হুমকির মুখে কেক কাটতে বাধ্য হলেন অধ্যক্ষ

রিশালে একটি অরাজনৈতিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জোর করে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান করেছেন ছাত্রলীগের বহিরাগত নেতা-কর্মীরা। কলেজের অধ্যক্ষ রাজনৈতিক কর্মসূচি না করার জন্য অনুরোধ জানালে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকির মুখে জোর করে তাঁকে দিয়েই কেক কাটাতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার বেলা দুইটায় নগরের ইসলামিয়া কলেজে এ ঘটনা ঘটে। কলেজ সূত্র জানায়, ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বরিশাল ইসলামিয়া


কলেজের ক্যাম্পাসটি রাজনীতিমুক্ত। গতকাল বেলা একটার দিকে কিছু বহিরাগত ছাত্রলীগের কর্মী এসে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের কেক কাটবে বলে অধ্যক্ষের কাছে দাবি জানান। এতে অধ্যক্ষ রাজি না হওয়ায় তাঁরা তাঁর সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। এ সময় উপস্থিত এক ছাত্রলীগের কর্মী মুঠোফোনে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিমউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলে ফোনটি অধ্যক্ষকে দেন। জসিম মুঠোফোনে অশালীন ভাষায় অধ্যক্ষকে গালাগাল দেন এবং যেকোনো মূল্যে ওই অনুষ্ঠান করা হবে বলে হুমকি দেন।
একপর্যায়ে বহিরাগত ব্যক্তিরা কলেজের সামনের সড়কে শুয়ে পড়েন। পরবর্তী সময়ে সেখানে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি, ব্রজমোহন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও ছাত্র কর্মপরিষদের সহসভাপতি মঈন তুষারসহ ছাত্রলীগের বেশ কিছু নেতা-কর্মী উপস্থিত হন। তাঁরা একপর্যায়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই জোর করে দলীয় ব্যানার টাঙিয়ে অধ্যক্ষকে কেক কাটতে বাধ্য করেন।
কলেজ অধ্যক্ষ মহসিন উল ইসলাম অভিযোগ করেন, নগর ও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের নিরীহ ছেলেমেয়েরা এই কলেজে পড়াশোনা করে। তাই প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে এটি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত। কোনো সরকারই এই প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেনি। কিন্তু গতকাল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জোর করে এখানে অনুষ্ঠান করেছে। বিষয়টি কাউনিয়া থানাকে অবহিত করলেও তারা রাজনৈতিক বিষয় বলে তা রাজনৈতিকভাবে সমাধান করার পরামর্শ দেয়।
ছাত্রলীগের মহানগর কমিটির সভাপতি জসিমউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বলেছি আমরা কেক কাটলে সমস্যা কী? ছাত্রলীগ একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। আমি তাঁর সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করিনি। তিনি নিজে উপস্থিত থেকে কেক কেটেছেন।’ মঈন তুষারের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা যায়নি।

No comments

Powered by Blogger.