কানাডার মুসলমানদের হালচাল by জহির উদ্দিন বাবর
উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডাতেও রয়েছে মুসলমানদের বর্ণাঢ্য অতীত। কানাডায় বর্তমানে ৯ লাখ ৪০ হাজার মুসলমান বাস করেন। কানাডার মোট জনসংখ্যার ৬.৬ শতাংশ মুসলমান। কানাডায় আগামী ২০ বছরে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়ে তিনগুণ হতে পারে। কানাডায় মুসলমানদের আগমন প্রায় দেড়শ' বছর আগে।
১৮৭১ সালের কানাডিয়ান আদমশুমারিতে প্রথম মুসলমানদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। ওই শুমারিতে সংখ্যায় মাত্র ১৩ জন মুসলমানের উলেল্গখ পাওয়া যায়। জানা যায়, কানাডিয়ান প্যাসিফিক রেলওয়ে স্থাপনের সময় অনেক মুসলমান এ দেশে আগমন করেন। এ ছাড়া আলবার্টায় কৃষিকাজে এবং অন্যান্য প্রদেশে শিল্পকারখানার কাজের সন্ধানে অনেকে এসেছেন। ১৯৩৮ সালে আলবার্টার রাজধানী এডমন্টনে প্রথম মসজিদ 'আল রাশিদ' স্থাপিত হয়। ১৯৬০ সালের পর থেকে কানাডায় মুসলমান ইমিগ্রেটদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এরপর থেকে উত্তরোত্তর শিক্ষার্থী, দক্ষ শ্রমিক এবং ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ১৯৮১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী কানাডায় মুসলমানের সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৮ হাজার ১৬৫। ১৯৯১ সালে সে সংখ্যা বেড়ে হয় দুই লাখ ৫৩ হাজার। এর এক দশক পরে অর্থাৎ ২০০১ সালে তা বেড়ে হয় দ্বিগুণেরও বেশি। সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী মুসলমানের সংখ্যা ৯ লাখ ৪০ হাজার। ধারণা করা হচ্ছে, ইতিমধ্যে এ সংখ্যা মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে।
প্রায় ৬০ শতাংশ মুসলমান বাস করে কানাডার ওন্টারিও প্রদেশে। বিশেষ করে টরন্টো ও অটোয়ায়। প্রায় ২০ শতাংশের বাস কুইবেক প্রদেশে, যার অধিকাংশই মনট্রিয়লে। এই মুসলমান জনগোষ্ঠীর তিন-চতুর্থাংশই ইমিগ্রেন্ট। তাদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এসেছে গত এক দশকে। আরব দেশ ছাড়াও উলেল্গখযোগ্যসংখ্যক মুসলমান এসেছে পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ থেকে।
মোট জনসংখ্যার শতকরা দুই ভাগের নিচে থাকলেও গ্রহণযোগ্যতা ও গুরুত্বে অন্যান্য সংখ্যালঘু সল্ফপ্রদায়ের চেয়ে ঈর্ষণীয় পর্যায়ে এগিয়ে রয়েছে মুসলমানরা। মসজিদের সংখ্যাও হাজার ছুঁই ছুঁই; যার সঙ্গে শতকরা ৬০ ভাগেরও বেশি মুসলমান যোগাযোগ রক্ষা করে থাকেন। অন্যদিকে মূলধারার রাজনীতিতেও রয়েছে তাদের অংশগ্রহণ। বেশ ক'জন মুসলিম এমপি ও অনেক কাউন্সিলর নির্বাচিত হন প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে। শিক্ষাক্ষেত্রে মুসলমান ছেলেমেয়েরা অন্যান্য কমিউনিটির তুলনায় অনেক এগিয়ে আছে। হিসাবে দেখা গেছে, শতকরা ২৭ ভাগ স্নাতকধারী হচ্ছে মুসলমান, যেখানে কানাডার মোট জনসংখ্যার মাত্র ১৭ ভাগ স্নাতকধারী।
কানাডার প্রায় প্রতিটি মসজিদে জুমার একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার সব শ্রেণীর মানুষ ভিড় জমায় মসজিদে। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, কানাডার দুই-তৃতীয়াংশ মুসলমান নিয়মিত মসজিদে যায়। সেখানে তারা নামাজ আদায় করে অথবা ধর্মীয় অন্য কোনো বিষয়ে অংশগ্রহণ করে। এসবের কারণে পুরোপুরি ধর্মীয় আবহে অনেকটা নির্বিঘ্নে বসবাস করছেন মুসলমানরা। সব মিলিয়ে বেশ ভালোই আছেন কানাডিয়ান মুসলমানরা।
zahirbabor@yahoo.com
প্রায় ৬০ শতাংশ মুসলমান বাস করে কানাডার ওন্টারিও প্রদেশে। বিশেষ করে টরন্টো ও অটোয়ায়। প্রায় ২০ শতাংশের বাস কুইবেক প্রদেশে, যার অধিকাংশই মনট্রিয়লে। এই মুসলমান জনগোষ্ঠীর তিন-চতুর্থাংশই ইমিগ্রেন্ট। তাদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এসেছে গত এক দশকে। আরব দেশ ছাড়াও উলেল্গখযোগ্যসংখ্যক মুসলমান এসেছে পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ থেকে।
মোট জনসংখ্যার শতকরা দুই ভাগের নিচে থাকলেও গ্রহণযোগ্যতা ও গুরুত্বে অন্যান্য সংখ্যালঘু সল্ফপ্রদায়ের চেয়ে ঈর্ষণীয় পর্যায়ে এগিয়ে রয়েছে মুসলমানরা। মসজিদের সংখ্যাও হাজার ছুঁই ছুঁই; যার সঙ্গে শতকরা ৬০ ভাগেরও বেশি মুসলমান যোগাযোগ রক্ষা করে থাকেন। অন্যদিকে মূলধারার রাজনীতিতেও রয়েছে তাদের অংশগ্রহণ। বেশ ক'জন মুসলিম এমপি ও অনেক কাউন্সিলর নির্বাচিত হন প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে। শিক্ষাক্ষেত্রে মুসলমান ছেলেমেয়েরা অন্যান্য কমিউনিটির তুলনায় অনেক এগিয়ে আছে। হিসাবে দেখা গেছে, শতকরা ২৭ ভাগ স্নাতকধারী হচ্ছে মুসলমান, যেখানে কানাডার মোট জনসংখ্যার মাত্র ১৭ ভাগ স্নাতকধারী।
কানাডার প্রায় প্রতিটি মসজিদে জুমার একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার সব শ্রেণীর মানুষ ভিড় জমায় মসজিদে। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, কানাডার দুই-তৃতীয়াংশ মুসলমান নিয়মিত মসজিদে যায়। সেখানে তারা নামাজ আদায় করে অথবা ধর্মীয় অন্য কোনো বিষয়ে অংশগ্রহণ করে। এসবের কারণে পুরোপুরি ধর্মীয় আবহে অনেকটা নির্বিঘ্নে বসবাস করছেন মুসলমানরা। সব মিলিয়ে বেশ ভালোই আছেন কানাডিয়ান মুসলমানরা।
zahirbabor@yahoo.com
No comments