শেয়ারবাজার-সুদ মওকুফের সুযোগ পাচ্ছেন না বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী by তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু
নানা বিষয় অমীমাংসিত রেখে শেয়ারবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুদ মওকুফের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী এ সুযোগ পাচ্ছেন না। সরকারি মালিকানাধীন মার্চেন্ট ব্যাংক ও সংলগ্ন ব্রোকারেজ হাউসগুলো সুদ মওকুফের সুযোগ দিলেও বেসরকারি মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলোর বেশির ভাগই তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি।
এ ব্যাপারে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো সরকারের কাছে সুদ মওকুফের জন্য পুনরায় অর্থায়নের সুযোগ চেয়ে আবেদন করলেও ব্রোকারেজ হাউসগুলো কোনো উদ্যোগই নেয়নি। এতে সরকারি প্রণোদনার ক্ষেত্রে এ বৈষম্য হতে চলেছে।
সরকারি মালিকানাধীন আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের (মার্চেন্ট ব্যাংক) বিনিয়োগকারী পার্থ ভট্টাচার্যের ২০১০ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া বিপর্যয়ের আগ পর্যন্ত শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ ছিল চার লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে এবার তিনি প্রায় ৫০ হাজার টাকা সুদ মওকুফ পাচ্ছেন। আবেদনপত্র জমা দিয়ে এরই মধ্যে তিনি সুদ মওকুফের চিঠি পেয়েছেন। একইভাবে সরকারি আরেক মার্চেন্ট ব্যাংক জনতা ক্যাপিট্যাল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের বিনিয়োগকারী অন্তরা আহমেদও সুদ মওকুফের আবেদন জমা দিয়েছেন। তবে কী পরিমাণ সুদ তিনি মওকুফ পাবেন, তা এখনো জানতে পারেননি। এই মার্চেন্ট ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক মো. সাঈফ উল্যাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা খুব শিগগিরই এ সুদ মওকুফের চিঠি দিয়ে দেব গ্রাহকদের।' তিনি জানান, তাঁর হাউসে তিন হাজার বিনিয়োগকারী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সুদ মওকুফের সুযোগ পাবেন এক হাজার ৯০০ জন। তাঁদের সুদ মওকুফ করা হবে চার কোটি ৮১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। একই পরিমাণ টাকা ব্লক অ্যাকাউন্টে রেখে তিন বছরের জন্য পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হবে। এটা ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে। ত্রৈমাসিক কিস্তিতে এ সুদ পরিশোধে পর পর দুবার ব্যর্থ হলে সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিল করা হবে।'
অপরদিকে বেসরকারি ব্রোকারেজ হাউস এমটিবি সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী এম এ কে জিলানী কালের কণ্ঠকে বলেন, তিনি সুদ মওকুফের জন্য হাউসের কর্মকর্তাদের কাছে ধরনা দিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁর পরিচিত অন্যান্য হাউসের অনেক বিনিয়োগকারী এ সুদ মওকুফের সুবিধা পেলেও তিনি পাচ্ছেন না।
এই ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানের উপপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্র্তা চিন্ময় দাস কালের কণ্ঠকে বলেন, 'নানা ধরনের অসুবিধার কারণে আমরা সুদ মওকুফের সুবিধা দিতে পারছি না। প্রথমত, আমাদের মতো ব্রোকারেজ হাউজগুলোর জন্য সুদ মওকুফ বিষয়ক কোনো সরকারি নীতিমালা বা আইন নেই। দ্বিতীয়ত, এমন কোনো তদারকি ব্যবস্থা নেই- যার মাধ্যমে ব্লক অ্যাকাউন্টে অবশিষ্ট সুদের টাকা জমা রাখব।' তিনি বলেন, 'মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো তাদের প্যারেন্ট ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে সুদ মওকুফের জন্য টাকা নিতে পারবে। আমাদের নিজেদের তহবিল থেকে সুদ মওকুফ করতে হবে। আমরাও তো আরেক জায়গা থেকে সুদে টাকা এনে ঋণ দিয়েছিলাম। তাদের টাকা পরিশোধ করতে হবে আমাদেরকেই। এ ক্ষেত্রে আমাদের দাবি রয়েছে- সুদ মওকুফের টাকাটা যদি আমাদের প্রতি বছর রাজস্ব বোর্ডকে দেওয়া করের টাকার সঙ্গে সমন্বয়ের সুযোগ দেওয়া হয়, তবে আমরা কিছুটা রেহাই পাই।' উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, 'ধরেন আমরা এক কোটি টাকা সুদ মওকুফ করলাম। সরকারকে আমরা বছরে পাঁচ কোটি টাকার ট্যাক্স দিই। সরকার যদি এই এক কোটি টাকা রেয়াত দিয়ে চার কোটি টাকা আদায় করে, তবে আমরা কিছুটা বাঁচতে পারি। তিনি জানান, আমরা এ ধরনের একটা প্রস্তাব অচিরেই এসইসিকে দেব।' চিন্ময় দাস জানান, তাঁর হাউসের মোট বিনিয়োগকারী ২০ হাজার। তাঁদের মধ্যে মার্জিন ঋণ নিয়েছেন এমন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা তিন হাজার হবে- যাঁদের চার কোটি টাকার মতো সুদ মওকুফ করতে হবে।
সুদ মওকুফ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ হাফিজ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা সরকারের কাছে ৯১৩ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন চেয়েছি। এ টাকা ১০ শতাংশ সুদে দেওয়ার প্রস্তাব করেছি। এটা করলে বিনিয়োগকারীদের সুদ মওকুফের কোনো অসুবিধা থাকবে না। তিনি জানান, এরই মধ্যে সরকারি মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো সুদ মওকুফ বাস্তবায়ন শুরু করেছে। কয়েকটি বেসরকারি মার্চেন্ট ব্যাংক যেমন ট্রাস্ট ব্যাংকের মার্চেন্ট ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সরকারি আইসিবি, সোনালী ও জনতা ব্যাংকের মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো থেকেও বিনিয়োগকারীরা এ সুযোগ পাচ্ছেন। তিনি বলেন, হয়তো অন্যান্য মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোও ধীরে ধীরে তা বাস্তবায়ন করবে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি রকিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর ফাদার ব্যাংক রয়েছে। তাই তারা সেখান থেকে টাকা এনে সুদ মওকুফের সুযোগ দিতে পারছে। কিন্তু আমরা পারছি না। কেননা, ব্রোকারেজ হাউসগুলো আরেক ব্যাংক থেকে সুদে টাকা এনে বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ দিয়েছিল। তিনি বলেন এ বিষয়টি নিয়ে সরকারের কাছে আমরা একটা প্রস্তাব উপস্থাপন করব।'
প্রসঙ্গত, অর্থমন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সুদ মওকুফ-সংক্রান্ত বৈঠকে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ও মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের উপস্থিতিতেই সুদ মওকুফের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, শেয়ারবাজারে ২০১০ সালের ভয়াবহ ধসে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে এসইসি। ডিএসই, সিএসই ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো মিলিয়ে মোট ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ৮৩ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর তথ্য দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এসইসির ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। এ তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে তারাই মার্জিন ঋণের সুদ মওকুফ সুবিধা পাবেন এবং আইপিওতে কোটা সুবিধা পাবেন। তালিকায় ডিএসইতে ২০৮টি ব্রোকারেজ হাউসের ১৪ লাখ ৪০ হাজার ১৪৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী রয়েছেন। এদের মধ্যে মার্জিন ঋণ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন- এমন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ৫১ হাজার ৬৮০ জন। আর মার্জিন ঋণ না নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় রয়েছেন ছয় লাখ ৯৪ হাজার ২৩৪ জন।
এদিকে সিএসইতে ৭৯টি ব্রোকারেজ হাউসে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর তালিকায় রয়েছেন এক লাখ ৬৬ হাজার ৪৪৩ জন। মার্জিণ ঋণ নিয়েছেন- এমন তালিকায় ৪৯ হাজার ৪২ জন আর মার্জিন ঋণ নেননি এক লাখ ১৭ হাজার ৪০১ জন।
আর ৫০টি মার্চেন্ট ব্যাংকের মধ্যে তহবিল ব্যবস্থাপনাকারী ২৮টিতে রয়েছেন ৪১ হাজার ৪৯২ জন। তাঁদের মধ্যে মার্জিন ঋণ নিয়েছেন ৩৮ হাজার ৯৪৬ জন আর নেননি দুই হাজার ৫৪৬ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে দ্বিতীয় দফায় পুঁজিবাজারে ধস নেমে আসে। এ ধস মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই অংশ হিসেবে গত বছরের ২২ নভেম্বর সুদ মওকুফের বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি।
সরকারি মালিকানাধীন আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের (মার্চেন্ট ব্যাংক) বিনিয়োগকারী পার্থ ভট্টাচার্যের ২০১০ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া বিপর্যয়ের আগ পর্যন্ত শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ ছিল চার লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে এবার তিনি প্রায় ৫০ হাজার টাকা সুদ মওকুফ পাচ্ছেন। আবেদনপত্র জমা দিয়ে এরই মধ্যে তিনি সুদ মওকুফের চিঠি পেয়েছেন। একইভাবে সরকারি আরেক মার্চেন্ট ব্যাংক জনতা ক্যাপিট্যাল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের বিনিয়োগকারী অন্তরা আহমেদও সুদ মওকুফের আবেদন জমা দিয়েছেন। তবে কী পরিমাণ সুদ তিনি মওকুফ পাবেন, তা এখনো জানতে পারেননি। এই মার্চেন্ট ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক মো. সাঈফ উল্যাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা খুব শিগগিরই এ সুদ মওকুফের চিঠি দিয়ে দেব গ্রাহকদের।' তিনি জানান, তাঁর হাউসে তিন হাজার বিনিয়োগকারী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সুদ মওকুফের সুযোগ পাবেন এক হাজার ৯০০ জন। তাঁদের সুদ মওকুফ করা হবে চার কোটি ৮১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। একই পরিমাণ টাকা ব্লক অ্যাকাউন্টে রেখে তিন বছরের জন্য পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হবে। এটা ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে। ত্রৈমাসিক কিস্তিতে এ সুদ পরিশোধে পর পর দুবার ব্যর্থ হলে সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিল করা হবে।'
অপরদিকে বেসরকারি ব্রোকারেজ হাউস এমটিবি সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী এম এ কে জিলানী কালের কণ্ঠকে বলেন, তিনি সুদ মওকুফের জন্য হাউসের কর্মকর্তাদের কাছে ধরনা দিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁর পরিচিত অন্যান্য হাউসের অনেক বিনিয়োগকারী এ সুদ মওকুফের সুবিধা পেলেও তিনি পাচ্ছেন না।
এই ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানের উপপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্র্তা চিন্ময় দাস কালের কণ্ঠকে বলেন, 'নানা ধরনের অসুবিধার কারণে আমরা সুদ মওকুফের সুবিধা দিতে পারছি না। প্রথমত, আমাদের মতো ব্রোকারেজ হাউজগুলোর জন্য সুদ মওকুফ বিষয়ক কোনো সরকারি নীতিমালা বা আইন নেই। দ্বিতীয়ত, এমন কোনো তদারকি ব্যবস্থা নেই- যার মাধ্যমে ব্লক অ্যাকাউন্টে অবশিষ্ট সুদের টাকা জমা রাখব।' তিনি বলেন, 'মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো তাদের প্যারেন্ট ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে সুদ মওকুফের জন্য টাকা নিতে পারবে। আমাদের নিজেদের তহবিল থেকে সুদ মওকুফ করতে হবে। আমরাও তো আরেক জায়গা থেকে সুদে টাকা এনে ঋণ দিয়েছিলাম। তাদের টাকা পরিশোধ করতে হবে আমাদেরকেই। এ ক্ষেত্রে আমাদের দাবি রয়েছে- সুদ মওকুফের টাকাটা যদি আমাদের প্রতি বছর রাজস্ব বোর্ডকে দেওয়া করের টাকার সঙ্গে সমন্বয়ের সুযোগ দেওয়া হয়, তবে আমরা কিছুটা রেহাই পাই।' উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, 'ধরেন আমরা এক কোটি টাকা সুদ মওকুফ করলাম। সরকারকে আমরা বছরে পাঁচ কোটি টাকার ট্যাক্স দিই। সরকার যদি এই এক কোটি টাকা রেয়াত দিয়ে চার কোটি টাকা আদায় করে, তবে আমরা কিছুটা বাঁচতে পারি। তিনি জানান, আমরা এ ধরনের একটা প্রস্তাব অচিরেই এসইসিকে দেব।' চিন্ময় দাস জানান, তাঁর হাউসের মোট বিনিয়োগকারী ২০ হাজার। তাঁদের মধ্যে মার্জিন ঋণ নিয়েছেন এমন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা তিন হাজার হবে- যাঁদের চার কোটি টাকার মতো সুদ মওকুফ করতে হবে।
সুদ মওকুফ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ হাফিজ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা সরকারের কাছে ৯১৩ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন চেয়েছি। এ টাকা ১০ শতাংশ সুদে দেওয়ার প্রস্তাব করেছি। এটা করলে বিনিয়োগকারীদের সুদ মওকুফের কোনো অসুবিধা থাকবে না। তিনি জানান, এরই মধ্যে সরকারি মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো সুদ মওকুফ বাস্তবায়ন শুরু করেছে। কয়েকটি বেসরকারি মার্চেন্ট ব্যাংক যেমন ট্রাস্ট ব্যাংকের মার্চেন্ট ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সরকারি আইসিবি, সোনালী ও জনতা ব্যাংকের মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো থেকেও বিনিয়োগকারীরা এ সুযোগ পাচ্ছেন। তিনি বলেন, হয়তো অন্যান্য মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোও ধীরে ধীরে তা বাস্তবায়ন করবে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি রকিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর ফাদার ব্যাংক রয়েছে। তাই তারা সেখান থেকে টাকা এনে সুদ মওকুফের সুযোগ দিতে পারছে। কিন্তু আমরা পারছি না। কেননা, ব্রোকারেজ হাউসগুলো আরেক ব্যাংক থেকে সুদে টাকা এনে বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ দিয়েছিল। তিনি বলেন এ বিষয়টি নিয়ে সরকারের কাছে আমরা একটা প্রস্তাব উপস্থাপন করব।'
প্রসঙ্গত, অর্থমন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সুদ মওকুফ-সংক্রান্ত বৈঠকে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ও মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের উপস্থিতিতেই সুদ মওকুফের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, শেয়ারবাজারে ২০১০ সালের ভয়াবহ ধসে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে এসইসি। ডিএসই, সিএসই ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো মিলিয়ে মোট ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ৮৩ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর তথ্য দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এসইসির ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। এ তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে তারাই মার্জিন ঋণের সুদ মওকুফ সুবিধা পাবেন এবং আইপিওতে কোটা সুবিধা পাবেন। তালিকায় ডিএসইতে ২০৮টি ব্রোকারেজ হাউসের ১৪ লাখ ৪০ হাজার ১৪৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী রয়েছেন। এদের মধ্যে মার্জিন ঋণ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন- এমন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ৫১ হাজার ৬৮০ জন। আর মার্জিন ঋণ না নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় রয়েছেন ছয় লাখ ৯৪ হাজার ২৩৪ জন।
এদিকে সিএসইতে ৭৯টি ব্রোকারেজ হাউসে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর তালিকায় রয়েছেন এক লাখ ৬৬ হাজার ৪৪৩ জন। মার্জিণ ঋণ নিয়েছেন- এমন তালিকায় ৪৯ হাজার ৪২ জন আর মার্জিন ঋণ নেননি এক লাখ ১৭ হাজার ৪০১ জন।
আর ৫০টি মার্চেন্ট ব্যাংকের মধ্যে তহবিল ব্যবস্থাপনাকারী ২৮টিতে রয়েছেন ৪১ হাজার ৪৯২ জন। তাঁদের মধ্যে মার্জিন ঋণ নিয়েছেন ৩৮ হাজার ৯৪৬ জন আর নেননি দুই হাজার ৫৪৬ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে দ্বিতীয় দফায় পুঁজিবাজারে ধস নেমে আসে। এ ধস মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই অংশ হিসেবে গত বছরের ২২ নভেম্বর সুদ মওকুফের বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি।
No comments