আল্লাহর স্মরণে সময় কাটুক by মো. গোলাম কিবরিয়া

জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগাতে হবে। মহান আল্লাহপাকের ঘোষণা_ 'সময়ের কসম, নিশ্চয়ই মানবজাতি ক্ষতির মধ্যে ডুবে রয়েছে। তবে তারা ছাড়া_ যারা ইমান এনেছে আল্লাহর ওপর ও ভালো কাজ করেছে আর যারা একে অন্যকে সত্য ও ধৈর্যের কথা বলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত নয়।


' তাই সময়কে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে জীবনে সাফল্য আনতে হবে। মানুষ অসীম সম্ভাবনার অধিকারী।
কোরআনের শিক্ষাকে পুঁজি বানিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সিসা ঢালা প্রাচীরের মতো কাজ করে যেতে হবে মানবতার জন্য। মনে রাখতে হবে, আমরা পৃথিবীতে বেশি দিন থাকতে আসিনি; অল্প কয়েকদিন পরই চলে যেতে হবে আল্লাহর সানি্নধ্যে। কোরআন বলছে, 'প্রত্যেককেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে, অতঃপর তাঁর (রবের) কাছে ফিরে যেতে হবে।' মহানবী (সা.) বলেন, 'এমনভাবে দুনিয়ায় চলবে যাতে মনে হয় তুমি একজন মুসাফির_ যে ব্যক্তি পথ চলতে চলতে কোনো বৃক্ষের নিচে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়, অতঃপর আবার চলতে শুরু করে; অর্থাৎ কিছুক্ষণ বিশ্রামই পার্থিব জীবন।' মনে রাখুন, আমাদের আসল ঠিকানা কিন্তু জান্নাত। সেই মনজিলে পেঁৗছার জন্য আমাদের পার্থিব জীবন সাফল্যের সঙ্গে পাড়ি দিতে হবে, সেটাই চূড়ান্ত সাফল্য। চূড়ান্ত ফলাফল তো আল্লাহর হাতে, আমাদের সাধ্যমতো পরিশ্রম করতে হবে। আমাদের হতাশ হলে চলবে না। হতাশার বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে চোখ রাখতে হবে কোরআনের দিকে। আশার এ আলো দেখতে হবে মনের চোখ দিয়ে। আর ক্ষণস্থায়ী এ পার্থিব জীবনের মোহে ডুবে থাকা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। হজরত মোহাম্মদ (সা.) বলেছেন, 'তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি বুদ্ধিমান, যে ব্যক্তি মৃত্যুর কথা স্মরণ করে এবং এর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। সুতরাং মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হলে অর্থ ও জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা সর্বাধিক। অর্থ না থাকলে লজ্জিত হতে হয় আর জ্ঞান না থাকলে অপমানিত হতে হয়। এ জন্য অর্থ ও জ্ঞানের সম্মিলনে নিজেকে একজন সমৃদ্ধ ও সার্থক মানুষ হিসেবে তৈরি করতে হবে। সবচেয়ে বড় বন্ধু কিন্তু খোদাতায়ালা। খোদার সঙ্গে যার বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয় তার জন্য আর কোনো শঙ্কা থাকতে পারে না। আল্লাহ বলেন, 'তোমরা তাদের মতো হয়ো না যারা আল্লাহতায়ালাকে ভুলে গেছে, ফলে তারা নিজেরা নিজেদেরই ভুলে গেছে, আর তারা ক্ষতিগ্রস্ত।'
মহান আল্লাহকে সুখ-দুঃখে কোনো অবস্থাতেই ভুলে যাওয়া যাবে না। কোরআন ঘোষণা করেছে, 'শুনে রাখো, আল্লাহর স্মরণ দ্বারাই আত্মা শান্তি পায়।' পার্থিব জীবনে নিজেদের যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা বড়ই কঠিন। হরেক রকম সমস্যায় পার্থিব জীবন পরিপূর্ণ। এ সমস্যা কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে; কিন্তু আমাদের স্রষ্টার ওপর তাওয়াক্কুল রেখে এগিয়ে যেতে হবে। আল্লাহ বলেন, 'আমি মানুষকে কষ্ট-ক্লেশের ওপরই সৃষ্টি করেছি।' এ জন্য মানুষের শৈশবকাল, কৈশোরকাল, যৌবনকাল, বার্ধক্যকাল_ সব কালেই কাজ আর কাজ। লেখাপড়া শেখা, পরীক্ষায় পাস করা, চাকরি-বাকরি, সংসার জীবন, সন্তান লালনপালন সবকিছুই যেন একটার পর একটা নিরন্তর ধেয়ে চলছে; এটাই পার্থিব জীবন। কোরআনের বাণী_ 'এ পার্থিব জীবন তো খেল-তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।' সে জন্য জীবনকে বুঝতে হবে এবং পরকালীন অনন্ত জীবনের জন্য তৈরি হতে হবে।
 

No comments

Powered by Blogger.