গত বছর পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানি এসেছে ১৩টি
অর্থনৈতিক রিপোর্টার: বিদায়ী বছরে পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে ১৩টি। এর মধ্যে ৬টি মিউচুয়াল ফান্ড। জানা গেছে, ২০১০ সালে নতুন ইস্যুর সংখ্যা ছিল ২২টি। এর মধ্যে মিউচুয়াল ফান্ড ছিল ১২টি। গত বছর এ সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১৩টিতে। গত বছর বাজারে তালিকাভুক্ত ৭ কোম্পানি হলো- দেশবন্ধু পলিমার, সলভো কেমিক্যালস, বরকতউল্লাহ ইলেক্ট্রো ডায়নামিকস, এমআই সিমেন্ট, এমজেএল বাংলাদেশ, রংপুর ডেইরি ও জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ। মিউচুয়াল ফান্ডগুলো হলো- এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ইবিএল এনআরবি, সাউথইস্ট ব্যাংক ফার্স্ট, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড ও এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ মিউচুয়াল ফান্ড। জানা যায়, দর বৃদ্ধিতে এগিয়ে ছিল তালিকাভুক্ত নতুন এ ইস্যুগুলো। পুঁজিবাজারে মন্দার মাঝেও এ কোম্পানিগুলো অনেক ভাল করেছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ কোম্পানি তালিকাভুক্তির পর দর বেড়েছে। এর মধ্যে শেয়ারের প্রস্তাবিত দরের (অফার প্রাইস) তুলনায় দেশবন্ধু পলিমার ৩৪১ দশমিক ৬ শতাংশ, সলভো কেমিক্যালস ২৫৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি দর বেড়েছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিগুলোর মধ্যে দেশবন্ধু পলিমারের গত ১৭ই জানুয়ারি লেনদেন শুরু হয়। বছর শেষে এর বাজার মূলধন হয় ১৭৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ও শেয়ার দর হয় ৩৮ টাকা ৪০ পয়সা। লেনদেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানের দর বেড়েছে ৩৪১ দশমিক ৬ শতাংশ। সলভো কেমিক্যালস গত বছরের ১২ এপ্রিল লেনদেন শুরু করে। বছর শেষে এসে কোম্পানির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ১৪১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ও শেয়ার দর ৩৩ টাকা ৭০ পয়সা। লেনদেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানের দর বেড়েছে ২৫৩ দশমিক ৮ শতাংশ। বরকতউল্লাহ ইলেক্ট্রো ডায়নামিকসের লেনদেন শুরু হয় গত ১৯শে মে। বছর শেষে এ প্রতিষ্ঠানটি দর হারিয়েছে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এমআই সিমেন্ট গত ২২শে মে লেনদেন শুরু করে। বছরের শেষে এসে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ১ হাজার ৪৯১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ও শেয়ার দর ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। লেনদেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানের দর বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ। এমজেএল বাংলাদেশের লেনদেন শুরু হয় গত ২৬শে জানুয়ারি। বছর শেষে এসে এর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭১ কোটি ৬১ লাখ টাকায় ও শেয়ার দর ৯৯ টাকা ৯০ পয়সায়। লেনদেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এর দর ০ দশমিক ১ শতাংশ হারিয়েছে। রংপুর ডেইরির লেনদেন শুরু হয় গত ২৮শে নভেম্বর। বছর শেষে এর দর বেড়েছে ৯৬ দশমিক ৭ শতাংশ। একই দিনে জাহিনটেক্সের লেনদেন শুরু হয়ে বছর শেষে দর বেড়েছে ৮৩ দশমিক ২ শতাংশ। দর বাড়ায় কোম্পানিগুলো এগিয়ে থাকলেও মিউচুয়াল ফান্ডগুলো খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি। পড়তি বাজারকে সাপোর্ট দেয়ার কথা থাকলেও তারা নিজেরাই লোকসানে পড়ে। ফলে বাজারকে চাঙা করতে এবং ক্রেতা সঙ্কট কাটাতে ভূমিকা রাখতে পারেনি নতুন অনুমোদিত এ ফান্ডগুলো। জানা গেছে, এআইবিএলর লেনদেন শুরু হয় ১০ই জানুয়ারি। বছর শেষে এসে এর দর দাঁড়ায় ৮ টাকা ৪০ পয়সায়। লেনদেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দর হারিয়েছে ১৬ শতাংশ। এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ৮ই ফেব্রুয়ারি থেকে লেনদেন শুরু করে। বছর শেষে এসে এর দর দাঁড়ায় ৯ টাকা ২০ পয়সা। লেনদেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এর দর ৮ শতাংশ হারিয়েছে। ইবিএল এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড ২৩শে মে থেকে লেনদেন শুরু করে বছর শেষে এসে দর বাড়ে ৫ শতাংশ। সাউথইস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন ২৩শে মে শুরু হয়ে বছর শেষে দর হারায় ১১ শতাংশ। রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড ৭ই জুলাই লেনদেন শুরু করে বছর শেষে এসে দর বাড়ে ১ শতাংশ। এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ ১৯শেষ সেপ্টেম্বর থেকে লেনদেন শুরু করে। বছর শেষে এর দর হয় ১০ টাকা ৬০ পয়সা। লেনদেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এর দর বেড়েছে ৬ শতাংশ। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, গত বছরজুড়েই শেয়ার দরে পতন থাকায় লোকসান কাটাতে নতুন কোম্পানি বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে ওঠে বিনিয়োগকারীরা। ফলে লেনদেনকারীর সংশ্লিষ্টতা বেড়ে যাওয়ায় এসব কোম্পানির দর বেড়েছে।
No comments