ধৈর্য ও সংযমের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে by এএসএম শাহজাহান
আজ সোমবার রাজধানী ঢাকাতে কী ঘটতে চলেছে, এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার শেষ নেই। পাল্টাপাল্টি বক্তব্য রয়েছে সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে। রাজনৈতিক নেতাদের কারও কারও বক্তব্য তো রীতিমতো যুদ্ধংদেহী। ১২ মার্চ চলো চলো ঢাকা চলো কর্মসূচি যারা দিয়েছে, তাদের একজন বলেছেন_ ঢাকার রাস্তায় এদিন রিকশা ও মোটরগাড়ি চলাচলের স্থানও
থাকবে না। সব ভরে যাবে মানুষে। অন্যপক্ষ বলছেন, অচেনা লোক দেখলে পুলিশে খবর দিন। হোটেলে হোটেলে তদারকি চলছে। অতিথি রাখার বিষয়ে আরোপিত হয়েছে বিবিধ নিষেধাজ্ঞা। যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রিত। সব মিলিয়ে শঙ্কার পাশাপাশি নাগরিক জীবনে সৃষ্টি হয়েছে চরম দুর্ভোগও। দেশের নানা প্রান্ত থেকে জরুরি প্রয়োজনেও অনেকে ঢাকায় আসতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতি যাদের কারণে সৃষ্টি হলো, তাদের তরফে কিন্তু দুঃখ প্রকাশ করা হচ্ছে না। আরও দুশ্চিন্তার বিষয়, আজকের দিনটি অতিক্রান্ত হলেই যে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে_ এমন ভরসা জনগণ পাচ্ছে বলে মনে হয় না।
প্রধান বিরোধী দলসহ কয়েকটি দলের 'চলো চলো ঢাকা চলো' কর্মসূচি পালনের সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ নাশকতা চালাতে পারে, এমন আশঙ্কা রয়েছে সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। এর মোকাবেলায় গণগ্রেফতার করা হচ্ছে। সমাবেশ-মিছিলেও আরোপ করা হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ। ফলে সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে। গণতান্ত্রিক পরিবেশে এ ধরনের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার প্রশ্ন আসে না। একই সঙ্গে এ ধরনের কর্মসূচি যারা গ্রহণ করেন, তাদের দায়িত্ব বেআইনি তৎপরতা কোনোভাবেই পরিচালিত হতে না দেওয়া। আশার কথা যে, প্রধান বিরোধী দল বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্মীদের আহ্বান জানানো হয়েছে সংযত থাকতে। তবে একই সঙ্গে বিরোধী নেতৃত্বকে সতর্কও থাকতে হবে। তাদের কাঁধে বন্দুক রেখে অন্যরা যেন সুযোগ নিতে না পারে, এটা নিশ্চিত করায় সম্ভাব্য সবকিছু করা চাই।
সুশৃঙ্খলভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে আমাদের কিন্তু ভালো অভিজ্ঞতাও রয়েছে। গত দুই দশকে সরকারের বিরুদ্ধে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করা হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলের সরকারের আমলেই সেটা ঘটেছে। সরকারের তরফে বিরোধীদের রাজনৈতিক কর্মসূচি নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য সব ধরনের সহায়তা প্রদানের নজিরও রয়েছে। অতিসম্প্রতি চারদলীয় জোট দেশের কয়েকটি এলাকায় ঢাকা থেকে রোডমার্চ শেষে জনসভা করেছে। প্রতিটি কর্মসূচিতে শত শত গাড়ি অংশ নিয়েছে। কোথাও কোনো শান্তি বিঘ্নের ঘটনা ঘটেনি। এইচএম এরশাদের জাতীয় পার্টিও একাধিক রোডমার্চ করেছে। আজকের কর্মসূচির ক্ষেত্রেও একই মনোভাব প্রত্যাশিত। উভয়পক্ষ আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সমঝোতায় পেঁৗছতে পারে।
ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য একটি ইতিবাচক বার্তা দেওয়া হয়েছে জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনের মেয়াদ বৃদ্ধির মাধ্যমে। বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা যাতে ১২ মার্চের কর্মসূচি পালন শেষে সংসদ অধিবেশনে উপস্থিত হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালে তাদের দাবি উপস্থাপন করতে পারেন সে জন্যই সম্ভবত এ উদ্যোগ। আশা করব, বিরোধীরা সংসদে যাবেন এবং দুই দলই জাতীয় স্বার্থে উদার মনোভাব নিয়ে আলোচনায় বসবে। তাতে সমস্যার সমাধান মিলবেই। যদি বিরোধীদের ১২ মার্চ এবং সরকারি জোটের ১৪ মার্চের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয় তাহলে সংসদের আলোচনায় তার প্রভাব পড়বে। এ ধরনের কর্মসূচি গণতান্ত্রিক সমাজে স্বীকৃত। কিন্তু কোনোভাবেই সেটা যেন পেশিশক্তির প্রদর্শনীতে পরিণত না হয়। পারস্পরিক দোষারোপ কিংবা হিংসাত্মক ও উস্কানিমূলক বক্তব্যও পরিহার করা চাই। সব পক্ষ সচেষ্ট থাকলে সুস্থ রাজনৈতিক ধারা বজায় রাখা অসম্ভব নয়। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্যও এর প্রয়োজন অনস্বীকার্য।
আমরা জানি, ক্ষমতা যখন গণতন্ত্রের চেয়ে প্রাধান্য পেতে থাকে, তখন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। ক্ষমতাসীন ও বিরোধী উভয় তরফেই এটা হতে পারে। আর পরিণতিতে ক্ষমতা ও গণতন্ত্র উভয়ের জন্যই সৃষ্টি হয় ঝুঁকি। ক্ষমতার মোহে একের পর এক স্বার্থপর কর্মসূচি নেওয়া হতে থাকে। উপেক্ষিত হয় বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থ।
আমাদের রাজনীতিকরা বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দেখিয়েছেন। এখনও তারা পিছপা হবেন না বলেই আশা করব। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পরবর্তী দুটি বছরের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে, জনগণ গণতন্ত্র চায়। সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি চায়। রাজনৈতিক দলগুলোও এ সময়ে প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছে।
অবরোধ-হরতাল বা এ ধরনের কর্মসূচি ঘোষিত হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বিশেষ চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়। আমি ব্যক্তিগতভাবেও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের সময় ঢাকার পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে আমি সেখানে দায়িত্ব পালন করেছি। নব্বইয়ের দশকে একাধিক বড় ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি মোকাবেলা করেছি পুলিশের শীর্ষ পদে থেকে। আমি সর্বদাই একটি অনুশাসন মেনে চলার চেষ্টা করেছি এবং সেটা হচ্ছে বৃহত্তর জনস্বার্থের প্রশ্ন জড়িত, এমন পরিস্থিতিতে পিছু হটেও লাভবান হওয়া যায়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ক্ষমতা অসীম। কিন্তু অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত উস্কানির মুখে তারা চরম ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে থাকে এবং তা সবার জন্যই মঙ্গল ডেকে আনে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, গুলি করা কিংবা এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে আইনের দৃষ্টিতে তা অন্যায় বলে গণ্য হবে না। কিন্তু দেখা যায়, সংযম ও সহিষ্ণু আচরণ শেষ পর্যন্ত ভালো ফল এনে দেয়। আশা করব, আজ এবং সামনের কয়েকটি দিন ধৈর্যের পরীক্ষায় সব পক্ষ উত্তীর্ণ হবে। এ ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর রয়েছে বিশেষ দায়িত্ব। এটা স্বীকার করতে হবে যে, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা রয়েছে এবং এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সর্বদাই স্থিতিশীলতা কামনা করে। ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতার বাইরে থাকা সব দলকেই এ বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে। আইনের শাসনের প্রতি আনুগত্যও সবার কাছে প্রত্যাশিত। ক্ষমতাসীন দলের অনেকের মধ্যে নিজেদের আইনের ঊধর্ে্ব মনে করার প্রবণতা থাকে। এটা এখন যেমন সত্য, তেমনি তা ছিল নিকট ও দূর অতীতেও। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এর বিস্তার ঘটেছে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হলে এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতেই হবে।
এএসএম শাহজাহান : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা
এবং সাবেক আইজিপি
প্রধান বিরোধী দলসহ কয়েকটি দলের 'চলো চলো ঢাকা চলো' কর্মসূচি পালনের সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ নাশকতা চালাতে পারে, এমন আশঙ্কা রয়েছে সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। এর মোকাবেলায় গণগ্রেফতার করা হচ্ছে। সমাবেশ-মিছিলেও আরোপ করা হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ। ফলে সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে। গণতান্ত্রিক পরিবেশে এ ধরনের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার প্রশ্ন আসে না। একই সঙ্গে এ ধরনের কর্মসূচি যারা গ্রহণ করেন, তাদের দায়িত্ব বেআইনি তৎপরতা কোনোভাবেই পরিচালিত হতে না দেওয়া। আশার কথা যে, প্রধান বিরোধী দল বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্মীদের আহ্বান জানানো হয়েছে সংযত থাকতে। তবে একই সঙ্গে বিরোধী নেতৃত্বকে সতর্কও থাকতে হবে। তাদের কাঁধে বন্দুক রেখে অন্যরা যেন সুযোগ নিতে না পারে, এটা নিশ্চিত করায় সম্ভাব্য সবকিছু করা চাই।
সুশৃঙ্খলভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে আমাদের কিন্তু ভালো অভিজ্ঞতাও রয়েছে। গত দুই দশকে সরকারের বিরুদ্ধে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করা হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলের সরকারের আমলেই সেটা ঘটেছে। সরকারের তরফে বিরোধীদের রাজনৈতিক কর্মসূচি নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য সব ধরনের সহায়তা প্রদানের নজিরও রয়েছে। অতিসম্প্রতি চারদলীয় জোট দেশের কয়েকটি এলাকায় ঢাকা থেকে রোডমার্চ শেষে জনসভা করেছে। প্রতিটি কর্মসূচিতে শত শত গাড়ি অংশ নিয়েছে। কোথাও কোনো শান্তি বিঘ্নের ঘটনা ঘটেনি। এইচএম এরশাদের জাতীয় পার্টিও একাধিক রোডমার্চ করেছে। আজকের কর্মসূচির ক্ষেত্রেও একই মনোভাব প্রত্যাশিত। উভয়পক্ষ আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সমঝোতায় পেঁৗছতে পারে।
ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য একটি ইতিবাচক বার্তা দেওয়া হয়েছে জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনের মেয়াদ বৃদ্ধির মাধ্যমে। বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা যাতে ১২ মার্চের কর্মসূচি পালন শেষে সংসদ অধিবেশনে উপস্থিত হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালে তাদের দাবি উপস্থাপন করতে পারেন সে জন্যই সম্ভবত এ উদ্যোগ। আশা করব, বিরোধীরা সংসদে যাবেন এবং দুই দলই জাতীয় স্বার্থে উদার মনোভাব নিয়ে আলোচনায় বসবে। তাতে সমস্যার সমাধান মিলবেই। যদি বিরোধীদের ১২ মার্চ এবং সরকারি জোটের ১৪ মার্চের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয় তাহলে সংসদের আলোচনায় তার প্রভাব পড়বে। এ ধরনের কর্মসূচি গণতান্ত্রিক সমাজে স্বীকৃত। কিন্তু কোনোভাবেই সেটা যেন পেশিশক্তির প্রদর্শনীতে পরিণত না হয়। পারস্পরিক দোষারোপ কিংবা হিংসাত্মক ও উস্কানিমূলক বক্তব্যও পরিহার করা চাই। সব পক্ষ সচেষ্ট থাকলে সুস্থ রাজনৈতিক ধারা বজায় রাখা অসম্ভব নয়। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্যও এর প্রয়োজন অনস্বীকার্য।
আমরা জানি, ক্ষমতা যখন গণতন্ত্রের চেয়ে প্রাধান্য পেতে থাকে, তখন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। ক্ষমতাসীন ও বিরোধী উভয় তরফেই এটা হতে পারে। আর পরিণতিতে ক্ষমতা ও গণতন্ত্র উভয়ের জন্যই সৃষ্টি হয় ঝুঁকি। ক্ষমতার মোহে একের পর এক স্বার্থপর কর্মসূচি নেওয়া হতে থাকে। উপেক্ষিত হয় বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থ।
আমাদের রাজনীতিকরা বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দেখিয়েছেন। এখনও তারা পিছপা হবেন না বলেই আশা করব। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পরবর্তী দুটি বছরের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে, জনগণ গণতন্ত্র চায়। সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি চায়। রাজনৈতিক দলগুলোও এ সময়ে প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছে।
অবরোধ-হরতাল বা এ ধরনের কর্মসূচি ঘোষিত হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বিশেষ চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়। আমি ব্যক্তিগতভাবেও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের সময় ঢাকার পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে আমি সেখানে দায়িত্ব পালন করেছি। নব্বইয়ের দশকে একাধিক বড় ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি মোকাবেলা করেছি পুলিশের শীর্ষ পদে থেকে। আমি সর্বদাই একটি অনুশাসন মেনে চলার চেষ্টা করেছি এবং সেটা হচ্ছে বৃহত্তর জনস্বার্থের প্রশ্ন জড়িত, এমন পরিস্থিতিতে পিছু হটেও লাভবান হওয়া যায়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ক্ষমতা অসীম। কিন্তু অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত উস্কানির মুখে তারা চরম ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে থাকে এবং তা সবার জন্যই মঙ্গল ডেকে আনে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, গুলি করা কিংবা এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে আইনের দৃষ্টিতে তা অন্যায় বলে গণ্য হবে না। কিন্তু দেখা যায়, সংযম ও সহিষ্ণু আচরণ শেষ পর্যন্ত ভালো ফল এনে দেয়। আশা করব, আজ এবং সামনের কয়েকটি দিন ধৈর্যের পরীক্ষায় সব পক্ষ উত্তীর্ণ হবে। এ ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর রয়েছে বিশেষ দায়িত্ব। এটা স্বীকার করতে হবে যে, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা রয়েছে এবং এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সর্বদাই স্থিতিশীলতা কামনা করে। ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতার বাইরে থাকা সব দলকেই এ বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে। আইনের শাসনের প্রতি আনুগত্যও সবার কাছে প্রত্যাশিত। ক্ষমতাসীন দলের অনেকের মধ্যে নিজেদের আইনের ঊধর্ে্ব মনে করার প্রবণতা থাকে। এটা এখন যেমন সত্য, তেমনি তা ছিল নিকট ও দূর অতীতেও। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এর বিস্তার ঘটেছে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হলে এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতেই হবে।
এএসএম শাহজাহান : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা
এবং সাবেক আইজিপি
No comments