বিশেষ সাক্ষাৎকার-বাইরের কারও নয়, নিজেদের অস্তিত্বের জন্য লড়ছি by রানা দাশগুপ্ত

রানা দাশগুপ্তের জন্ম ১৯৪৯ সালের ১ নভেম্বর, চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি নেওয়ার পর তিনি ১৯৭৭ সালে আইন পেশায় যোগ দেন। থমসন ফাউন্ডেশনের ফেলো ছিলেন।


ছাত্রাবস্থায় শিক্ষা আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে তিনি আইয়ুব ও ইয়াহিয়া খানের শাসনামলে তিনবার কারাবরণ করেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়ন-কমিউনিস্ট পার্টির গেরিলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে। বর্তমানে তিনি মানবাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১০ সালে জেনেভায় জাতিসংঘ সংখ্যালঘুবিষয়ক সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। আটটি বইয়ের রচয়িতা রানা দাশগুপ্ত ৩৪ বছর ধরে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন।
 সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান ও কাজল রশীদ

প্রথম আলো  আপনাদের দীর্ঘদিনের দাবি-আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন সংশোধনী বিল সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। এতে নানা রকমের অসংগতির অভিযোগ উঠেছে। আপনার অভিমত কী?
রানা দাশগুপ্ত  অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ সংশোধনী বিল, ২০১১ সম্প্রতি সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। ২০১১ সালের ১০ জানুয়ারি বিলটি যখন সংসদে উত্থাপনের কথা ছিল, তার আগেই আমরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। মিটিং, মিছিল, মানববন্ধন সবই করেছি। রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে, সাংসদদের সঙ্গে বসেছি। এর কারণ ছিল একটাই—এই বিলটি সংখ্যালঘুদের স্বার্থবিরোধী। ২০০১ সালের আইনটি হয়েছিল অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণের জন্য। সেই আইনে যতটুকু ইতিবাচক দিক ছিল, ২০১১ সালের প্রস্তাবিত আইনে তা-ও নেই। আমরা মনে করি, এটি সংখ্যালঘু স্বার্থবিরোধী। এটি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী বিল। রায়ে বলা হয়েছিল, এনিমি প্রপার্টিজ আইন মৃত হয়ে গেছে ১৯৭৪ সালের ২৩ মার্চ। এরপর কোনো সম্পত্তি আর এনিমি বা ভেসটেড হিসেবে গণ্য হবে না। আমাদের সংবিধানে সম-অধিকার ও সমমর্যাদার কথা বলা হয়েছে। আমরা মনে করি, এই বিলটি এসবেরও পরিপন্থী। আমাদের বিশ্বাস, উত্থাপিত বিল যদি সংসদে গৃহীত হয়, তবে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী নতুন করে উচ্ছেদের শিকার এবং অবর্ণনীয় হয়রানির মুখোমুখি হবে।
প্রথম আলো  বিলটি তো সংসদে উত্থাপিত হয়ে গেছে। এখন কী করবেন?
রানা দাশগুপ্ত  উত্থাপন হওয়ার আগেই আমরা মহাজোটের শরিক নেতাদের সঙ্গে, সাংসদদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি, কেন বিলটি অগ্রহণযোগ্য। গত বছরের ১ জানুয়ারি বিলটি সংসদে ওঠানোর কথা ছিল। সেদিন এটিকে স্থগিত করা হয় এবং এর ১৫ দিন পর সংসদের ১ নম্বর কক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি একটি বৈঠকের আয়োজন করে। তাতে সভাপতিত্ব করেন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। সেদিন আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, আমরা কেন এই বিলের বিরোধিতা করছি। আমরা সেদিন স্পষ্ট করে জানিয়েছিলাম, এই বিল কী করে আমাদের সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সিদ্ধান্তের বরখেলাপ। আমরা বলেছিলাম, এই বিল যদি আইনে পরিণত হয়, তাহলে কী করে ২০০১ সালে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকারের আমলে যে প্রত্যর্পণ আইনটি হয়েছিল, ওই আইনের যে ইতিবাচকতা, সেটি কী করে নেতিবাচকতার দিকে ঠেলে দেবে। আমরা এ-ও বলেছিলাম, এই বিলটি আইনে পরিণত হলে বাংলাদেশে ৪৫ বছর ধরে যেসব সংখ্যালঘু বসতবাড়ি আঁকড়ে ধরে আছে, তারা উচ্ছেদ হয়ে যাবেন। তৃণমূলে সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে পড়বে এবং নতুন করে অস্থিতিশীলতা দেখা দেবে। সেদিন উপস্থিত মন্ত্রী, সাংসদ সবাই আমাদের বক্তব্যকে যৌক্তিক বলে গ্রহণ করেছিলেন এবং সেদিনের সভাপতি সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ঐক্য পরিষদের প্রস্তাবগুলো বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১ সংসদে গৃহীত হওয়ার পর আমরা বলেছিলাম, আইনটি ইতিবাচক, তবে সেখানে কিছু অপূর্ণতা রয়েছে, কিছু অসম্পূর্ণতা রয়েছে, কিছু দ্ব্যর্থবোধকতা রয়েছে। আমরা বলেছিলাম, এগুলো নিরসন করে আইনটি বাস্তবায়ন করা বাঞ্ছনীয়। প্রথমত, মূল আইনে মালিকের যে সংজ্ঞা রয়েছে, সেখানে আমাদের প্রস্তাব ছিল, মালিকের সংজ্ঞায় সহ-অংশীদারের সম্পত্তি মালিকানা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। কারণ হিন্দু পরিবারগুলো হচ্ছে যৌথ, একান্নবর্তী পরিবার। দ্বিতীয়ত, মূল আইনে রয়েছে, সম্পত্তি ফিরে পাবে তারা, যারা অব্যাহতভাবে বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা বলেছিলাম, অব্যাহতভাবে শব্দটি বাদ দেওয়া হোক, এটি অপ্রয়োজনীয় শব্দ। উল্টো এটি নানা মারপ্যাঁচের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তৃতীয়ত, প্রশাসন অবৈধভাবে কলমের খোঁচায় যেগুলোকে অর্পিত সম্পত্তি বলে চিহ্নিত করে রেখেছে, সেগুলো বাতিল ঘোষণা করতে হবে।
প্রথম আলো  ১৯৭৪ সালের ২৩ মার্চের পর কী পরিমাণ জমি অর্পিত সম্পত্তি ঘোষণা করা হয়েছে?
রানা দাশগুপ্ত  আমাদের কাছে সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, চার লাখ ৪৫ হাজার ৯২২ একরের মতো সম্পত্তি তারা অবৈধভাবে অর্পিত সম্পত্তি বলে চিহ্নিত করে রেখেছে। আমাদের দাবি হলো, সরকার যেগুলো অর্পিত সম্পত্তি বলে চিহ্নিত করে রেখেছে, আইনের বিধানমতে এনিমি প্রপার্টি নেই। মৃত আইনকে জীবিত হিসেবে দেখিয়ে যা কিছু করা হয়েছে, সবটাই অন্যায় এবং অবৈধ। আমাদের প্রস্তাবগুলো সেদিন সবাই যৌক্তিক ও যথার্থ বলে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।
প্রথম আলো  এই বিলের সঙ্গে ২০০১-এ পাস হওয়া আইনের অসংগতি কোথায়? নেতিবাচক দিকগুলোই বা কী?
রানা দাশগুপ্ত  ২০০১ সালে যে অপূর্ণতা, অসম্পূর্ণতা ও দ্ব্যর্থবোধকতা ছিল, সেগুলো পূরণের জন্য কোনো সংশোধনী আনা হয়নি। ২০০১ সালের আইনে বলা হয়েছিল, এই আইনটি বলবৎ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের আর কোনো সম্পত্তির ওপর স্বত্ব, স্বার্থ থাকবে না। এখন প্রশ্ন হলো, কোন সম্পত্তিগুলো আইনের আওতায় এসেছিল—আইনের আওতায় এসেছিল সেগুলো, যেগুলো অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে ঘোষিত হয়ে সরকারে ন্যস্ত হয়েছে।
প্রথম আলো  ২০০১ সালের ওই আইনের পরও কি অর্পিত সম্পত্তি ঘোষিত হয়েছে?
রানা দাশগুপ্ত  হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। এখানে উদ্দেশ্য একটাই, সংখ্যালঘুদের জমি থেকে উচ্ছেদ করা এবং তাঁদের সবকিছু গ্রাস করার পাঁয়তারা, যার সঙ্গে জড়িত রয়েছে আমলা, প্রশাসন এবং রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা।
উল্লেখ্য, এনিমি প্রপার্টি আইন কিন্তু আন্তর্জাতিক একটি আইন এবং যা যুদ্ধকালীন সময়ের জন্য প্রযোজ্য। প্রশ্ন হলো, ভারতে জিয়া, সাত্তার, এরশাদ কারও বাড়ি এনিমি প্রপার্টি না হলেও বাংলাদেশে জ্যোতি বসুর বাড়ি এনিমি প্রপার্টি হয়েছে। শুধু উনি নন, ১৯৩০ সালে মারা গেলেও সূর্য সেনের বাড়িঘর এমনকি একাত্তরের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, গোবিন্দ চন্দ্র দেবের বাড়িঘর—সবকিছুই এনিমি প্রপার্টি হয়েছে।
প্রথম আলো  আমরা জানি, ১৯৬৫ সালের আইন ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে হিন্দু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে এই আইন হয়, সে ক্ষেত্রে বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানদের ক্ষেত্রেও কি এটি প্রযোজ্য?
রানা দাশগুপ্ত  আইনটি যখন হয়, তখন কিন্তু এসবের কিছুই ছিল না। আইনটা হলো, এই মুহূর্তে যারা পাকিস্তানে অবস্থান করছে না, ভারতে বা অন্যত্র অবস্থান করছে, তাদের অবর্তমানে সম্পত্তি সরকার তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দেখাশোনা করবে।
কিছুদিন পর একটি ঘোষণা দিয়ে এটিকে শুধু সংখ্যালঘুদের জন্য প্রযোজ্য করা হলো। এর পেছনে ছিল ভোটের রাজনীতি। তখনকার পাকিস্তান সরকারের লক্ষ্যই ছিল এই দেশটিকে শুধু মুসলমানের বাসভূমি করা। তাদের লক্ষ্য ছিল, যেকোনো প্রকারে এখান থেকে সংখ্যালঘুদের উচ্ছেদ করা; যার অংশ হিসেবে আইনের আশ্রয়েও অনেক অমানবিক কাজ করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী। উচ্ছেদটা শুরু হয় ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার একটি আইন জারি করে, যাতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে যেসব আইন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী, সেগুলো বাদ দিয়ে অন্যান্য আইন বলবৎ থাকবে। সে হিসেবে অর্পিত সম্পত্তি আইন বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা, কিন্তু তা করা হয়নি। আইনটি নাম বদল করে বলবৎ থাকে।
এরপর ১৯৭৪ সালের ২৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু সরকার ’৬৯ সালের আইয়ুব খানের গৃহীত অধ্যাদেশ বাতিল করে দেয়। কিন্তু তা বাস্তবায়নের আগেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান সরকার একটি অধ্যাদেশ জারি করে আগের আইনটি প্রয়োগ করতে থাকে। ’৮৪ সালে এরশাদ সরকার আগের অধ্যাদেশটি বাতিল করলেও যথাযথ বাস্তবায়িত হয়নি। শেখ হাসিনার সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে প্রত্যর্পণ আইনটি করলেও গেজেট করে যেতে পারেনি। ফলে ১০টা বছর ধরে অচলাবস্থা চলছে।
প্রথম আলো  অর্পিত বা শত্রু সম্পত্তি আইনে সংখ্যালঘুদের কী পরিমাণ জমি বেহাত হয়ে গেছে বলে মনে করেন?
রানা দাশগুপ্ত  নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না। মোট জমি থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কমপক্ষে ৪০ শতাংশ জমি ইতিমধ্যে হারিয়ে ফেলেছে। ড. আবুল বারকাতের গবেষণায় ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ জমির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রথম আলো  উত্তরাধিকার দুজনের ক্ষেত্রে একজন যদি ভারতে কিংবা অন্যত্র থাকেন, তাহলে সে ক্ষেত্রে সমাধানটা কী বলে আপনারা মনে করেন?
রানা দাশগুপ্ত  হিন্দু পরিবার সবই একান্নবর্তী। উত্তরাধিকারের একজন যদি বাইরে থাকেন, তাহলে সরকার সেটি নিয়ে নিচ্ছে এবং লিজ দিচ্ছে। প্রশ্ন হলো, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ক্ষেত্রে কি এই আইনটি প্রযোজ্য? না হলে হিন্দু সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে হবে কেন? সব ক্ষেত্রেই দেশের প্রচলিত আইন কার্যকর হওয়া উচিত।
সরকার বলছে, যেসব সম্পত্তির কোনো উত্তরাধিকার নেই, সেগুলোকে খাসজমি ঘোষণা করে বিক্রি বা স্থায়ী ইজারা দেবে। বলা হচ্ছে, এক চালের নিচে একসময় বাস করা তিন ভাইয়ের ক্ষেত্রে যাঁরা বর্তমানে আছেন, তাঁরা অগ্রাধিকার পাবেন। এখন প্রশ্ন হলো, তা-ই যদি হয়, তাহলে ওঁদের কি সেটা কেনার সামর্থ্য আছে? আর যদি না থাকে, অন্যত্র বিক্রি করা হয়, তাহলে বাকি দুই ভাই কি ওখানে বাস করতে পারবেন?
প্রথম আলো  প্রস্তাবিত বিলের কী সংশোধনী আপনারা চাচ্ছেন?
রানা দাশগুপ্ত  আমাদের সংশোধনী হলো, ২০০১ সালের যে মূল আইন, সেখানে মালিকের সংজ্ঞায় সহ-অংশীদার শব্দটি যুক্ত করা। ওখানে আছে, মূল মালিক বা তাঁর উত্তরাধিকার বা তাঁর স্বার্থাধিকার। আমরা বলছি, এখানে সহ-অংশীদার শব্দটি যোগ করতে হবে। এটা হলে যাঁরা ৪৫ বা ১০০ বছর ধরে তাঁদের জমিতে আছেন, তাঁরা সেখানেই থাকতে পারবেন। এটা হচ্ছে সংযোজন। আরেকটা হচ্ছে কর্তন। সেটা হলো, ‘অব্যাহত’ শব্দটা বাদ দেওয়া। বলা হচ্ছে, ‘অব্যাহতভাবে যারা এ দেশের নাগরিক’। আমাদের কথা হলো, ‘অব্যাহতভাবে’ শব্দটি রাখা কেন? বাংলাদেশ সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট অনুযায়ী, যারা নাগরিক তাদের সবার জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
প্রথম আলো  যারা এখানে বসবাস করছে না, কিংবা যারা চলে গেছে, তারা যদি এসে নতুন করে দাবি তোলে, তখন কী হবে?
রানা দাশগুপ্ত  কীভাবে করবেন? তাঁরা তো এখনকার ভোটার নন। তা ছাড়া একটি বিষয় পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা লড়াই করছি বাইরের কারও জন্য নয়, আমরা নিজেদের অস্তিত্বের জন্য লড়ছি। ৪৫ বছর ধরে যারা এখানকার কাদাজলে ভিজে একাকার হচ্ছি, তাদের অস্তিত্বের জন্য আমাদের এই চাওয়া। প্রধানমন্ত্রীকেও আমরা এ কথা বলেছি।
প্রথম আলো  সাম্প্রতিক সময়ে যে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হলো, এখানে কিছু স্পর্শকাতর বিষয় রয়েছে। এগুলোকে ঐক্য পরিষদ কীভাবে দেখছেন?
রানা দাশগুপ্ত  ২০০৮ সালে এই সরকার একটি দিনবদলের সনদ দিয়েছিল, সেখানে কিন্তু এসবের কিছুই ছিল না। রাষ্ট্রধর্ম রেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা করা যায় না। বঙ্গবন্ধু বাঙালি রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করেছেন। ধর্মীয় রাষ্ট্র ছেড়ে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন।
সংশোধনীর পর মনে হচ্ছে, আমরা আবার প্রতারিত হয়েছি, প্রবঞ্চিত হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিছক একটা স্লোগানে পরিণত হয়েছে।
প্রথম আলো  আপনাকে ধন্যবাদ।
রানা দাশগুপ্ত  ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.