রাজশাহী বিদ্যুৎকেন্দ্র-নিম্নমানের কাজের খেসারত

রাজশাহীর কাঁটাখালীর বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ক্ষমতা বেশি নয়_ মাত্র ৫০ মেগাওয়াট। কিন্তু সরকারি ব্যয়ে পিকিং প্লান্টটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে উত্তরাঞ্চলের এই জেলার বিদ্যুৎ সমস্যার খানিকটা লাঘব হতো। কিন্তু শনিবার বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণাধীন পাম্প হাউসের ছাদ ধসে পড়ে এবং এতে ১০ জন আহত হয়েছেন।


কেন এ বিঘ্ন? এ বিষয়ে স্থানীয় জনসাধারণের অভিযোগ_ ছাদের কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এ অভিমত যথার্থ কি-না, সেটা তদন্তসাপেক্ষ। আশা থাকবে, তদন্ত প্রক্রিয়া নির্বিঘ্ন্ন্নে হবে এবং রাজশাহী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কিংবা সরকারের কোনো মহল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে হস্তক্ষেপ করবে না। আগামী ১৭ এপ্রিল প্রকল্পটির উদ্বোধন হওয়ার কথা। নির্মাণ কাজ চলাকালে এ ধরনের বিপর্যয় সময়মতো কাজ সমাপনে সমস্যা সৃষ্টি করতেই পারে। সংশ্লি্নষ্টরা এ বিষয়টির প্রতি সর্বোচ্চ মনোযোগ প্রদান করবেন এবং নির্ধারিত সময়েই উদ্বোধনের জন্য সচেষ্ট হবেন, এটাই কাম্য। কথায় বলে, ঘর পোড়া গরু আকাশে সিঁদুরে মেঘ দেখলেও ভয় পায়। দেশের সর্বত্রই বিদ্যুৎ সমস্যা রয়েছে। উত্তরাঞ্চলের অধিবাসীরা বিশেষভাবে এর ভুক্তভোগী। গরম মৌসুমের শুরুতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হবে, এমন আশা ছিল তাদের। ছোট ছোট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মাধ্যমে সরকার বিদ্যুৎ সমস্যার দ্রুত সমাধান আশা করেছিল। এ ধরনের পদক্ষেপ ব্যয়বহুল এবং এ নিয়ে সরকারকে যথেষ্ট সমালোচনা সহ্য করতে হচ্ছে। কিন্তু রাজস্ব বাজেটের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করার পরও যদি সময়মতো বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা না যায়, তার দায় কে নেবে? আমরা আশা করব, কাঁটাখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাম্প হাউসের নির্মাণ কাজে ত্রুটি অনুসন্ধানের পাশাপাশি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের যেসব কর্মকর্তা তদারকি কাজে যুক্ত ছিলেন তাদের গাফিলতি রয়েছে কি-না সেটাও দেখা হবে। দোষীদের কঠোর দণ্ড নিশ্চিত করা চাই। পাম্প হাউসের ছাদ ধসে আহতরা দরিদ্র নির্মাণ শ্রমিক। তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকেই নিতে হবে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডও তাদের পাশে থাকবে বলে আশা করব।

No comments

Powered by Blogger.