বাহুবল মডেল থানা কমপ্লেক্সের ভেতরে ধর্ষণ ৩ দিন ধরে ১৪৪ ধারা
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে: হবিগঞ্জের বাহুবল মডেল থানা কমপ্লেক্সের ভেতরে এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ও আত্মহননের ঘটনায় ওসির অপসারণের দাবিকে কেন্দ্র করে বাহুবলের দু’টি স্থানে ৩ দিন যাবৎ ১৪৪ ধারা বলবত রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮ থেকে বাহুবল সদর ও পার্শ্ববর্তী মিরপুর এলাকায় অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। পরিস্থিতি এখনও শান্ত না হওয়ায় ১৪৪ ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এ ব্যাপারে বাহুবল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির জানান, থানার ওসির অপসারণের দাবিতে সোমবার রাতে বাহুবল নাগরিক পরিষদ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয়। এদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগও একই সময় একই স্থানে সমাবেশ ডাক দেয়ায় ১৪৪ ধার জারি করা হয়। ১৪৪ ধারা জারি পর থেকে সভাস্থল এলাকায় সংঘর্ষের আশঙ্কায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। উল্লেখ্য, সমপ্রতি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া হাইস্কুলের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী মারজানা আক্তার তার চাচা বাহুবল মডেল থানার এসআই রফিকুল ইসলামের বাসায় বেড়াতে আসে। সেখানে পরিচয় হয় একই থানার কনস্টেবল রুহুল আমিনের পুত্র ফরহাদের সঙ্গে। এরই সূত্র ধরে ১৫ই সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ১টায় ফরহাদ কৌশলে মারজানাকে ছাদে নিয়ে ধর্ষণ করে। ঘটনা জানাজানির ভয়ে মারজানা আত্মহননের পথ বেছে নেয় এবং বাসার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে। সঙ্গে সঙ্গে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টা মারজানা মৃত্যুবরণ করে। ঘটনার পরপরই বাহুবল থানা পুলিশ ঘাতক ফরহাদকে আটক করে। এ ব্যাপারে নিহতের চাচী কামরুন্নাহার বাদী হয়ে ফরহাদকে আসামি করে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদকে প্রধান করে একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদিকে বাহুবল মডেল থানা অফিসার্স কোয়ার্টারে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, অতঃপর আত্মাহুতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়েছে। ওই থানার ওসি আজিজুর রহমান সরকারকে তদন্ত থেকে অব্যহতি দিয়ে সার্কেল এএসপি মোজাম্মেল হককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে বাহুবল উপজেলা সদরে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকের মতে থানা কম্পাউন্ডে যেখানে স্কুলছাত্রী নিরাপদ নেই সেখানে উপজেলাবাসীর নিরাপত্তা বিধানে পুলিশের কতটুকু দায়িত্ব রয়েছে তা সকলকে ভাবিয়ে তুলেছে। এ ঘটনায় গত শনিবার সকালে হবিগঞ্জের এসপি কামরুল আমিন ঘটনাটি তদন্তের জন্য প্রথমে ওসি আজিজুর রহমান সরকারকে দায়িত্ব দেন। কিন্তু ওসির ভূমিকা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা উঠলে ওইদিন রাতেই তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে সার্কেল এএসপি মোজাম্মেল হককে তদন্ত ভার অর্পণ করেন। এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমদকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
No comments