হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত
হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে সোনালী ব্যাংক। পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ কুমার দত্ত গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জানান, অভ্যন্তরীণ তদন্ত ও নিরীক্ষা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া আগামী সপ্তাহে শুরু হবে।
আত্মসাৎ করা অর্থ উদ্ধারকে পর্ষদ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে উল্লেখ করলেও কিভাবে এবং কত দিনে তা সম্ভব হবে, এ বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল শাখা থেকে হলমার্ক গ্রুপ নামের অখ্যাত একটি কম্পানির সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষাতেই প্রথম ধরা পড়ে। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরীক্ষাতে জালিয়াতির ঘটনাটির বিস্তারিত প্রকাশ পায়। ব্যাংক নিযুক্ত একটি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফার্মের করা সর্বশেষ নিরীক্ষায় সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখা ও প্রধান কার্যালয়ের কিছু কর্মকর্তার শৈথিল্যকে এর জন্য দায়ী করা হয়। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, কেবল নির্ধারিত অভ্যন্তরীণ তদন্ত দেরিতে শুরু করার কারণেই হলমার্ক গ্রুপ ও বেনামে আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়মবহির্ভূতভাবে এক হাজার ৮৬০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। গত মে মাস পর্যন্ত হলমার্ক ও একই মালিকানার অন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে একটি মাত্র শাখা থেকেই তিন হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিন হাজার ৬০৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই। আঞ্চলিক ও প্রধান কার্যালয়ের শিথিল তদারকির সুযোগ নিয়ে সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপক অবৈধ উপায়ে বিপুল পরিমাণ ঋণ বিতরণ করেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে গতকাল রাত ৮টায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাংবাদিকদের জানান, প্রতিবেদনে ৪১-৪২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভূমিকার কথা উল্লেখ রয়েছে। তাঁরা রূপসী বাংলা শাখা ও প্রধান কার্যালয়সহ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরত। জালিয়াতির সঙ্গে যাঁদের সম্পৃক্ততা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হবে, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ও তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাঁদের সবার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অর্থ আদায় প্রসঙ্গে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, 'ঋণের বিপরীতে বেশ কিছু জমি বন্ধক রয়েছে। সেসব জমির কাগজপত্র যাচাই করা হচ্ছে।'
No comments