অভয়নগরে ধর্ষণের বিচার না পেয়ে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা!

যশোরের অভয়নগর উপজেলার ডহর মশিয়াহাটি গ্রামে গতকাল বৃহস্পতিবার সংগীতা মণ্ডল (১৪) নামের এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। ধর্ষণের বিচার না পেয়ে সে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে সুন্দলী এসটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্রী।


এলাকাবাসী জানান, গত বুধবার সন্ধ্যায় ডহর মশিয়াহাটি রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ভবন হালদারের কাছে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফিরছিল সংগীতা। পথে প্রতিবেশী লিউটন মণ্ডল (২৫) তার হাত থেকে খাতা কেড়ে নিয়ে দৌড়ে তাঁদের ঘরে চলে যান। সংগীতা খাতা আনতে সেখানে গেলে লিউটন ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন। বাড়ি ফিরে সে বিষয়টি মা-বাবাকে জানায়। ওই রাতেই বাবা কার্তিক মণ্ডল বিষয়টি লিউটনের বাবা প্রহ্লাদ মণ্ডলকে জানান। মেয়েকে পুত্রবধূ হিসেবে গ্রহণ করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু প্রহ্লাদ মণ্ডল তাঁকে অপমান করে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে গতকাল দুপুরে সংগীতা ঘরের চালের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
কার্তিক মণ্ডল বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমি ওই রাতে পাষণ্ডের বাবার কাছে বিচারের দাবি নিয়ে গিয়েছিলাম। মেয়েটিকে পুত্রবধূ হিসেবে গ্রহণ করতে অনুরোধও করেছিলাম। কিন্তু সে আমাকে অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমি এর বিচার চাই।’
সুন্দলী এসটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক নীলকোমল মণ্ডল বলেন, সংগীতা অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিল। সে পঞ্চম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.০৭ পেয়েছিল। ক্লাসে তার রোল নম্বর ৩ ছিল।
ঘটনার পর থেকে লিউটন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপন করেছেন। এ কারণে কথা বলতে তাঁদের বাড়িতে গেলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী আবদুস ছালেক বলেন, ‘মেয়েটি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুধু তাঁর মা বলছে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তেমন আলামত পাওয়া যায়নি। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু বলা সম্ভব নয়।’

No comments

Powered by Blogger.