থেকে তোমার অনুগত সম্প্রদায় বানিয়ে দাও; তুমি আমাদের তোমার আনুগত্যের আনুষ্ঠানিকতাগুলো দেখিয়ে দাও এবং আমাদের প্রতি ক্ষমাপরবশ হও।' অবশ্যই তুমি ক্ষমাপরবশ ও দয়ালু।
১২৯. হে আমাদের প্রভু, তাদের মধ্যে তাদের নিজেদের ভেতর থেকেই রাসুল পাঠাও যে তাদের কাছে তোমার আয়াতগুলো পড়ে শোনাবে, তাদের তোমাদের কিতাবের জ্ঞান ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দেবে, আর সে তাদের পবিত্র করে দেবে_তুমি মহাপরাক্রমশালী ও পরম কুশলী।
১৩০. কে ইব্রাহিমের ধর্ম থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখতে পারে? বরং যারা নিজেদের মূর্খ বানিয়ে রাখতে চায় তারাই তা পারে। আর আমি তাঁকে (মুহাম্মদকে) বাছাই করে নিয়েছি (শ্রেষ্ঠজন হিসেবে) এই দুনিয়ায় এবং শেষ বিচারের দিনেও তিনি উত্তম লোকদের মধ্যে শামিল হবেন।
ব্যাখ্যা : ওই আয়াতগুলোও পূর্ববর্তী অর্থাৎ গত সংখ্যায় বর্ণিত আয়াতের ধারাবাহিকতায় এসেছে। মক্কায় কাবাগৃহ নির্মাণের ইতিবৃত্ত নিয়ে এ প্রসঙ্গ শুরু করা হয়েছে। ১২৮ নম্বর আয়াতে কাবাগৃহের ভিত্তি নির্মাণ শেষে হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও হজরত ইসমাইল (আ.) একসঙ্গে আল্লাহর কাছে যে মোনাজাত করেছিলেন, তা বর্ণনা করা হয়েছে। তাঁরা আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেছিলেন উভয়কে যেন তিনি তাঁর অনুগত বা মুসলিম হিসেবে গ্রহণ করেন এবং তাঁদের বংশধরদের অনুগত বা মুসলিম সম্প্রদায়কে বেছে নেন। সেই সঙ্গে এই প্রার্থনাও জানানো হয়, আল্লাহ যেন তাঁদের তাঁর ইবাদতের আনুষ্ঠানিকতাও দেখিয়ে দেন। আয়াতের এ অংশটি দ্বারা পবিত্র হজ পালনের আনুষ্ঠানিকতার প্রতি বিশেষ ইঙ্গিত করা হয়েছে বলে অধিকাংশ তাফসিরকার মনে করেন। আর তাঁদের বংশে এক অনুগত বা মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্ম দেওয়ার যে প্রার্থনা জানানো হযেছে, উম্মতে মুহাম্মদী সেই প্রার্থনারই ফসল বলে মনে করা হয়।
১২৯ নম্বর আয়াতে যে রাসুল প্রেরণের প্রার্থনা জানানো হয়েছে, সেই রাসুলই শেষ নবী মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। এটা সুস্পষ্ট এ কারণে যে এই প্রার্থনা ইব্রাহিম (আ.) জানিয়ে দিলেন তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র ইসমাইলকে সঙ্গে নিয়ে। সুতরাং এখানে ইসমাইলের বংশধরদের কথাই শুধু বলা হয়েছে, তাঁর অপর পুত্র ইসহাক বা ইসরাইলের নয়। ইসমাইলের বংশে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছাড়া আর কোনো নবী-রাসুলের জন্ম হয়নি। হজরত ইসমাইল (আ.)-এর বংশধররাই পরবর্তী সময়ে তাঁর এক অধস্তন খ্যাতিমান পুরুষ কোরাইশের নামে কোরাইশ বংশ বলে পরিচিত হয়েছে এবং সেই বংশেরই একমাত্র নবী মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। ১৩০ নম্বর আয়াতটির শানেনুজুল এ রকম : আবদুল্লাহ ইবনে সালাম ইহুদি ধর্ম পরিত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র সালমা ও মুহাজেরকে বললেন, তোমরা তাওরাত গ্রন্থে অবগত হয়েছো যে ইসমাইল বংশে একজন নবী আসবেন। হজরত মুহাম্মদ (সা.) সেই নবী। তাঁর প্রতি ইমান আনো। তখন সালমা ইসলাম গ্রহণ করলেন; কিন্তু মুহাজের করলেন না। অনুরূপভাবে সত্য জেনেও যারা মুখ ফিরিয়ে রাখল তাদের ব্যাপারে এই আয়াতটি নাজিল হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ১২৮. (তাঁরা বললেন) হে আমাদের প্রভু, 'আমাদের উভয়কে তুমি তোমার অনুগত (মুসলিম) বান্দা বানাও এবং আমাদের বংশধরদের মধ্য থেকেও। তুমি আমাদের বংশধরদের মধ্য থেকে তোমার অনুগত সম্প্রদায় বানিয়ে দাও; তুমি আমাদের তোমার আনুগত্যের আনুষ্ঠানিকতাগুলো দেখিয়ে দাও এবং আমাদের প্রতি ক্ষমাপরবশ হও।' অবশ্যই তুমি ক্ষমাপরবশ ও দয়ালু।
১২৯. হে আমাদের প্রভু, তাদের মধ্যে তাদের নিজেদের ভেতর থেকেই রাসুল পাঠাও যে তাদের কাছে তোমার আয়াতগুলো পড়ে শোনাবে, তাদের তোমাদের কিতাবের জ্ঞান ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দেবে, আর সে তাদের পবিত্র করে দেবে_তুমি মহাপরাক্রমশালী ও পরম কুশলী।
১৩০. কে ইব্রাহিমের ধর্ম থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখতে পারে? বরং যারা নিজেদের মূর্খ বানিয়ে রাখতে চায় তারাই তা পারে। আর আমি তাঁকে (মুহাম্মদকে) বাছাই করে নিয়েছি (শ্রেষ্ঠজন হিসেবে) এই দুনিয়ায় এবং শেষ বিচারের দিনেও তিনি উত্তম লোকদের মধ্যে শামিল হবেন।
ব্যাখ্যা : ওই আয়াতগুলোও পূর্ববর্তী অর্থাৎ গত সংখ্যায় বর্ণিত আয়াতের ধারাবাহিকতায় এসেছে। মক্কায় কাবাগৃহ নির্মাণের ইতিবৃত্ত নিয়ে এ প্রসঙ্গ শুরু করা হয়েছে। ১২৮ নম্বর আয়াতে কাবাগৃহের ভিত্তি নির্মাণ শেষে হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও হজরত ইসমাইল (আ.) একসঙ্গে আল্লাহর কাছে যে মোনাজাত করেছিলেন, তা বর্ণনা করা হয়েছে। তাঁরা আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেছিলেন উভয়কে যেন তিনি তাঁর অনুগত বা মুসলিম হিসেবে গ্রহণ করেন এবং তাঁদের বংশধরদের অনুগত বা মুসলিম সম্প্রদায়কে বেছে নেন। সেই সঙ্গে এই প্রার্থনাও জানানো হয়, আল্লাহ যেন তাঁদের তাঁর ইবাদতের আনুষ্ঠানিকতাও দেখিয়ে দেন। আয়াতের এ অংশটি দ্বারা পবিত্র হজ পালনের আনুষ্ঠানিকতার প্রতি বিশেষ ইঙ্গিত করা হয়েছে বলে অধিকাংশ তাফসিরকার মনে করেন। আর তাঁদের বংশে এক অনুগত বা মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্ম দেওয়ার যে প্রার্থনা জানানো হযেছে, উম্মতে মুহাম্মদী সেই প্রার্থনারই ফসল বলে মনে করা হয়।
১২৯ নম্বর আয়াতে যে রাসুল প্রেরণের প্রার্থনা জানানো হয়েছে, সেই রাসুলই শেষ নবী মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। এটা সুস্পষ্ট এ কারণে যে এই প্রার্থনা ইব্রাহিম (আ.) জানিয়ে দিলেন তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র ইসমাইলকে সঙ্গে নিয়ে। সুতরাং এখানে ইসমাইলের বংশধরদের কথাই শুধু বলা হয়েছে, তাঁর অপর পুত্র ইসহাক বা ইসরাইলের নয়। ইসমাইলের বংশে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছাড়া আর কোনো নবী-রাসুলের জন্ম হয়নি। হজরত ইসমাইল (আ.)-এর বংশধররাই পরবর্তী সময়ে তাঁর এক অধস্তন খ্যাতিমান পুরুষ কোরাইশের নামে কোরাইশ বংশ বলে পরিচিত হয়েছে এবং সেই বংশেরই একমাত্র নবী মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। ১৩০ নম্বর আয়াতটির শানেনুজুল এ রকম : আবদুল্লাহ ইবনে সালাম ইহুদি ধর্ম পরিত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র সালমা ও মুহাজেরকে বললেন, তোমরা তাওরাত গ্রন্থে অবগত হয়েছো যে ইসমাইল বংশে একজন নবী আসবেন। হজরত মুহাম্মদ (সা.) সেই নবী। তাঁর প্রতি ইমান আনো। তখন সালমা ইসলাম গ্রহণ করলেন; কিন্তু মুহাজের করলেন না। অনুরূপভাবে সত্য জেনেও যারা মুখ ফিরিয়ে রাখল তাদের ব্যাপারে এই আয়াতটি নাজিল হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments