শেয়ারবাজার-নিয়মনীতি মানতেই হবে
শেষ পর্যন্ত পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে তাদের পরিচালকদের নূ্যনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা মান্য করাতে কিছুটা কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ব্যর্থ পরিচালকদের পরিচালনা পরিষদ থেকে বাদ দেওয়া ও পরিচালনা পরিষদ পুনর্গঠন করার জন্য কোম্পানিগুলোকে ১৫ নভেম্বর সময়সীমা বেঁধে
দিয়েছে। ইতিপূর্বে তাগাদা দেওয়ার পরও কোম্পানিগুলো পরিচালকদের শেয়ার ধারণ সংক্রান্ত সঠিক তথ্য পর্যন্ত অবহিত করার প্রয়োজন বোধ করেনি। অথচ দেশের অস্থিতিশীল শেয়ারবাজারকে স্থিতিশীল করতে সংস্কারমূলক অনেক পদক্ষেপের মধ্যে এটি অন্যতম শর্ত। বাজারকে ম্যানিপুলেটমুক্ত করা এবং যুক্তিগ্রাহ্য করতে হলে কোম্পানিগুলোকে নিয়মনীতির মধ্যে আসতেই হবে। দেনদরবার ও মামলার কারণে এমনিতেই অনেক সময় পেরিয়ে গেছে। এখন কালক্ষেপণের যুক্তি নেই। শেয়ারবাজারের মোট ২৩৮টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কোন কোন কোম্পানির পরিচালকরা দুই শতাংশ শেয়ার ধারণ করেননি এবং এরপরও পদ আঁকড়ে আছেন_ এটা বের করা কঠিন কাজ নয়। এসইসি তাদের খুঁজে বের করতে অক্ষম_ এটাও ভাবার কারণ নেই। কোম্পানিগুলো যাতে স্বেচ্ছায় তাদের পরিচালকদের শেয়ার ধারণ সম্পর্কিত সঠিত তথ্য দেয় এবং নিয়ম পালনে ব্যর্থ পরিচালককে বাদ দিয়ে তাদের শূন্য পদে নতুন পরিচালক অন্তর্ভুক্ত করে, সে জন্যই এসইসি গত ২১ মে এ সংক্রান্ত সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার পর বারবার তাগাদা দিয়েছিল। কিন্তু কোম্পানিগুলো এ ব্যাপারে নির্দেশনা অনুযায়ী তথ্য দিয়েও সহযোগিতা করার আগ্রহ দেখায়নি। ফলে অনন্যোপায় হয়েই এসইসিকে সর্বশেষ নির্দেশটি জারি করতে হয়েছে। কোম্পানিগুলো এসইসির নির্দেশ পালন করে বাজারে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে_ এটাই প্রত্যাশিত। যারা নিয়ম অনুযায়ী দুই শতাংশ শেয়ার ধারণ করেন না, তাদের ব্যর্থতার দায়ভার কেন কোম্পানি বহন করবে? আর যেহেতু বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়ে নিষ্পত্তি হয়েছে, তাই এটা নিয়ে গড়িমসি করা উচিত হবে না। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই নিয়মনীতি মানতে হবে। বাজার ঊর্ধ্বর্মুখী হওয়ার সময় যেসব পরিচালক তাদের ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা না মেনে বাজারে শেয়ার ছেড়ে মোটা অঙ্কের লাভ তুলেছেন বা যেসব পরিচালকের আদৌ দুই শতাংশ শেয়ার ছিল না এবং রাজনৈতিক বা অন্য কোনো কারণে পরিচালক হয়েছেন, সেই হাতেগোনা কয়েকজনের জন্য নিয়মের ব্যত্যয় ঘটা উচিত নয়।
No comments